somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিড়ালটি বেচে আছে আবার মরে গেছেঃ শ্রোয়েডিংগারের সংকট

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

থলের বিড়াল না, কালো বিড়াল না, বাক্সের বিড়াল টি এবার বের হলে হতে পারে।যদিও এ এক গল্পের বিড়াল।সত্তর বছর আগে পদার্থবিদ শ্রোয়েডিংগার যাকে সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্ত বৈজ্ঞানিক ধ্যান ধারনার জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। সত্যি সত্যি যন্ত্রপাতি দিয়ে ল্যাবরেটরিতে করার বদলে বিজ্ঞানীরা মনে মনে এই এক্সপেরিমেন্ট করে থাকেন। শ্রোয়েডিংগারের সেই কল্পনার এক্সপেরিমেন্টে একটি বেড়াল আছে একটি বাক্সের মধ্যে, কিন্তু বেড়ালটি বেচে আছে কি মারা গেছে এ প্রশ্নের সাধারন কোন উত্তর নেই, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে বেড়াল টি বেচে আছে আবার মারা গেছে এই দুই অবস্থাতেই বিদ্যমান। আপনি কিন্ত আস্তে আস্তে কোয়ান্টাম মেকানিক্সে প্রবেশ করছেন। চলুন তো দেখি সোজা ভাবে কোয়ান্টাম মেকানিক্স কি? খুব কি জটিল? আপনিই বিচার করুন এই গল্পটি পড়ে।

শ্রোয়েডিংগারের সংকট

বেড়ালের বাচা মরার এই অদ্ভূত সিদ্বান্তের কারন হল আধুনিক পদার্থবিদ্যার নতুন শাখা কোয়ান্টাম মেকানিক্স। এর নিয়ম অনু্যায়ী একই বস্তু দুই রকম অবস্থার মধ্যে একটি উপরিপাতন থাকতে পারে। অর্থ্যাৎ কিনা সে বস্তুর অবস্থান, গতি ইত্যাদির বর্ননা একই সঙ্গে বিভিন্ন হতে পারে। একটি অর্ধ স্বচ্ছ, অর্ধ প্রতিফলক – এ রকম একটি কাচের ওপর তেরচা করে আলোকরশ্মি ফেললে কিছু আলো এর মধ্য দিয়ে চলে যায় আর কিছু আলো এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়। একে বলা হয় রশ্মি বিভাজক। ওই রশ্মিতে যদি আলোর একটি মাত্র কনা (ফোটন) থাকে যার বিভাজন সম্ভব না, তাহলে হয় ফোটনটি কাচের মধ্য দিয়ে যাবে না হয় প্রতিফলিত হবে।

এখন শ্রোয়েডিংগারের কল্পনার এক্সপেরিমেন্টের বাক্সের বেড়ালের সাথে আরোকিছু ব্যাবস্থা আছে। এতে আছে একটি বিষ ভরা পাত্র। অলোর ফোটন যদি সরাসরি বাক্সে যায় তা হলে বিষ ভরা পাত্রে তা আঘাত করবে আর বিষ মাটিতে পরে বেড়াল্টি মারা যাবে। আর যদি আলো প্রতিফলিত হয় তা হলে ফোটন বাহির দিয়ে চলে যাবে আর বেড়ালটি বেচে থাকবে।

কোয়ান্টাম তত্ত্ব কিন্ত আসলে বলেনা যে ফোটন হয় ভেতর দিয়ে গেছে না হয় প্রতিফলিত হয়েছে, এ তত্ত্বের কাছে কিন্ত ব্যাপারটা- হয় এটা নয় ওটা- এ রকম ব্যাপার নয়, বরং উভয়েই একের সাথে অন্যে জড়ানো। অর্থ্যাৎ কিনা বেড়ালটি বেচেও আছে মরেও গেছে। যতক্ষন পর্যন্ত কেউ বাহির থেকে বাক্স খুলে ভেতরের সত্যিকার অবস্থা জানতে নাপারে ততক্ষন পর্যন্ত এটি বেচে আছে আর মরে গেছে দু অবস্থাতেই আছে। এই অবস্থা যে ব্যাখা করতে পারে তার নাম কোয়ান্টাম মেকানিক্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্স যতটা বিজ্ঞান ততটাই আধ্যাতিক।

যে মুহুর্তে জানা যাবে তখন ওই পর্যবেক্ষনের ক্রিয়াটির একটি অবস্থার অবসান ঘটবে। বেড়ালটি তখন হয় মরে যাবে না হয় বেচে থাকবে। তার আগ মুহুর্তে বেড়ালটি কোন অবস্থায় আছে তা বলা যাবে না, কারন তার বর্ননা দেবার দায়িত্ব কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আওতায় সাধারন বুদ্বির না।

এটিই শ্রোয়েডিংগারের বিখ্যাত সংকট, কোয়ান্টাম মেকানিক্স যাকে অবশ্যাম্ভাবী করে তুলছে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স যে খাটি তত্ত্ব তা অসংখ্যবার বহুভাবে নিশ্চিত হয়ে একেবারে সন্দেহাতীত। শ্রোয়েডিংগার নিজেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একজন স্থপতি। মানুষের সাধারন বুদ্বি যেখানে অচল সেখানে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অবতারনা।

সাধারন বুদ্বির দ্বিধা
স্পষ্টতঃই ব্যাপারটা সাধারন বুদ্বিতে মানা যায়না। সার্বিকভাবে কোয়ান্টাম মেকানিক্স সব কিছুতেই এই ভাবে কথা বলে, ধরুন আমি একটি চাবির গোছা হারিয়ে ফেললাম, সেটি আপাতত আমি খুজে পেলাম না, কিন্তু কোথাও না কোথাও সেটি নিশ্চয়ই আছে একথা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলবে যতক্ষন পর্যন্ত আমি ওটা খুজে না পাচ্ছি ততক্ষন পর্যন্ত ওটা কয়েকটি অবস্থায় থাকতে পারে। সাধারন বুদ্বিতে যতই অবিশ্বাস্য লাগুক এখানেই কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সার্থকতা যে শেষ পর্যন্ত তাকে মেনে নিতে হয়। বিশ্ব জগতকে সুন্দরভাবে উপস্থাপিত করার জন্য কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিকল্প নেই।

এ জন্যি পদার্থবিদরা অনেকে বলেন বিশ্ব আসলে একটি না, রয়েছে অনেকগুলো সম্ভাব্য বিশ্ব।পর্যবেক্ষন করার পর আসলে ঠিক হয় কোন বিশ্ব আসলে প্রাসাঙ্গিক। তার মানে হল, কোন এক বিশ্বে আপনি এই লেখাটা পড়ছেন আবার কোন এক বিশ্বে আপনি এই লেখাটা পড়লেন না, তা হলে আপনার কাছে কোনটি ঠিক মনে হবে? আপনার আশেপাশের পরিবেশ আপানার ওপর কোনটির প্রভাব জোড়াল তার ওপর নির্ভর করে আপনি বুজতে পারবেন আপনি আসলে এই লেখাটি পড়ছেন কি পড়েন নি।

এ যেন কোন বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর গল্প। আমি একই সাথে অনেক পৃথিবীতে বাস করছি। কল্পই বা বলি কি ভাবে? তা হলে বলতে হয় জগতের তাবত বড় বড় বিজ্ঞানীরা কল্প জগতে বাস করে।

সূত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৪৮
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×