somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শের শায়রী
অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

হিজড়া সম্প্রদায় কিছু অজানা তথ্য

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক দিন থেকে আমার কৌতুহল ছিল হিজরা দের নি্যে, কিছু তথ্য এক করেতে পারলাম। গ্রাম অঞ্চলে বা শহরতলীতে কোন বাচ্চার জন্ম হলেই এরা দলে দলে এসে ভিড় করে বলে ওঠে "দে নারে তোর মনিটারে একটু নাচাই" এই বলে নবজাতক কোলে করে নাচিয়ে বখশিষ নেয়, কিংবা শহরে মাঝে মাঝেই দেখা যায় এরা দলে দলে এসে বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তোলে। সমাজে ওরা খুব অবহেলিত, সভ্য মানুষরা ওদের বলে হিজড়া। আমি আমার এই পোষ্টে হিজড়া কাদের বলে, কেন হিজড়া হয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর ব্যাখা, এদের চিকিৎসার সাফল্যের রেকর্ড, ছাড়াও এদের সম্বন্ধে আরো কিছু তথ্য দিতে চেষ্টা করবো।
হিজরা কোন জন্তুনা তাদের কে সন্মান দিন। দেখবেন তারা ও আপনাকে সন্মান দেবে।

হিজড়া
হিজড়া শব্দটি এসেছে আরবী হিজরত বা হিজরী শব্দ থেকে যার আভিধানিক অর্থ পরিবর্তন বা Migrate বা Transfer। এর ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশে বিশেষ এক ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধীদের হিজড়া বলে মূলত শারিরীক লিঙ্গের ত্রুটির কারনে এদের সৃষ্টি। এদের প্রধান সমস্যা গুলো হল এদের লিঙ্গে নারী বা পুরূষের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে না। কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় লিঙ্গ নির্ধারক অঙ্গ থাকে না। এসবের উপর নির্ভর করে তাদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায।

হিজড়া এর প্রকারভেদ
শারীরিক ও মানসিক গঠনের উপর নির্ভর করে এদেরকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। শারীরিক ভাবে পুরুষ কিন্তু মানষিক ভাবে নারী বৈশীষ্ট্য এর অধীকারী হিজড়াদের বলা হয় অকুয়া, অন্য হিজড়াদের ভরা হয় জেনানা, আর মানুষের হাতে সৃষ্ট বা ক্যাসট্রেড পুরুষদের বলা হয় চিন্নি।

কেন হিজড়া হয় এর বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা

হিজড়া সম্পর্কে ডা. অব্দুল ওয়াদুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হিজড়া এক ধরনের জেনেটিক সমস্যা। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই একটি ভ্রুণের শরীরে এক ধরনের ডিফেক্ট জিনের আবির্ভাব ঘটে। তখন থেকেই ওই ভ্রুণটি হিজরা হতে শুরু করে। এই ত্রু টিযুক্ত জিন ভ্রুণের শরীরের ভেতর অস্বাভাবিক পরিমাণ এন্ড্রোজেন হরমন তৈরি করে। এন্ড্রোজেন হরমনের মধ্যে রয়েছে টেসটোসটেরন এন্ড্রোজেন। টেসটোসটেরন হরমন পুরুষ বৈশিষ্ট ও হিস্ট্রোজেন হরমন মেয়ে বৈশিষ্ট ফুটিয়ে তোলে। এ সমস্ত ভ্রুণের দেহে উপরোক্ত হরমন দু’টির অসামঞ্জতা দেখা যায়। ফলে ভ্রুণটি ছেলে বা মেয়ে কোনো বৈশিষ্ট্য আলাদাভাবে ধরে রাখতে পারে না। বরং একজনের ভেতরেই ছেলের কিছু বৈশিষ্ট্য ও মেয়ের কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে।
ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, হিজড়া দু’প্রজাতির। মেয়ে হিজরা ও ছেলে হিজড়া। মেয়ে হিজড়াদের জেনেটিক সেক্স ডাবল এক্স। এদের আভ্যন্তরীণ সেক্স মেয়েদের মতো, অর্থাৎ দেহের ভেতরে ডিম্বানু তৈরিকারী অঙ্গ (অভারী) থাকে কিন্তু বাইরের সেক্স পুরুষের মতো বা দ্বৈত হতে পারে। অপরদিকে ছেলে হিজড়াদের জেনেটিক সেক্স এক্স ওয়াই। এদের আভ্যন্তরীণ সেক্স ছেলেদের মতো অর্থাৎ দেহের ভেতরে শুক্রানু তৈরিকারী অঙ্গ (টেসটিস) থাকে কিন্তু বাইরে সেক্স মেয়েদের মতো বা দ্বৈত হতে পারে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, হিজড়াদের সাধারণত যৌন ক্ষমতা বা সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা থাকে না। এখন উন্নত বিশ্বের মায়েরা সন্তান আসার পরপরই কোন জেনেটিক সমস্যা আছে কি-না তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন। কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে সেটা জিন পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে মায়ের পেটের ভ্রুণের জিন পরীক্ষা করা খুবই ব্যয়বহুল। ভ্রুণের প্রথম দিকেই এই জেনোটিক সমস্যা ধরা পড়লে ভ্রুণকে এবারসন করিয়ে নেয়া যায়। বর্তমানে এর কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ভবিষ্যতে জিন থেরাপি আবিষ্কার হলে চিকিৎসা হতেও পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞান সেদিনের অপেক্ষায়। অপেক্ষার পালা শেষ হলে তখন আর কেউ হিজড়া হবে না।


এদের শারিরীক গঠন কি?
মূলত এটি একটি শারীরিক গঠনজনিত সমস্যা যা অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের মতই কিন্তু প্রতিবন্ধকতার স্থানটি ভিন্ন হওয়াতেই তারা হিজড়া। হিজড়াদের শারীরিক গঠন মূলত ৩ প্রকার।
• ১. নারীদের সকল বৈশিষ্ট্য থাকলেও নারী জননাঙ্গ থাকে না।
• ২. পুরুষের সকল বৈশিষ্ট্য থাকলেও পুরুষ জননাঙ্গ থাকে না।
• ৩. উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
হিজড়ারা কি চিকিৎসা করে সুস্থ হতে পারে?
ব্যাপারটি হয়তো অনেকেই জানেনা কিন্তু হিজড়া বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মানো কোন শিশুর যদি পরিনত বয়সে যাওয়ার আগে চিকিৎসা করা হয় তাহলে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু যখন আসলে বোঝা যায় সে সাধারন আর দশজনের থেকে আলাদা তখন আসলে অনেক দেরী হয়ে যায়।


চিকিৎসায় সাফল্যের রেকর্ডঃ
পরিনত বয়সে যাওয়ার আগে যাদের চিকিৎসা করা হয় তাদের ক্ষেত্রে সাফল্যের সূচকটি স্পষ্ট করে না বলা গেলেও এটা বলা যায় এর পাল্লা বেশ ভারী। তবে পূর্ন বয়সে যাদের চিকিৎসা করা হয়েছে তাদের মধ্যে আমার জানামতে একটিই সাফল্যের রেকর্ড। সেটা ঘটেছিল ভারতের অমলার ক্ষেত্রে। সেটা একটু সবার সাথে শেয়ার করব।

কি ঘটেছিল অমলার ক্ষেত্রে?
অমলা ছিল ভারতের একজন। সে হিজড়া হলেও ছিল অপূর্ব সুন্দরী স্বাভাবিকভাবে তাকে কেউ বুঝতে পারত না এবং সে স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করতে পারত। এভাবেই একদিন সে গ্রামের একটি বিয়েতে যায় সেখানে তাকে দেখে গ্রমের এক যুবক যার নাম কার্তিক। সে তাকে পরবর্তীতে বিয়ে করতে চায় কিন্তু অমলা তার সমস্যার জন্য কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। তবে কার্তিকও নাছোড়বান্দা পিছু হটবার পাত্র সে নয়। শেষ পর্যন্ত আর কোন উপায় না দেখে অসলা এ ব্যাপারটি তাকে জানায়। সে জানার পরও তাকে বিয়ের ব্যাপারে পিছু হটে না তার যুক্তি শারীরিক এর চাইতে মনের ভালবাসা অনেক বড় তাই সে তাকে বিযে করবেই। এরপর অমলার পরিবারের সহযোগীতায় বিয়ে হয় কিন্তু কার্তিক সমাজ ও তার পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়। তাদের বিযের পর বেশকিছুদিন গেলে কার্তিক একদিন পত্রিকা দেখে জানতে পারে এরকম একটি শিশু চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়েছে এটা জানতে পেরে সে অমলাকেও সেখানে নিযে যেতে চায়। অমলা যেতে না চাইলও কার্তিকের জোরাজুরিতে সে হার মানে। সেই ডাক্তার অমলাকে দেখে জানায় এই বয়সে এটা চিকিৎসার মাধ্যমে সফল হওয়া অসম্ভব। কিন্তু কার্তিক এর আবেগ এর কাছে হার মেনে ডাক্তার তার সমস্যাটি দেখে এবং দেখার পর ডাক্তার অমলার অপারেশনের উদ্দ্যেগ নেয়। অস্ত্রোপচার এর পর অমলা একজন সম্পূর্ণ নারীতে পরিনত হয় এবং পরবর্তীতে সে সন্তানের জন্মও দেয়। এ ব্যাপারে সেই ডাক্তারের অভিমত আসলে অমলার ব্যাপারটি তিনি কার্তিকের অনুরোধে দেখেন এবং দেখার পরই সে খেয়াল করে আসলে অমলার ত্রুটিটি খুবই সামান্য এবং তার মধ্য নারী বৈশিষ্ট্য প্রকট ভাবে বিদ্যমান তাই সে অস্ত্রোপচার করেন। তবে কার্তিক মনে করেন তার ভালবাসার্ জন্যই সৃষ্টিকর্তা তাকে পুরস্কৃত করেছেন।

কিভাবে একজন হিজড়া অন্য হিজড়াদের সাথে মিশে যায়
আসলে যখন একজন মানুষ বুঝতে পারে সে হিজড়া তখন সে পরিবার, সমাজ সব জায়গায় অবহেলা আর অবজ্ঞার স্বীকার হয়। রংমহলে একটি লেখায় পড়েছিলাম একজন এরকম শার্টের নিচে মেয়েদের বিশেষ পোশাক পড়ে স্কুলে যাওয়ায় শিক্ষকরা তাকে প্রচন্ড মেরেছিল যে কারনে এরপর আর সে স্কুলে যায়নি। যখন একজন মানুষ এরকম অবহেলার স্বীকার হয় সব জায়গায় তখন সে তার দুঃখ শেয়ার করার জন্য তার মত যারা তাদের সাথে মিশে যায় এটাই স্বাভাবিক ব্যাখা। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন কারন আছে।

হিজড়া রা কিভাবে নিজেদের দল ভারী করে?

কথিত আছে যখন কারো হিজড়ে বাচ্চা হয় তখন তা যদি হিজড়েরা জানতে পারে তবে তারা ওৎ পেতে থাকে তাকে নিজেদের দলে ভেড়ানোর জন্। একসময় ঠিকই তাকে হিজড়াদের দলে নিযে যায়। আরো একটা কথা প্রচলিত আছে যদি না নিতে পারে তাহলে তারা দলবদ্ধভাবে এসে হাতেতালি বাজাতে থাকে যা তারা সবসময়ই বাজায় আর এ হাতেতালিতে নাকি কি এক অমোঘ আকর্ষন আছে যা শুনে অন্য হিজড়ারা আর ঠিক থাকতে পারেনা সেও এসে তাদের এই হাতেতালিতে যোগ দেয় যদিও এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নাই। এছাড়াও ভারতের কিছু কিছু জায়গায় আরো কয়েকদশক আগে খোজা পুরুষ বানিয়ে দল ভারী করত।

খোজা পুরুষ কিভাবে করত?
একসময় (আরো কযেক দশক আগে) ভারতের কিছু ক্লিনিক ছিল যারা টাকার বিনিমযে পুরুষদের খোজা পুরুষ বা ক্যাসট্রেড হিজড়ায় পরিনত করত। একশ্রেণীর দরিদ্র পুরূষরা এটা করত বেঁচে থাকার তাগিদে আয রোজগারের আশায়। আর তারা ছাড়াও অনেক হিজড়া দল ছিল (মূলত ভারতে) যারা শিশু অপহরন করত তারপর তাকে ১০ দিন নির্জন স্থানে আটক রেকে ১১ তম দিনে লাল শারী পরিয়ে ক্যাসট্রেশন করে হিজড়াদের দলে ভেড়াত।

হিজড়াদের কি বিয়ে হয়?

হিজড়াদের জন্য যৌন কাজ আইনত শ্বাস্তিযোগ্য অপরাধ কিন্তু মানুষ হিসেবে তাদেরও তো আছে এসব তো অনুভূতি। যেখানে পশুরও আছে এই অধিকার সেখানে মানুষ হয়ে কেন এটা শ্বাস্তি যোগ্য অপরাধ তা যারা এই আইন করেছে তারাই ভালো জানেন। তবে হিজড়াদেরও বিয়ে হয় সেটা হয় একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায়। এ অঞ্চলের (দক্ষিণ এশিয়া) হিজড়ারা বেশীর ভাগ মুসলিম হলেও তারা হিন্দুদের এই পুজাটি করে যার মাধ্যমে তারা ভগবানের সাথে নিজের বিযে দেয় এরপর সারাদিন তারা সংসার সংসার খেলে। সন্ধ্যা এলে তারা বিধবা হয় সাদা শারী পড়ে। পুরো বিধবাবেশ ভূষা গ্রহন করে স্বামীর মৃত্যু শোক করে। অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকে। তাদের সে কান্নায় আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়। কিন্তু তাদের কান্না কি বিধবা হওয়ার জন্য? আমরা সবাই বুঝতে পারি তাদের এরকম অঝোর ধারায় জল ঝড়ার কারন।

তাদের আয়ের উৎস

মূলত তারা তাদের এলাকার বিভিন্ন দোকান পাট আর বাজারে গিয়ে টাকা তোলে এই অর্থকে তারা তোলা বলে এছাড়াও কোন নবজাতকের জন্ম হলে সেখানে গিয়ে নাচ-গান করে চাঁদা তোলে তারা। তারা তাদের জমাকৃত সকল টাকা তাদের গুরুর কাছে দিয়ে দেয় এরপর গুরু যা দেয় তা থেকে প্রসাধনী কেনে আর ব্যাংকে জমা রাখে। তাদের খাবারের বন্দোবস্ত তাদের গুরুই করে।

রাখিবন্ধন
হিজড়ারা মূলত তাদের আপনজন থেকে বিচ্ছিন্ন তাকে। তাদের বাবা-মা এর সাথে তাদের সম্পর্ক থাকে না। তাদের প্রত্যকের দলে থাকা গুরুকেই তারা তাদের অভিভাবক মানে সেই তাদের সব। তারা যখন দলে যোগ দেয় তখন গুরু তাদের আগের পোশাক থেকে শাড়ি পড়িয়ে দেয় এবং তাদের কপালে আশীর্বাদ স্বরুপ আচঁল ছুয়ে দেয় আর মন্ত্র পড়ে ফুক দেয় এটাকে তারা বরে রাখি বন্ধন। এরপর তারা তার অধীনেই চলে সে যা বলে তা করে নিজেদের টাকা তার কাছে দিয়ে দেয়।

ঢাকার হিজড়া সম্প্রদায়

সারা বিশ্বেই হিজড়ারা একটি কমিউনিটি মেইনটেইন করে এবং নকণ কমিউনিটি এর মধ্য তারা আবার যোগাযোগ রক্ষা করে। ঢাকাতেও তার বিকল্প নয়। ঢাকাতে হিজড়ারা মূলত পাঁচটি দলে বিভক্ত এক দলের হিজড়ারা অন্য দলের এলাকায় গিযে তোলা তুলতে পারবে না। তাদের এই পাঁচটি দলের প্রত্যেকটিতে আছে একজন করে গুরু। এসব এলাকা আর তাদের গুরু হচ্ছে।
• ১. শ্যামপুর, ডেমড়া ও ফতুল্লা, গুরু- লায়লা হিজড়া।
• ২. শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গুরু- হামিদা হিজড়া।
• ৩. সাভার, ধামরাই, গুরু- মনু হিজড়া।
• ৪. নয়াবাজার ও কোতোয়ালী, গুরু- সাধু হিজড়া।
• ৫. পুরোনো ঢাকা,গুরু- দিপালী হিজড়া।

আমার সহকমী’ হিজরা
আমি একটি international oil company তে কাজ করি। ওখানে আমার সাথে ৪/৫ জন হিজরা কাজ করে। তার মধ্যে Tui Tui নামে হিজরা আমার কোম্পানীতে বেশ ক্ষমতা ধর।সে অবশ্য আমার এক আন্ডারে Trainee হিসাবে কাজ করছে। তাই তার সাথে আমার সম্পক’ গুরু শিষ্য। ওর দেশ Thailand. Thailand এ অবস্থান কালীন আমি বেশ কিছু হিজরা দেখছি যারা অনেক অনেক সুন্দরীর চেয়ে সুন্দরী। Thailand এর Soi 3 তে গেলে এদের দেখা পাওয়া যাবে। টুই টুই র খুব ইচ্ছা কিছু টাকা পয়সা হলে Singapore যেয়ে Operation করে পূনা'ঙ্গ যুবতী হয়ে যাবে।

সামনে চেয়ারে বসা টুই টুই


একজন বাংলাদেশী হিজরার কাহিনী

হিজড়াদের জীবনচিত্র বেশ বিচিত্র। সম্প্রতি নারগিসের সাথে একান্তে কিছু কথা হয়। জীবনযাত্রা বর্ণনা করতে গিয়ে নারগিস বলেন, ‘বয়স এখন ৪২ বছর। আমাদের মতো অভাগা আর এই জগতে নেই। ছোট বেলায় স্কুলে গেলাম। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সহপাঠীদের সাথে নিজের পার্থক্য যেমন ফুটে উঠতে লাগলো, তেমনই সহপাঠীরা উপহাস শুরু করলো। বিদ্যালয়ে আর যাওয়া হলো না। চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের নিকট এক ছেলের সাথে পরিচয় হলো। সে ভালোবাসার মন্ত্র শেখালো। প্রেমে পড়ে গেলাম। চিঠি আদান প্রদান হলো। একদিন ওই ছেলে যখন বিয়ে করতে চাইলো, তখন তাকে বললাম, আমি তো হিজড়া। এ কথা শোনার পর সে কান্নায় বুক ভাসালো। সেই থেকে আমি বদলে গেলাম। আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসা থাকতে হয় না। ইচ্ছে হলেও ওসবের কিছু করার জো নেই।’
নারগিস তার স্মৃতিবিজড়িত অতীত বর্ণনা করতে গিয়ে দীর্ঘ সময় উদাসীন থাকার পর আপন মনেই হেড়ে গলায় গায়তে থাকেন গান। গান থামিয়ে লম্বা শ্বাস নিয়ে উদাস কণ্ঠে নারগিস বললেন, ‘ওসব কথায় আর কাজ নেই। আমাদের কথা শুনে তোর কোনো লাভ নেই, তুই বাড়ি চলে যা। নারগিস বার বার বিদায় করে দিতে চাইলেও, নাছোড়বান্দার মতো তার নিকট জানতে চাওয়া হয়, শুধুই কি ছেলে নাচিয়ে পেট চালান? নারগিস বলে, আমাদের তো আর সন্তান হয় না, আমাদের সংসার বলতে আমরাই। আমাদের পেট চালাতে ঢোল-ডুগি নিয়ে কয়েকজন দলবদ্ধভাবে ছুটে যায় শহর ও গ্রামের মহল্লায় মহল্লায়। সদস্য ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তান কোলে তুলে নিয়ে নাচিয়ে বলি, দে লো দে, কিছু দে। এ কথায় সন্তানের দাদি, নানি ও মায়েরা যা দেয়, তা দিয়েই চাল কিনে বাড়ি ফিরি। যা হয় তাই খেয়েপরে আছি। ভাঙাচুরা ঘরে ঘুমোয়। সরকার যদি আমাদের কিছু ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করতো তা হলে ভালোভাবে খেয়েপরে বাঁচতাম। সরকার বিধবাদের ভাতা দেয়। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের টাকা দেয়। প্রতিবন্ধীদের সাহাস্য করে, ভাতা দেয়। আমরাও তো এক প্রকারের প্রতিবন্দ্বী। আমাদের কেনো ভাতা দেয়া হবে না?’ নারগিসের এ প্রশ্নের জবাব জানা ছিলো না। নারগিসের ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা তাক করতেই তিনি বলেন, এখনতো ফটো তোলা যাবে না, আজ নয়, আর একদিন। দ্বিতীয় দিন গতকাল তার নিকট ছবি নিতে গেলে তিনি পূর্বের মতোই জোর আপত্তি তুলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি।
নারগিস চুয়াডাঙ্গা হিজড়াদের সংখ্যা জানাতে গিয়ে বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না, তবে চুয়াডাঙ্গায় এখন হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১৫। তা ছাড়া নাটোর থেকে আসে সোহেলী, চামেলী ও সন্ধ্যা। ঢাকা থেকে কাজলী ও একা মাঝেমধ্যেই আসে। আমাদের সাথে থাকে। আমরা ভালো নেই। আমাদের ওইভাবে ছেলে নাচিয়ে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা নিতে আর ভালো লাগে না। কী গান গেয়ে ছেলে নাচান? এ কথায় নারগিস বলে, ‘হায়রে দোলালী দোলে, দোলেনা দোলে......... । যতো সস্তাগান আছে সবই দু’এক লাইন করে গাই।’
নারগিসের সাথে একান্তে আলোচনার পর চুয়াডাঙ্গা পৌরকলেজপাড়ার মুক্তির বাড়িতে গিয়ে দরজার কড়া নাড়তেই দরাজ গলায় জবাব, এই কে রে......?। নরম স্বরে বললাম, ‘আমি, আমি মাথাভাঙ্গা দফতর থেকে এসেছি। কিছু কথা বলতে চাই।’ মুক্তি তখন রান্না নিয়ে ব্যস্ত। রান্নার মাঝে বাড়ির দরজায় মুক্তি মুখ বের করে দাঁড়ালেন। সেখানেই কথা হলো তার সাথে। কেমন আছেন? এ প্রশ্নের জবাবে মুক্তি বললেন, ‘এইতো ভালোই আছি। যা বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন। তরকারি পুড়ে যাবে।’ প্রতিদিন কতো টাকা আয় করেন? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কতোই আর হয়, ছেলেমেয়ে নাচিয়ে কী আর বেশি পাওয়া যায়! যা পাই তা দিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। আমাদের এ পেশাতেও এখন ভাগ বসাতে শুরু করেছে এক শ্রেণীর পুরুষ। হিজড়া নয়, অথচ হিজড়া সেজে শাড়ি কাপড় পরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ছেলে নাচিয়ে জোর করে টাকা কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতোই ওরা আচরণ করে। সাধারণ মানুষ ওদের আচরণ দেখে বুঝতেই পারে না, ওরা হিজড়া নয়। সংসার আছে। ছেলেমেয়ে আছে, আছে বউ। (চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিক শামীম থেকে সংগৃহীত)

হিজড়াদের কোথায় সমাহিত করা হয়?
আগেই বলেছি হিজড়ারা অনেকেই মুসলিম হলেও তারা অনেক হিন্দু রীতি নীতিতে বিশ্বাষ করে। তাই তাদের যদিও কবর দেয়া হয় কিন্তু তারা মনে করে তাদের আবার পূণঃজনম হবে। প্রত্যেক হিজড়াকে কবর দেয়া হয় তারা যে বিছানায় থাকে তার নিচে এটাই তাদের রীতি (তবে বর্তমানে স্থান সংকুলানের জন্য তাদের অন্যত্রও কবর দেয়া হয়)। কিন্তু তাদের কবর দেয়ার নিয়মটি খুব অদ্ভুত তাদের কবরে প্রথমে ঢালা হয় লবন তারপর লাশ তারপর দেয়া হয় ফুল তারপর আবার লবন। এটার মূল কারন হল তাদের বিশ্বাষ এভাবে কবর দিলে তাদের আগের সকল পাপ ধুয়ে পরবর্তী জনমে তারা পূর্ণ নারী বা পুরূষ হিসেবে জন্ম গ্রহন করতে পারবে

তাদেরও কি সামাজিক অধিকার প্রাপ্য নয়?

আমাদের দেশে তারা কখনোই একজন মানুষের মর্যাদাতো দূরে থাক কুকুর বিড়ালের অধিকার পায় না। কিন্তু হিজড়াদের সামাজিক অধিকার প্রাপ্য কিনা সেটা সবার উপর ছেড়ে দিলাম। তবে একটা কথা বলি আমাদের দেশে হিজড়াদের ভোটার হওয়ার নিয়ম না থাকলেও ভারতে কিন্তু লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন হিজড়া শবনম মৌসি।

কুসংস্কার
এক সময় সমাজে কুসংস্কার ছিলো, ছেলে হলে হিজড়া দিয়ে না নাচালে ছেলেও হিজড়া হয়ে যেতে পারে। এই কুসংস্কার দূর হয়েছে। হিজড়াদের ছেলে নাচানো বাণিজ্যে পড়েছে ভাটা।

আদমশুমারিতে হিজরা সম্প্রদায় এবারো উপেক্ষিত
ঢাকঢোল পিটিয়ে জাতীয় আদমশুমারি-২০১১ হয়ে গেলো। কিন্তু বরাবরের মতো এবারো বাংলাদেশের হিজরা সম্প্রদায়কে গণনায় উপেক্ষা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ১৫ কোটির অধিক মানুষের গণনাকাজে প্রায় ৩ লাখ মানুষ এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোক গণনা করেছেন। কিন্তু হিজরাদের অনেকের অভিযোগ, নির্দিষ্ট কোনো লিঙ্গের আওতায় না পড়ায় তাদের সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে।

হিজরাদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠন ‘বাঁধন হিজরা সংঘ’ এর পরিচালক পিঙ্কি এএফপিকে জানান, আদমশুমারির কর্মকর্তারা অনুল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিজরাকে গণনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগেও অনেকবার বলেছি এবং এখনো বলছি, আমরা পুরুষও নই মেয়েও নই। আদমশুমারিতে আমাদের ‘অন্যান্য’ অথবা ‘হিজরা’ ক্যাটাগরিতে গণনা করা হোক।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের হিজরা সম্প্রদায় বহুদিন যাবত আদমশুমারিতে এবং অন্যান্য দাপ্তরিক নথিপত্রে তাদের ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি ভারতে হিজরাদের এ দাবি পূরণ করেছে সে দেশের সরকার। চলতি আদমশুমারিতে তাদের ওই ক্যাটাগরি বেছে নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। নেপালেও একই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত আদমশুমারিতে একটি কমিউনিটি বিল্ডিংয়ে বসবাসরত ১৭৫ জন হিজরার মধ্যে মাত্র ১০ জনকে গণনা করা হয়েছে।

তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রধান শাহজাহান মোল্লা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গণনায় হিজরাদের স্ত্রী অথবা পুরুষ লিঙ্গের ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের ২৭টি ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীকে গণনায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমাদের কর্মীরা হিজরাসহ সব মানুষকে গণনায় এনেছে।’

গত ১৫ মার্চে প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের গণনার মাধ্যমে ২০১১ সালের আদমশুমারি শুরু হয়। শেষ হয় ১৯ মার্চ।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে হিজরা সম্প্রদায় সবচেয়ে প্রান্তিক এবং তারা চরম বৈষম্যের শিকার। এ অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এমনটি হয়ে আসছে
সূত্রঃ
http://en.wikipedia.org/wiki/Transvestism#Origin_of_the_term
http://www.mathabhanga.com/details.php?id=18253&date=2010-04-08
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=2232134fd759dc90a4d4a1f27ef741ae&nttl=33532
http://www.techtunes.com.bd/reports/tune-id/10036
http://www.online-dhaka.com/95_497_3374_0-eunuch-dhaka.html
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৮
২৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×