আজকাল ল্যাপটপ এর প্রয়োজনীয়তা যেমন বাড়ছে তেমনি কমে আসছে এর বাজার দর। আর সিটিসেল জুম, জিপিআরএস ও এজ এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারনে চলার পথে ল্যাপটপ যেন আজ অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। যেখানেই যাচ্ছেন আপনার সাথে থাকছে ল্যাপটপ যার মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট কানেকশান। চিন্তা করে দেখুন, দুনিয়া যেন আজ হাতের মুঠোয় নয় বরং দুনিয়া আজ আপনার হাতের আঙ্গুলে!
এবার আসুন ল্যাপটপ কেনার আগে যা দেখে নিলে আপনি পাবেন আপনার প্রয়োজন মেটাবে এমন একটি ল্যাপটপ। আমার মতে ল্যপটপ কেনার আগে আপনার প্রয়োজন এবং দাম এই দুটির দিকই চিন্তা করে দেখে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে ৪৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয় এক লাখ টাকা দাম পর্যন্ত। তো চলুন দেখে নেই ল্যপটপের খুটিনাটি, যেন ল্যাপটপ কিনতে গেলে আপনি মিলায়ে নিতে পারেন আপনার কোনটি দরকার এবং কেন দরকার।
প্রসেসরঃ কম্পিউটার আসলে বেশ কয় একটি আলাদা আলাদা যন্ত্রের সমন্বয়। এর বিভিন্ন অংশ প্রস্তুত করে বিভিন্ন কোম্পানি। কম্পিউটারে প্রসেসর নামক অংশটি এতই গুরুত্বপূর্ন যে, আমরা সাধারন মানুষরা এই যন্তটির নামানুসারেই সম্পুর্ন কম্পিউটারটির নামকরন করে থাকি। আপনি হয়ত প্রায়ই শুনে থাকবেন যে পেন্টিয়াম ৪, ডুয়েলকোর, এ এমডি ইত্যাদি কম্পিউটার। আসলে এইগুলো হলো প্রসেসরের নাম। আপনার বাজেট যদি কম হয়, এবং ভিডিও এডিটিং, পিকচার এডিটিং এর মত কাজ যদি করতে না হয় তাহলে আপনি নিতে পারেন সেলেরন প্রসেসর। যদি ভিডিও কিংবা পিকচার এডিট করার মত কাজ করতে হয় তাহলে নিতে পারেন ইন্টেল কম্পানির সেন্ট্রিনো কিংবা ডোয়েল কোর প্রসেসর। এেেত্র এমডির পারফরমেন্সও কিন্তু ভালো।
র্যামঃ আজকাল র্যাম নিয়ে অনেক বিভ্রন্ত ধারনা রয়েছে। অনেকের ধারনা র্যাম যত বেশী হবে, কম্পিউটারের ও তত বেশী স্পিড হবে। এ ধারনাটি কিন্তু সম্পুর্ন সত্য নয়! কেননা এই বেশীটি কত বেশী হবে এরও রয়েছে একটি লিমিট। ধরুন আপনি যদি উইন্ডোজ এক্সপি ব্যাবহার করেন এবং কোন এডিটিং সফ্টওয়্যার ব্যাবহার না করেন তাহলে ৫১২ র্যাম ই আপনার জন্য যথেষ্ট। সাধারনত ২০০ থেকে ৩০০ মেগাবাইট র্যাম ব্যাবহার করেই আমাদের প্রয়োজন মিটে যায়। বাকী র্যামটুকুন খালিই পড়ে থাকে। এেেত্র যদি আপনি ১ গিগা র্যাম ও লাগান তাহলে অব্যাহৃত র্যামের অংশের ই বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু আপনার কম্পিউটারের স্পিড কিন্তু বারছেনা। কারন আপনার কম্পিউটারে ৩০০ মেগা’র বেশী র্যামের প্রয়োজনই নেই। তাই র্যাম ৫১২ মেগাবাইট ই যথেষ্ট যদি কোন এডিটিং সফ্টওয়্যার আপনি ব্যাবহার না করেন। আর যদি এডিটিং সফ্টওয়্যার ব্যাবহার করেন তাহলে র্যাম লাগিয়ে নিন ১ কিংবা ২ গিগাবাইট।
ওয়াই-ফাইঃ ওয়াই ফাই হচ্ছে ওয়্যারলেস ল্যান কার্ড। যদি আপনার কাছে এপি (একসেস পয়েন্ট, অর্থ্যাৎ ওয়ারলেস রাউটার) থাকে তাহলে আপনার ল্যাপটপে ল্যান এর তার আর কষ্ট করে লাগাতে হবেনা। ল্যাপটপ অন করা মাত্রই হয়ে যাবেন ল্যানের সাথে কানেকটেড। বড় বড় এয়রপোর্ট ও হোটেল এ এপি লাগানো থাকে। তাই আপনার ল্যাটপটি চালু করার সাথে সাথেই পেয়ে যাবেন ইন্টারনেট। এর জন্য কোন ল্যান কেবল লাগানেরা দরকার নেই। কিছু ল্যাপটপে এই ওয়াই-ফাই বিল্ট-ইন থাকে, কিছুতে ওয়াইফাই কার্ড লাগাতে হয়। আমার মতে বিল্ট-ইন থাকাটাই ভালো। এতে কার্ড বহন করার ঝামেলা আর থাকেনা।
অপটিক্যাল ড্রাইভঃ কমবো ড্রাইভ যদি হয় তাহলে আপনি সিডি রাইট করতে পারবেন এবং ডিভিডি দেখতে পারবেন। যদি আপনার ডিস্ক খুব একটা রাইট করতে না হয় তাহলে আপনার জন্য কমবো ড্রাইভই যথেস্ট। কিন্তু যদি ডিস্ক রাইট করতে হয় তাহলে বেটার ডিভিডি রাইটার নিয়ে নিন। কেননা ডিভিডি রাইটার থাকলে আপনি সিডি, ডিভিডি সবই রাইট করতে পারবেন।
ভিজিএ মেমরিঃ যদি ভিজিএ ১২৮ মেগাবাইটের হয় তাহলে স্পষ্ট ও নিখুত ছবি আসবে। তাই ১২৮ মেগাবাইটের নীচে যেন ভিজিএ মেমরি না হয় তা খেয়াল রাখবেন। আর যদি এডিটিং এর কাজ করেন তাহলে কম পে ২৫৬ মেগা ভিজিএ মেমরি নিতে ভুল করবেননা।
বেটারি ব্যাকাপঃ খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি ব্যাপার। ব্যাটারি ব্যাকাপ যেন কম পে ২ ঘন্টা হয় এদিকে খেয়াল রাখবেন। আর ৩ ঘন্টার ব্যাকপ হলে বেশ ভালো হয়।
ওয়াইড স্ক্রিনঃ হ্যাঁ যদি ওয়াইড স্ক্রিন হয় তাহলে খুবই ভালো হয়। বড় স্ক্রিনে কাজ করে, মুভি দেখে বেশ মজা পাবেন।
অপারেটিং সিষ্টেম ঃ অবশ্যই উইন্ডোজ এক্সপি। কেননা মাইেক্রোসফ্ট ভিস্তার এখনো কোন স্টেবল ভার্সন বের হয়নি। এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু সফ্টওয়্যার এখনো ভিস্তাতে ইনষ্টল হয়না। তাই ভুলেও ভিস্তা নির্ভর ল্যাপটপ নিবেননা।
এইতো, মেজর পার্টসগুলো সম্পর্কে আলোচনা তো হয়েই গেল। এবার ব্র্যান্ড কি সনি না কমপেক না তোশিবা তা তেমন বড় ব্যাপার রইলো না। আর বাকী টুকটাক জিনিস, যেমন কয়টা ইউএসবি পোর্ট কয়টা থাকবে, ব্লুটুখ, ইনফ্রারেড, ফায়ারওয়্যার পোর্ট ইত্যাদি থাকবে কিনা এইসব আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী দেখে নিবেন। আশা করি এবার ল্যাপটপ কিনার সময় একটু বেশী আতœবিশ্বাসের সাথেই কিনতে পারবেন।