somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রনমহি ডিম্ব মাতা তোমার চরণে।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রনমহি ডিম্ব মাতা তোমার চরণে। ডিম আগে, নাকি মুরগী আগে, এই প্রসিদ্ধ প্রশ্নের জন্য যুতসই উত্তর একটা ঠিক করা হয়ে গেছে সবার জন্য। উত্তর হিসাবে এসেছে মুরগী আগে। কারন ডিম আগে হলে ওখানে বেশ কটা প্রোবাবিলিটি সামনে খাড়া হয়ে যায়। প্রোবাবিলিটি সমুহ ঃ
১. ডিম ফারটাইল কিনা?
২. ডিম ফুটবে কিনা?
৩. ফুটলে বাচ্ছা মুরগ হবে নাকি মুরগী?
৪. বাচ্ছা মুরগ হলে নেক্সট স্টেপ কি হবে?(বংশবৃদ্ধি কেমনে হবে?) ইত্যাদি ইত্যাদি..

ইশ্বর অতি সিধা চালের, তিনি এসব প্রোবালিটির মাঝে নাই। তাই জগতে আসার সময় আমাদের হাতে একটা শুন্য ধরিয়ে দেন। আমরা থাকিও মায়ের পেটে শুন্যেরো মাজারে! সারা জীবন এক, দুই, তিন, করে করে লাখ লাখ পর্যন্ত হিসেব করে, মরার সময় আবার হাতে করে এক শুন্য নিয়ে চলে যাই। ইশ্বর আমাদের হাত থেকে শুন্যটা নিয়ে, তার উপরের আকি বুকি বিচার বিবেচনা করে, আমাদের স্বর্গে অথবা নরকে পাঠিয়ে দেন। সেখান কার ধারনাও আমরা জগতে বসে করতে থাকি। এবং স্বর্গ নরক ঠিক কোন জায়গায় তা গুগুল অথবা টমটম দিয়ে বার করতে না পেরে শূন্যের মাঝেই হা হুতাশ করতে থাকি।
এর মাঝে নাস্তিকরা বলেন, বেচে থাকতে কি আছে? ঘোড়ার ডিম। মরে গেলে কি আছে? ঘোড়ার ডিম। সুতরাং নিরন্তর উদরপূর্তি করো, মানুষের এবং ইশ্বরের সমালোচনা করো, কল্লা বাচানোর উপায় থাকলে ঈশ্বরের সাথে তুই তোকারী করে কথাও বলো! আর আস্তিকেরা ডিম না, ডিম না বলেও, আসলে সেই ডিমের মাঝেই বসবাস করেন। বসবাস করেন এক অচিন্ত শূন্যের মাঝে। শুন্য সদৃশ্য ডিম অথবা ডিম সদৃশ্য শূন্যের মাঝে।
ব্যক্তিগত প্যাচপ্যাচানি এবং কিঞ্চিত আকাবাকা জ্ঞ্যান দেয়া শেষ। আজকের এই লেখা, একেবারে সুজাসুজি ডিম নিয়ে। ডিম নিয়ে পরবর্তীতে আরো কয়েক পর্ব লেখার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু এই পর্বে শুধু মাত্র মানুষের উদরপূর্তি হয় এমন ডিম নিয়েই আলোচনা হবে। ডিম আসলে বহু জাতের এর মধ্য থেকে আমরা মানুষের বাচ্ছারা এবং বড়ো মানুষেরা ৪ জাতের ডিম আদরের সহিত খাই।
১. মুরগীর ডিম
২. হাসের ডিম
৩. কোয়েলের ডিম
৪. উঠ পাখির ডিম!
এ ছাড়াও জগতে খেতে বাধা নেই এমন বহুত প্রজাতির ডিম রয়েছে। তবে প্রাপ্যতার হিসেবে আমরা মুরগী, হাস, আর কোয়েলের ডিমের উপরেই ভরসা করি।
ঢাকা শহরে ১ কোটি লোকের বাস হলে প্রতিদিন গড়ে ৮০ লাখ ডিম এখানেই শেষ এই হিসেবের উপরে আন্দাজে মনে মনে এক জরিপ চালালে ৭০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন প্রায় ৭০০ কোটি ডিম টুস করে ফাটিয়ে, সিদ্ধ করে, ভাজি করে, এই সেই যেমন তেমন করে হোক খেয়ে ফেলছে। ডিম্ব মাতাকে প্রনাম করা ছাড়া আসলে আমাদের মনুষ্য জাতির আর কোন গতি নেই।
যাই তোমাকে রক্ষা করে তাই দেবতার আসন পায় মুরগী তবে নয় কেনো? !
মুরগির ডিম নিয়েই কথা প্যাচানো শুরু করা যাক। ডিম দুই প্রকার

A-মুরগীর গর্ভ হতে ভুমিষ্ট হবার পরের ৯ দিন অবদি ডিমের গ্রেড হলো এ।
B- মুরগীর গর্ভ হতে ভুমিষ্ট হবার পরের ২৮ দিন অবদি ডিমের গ্রেড হলো বি।

মুরগী জননীর ডিম পয়দা করার এবং উনাদের আবাসস্থলের ভিন্নতা হেতু ডিম হলো চার প্রকার। এরা আবার গ্রেড সিস্টেম, কিন্তু এইখানে শুন্য মানে সবার বড়ো! সবচাইতে ভালো! জগতের সকল শুন্যই শুন্য নয়।

০-পুরাই প্রাকৃতিক ডিম।
১-প্রাকৃতিক কিন্তু বন্ধী।(বড়ো ফার্ম)
২-ডাইরেক্ট ফার্ম (১ মিটার স্কয়ারে থাকেন মুরগী জননী একা একা! উনার নিজস্ব ফ্লাট!)
৩- এক মিটার স্কয়ার ভাড়া নিয়া থাকেন চারজন এক লগে! খালী মাটিতে পা পরে, আর গলার ঝুলনিতে ভরা খাদ্য, আরাম আয়েশ নাই, মনকষ্টে থাকেন তাই যে ডিম দেন তার মান ভালো না।

ডিম জননীর ডিম দেয়ার সাইজ অনুযায়ী আবার ডিম চার প্রকার। আমেরিকান রা এই ক্ষেত্রে এগিয়ে তারা সব চাইতে বড়ো ডিম অহরহ দেখেন। আমাদের মতো ফকিরা দেশে আমরা স্মল সাইজ এর সাইবকিছু নিয়াই তুষ্ট!

ছোট ডিম (small S)= ৫৩ গ্রামের নিচে যে ডিম।
মাঝারী ডিম(midium M)= ৫৩ গ্রাম থেকে ৬২ গ্রাম।
বড়ো দিম(large L)= ৬৩-৭২ গ্রাম।
বিশাল বড়ো ডিম(extra large XL)=৭৩ গ্রামের থেকে বড়ো ডিম।

আন্তর্জাতিক ডিম কোড অনুযায়ী, ডিমের সাইজ নির্ণয় অতীব জরুরী। একটা ডিম বলতে আপনি আসলে কতটুকু পরিমান বুঝাচ্ছেন এটা না জানলে কেক টেক বানাতে গিয়ে সর্বনাশ করে ফেলবেন জগতের!

জগতে সাত ভাবে ডিম সংরক্ষন করা হয়। আমাদের দেশে মনে হয় বেদিশা একটাই দিশা। আস্তো ডিম। কিন্তু না আন্তর্জাতিক ডিম কোডে বলা আছে আপনি সাত ভাবে ডিম নিয়ে ব্যবসা বানিজ্য করতে পারবেন। আসুন সেইদিকে যাওয়া যাক।
১. সাদা ডিম। একেবারে ডিমের বরফ ভার্সন(বড়ো, ছোট, মাঝারী প্লাস্টিকের বোতলে পাবেন)
২. হলুদ ডিম বা ডিমের কুসুম। (কুসুম কুসুম প্রেম পাওয়া না গেলেও, শুধু কুসুম, শুদ্ধ কুসুম ডিম পাওয়া যায়।)
৩. সিদ্ধ ছোলানো ডিম। ডিম একেবারে ভালো করে সিদ্ধ দিয়ে জারে ভরে প্রিজারব করা থাকে।
৪. অর্ধেক অমলেট, অলরেডি ডিম ভাজি করা আপনি কিনে এনে আবার ভাজি করে গপ করে খেয়ে ফেলতে পারবেন, আমার দুর্ভাগ্য এমন জিনিষ এখনও চোখে দেখিনি।
৫. আবার সাদা ডিম তবে লিকুইড।
৬. আস্তো ডিম, কিন্তু খোসা ছাড়ানো, মনে করে ডিম ভেঙ্গে বৈয়ামে ভরে যদি কোথাও নিয়ে যান তাহলে যেমন হবে আরকি।
৭. ডিম তো ডিমের মতই রাখবেন অইটা গুনলেই কি আর না গুনলেই কি!

এবার আসুন আমরা আন্তর্জাতিক রান্না বিজ্ঞানে কতভাবে ডিম রান্না হবে তা নিয়ে আলোচনা করি।
আন্তর্জাতিক রান্না বিজ্ঞান আসলে কন্ট্রল করে মোটামোটি ফরাসি নিয়ম কানুন। কারন ফরাসি ভাষা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত রান্নার ভাষা। আপনি হয়তো প্রেমের এবং চুমোর ভাষা বলেও জানেন!
সেই ভাষায় ডিম রান্না হয় মোট সাতভাবে।
কিন্তু অধুনা বিশ্বে শুধুমাত্র ডিম দিয়ে প্রায় ২০০ এর উপরে রান্না রয়েছে। মানে হচ্ছে ওই ডিশের মেইন আইটেম হলো ডিম। স্বীকৃত ভাবেই ১২২ পদের ডিম রান্না হয়।
সব থেকে রাক্ষুসে এবং আমার মতে, সব থেকে বিকৃত রুচীর ডিম রান্না হয় ফিলিপাইনে, ডিমের ভেতরে তার বাচ্ছা থাকে। রান্নার নাম বালট (Balot,) অথচ জগতের স্বীকৃত রুচির মানুষেরা এটাকে এক অসাধারন খাদ্য বলে উল্লেখ করেছেন। করতেই পারেন, মানুষের হিসাব নিকাশ বলে কথা।


আজকের পর্বে ডিম রান্না বিষয়ে আর কিছু বলে বিরক্তি আনতে চাচ্ছি না। তবে জেনে রাখুন আপনাদেরকে ছাড়ছি না!
পরবর্তী সময়ে, ক্যাবিয়ার, শামুক, মাছের ডিম, সাপের ডিম, কুমিরের ডিম, মানুষের ডিম নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে রেখে আজকের মতো আপনাকে বিরক্ত করার এই অধিবেশন এখানেই শেষ।

পাদটীকাঃডিমের ব্যবহার নিয়ে লিখতে গেলে, আমাদের দেশে যা চোখে ভাসে তা হলো, পচা ডিম ছুড়ে স্টেজ থেকে পচা প্রতিযোগী অথবা নিন্দনীয় ব্যক্তিকে নামিয়ে দেয়া। খাদ্য নষ্টের মাধ্যমে স্বীকৃত এটাই মনে হয় প্রথম প্রতিবাদ!
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×