তুরাগ ট্রাজিডি
বিডিনিউজ-এর তথ্য মতে, সাভারের আমিন বাজারে ডুবে যাওয়া বাসটি উদ্ধারের জন্য ডুবুরীসহ নৌবাহিনী ও দমকল বাহিনীর ডুবুরীরাও কাজ করছে। নৌবাহিনীর ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। ছয়জন করে দুটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করছেন তারা। চট্টগ্রাম থেকে আসা বিশেষজ্ঞ দল দুটির নেতৃত্বে রয়েছেন নৌবাহিনীর কমান্ডার আব্দুল আলিম।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমিনবাজারের সালেপুর সেতুর কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায় বৈশাখী পরিবহনের ওই বাসটি। এটি ঢাকা থেকে সাভার যাচ্ছিলো। রাত সাড়ে ১২টার দিকে নৌবাহিনীর এক স্যোনার বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম থেকে সাভারের সালেপুরে স্যোনার যন্ত্রটি নিয়ে পৌঁছান। এর কিছুণ পরেই যন্ত্রটি দিয়ে বাসটি সনাক্তের কাজ শুরু করা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান উদ্ধার অভিযানের সমন্বয়কারী মেজর হাসান। রাত সাড়ে ১২টায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আশা করছি, শিগগির বাসটি খুঁজে পাওয়া যাবে।’
তুরাগ নদীতে বাস খোঁজায় অংশ নেওয়া নৌবাহিনীর ডুবুরি নোমান রোববার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি নদীর ৯৫ ফুট তলায় প্রায় একঘণ্টা বাসটি খুঁজেছেন। প্রচণ্ড স্রোতের কারণে নদীর তলদেশে স্থির থাকা যাচ্ছে না বলে জানান নোমান। সাভারে তুরাগ নদীতে ডুবে যাওয়ার ২৫ ঘণ্টা পর বাসটির সন্ধান মিলেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন।
..................
উপরের সংবাদগুলো বিডি নিউজ থেকে নেয়া
................
আসুন উপরের সংবাদগুলো কিছু কাটা ছেড়া করি
প্রথমত: সর্বশেষ সংবাদ মতে, বাস থেকে মাত্র একটি লাশ উদ্ধারকারী (!?) পেয়েছে। তাহলে ৪০/৪৫/৫০/৬০ এতোগুলো (বিভিন্ন পত্রিকায় দেয়া সংখ্যা ছিলো বাস যাত্রির এমন) কোথায় গেলো। তাদের লাশ কোথাও কেন ভেসে উঠলো না? কারণ, মৃত মানুষের লাশ একটু দূরেই পাওয়া যাওয়ার কথা।
দ্বিতীয়ত: তুরাগ নদী (যেখানটায় বাসটি পড়ে গেছে, সালেহপুর ব্রিজের নিচে) আসলে কতপানি।
উদ্ধারে নিয়োজিতদের বক্তব্য যে পানির গভীরতা ৯৫ ফুট?! পানির গভীরতা আর তিব্র স্রোতের কারণে বাসটিকে খুজে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি শুধু হাস্যকর নয়, একদমই শিশু সুলভ কথা বার্তা।
বাংলাদেশের কোন নদীর গভীরতা কত তা বাংলাদেশের মানুষ জানে। আমাদের হাইকোর্ট না দেখাতেও পারতো তারা। তুরাগ নদীতে আর কয়দিন পরে সালেহপুর ব্রিজের নিচে ছাগল ঘুরে বেড়াবে...সেখানে নাকি পানির গভিরতা ৯৫ ফুট।
আর তীব্র স্রোতের বিষয়টিও হাস্যকর। কারণ ছবিতে দেখা যাচ্ছে কচুরি পানা রয়েছে প্রচুর পরিমান। যেখানে কচুরিপানা থাকে সেখানে স্রোত কোথা থেকে আসে?
.............................
তুরাগ নদীতে আমার নিজের অভিজ্ঞা:
দিন দশেক আগে তুরাগ নদীতে গিয়েছিলাম একটা প্রতিবেদনের জন্য। নদীর বুক জুড়ে অনেক জায়গায় নৌকা নিয়ে ঘুরলাম। নৌকার মাঝির কাছে জিজ্ঞাস করলাম এই নদীতে কত পানি। সে তখন নদীর মাঝখানে একটা সাইনবোর্ড (নাসিম সিটি) দেখিয়ে বললো, এই বাশ দেখে বোঝেন না কতপানি। নদীতে কোনো পানি না। বেশি হইলো পনেরো হাত।
৯৫ ফুট আর তিব্র স্রোতের কারণ কী:
তিব্র স্রোত আর ৯৫ ফুট গভীরতার কথা আসলে মিথ্যা। বিডি নিউজ স্থানীয় মানুষের আশঙ্কা দিয়ে সত্য তথ্যটাকে একটু অন্যরকমভাবে পরিবেশন করেছে, তা হলো স্থানীয় মানুষ সন্দেহ করছে ঘন ঘন ডুবুরি পানির নিচে যাচ্ছে আসলে লাশগুলো সরিয়ে ফেলেত।
আর এই কারণে স্থানীয়রা নিজেই যখণ বাস উদ্ধারের জন্য পানির নিচে নামতে চেয়েছে ঠিক তখনই বাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে স্থানীয় আ.লীগের এমপি মুরাদ জং মাইকে ঘোষণা দিলেন! কী সেলুকাস!
রাষ্ট্র বনাম ৪০/৪৫/৫০/৬০ লাশ
সংখ্যায় শাসকশ্রেণী ডরায় না
এতোগুলো লাশ গেলো কোথায়? এই বাসের যাত্রীরা অধিকাংশ সাভারে বসবাসকারী মানুষ। ঢাকা থেকে বাসায় ফেরার পথে তারা দূর্ঘঠনার স্বীকার হয়েছেন। খুব সঙ্গত ছিলো তাদের লাশগুলো আপনজনের কাছে যাওয়া। রাষ্ট্র এখনো সেই ব্যবস্থা করতে পারেনি। আমরা নাগরিক হিসেবে আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী এতোগুলো মানুষের মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করবেন। এটা লোক দেখানো না। এতোগুলো মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো। রাষ্ট্রের সেই আয়োজনের কোনো লণ দেখা যাচ্ছে না।
নিখোজ যাত্রীদের স্বজনেরা অপোয় থাকবেন আপনজনের বাসায় ফেরার। যদি লাশটাও পাওয়া যায় তাহলে সেই অপোর এক বিয়োগান্ত সমাপ্তি হবে। কিন্তু লাশ না পেলে অপোয়র সময় বাড়বে, সেই অপো হয়তো আমৃত্যু করতে হবে। রাস্ট্রের কাছে মৃত মানুষ এতো ভয়ের কেন? নিহতদের কেউ এসে কারো ঘাড় মটকাবে না এটা নিশ্চত করে বলা যায়। মানুষগুলোর সবাই বিএনপি অথবা আওয়ামী বিরোধী মতেরও ছিলো না এটাও নিশ্চিত করে বলা যায়।
আমাদের চেনা জগতে কোনো প্রতিবাদ নেই। জীবিত মানুষ কোনো প্রতিবাদ করছে না। রাষ্ট্রের সকল অত্যাচার সহ্য করে আমরা গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা অবিচল রেখেছি। এর থেকে আরো বড় দূর্ঘটনা ঘটলেও আমরা দ্বি দলীয় গণতেন্ত্রর প্রতি অবিচল আস্থা রেখে প্রমান করবো আমাদের চামড়া গন্ডারের চেয়েও বেশি মোটা। ফলে রাষ্ট্রের শাসকশ্রেণীর কোনো ভয় নেই, মৃত দেহ দেখে আমরা ফুশে উঠবো; এই ভয়ের কোনো কারণ নেই।
এতোগুলো মুখ তাদের প্রিয়জনদের কাছে আর ফিরে আসবে না। প্রিয়জনরা অপোয় থাকবেন। সেই অপোর প্রহর শেষ হবে কী হবে না, তা আন্দাজ করতে পারছি না। কারণ বাংলাদেশে দূর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা কমিয়ে বলা নাকি সরকারগুলোর সফলতা। সরকার তার ঘরে শতভাগ সফলতার বীজ তুলুক, আমরা ফেরত চাই নিহতের লাশ।