somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুক অফ - রিড ইট, লাভ ইট, শেয়ার ইট

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেভেন্থ ষ্ট্রীট মেট্রো ষ্টেশন থেকে ইস্ট লস এঞ্জেলসে যেতে হলুদ লাইন বা ই লাইনের শেষ ষ্টেশন আটলান্টিক। এই পথে বেশ সুন্দর করে সাজানো ষ্টেশন রয়েছে। এই রুট তুলনা মুলক ভাবে নতুন মনে হয়। মেট্রোর বগি গুলো আধুনিক ও পরিস্কার। এখানকার বেশ কিছু ষ্টেশন মাটির উপরে এবং লাইনের পাশ দিয়ে বাস ও অন্যান্য গাড়ি চলাচলের রাস্তা রয়েছে। ট্রেন আসলে অন্যান্য গাড়ি থেমে যায়, ঠিক তেমনি রাস্তা ক্লিয়ার না থাকলে ট্রেন থেমে থাকে কিছুক্ষণ। যাত্রী মোটামুটি এই লাইনে একটু কম। বেশ কিছু অফিস গামীযাত্রী আসে যারা ইস্ট লস এঞ্জেলসে চাকুরী করে। এখানে ই এল এ সি, বা ইস্ট লস এঞ্জেলস কলেজ রয়েছে। এখনকার ছাত্র ছাত্রীরা ও এই লাইনে চলাচল করে। এই লাইনের অন্য প্রান্ত সান্তা মনিকায় গিয়ে শেষ হয়।
আটলান্টিক ষ্টেশনে নেমে রাস্তা পার হয়ে ২৬০ কিংবা ২৬১ নাম্বার বাসে করে রিগিন যেতে হয়। রিগিন বাস স্টপেজে নেমে একটু এগিয়ে গেলে আটলান্টিক বুলভার্ড। রাস্তার দুপাশে বিশাল এলাকা নিয়ে খোলামেলা মার্কেট এলাকা। এখানকার রালফ মলে সব গ্রোসারি সুন্দর করে সাজানো এবং সব কিছু পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে হল অনেকদিন পর, সেলফে অনেক রকমের মজাদার আইসক্রিম, দেখেই লোভ লাগে, নানা স্বাদের। সব কিছুতে দেখি কার্ডের কথা লিখা আছে। সিকিউরিটি কে এই কার্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, সে জানালো তোমার কি মেম্বারসিপ কার্ড আছে, না থাকলে কাউন্টারে জানালে তারা তাদের কার্ড দিয়ে তোমাকে ডিস্কাউন্ট দিয়ে দিবে, বেশ ফ্রেন্ডলি মনে হল, একই ব্যবহার পেলাম কাউন্টারে। ভাল এলাকা বলে এদের আচরন ও বেশ সুন্দর। এই মলের পাশাপাশি বেশ কিছু খাবারের দোকান ও আছে। অনেক ছাত্র ছাত্রী এখানে খাবার খায়। রাস্তা পার হলে আর ও অনেক শপ। বইয়ের দোকান বুক অফ আমাকে টানল। খুশি মনে বই এর দেকানে গেলাম। ভেতরে গিয়ে মনটা আর ও ভাল হহ্য গেল। নানান ধরনের বই, নতুন পুরাতন মিলে। পুরাতন গুলো ও নতুনের মত। একপাশে অনেক বই সাজিয়ে রাখা, এলফাবেটিকাল অর্ডারে, সবগুল সেলে দেয়া, দাম এক ডলার। একটা একটা করে দেখে যাচ্ছি। আমার সখ এখন সেন্ট্রাল ও সাউথ আমেরিকার ট্রাভেল গল্প পড়া। এখন পড়ছিলাম জার্নি থ্রু প্যারাগুয়ে। মজার বই, এর পর লাইনে আছে টার্ন রাইট টু মাচু পিচু। পেরুর ইঙ্কা সভ্যতার উপর লিখা বই। একটু দেখতে দেখতে পেয়ে গেলাম ডগিং স্টাইনবেক – একটা ভ্রমণের বই। বিল স্টেইগারঅয়াল্ডের লিখা। পেশায় অবসর ভোগী সাংবাদিক। আমেরিকার বিখ্যাত লেখক জন স্টাইনবেকের লিখা ট্রাভেল উইথ চার্লি বইটাতে স্টাইনবেক যে রাস্তা ধরে আমেরিকা দেখতে ১০০০০ মাইল পাড়ি দিয়েছিলেন সেটা অনুসরন করে সেখনে কি ছিল কি ছিল না তা বের করা। নতুন ধরনের ভ্রমণ বই। টুক করে নিয়ে নিলাম। এরপর কাউন্টারে গিয়ে ভ্রমণের বইয়ের লোকেশন জানতে চাইলাম। হাসি মুখে একজন এগিয়ে এসে আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলল এখানে দাম একটু বেশী হবে, তবে তোমার বই তুমি পেতে ও পারো। এখনে ৫ ডলার দিয়ে লোনলি প্ল্যানেট এর অনেক গাইড বই পাওয়া সায়, সাউথ ও সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশগুলোর। আমার আকর্ষণ ট্রাভেলগ। সময় কম ছিল তাই আর পেলাম না। হাতে নেয়া বইটা নিয়ে কাউন্টারে গেলাম, আমাকে একটা সুন্দর বুক মার্কার দিল। এই দোকানের শ্লোগান লিখা, রিড ইট, লাভ ইট, শেয়ার ইট। বইটা কিনে মনটা ভরে গেল। পাশেই রয়েছে বারগেইন শপ এখানে একটু কম দামে কাজের জিনিস পাওয়া যায়। এটা ও সুন্দর করে সাজানো। আজকে এখানে কিছু কেনার নেই। সামনে এই দুটো শপে আসতে হবে। ইস্ট লস এঞ্জেলসের মন্টেরি পার্কের আটলান্টিক বুলভার্ড এলাকার মলে ঘুরাঘুরি করে ভালই সময় কেটে গেল। এখান থেকে বাসে কিংবা রেজিনা থেকে বাস নিয়ে এক স্টপেজ পর আটলান্টিক ষ্টেশনে মেট্রোতে করে ফেরা যায়। এই মলের পাশেই বাস স্টপেজে ৭০ নাম্বার বাস কিছুক্ষণ পর পরই চলে। এই বাসে করেও ইউনিয়ন ষ্টেশনে গিয়ে সেখান থেকে নানা দিকে যাওয়া যায়। আটলান্টিক ষ্টেশন দিয়ে আবার ফেরার পথ ধরলাম। এখন বইটা পড়ছি, মাঝামাঝি আসতে পারিনি, লেখক এখন পর্যন্ত জন স্টাইনবেকের ভ্রমণ করা ১০০০০ মাইলের মধ্যে ২১০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়েছে। আমি ও মানস ভ্রমণ করছি তার সাথে। ভাল থাকবেন। হ্যাপি রিডিং...



সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:১৪
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×