কালের আবর্তে ভাষা আন্দোলনের অনেক স্মৃতি হারিয়ে গেলেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী কার্জন হল। নেই সেই আম গাছ, নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কলা ভবন। কিন্তু কার্জন হল যেন স্বমহিমায় জানান দিয়ে যাচ্ছে প্রতিবাদের কথা। উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ উচ্চারিত হয় এই ঐতিহাসিক কার্জন হল ভবন থেকে। ১৯০৪ সালে ভারতের ভাইসরয় লর্ড জর্জ নাথানিয়েল কার্জন এ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তাঁরই নামানুসারে এ ভবনের নাম হয় কার্জন হল। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে ঢাকা হয়ে ওঠে পূর্ববঙ্গ ও আসামের রাজধানী। কার্জন হল তখন ব্যবহার হতো প্রাদেশিক রাজধানীর দফতর হিসেবে। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পরে কার্জন হল ঢাকা কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এ ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। এখন পর্যন্ত সেভাবেই চলছে। ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ । এদিন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা এলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি স্বদম্ভে ঘোষণা দিলেনÑউর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা। সমবেত শিক্ষার্থীরা না না বলে তখন ঘোর প্রতিবাদ জানালেন। আর তখনই ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায় কার্জন হল। বর্তমানে কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিজ্ঞান অনুষদের অধিকাংশ বিভাগ এ ভবনটিতে। হাইকোর্ট ভবনের দক্ষিণ দিকে এই ঐতিহ্যবাহী কার্জন হল ভবনটি অবস্থিত। ভবনটির পশ্চিমে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং দক্ষিণে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল। কারুকার্যখচিত বিশাল এ ভবনে রয়েছে একটি বিশাল কেন্দ্রীয় হল। এর বাইরের রঙ লাল। ভবনটির সামনে রয়েছে একটি প্রশস্ত বাগান, যেখানে সবুজের বুক চিরে পশ্চিম থেকে পূর্বে চলে গেছে একটি রাস্তা। এর পেছনে রয়েছে একটি বিশাল পুকুর যার পশ্চিম পারে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের মূল ভবন। দ্বিতল এ ভবন ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য হিসেবে বিবেচিত। ভবনটিতে সংযোজিত হয়েছে ইউরোপ ও মোগল স্থাপত্য রীতির অপূর্ব সংমিশ্রণ। এটি বিশেষ করে পরিলক্ষিত হয় অভিক্ষিপ্ত উত্তর দিকের সম্মুখভাগের অশ্বখুরাকৃতির খাঁজকাটা খিলানের মাঝে। আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যা এবং মোগল কাঠামোর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এর খিলান ও গম্বুজ। এর গম্বুজগুলো আবার আধুনিক ইসলামী স্থাপত্যবিদ্যারও নিদর্শন। স্থাপত্যবিদরা জানিয়েছেন, সম্রাট আকবর নির্মিত ফতেহপুর সিক্রির দুর্গের সঙ্গে এ ভবনের স্থাপত্য নকশার মিল রয়েছে। বর্তমান কার্জন হল ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাজে ব্যবহৃত হলেও এটি ছাত্রছাত্রীসহ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্রও বটে। প্রতিদিন বিকেলে এখানে জমে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও দেশ-বিদেশের বিনোদনপ্রিয় হাজারও মানুষের আড্ডা। রাজধানী শহরের কোলাহলের মধ্যেও কার্জন হলের সবুজের সমারোহে অনাবিল আনন্দের মাধ্যমে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন প্রকৃতির কাছে।
আলোচিত ব্লগ
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!
হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।