সবে মাত্র এসএসসি পরীক্ষা শেষ হল। চমৎকার একটা সময়! সারাদিন কোন কাজ নেই। শুধু খাও,ঘুমাও আর নেট গুতাও। বারবারই মনে হয়,ইশ! সময়টাকে যদি এখানেই থামিয়ে ফেলতে পারতাম!!
যাই হোক,ব্লগের এক আপু একদিন আমাকে বলল, তুমি আর ব্লগ লেখ না কেন? পরিক্ষা শেষ,এইতো সময়! আমি বললাম, আমার তো কিছু মাথায় আসে না আপু! আপু বলল,যা মনে আসে তাই লেখ! আপুর কথা রাখতেই ঢুকলাম সামু তে! এই যে আপু,লোকে আমার বোরিং বোরিং কথা পড়ে আমাকে গালি দিলে কিন্তু সম্পূর্ণই তোমার দোষ!!
ছুটির মধ্যে তেমন কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয় নাই! শুধু ২ জন ফ্রেন্ড এর বাসায় গিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে একজন আবার আমার কাজিন+ক্লাসমেট+ফ্রেন্ড। নার্সারী থেকেই আমরা ২ কাজিন একসাথে একই স্কুল এ পড়ি। তো সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,কিরে? কোচিং করবি কোথাও? (ইদানিং পড়াশুনা সম্পর্কিত কথা বার্তা শুনলেই কেন যেন মেজাজ চরম খারাপ হয়

) তবুও মেজাজ ঠান্ডা রেখেই উত্তর দিলাম,আরে নাহ..পাগল নাকি? ২ দিন আগে মাত্র পরীক্ষা শেষ হইলো,এত তাড়াতাড়ি কিসের কোচিং ?? বলে,ও..আমি ইংলিশ কোচিং এ ভর্তি হইতে চাইসিলাম,কিন্তু আম্মু দিল না

আমি বললাম, ঠিক ই তো করসে চাচি! আর তোর কি মাথা খারাপ হইসে?? :O এতো তাড়াতাড়ি পড়াশুনা শুরু করতে চাস কেন ?? এত আতেল কেন রে ভাই!! সে আমারে একটা জোরসে ঝারি দিয়ে বলল, আরে ধুর গাধা!! আমি কি ঐখানে পড়াশুনা করতে যাব নাকি??

প্রথম ২ মাস সেজেগুজে ঢংঢাং করতে যাব আর ফ্রেন্ড দের সাথে শয়তানি ফাইজলামি করব..পরের এক মাস পড়াশুনা করার কথা বিবেচনা করে দেখব! আমি বললাম,ও আচ্ছা! তাই বল ! চাচি মনে হয় তোর বদ মতলব বুঝে গেসে

ঐজন্যই তোরে যাইতে দেয় নাই

সে হতাশ ভাবে মাথা নেড়ে বলল,সেই

মহানন্দে নেট গুতাচ্ছি,ব্লগের আমার একটা অনেক প্রিয় পোস্ট দ্বিতীয় বারের মত পড়ছি! কিন্তু ঠিক আগের মতই মজা পাচ্ছি

ঠিক এই সময় ইয়াহু মেসেনজার এ আমার এক ক্লাসমেট এর নক। প্রিয় পোস্ট পড়ার সময় এহেন বিঘ্ন ঘটায় মেজাজ এমনিতেই একটু বিগ্রে গেল

আরে ভাই,সারাদিন যখন বসে বসে মুড়ি ভাজি তখন তো কেউ নক দেয় না। কোনো একটা কাজ করতে গেলেই শুধু দুনিয়ার মানুষের আমার কথা মনে পড়ে! সারা জীবন ফোন খোলা থাকে,কিন্তু যেইদিনই চার্জ না থাকার কারণে সাময়িক বন্ধ থাকে ঠিক তখনি কোনো এক রহস্যময় কারণে আমার সব বন্ধু বান্ধবের আমাকে মনে পড়ে ! ফোন বন্ধ পেয়ে তখন তাদের গালাগালি পর্ব শুরু হয়। যাই হোক,বিরক্তি চেপে রেখে তার (ক্লাসমেটটার) খোজ খবর নিতে লাগলাম। খোজ খবর নেওয়া পর্ব শেষে সে আমাকে প্রশ্ন করলো,পড়াশুনা শুরু করসো? (এমনিতেই মেজাজ গরম,তার উপর এহেন চরম বিরক্তিকর প্রশ্ন শুনে আমার মাথার তাপমাত্রা নায়টিনাইন ডিগ্রী সেলসিয়াস এ পৌছায় গেল)। তবুও মেজাজ যথা সম্ভব ঠান্ডা রেখে উত্তর দিলাম,
আরে নাহ! মাথা খারাপ নাকি! বই ও তো দেখি নাই ইন্টার এর! পড়ালেখার প্রতি আমার চরম বিদ্বেষ একটু আঁচ করতে পেরে সে বলল,
নাহ মানে একচুয়ালি কোথাও ক্লাস টাস করসো কিনা?
বললাম,নাহ,তুমি?
আমি ইংলিশ স্টার্ট করসি। মেথ ও করব। কজ আমি শুনসি এখন না পড়লে পরে অনেএএএএএক ঝামেলায় পড়তে হবে !!
আমি বললাম, ও (হাই তুলার ইমো)
এসএসসি এর তিনগুণ পড়া ব্লা ব্লা ব্লা।
বললাম, হুম (পুনরায় হাই তুলার ইমো)
এইত! পড়াশুনা তো আর না! ইংলিশ ই তো!
বললাম,তা ঠিক। (আরে বইন যদি পড়াশুনা না ই করবি তো বাসায় বসে ঘুমা না

)
অনেকেই তো কত জায়গায় শুরু করে ফেলসে।
বললাম,হুম সবাই অধম হলে আমি উত্তম হব না কেন? ইয়ে মানে মিসটেক! সবাই আতেল হলে আমি নন আতেল হব না কেন?

যাই হোক,এরপর সে তার পড়াশুনার মহান কাহিনী বলে যেতে লাগলো

এনিওয়ে,আমি আছি মহানন্দে। আমার আম্মু বেস্ট। পড়াশুনার কোনো চাপই আমার উপর নাই

তাই আর পড়াশুনা সম্পর্কিত কথা বলে নিজের এবং আপনাদের মেজাজ খারাপ না করি

আজকে আবার আমার এক ফ্রেন্ড এর বাসায় আসার কথা

যাই,বাসাটা একটু গোছগাছ করি। আমার রুম এর যেই অবস্থা,ইম্প্রেশন এর পুরা চৌদ্দটা বেজে যাবে । ইম্প্রেশন এর চৌদ্দটা অবশ্য এমনিতেও বাজবে

যখন আমার বড় বোন (

) আমারে তার সামনে ফাউল বলে ডাকবে। আগে থেকেই প্ল্যান করে রাখসে সে

এর একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে। দেখি কি করা যায়
যাই হোক,সবাই ভালো থাকবেন। আজকের মত টাটা