somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যাংকাররা সবার হাতের পুতুল, তাদের নিয়ে যেমন খুশি তেমন খেলা যায়!!

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রাহকদের তীর্যক মন্তব্য,গালাগালি,হুমকি-ধামকি বা ব্যাংকের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের খেলাপি ঋন আদায়ের চাপ, মামলা-মোকাদ্দমায় হাজিরা ইত্যাদি সহ্য করে চাকুরী করা ব্যাংকারদের নিয়তি।চাকুরীতে ঢোকার সময় এগুলোকে মেনেই তারা চাকুরীতে ঢোকেন। এরপর তারা সরকারের যে কোন জরুরী সিদ্যান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ বাধ্যতামূলক হিসাবে পালন করেন! এসব নিয়ে তাদেরকে সর্বদা ব্যাস্ত থাকতে হয়! সন্ধায় গড়ে ফিরে নিজের সংসার,ছেলে মেয়ে,পিতা-মাতার ভালমন্দের চিন্তা তো অপরিহার্য, যদিও ব্যাংক এর কাজ করে সংসারে সময় দেয়ার খুব কম সময়ই তারা পান! সামান্য কিছু টাকা যেটা দিয়ে সংসার চালানো প্রায় অসাধ্য সেটা স্ত্রী অথবা মায়ের কাছে দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়! সম্প্রতি এই টাকাকে ইস্যু করে ব্যাংকারদের আবেগ ও আশা নিয়ে সচিব মহোদয়রা খেললেন এক মজার ও নিষ্ঠুর খেলা! যারা পেপার-পত্রিকা পড়েন বা দেশের খোজ খবর রাখেন তারা সবাই এই অমানবিক নিষ্টুর খেলাটা সমদ্ধে কিছু না কিছু জানেন! তাই আমি এটা নিয়ে কোন কথা বলবোনা। আমি বলবো নতুন এক খেলা নিয়ে! যেটা দি ইনষ্টিটিউট অব ব্যাংকারস,বাংলাদেশ; ব্যাংকারদের নিয়ে প্রতিবছর দুইবার করে খেলে থাকেন!

সকল ব্যাংকারদেরকে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাশ করতে হয়! ডিপ্লোমা পাশের(জে.এ.আই.বি.বি ও ডি.এ.আই.বি.বি) উপর নির্দিষ্ট নম্বর( ৫ নম্বর) যুক্ত করা হয়েছে ব্যাংকের নীতিনির্ধারক লেভেল থেকে। চাকুরীর প্রমোশনের ক্ষেত্রে এই নম্বর গুরুত্ত্বপূর্ণ একটা ফেক্টর! যাদের ডিপ্লোমা থাকে তারা অন্যদের চেয়ে প্রমোশনের দৌড়ে এগিয়ে থাকে। এই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করার জন্য কোন ক্লাশ করতে হয়না, বা আইবিবি কোন ক্লাশ করায় না! প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ১০০০/- টাকা দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করে এই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে হয়।জে.এ.আই.বি.বি তে ৬ সাবজেক্ট এবং ডি.এ.আই.বি.বি তে ৬ সাবজেক্ট। পাশ মার্কস ৫০%। সবগুলো সাবজেক্টে পাশ করলেই প্রমোশনের ক্ষেত্রে ৫ নম্বর যুক্ত হয় ব্যাংকারের অনুকূলে! তাই এটা পাশের জন্য সব ব্যাংকাররা মরিয়া থাকে!

যদিও সরকারী কর্মকর্তা হিসাবে কোন চাকুরীতে ঢোকার পর চাকুরীক্ষেত্রে প্রোমোশনের জন্য নিজের পকেটের টাকা খরচ করে ডিগ্রী নিতে হয় এটা সরকারী ব্যাংকগুলো ছাড়া আর কোন চাকুরীতে আছে কিনা আমার জানা নেই। তবুও ডিপ্লোমা একজন ব্যাংকারকে দক্ষ করে তুলে এই অজুহাতে মেনে নেয়া যেত যদি সেটা ফেয়ার হতো, মেধা যাচাই সঠিক প্লাটফর্ম হতো এবং সঠিক ভাবে মেধাকে মূল্যায়ন করা হতো!

ডিপ্লোমা এক্সাম দিতে যাওয়া পরীক্ষার্থী মাত্রই জানেন এক্সাম হলের ভিতরে কতটা নকল হয়! এখানে নকলে কোন বাধা দেওয়া হয়না!যে যার মতো বই দেখে নকল করে পরীক্ষা দেয়!প্রত্যেক পরীক্ষার্থী পরিক্ষা দিয়ে ভাবেন সে খুব ভাল পরীক্ষা দিয়েছেন তার পাশ হবেই এবার! কিন্তু পাশ আর হয়না। দু-একটা পাশ করে বাকী গুলোতে বছরের পর বছর ফেল করে যান! অনেকে আইবিবির লোক ধরে প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা দেন তবুও পাশ করেন না!!
বলতে পারেন ঠিকই তো আছে!! নকল করে পাশ করবে কেমনে? নকল করে কি বেসিক জিনিস জানা যায়!!পাশ করতে হলে তো জানতে হবে! যদি আপনার ধারনা সত্য হতো তাহলে তা ভালই হতো, মেধাবী ব্যাংকার সঠিক ভাবে মূল্যায়িত হয়ে বেরিয়ে আসতো, তার প্রমোশন হতো, সাফল্যের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতো!!

কিন্তু পড়া শোনা করে যাওয়া ছাত্র/ছাত্রী যখন ফেল করে তখন আপনি কি বলবেন?!! বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে অথবা একাউন্টিং এ পাশ করা ছাত্র/ছাত্রী যখন ডিপ্লোমায় বছরের পর বছর একই সাবজেক্টে পরীক্ষা দেন কিন্তু পাশ করেন না তখন আপনি কি বলবেন? ওই ছেলে খারাপ ছাত্র? ওই ছেলে নকল করে পাশ করেছে?? যদি তাই হয় তবে সে তার মেজর বিষয় বাদ দিয়ে ডিপ্লোমার অন্য বিষয়গুলোতে পাশ করলো কীভাবে?এমন অনেক নজির আছে যে ব্যাংকার যে বিষয়ে খুব ভাল পরীক্ষা দিয়েছেন সে বিষয়ে ফেল করেছেন কিন্তু যেটাতে আগডুম-বাগডুম লিখে এসেছেন সেটাতে পাশ করছেন! কেমনে পাশ বা ফেল করলেন তিনি নিজেও জানেন না!!
আমার কথাগুলো যদি বিশ্বাস করে থাকেন তবে হয়তো ইতোমধ্যেই বুঝে গেছেন কতবড় প্রহসন এই ব্যাংকারদের নিয়ে এই আইবিবি করছে শুধু মাত্র টাকার জন্য!!

তবুও যদি কারো অবিশ্বাস থাকে তবে আগামীকাল ০৬/১২/১৩ইং তারিখের ডিপ্লোমা পরীক্ষার দিকে দৃষ্টি দিলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে…

দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আগামীকাল শুক্রবার (০৬/১২/১৩ইং) তারিখ সকল তফসিলি ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ্ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মানতে সকল ব্যাংক বাধ্য আর ব্যাংকের সিদ্যান্ত মানতে ব্যাংকাররা বাধ্য, সো তাদেরকে ওইদিন অফিসে যেতেই হবে। তাই উপযুক্ত এবং যুক্তিসঙ্গত কারণেই শুক্রবারের ব্যাংকিং ডিপ্লোমার জন্য নির্ধারিত দুইটি পরীক্ষা বাতিল হওয়ার কথা ছিল! কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে যথা সময়ে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষনা দিয়েছে আইবিবি!!
কি হাস্যকর এই সিদ্যান্ত !!
কেন এই সিদ্যান্ত তা খুব সহজেই অনুমেয়! অধিকাংশ ব্যাংকার কালকে পরীক্ষা দিতে পারবেনা অফিস করতে বাধ্য বলে!! আর পরীক্ষা না দিতে পারলে তাদের খাতা দেখে মিছেমিছি ফেল করাতে হবেনা, খাতার টাকা বাচবে, খাতা দেখার কষ্ট্ ও খরচ বাঁচবে!সেই সাথে পরের শিফটে এই কর্মকর্তা গুলোর কাছ থেকে আবার নিতে পারবে রেজিষ্ট্রি ফি বাবদ ১০০০/- টাকা!!
এবং এরকম চলতেই থাকবে!!ব্যাংকারদের শোষন, মানসিক নির্যাতনের সুযোগ পেলেই তারা তা করে যাবেন খেয়ালখুশি মতো!! কারণ ব্যাংকাররা তো মানুষ নয় তারা ব্যাংকার!! তারা সচিব,গ্রাহক,এবং আইবিবির হাতের পুতুল!!তাদের ইমোশান নেই, রাগ নেই,ক্ষোভ নেই এমনকি প্রতিবাদ করার ক্ষমতা টুকু নেই!!তাদের নিয়ে যেমন খুশি তেমন খেলা যায়!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫১
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×