somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেডিক্যাল লাইফের সাতকাহন

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল মেডিকেলে পড়ব,ডাক্তার হব।একদিন মেডিকেলে পড়ার সেই ইচ্ছা পূরণ হল (ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা এখনো পূরণ হয়নাই,আদৌ হবে কিনা বলতে পারছিনা!)। B-)

আমাদের মেডিকেল লাইফ শুরু হয়েছিল কোন এক বছরের ২২ জানুয়ারি। প্রথম দিন স্যারদের জ্ঞানগর্ভ কথা শুনে ভেবেছিলাম,"আহা! কত সুন্দর-ই না হবে এখন থেকে জীবন টা। কত ভাল লাগবে মানুষের সেবা করতে!" নবীণ আমরা সেদিন বুঝে উঠিনি মানুষের সেবা করার আগে যেসব পর্যায় পার হতে হবে তা পার করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই অমানুষে পরিণত হব। :((

প্রথম কয়েকদিন মহা আনন্দে কাটল। ক্যাম্পাসে নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচিত হওয়া,প্রথম এপ্রন পরে হালকা ভাব নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। অতঃপর শুরু হল item নামক বস্তুটির যন্ত্রনা। আমাদের প্রথম item ছিল physiology,item নিয়েছিলেন মাসুমা ম্যাডাম। ‌যে-ই ছেলে বা মেয়ে item দিতে যাক না কেন উনি আমাদের সবার মাথা থেকে পা-এর স্যান্ডেল পর্যন্ত দেখে তারপর item নেওয়া শুরু করলেন। সেদিন-ই প্রথম বুঝতে পারলাম মেডিকেল নামক জায়গায় পড়তে হলে dress up-এর ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।

এরপর অনেকটা সময় এই মেডিকেলে কাটিয়েছে,দুরুদুরু বুকে দিয়েছি অনেক ধরণের পরীক্ষা--item,card,term,1st professional exam,প্রিয় ক্যাম্পাস প্রিয়তর হয়েছে ক্রমাগত।

সকাল ছয়টায় ঘুমঘুম চোখে যখন কলেজ যাওয়ার জন্য রেডী হই তখন মাঝে মাঝে মনে হয় "হায়রে জীবন!শান্তি নাই!" প্রতিদিন স্যারদের বকা,বকা খেয়েও ক্লাস ফাঁকি,ক্লাসের মাঝে কমেন্ট পাস আর পরীক্ষার আগের রাতে পড়া শেষ করা আর মাঝে মাঝে ফেল করা,item-এ pending খাওয়া--এইসব নিয়েই আমাদের প্রতিদিনের মেডিক্যাল লাইফ।:)

যখন সময়ের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে আর পড়ালেখা করতে গিয়ে খুব বেশি হাঁপিয়ে উঠি তখন মনে হয় সাধ করে নরক যন্ত্রনা উপভোগ করছি। খুব মন খারাপ হয় অকারণ ঝাড়ি খেলে। আবার যখন বন্ধুরা সবাই মিলে সেই ঝাড়িটুকু হজম করে ফেলি অথবা হাসাহাসি করি নিজেদের নির্বুধিতায় তখন কিন্তু আর মন খারাপ ভাবটা আর থাকেনা!:D

মেডিকেলে পড়ালেখা করা হয়ত অনেক কষ্টের,অনেক পড়তে হয় এটা ঠিক--কিন্তু যখন হঠাৎ করে পাওয়া off period গুলোতে প্রিয় বন্ধুদের সাথে টং এর দোকানে দাঁড়িয়ে চায়ে চুমুক দেই অথবা হাঁটতে হাঁটতে চলে যাই শহীদ মিনার বা দোঁয়েল চত্বর কিংবা ward এ গেলে কোন বৃদ্ধা মা যখন হসপিটালের বেডে শুয়ে মাথায় পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন-"অনেক বড় ডাক্তার হও বাবা"--তখন মনে হয় হাজার পড়ালেখার চাপেও জীবনটা মনে হয় খুব বেশি খারাপ না! বরং অনেক অনেক বেশি সুন্দর!! :)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪৯
৪৩টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×