somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সমীপেষু

১৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী,
গতকাল এইচ,এস,সি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।ঐ হাস্যোজ্জ্বল আর উল্লাসী মুখগুলো দেখেছেন?আমিও ছিলাম একসময় এদের সাথে।হাজার স্বপ্ন নিয়ে আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।কতটা কষ্ট করলে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজেকে যোগ্য করা যায় জানেন?তাঁর চেয়েও বড় কথা কতটা পরিশ্রম আর মেধা দিলে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হওয়া যায় জানেন??এখানে কাউকে ধরে চান্স পাওয়া যায় না,কাউকে ধরে শিক্ষক হওয়া যায়না,এজন্যই ঐ শিক্ষার্থীগুলোর মাঝে অধিকাংশই চায় এই যায়গায় আসতে।
আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এটা কোন প্রতিষ্ঠান?
কারো যদি যোগ্যতা না থাকে তো সে কখনোই এখানে কোন সুবিধা পাবেনা,তাহলে কিসের লোভে তাঁরা অসুস্থ রাজনীতিতে লিপ্ত হবে গবেষণা বাদ দিয়ে?
আপনি কি জানেন,আমাদের ৭০% এর বেশি শিক্ষক বাইরে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব কে তোয়াক্কা না করে এখানে ফিরে এসেছেন,আজ যদি তাঁরা চলে যাল ঐ দুই জনের জন্যে তাহলে তাঁদের জীবন যে থামবেনা সেটা কি আপনি জানেন??থামবে এই প্রতিষ্ঠান থেমে যাবে আমাদের এই হাজারো মেধাবীর জীবনের সম্ভাবনা।তারপরো আপনার মুখ থেকে বক্তব্য এসেছে যদি তাঁরা গণপদত্যাগ করেন তাহলে এই প্রতিষ্ঠানের কি হবে এই প্রসঙ্গে,
"দেখা যাক না কি হয়? "
আপনি কিভাবে এই দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠের এমন পরিস্থিতিতে এই কথা বলতে পারলেন যে দেখা যাক না কি হয়!!
আমরা কি আপনাদের এক্সপেরিমেন্টের গিনিপিগ??আমাদের প্রতি কি দায়িত্ব নেই আপনার?আপনার কি ধারণা এভাবে দিন রাত পড়াশনা আর বাড়ীঘর ফেলে বসে থাকতে আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি? আপনার কি মনে হয় যে আমাদের আর আমাদের শিক্ষকদের অভ্যাসই এভাবে রাস্তায় রাস্তায় বসে থাকা?যদি মনে হয় তো আপনার ভুল মনে হয়!আমি আবারো বলছি সম্পুর্ণ ভুল মনে হয়!ওটা আপনাদের পোষা ছাত্রলীগের অভ্যাস হবে,আমাদের মত যারা সত্যি নিজের জীবন,সমাজ আর দেশ টা কে গড়বার স্বপ্ন দেখি,আমাদের অভ্যাস এমন না।
আজকের পত্রিকার ঐ আনন্দিত আর গর্বিত মুখগুলীকে দেখে সত্যিই আজ আমি খুশি হতে পারিনাই,বারে বারে মনে হয়েছে কোথায় যাবে তোমাদের ভবিষ্যত?যেই দেশের সরকারের কাছে তোমাদের স্বপ্নের চেয়ে নিজের দল বড়,সেই দেশটা তোমাকে কি দেবে?
আমাদের শিক্ষকদের আন্দোলনে আপনি ও আপনারা ষড়যন্ত্র খুঁজে পান,কেন জানেন??কারণ বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র ছাড়াও যে দেশে আপনাদের কাজে হতাশ কেউ থাকতে পারে আপনারা ভুলে গেছেন।আপনারা ভুলে গেছেন সাধারণ জনতা নামক গোষ্ঠী টাকে,যাদের প্রতি আপনাদের দায় দায়িত্ব।আর আমি এবং আমরা যারা এই প্রতিষ্ঠানের জনতা,আমি আবারো বলি,সাধারণ জনতা,আমরা তাঁদের প্রতিটা পদক্ষেপে আমাদের প্রতি তাঁদের দায়িত্ব আর ভালোবাসা দেখতে পাই।তাঁদের কে আমরা কাছ থেকে চিনি,তাঁরা আমাদের ক্ষতি চান না ভালো ছান দয়া করে আমাদেরকে বুঝাতে আসবেন না।আমরা যথেষ্ট বড় হয়েছি,নিজে বুঝতে জানি।

যেই ভি,সি মনে করে সে এত ক্ষমতাবান যে সে আমার প্রতিষ্ঠানকে বিক্রি করলেও কারো প্রশ্ন করার অধিকার নাই,তাকে আপনার ষড়যন্ত্রকারী কখনো মনে হবেনা।যে বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক এনে আমার এই সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান টাকে নিচে নামিয়ে আনতে চায় তাকে আপনার আমাদের সাধারণ ছাত্রদের স্বার্থবিরোধী মনে হয়না।বরং তারই সুরে আপনি কথা বলে যান।তখন আমি সন্দেহে পড়া যাই,আপনি আসলে কতটুকু আমার বা আমার প্রতিষ্ঠানের ভালো চাচ্ছেন।

যখন ছাত্রলীগ আমার ক্যাম্পাসে প্রশাসনের ছায়ায় চাঁদাবাজি করে,তখন আপনি কেন বিব্রত হননা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী?
যখন ভি,সি মহোদয় আমার প্রতিষ্ঠান টাকে বিক্রয় করে দেবার মত,বাইরে থেকে শিক্ষক নিয়োগ দেবার মত দম্ভ করে,তাকে এখনো পদে রেখে কেন আপনি বিব্রত হন না?
কেন আপনি আমার শিক্ষকেরা তাঁর প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষায় তাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আল্টিমেটাম ঘোষনা দিলেই আপনার বিব্রত বোধ হয়?

আপনি নিজের কলেজকে পুড়ে যেতে দেখে কাঁদেন,আমি যখন আমার প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখে কাঁদি,আপনের কেন মনটা বিচলিত হয়না?
হয়ত আমার এই সকল কথাই অরন্যে রোদন।আপনার কানে কিছুই হয়ত যাবেনা,কারণ আপনি কানে তুলো গুঁজে আছেন,চোখ বন্ধ করে আছেন,নয়ত একবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাতারে যদি নামতেন আমাদের অন্তরের হাহাকারটা যদি শুনতেন।তো আপনার এত সময় আর এত দিন লাগত না একটা সিদ্ধান্তে আসতে।

আমি বিনীত অনুরোধ করব,আপনার যদি ইচ্ছা না থাকে আমাদের সমস্যা সমাধানের তো চুপ করে বসে থাকেন আরো দশটা সরকার দলীয় লোকের মত।তবুও আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের অপমানের বিন্দুমাত্রও চেষ্টা করবেন না।

আর শ্রদ্ধেয় স্যার ও ম্যাডামেরা,ভুল করেছেন আপনারা,যে ভেবেছেন আপনি এই দেশে ফিরে এসে যথাযথ সম্মান পাবেন।ভুল সিদ্ধান্ত ছিল আপনাদের।এই দেশে শুধু তারাই সম্মান পায় যারা মুখোশ পরে থাকে,সর্বদা জ্বী হুজুর জ্বী হুজুর করে।অন্যায়কে যারা হজম করে তারাই এগিয়ে যায়।

প্রিয় প্রতিবাদী ভাই ও বোনেরা ,আমাদের ভুল হয়েছে যে আমরা ভেবেছি দেশের মানুষ আমাদের সাথে থাকবে।ভুল ভেবেছি আমরা যে মনে করেছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে কেঊ রাজনৈতিক ইন্ধন খুঁজবেনা।ভুল করেছি আমরা যে এই পঁচে যাওয়া সমাজে নিজে বিশুদ্ধ থাকতে চেয়েছি।আজ আমাদের ভবিষ্যত হুমকিতে কিন্তু তার জন্য আমি হতাশ নয়।যেই দেশটাকেই আজ অসুস্থ রাজনীতি গ্রাস করেছে,সেই দেশে আমি সুস্থ পরিবেশে থাকব এমনটা আমি আর আশা করিনা।
এই কয়দিনে আমার দেশটাকে,দেশের রক্ষকদেরকে,দেশের সমাজ ব্যবস্থাকে যেভাবে চিন লাম,তাতে কোন প্রকার আশা আর আমার হৃদয়ে সঞ্চার হয়না।আমার আফসোস হয় কেন আমি সবার মত মুখ বুঁজে থাকিনি,কেন আমি সত্যকে জয়ী দেখতে চেয়েছি।

চালিয়ে যান আপনারা,যে যা বলবেন বলেন।আমি জানি,আমার আত্মা জানে আমি বুয়েটকে ভালবাসি।আমি সঠিক ছিলাম,আমার শিক্ষকেরা সঠিক ছিল আর সবাই শুধু ভুলটাকেই আস্কারা দিয়েছে।

থাকুক নির্লজ্জ নজরুল আর হাবিবুর, থাকুক তাদের মদদদাতা সরকার আর গুটিকয়েক শিক্ষক আমরা যারা সত্যিই ভালবেসেছি বুয়েটকে,আমরাই বরং চলে যাই।আমার এক বান্ধবী আমাকে উৎসাহ দিয়েছিল,আমরা আর আমাদের স্যারেরা যেখানে দাঁড়াব সেটাই হবে আমাদের বুয়েট।হুম,সেই নতুন বুয়েটই কোন একদিন গড়ে উঠবে।

আমার ভয় হয় আবার আরেক উচ্চাশা করে ফেলছি!আস্পর্ধা মাফ করবেন।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×