দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলাই যায় যে দেশ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিরোধীদল বিহীন একটি দেশে এরচেয়ে ভাল কিছু আশা করা যায় না। দূর্নীতি, অরাজকতা,ধর্মান্ধতা,ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার দাপটের নীল রক্ত দেশের শিরায় উপশিরায় প্রবাহমান। হুমায়ূন আজাদের সেই বিখ্যাত উক্তি"সব যাবে নষ্টদের দখলে",আজ চোখের সামনে দৃশ্যায়মান। ভালরা আজ কোণঠাসা নষ্টদের দাপটে। নোংরা রাজনীতি আর উভয়নীতির যাঁতাকলে পিষ্ট দেশের মানুষ আজ হতাশায় নিমোজ্জিত। অর্থনৈতিক ভাবেই হোক আর ব্যাক্তি জীবনে কোথাও কেউ শান্তিতে নেই। নিরাপত্তাহীনতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে।
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ব্লগার হত্যা দেশে জঙ্গি শক্তির উত্থান প্রমান করে। প্রশাসন নির্বিকার সরকার দায় চাপায় জামায়াত ও তার অঙ্গ সংগঠনের উপর। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পারে কাজ গুলো সংগঠিত হয়েছে ইসলামী জঙ্গি সংগঠন দ্বারা। অপরদিকে সরকার চোখ বুঝে আছে, কি তাদের ভবিষ্যৎ কর্মতৎপরতা, কি তাদের বর্তমান অবস্থান কোন কিছুই সরকারের জানা নেই।
পরপর দুইজন বিদেশী নাগরিক হত্যার পর আন্তর্জাতিক ভাবে যখন বাংলাদেশটির নামের পাশে রেড এলার্ট জারি করে এদেশে সফর বাতিল করা হয় তখনও সরকার নির্বিকার।
নিরাপত্তা জনিত কারনে অস্ট্রেলিয়া ও সাউথ আফ্রিকার নারী ক্রিকেট দল যখন বাংলাদেশে আসতে অপারগতার প্রকাশ করে সরকার তখনও সেই সকল দেশের উচ্চপর্যায়ে মিটিং করে তাদের আশ্বস্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করে তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
বিদেশীরা আমাদের দেশে জঙ্গি তৎপরতা দেখতে পেলেও সরকার ঢাক ঢোলা পিটিয়ে জাহির করার ব্যর্থ চেষ্টা করে আমাদের দেশে কোন জঙ্গি নেই।
তবে বাংলা ভাই ,সায়েখ আব্দুর রহমান ওরা কারা? কোন রুপকথার চরিত্র? তাদের অনুসারীরা এখন কে কোথায়, খোঁজ করেছেন কখনও??
"যেমন গায়েন তেমনি তার সারিন্দা"
নববর্ষের যৌন হয়রানির ঘটনায় পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন,"ছেলেরা দুষ্টামি করেছে"।
হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা আসা মানে মৌসুমী সংখ্যালঘু নির্যাতন শুরু। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিমা ভাংচুর হচ্ছে।
আবার সেই পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ঐতিহাসিক বক্তব্য,"নিজেদের মাঝে দলাদলির কারনেই একে অপরের মূর্তি ভাংচুর করছে, এতে অন্য কারো কোন হাত নেই"।
অন্য কারো হাত থাকুক বা না থাকুক,জনাব আপনার নাকটা কিন্তু ভুল জায়গায় গলাচ্ছেন। আপনার কাজ দোষী যেই হোক তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। তা না করে একটা সমালোচিত বক্তব্য ও সাথে তদন্তের নামে একটা মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছেন, যেই তদন্ত কোনদিন শেষ হবে না।
এই উৎসব সার্বজনীন, পুজা মন্ডপগুলোতে হিন্দু মুসলমান সকলের অবাদ আনাগোনা লক্ষ করা যায়। আশা করি ঘটবে না, তারপরও যদি দেশে দু চারটি পুজা মন্ডপে বোমা হামলা হয়, তাতে সংখ্যালঘু নামের কিছু জানোয়ার হয়তো মরবে যেই মৃত্যুর বিচার পাবে না কোনদিন তাদের আত্মীয় স্বজনরা। তাতে কিছু এসে যায় না কিন্তু বাংলাদেশে কপালে যে আরেকটা জঙ্গি রাস্ট্রের ট্যাগ লেগে যাবে সে ব্যাপারে কি দেশের নীতিনির্ধারকগণ ভেবে দেখেছেন?
আমরা বুঝতে পারছি সাময়িক তদন্ত ও বিচার নয় দরকার সমূলে উৎপাটন,সরকার কি তা বুঝতে পারছে? যদি পেরেই থাকে তবে কি ভুমিকা নিচ্ছে?
পরিশেষে বলতে চাই, উৎসব সবার সবাই সেই উৎসবে আনন্দ করুক। কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় যাতে আনন্দের হাসিটা মলিন না হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৯