বেয়াদবি মাফ করবেন। আমার মনে একটা অশালীন প্রশ্ন জেগেছে। এবং উত্তরটা জানতে খুব ইচ্ছে করছে।
ধরা যাক, ক একটি ছেলে এবং খ একটি মেয়ে। তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল বা ছিল না। ক দাবী করে বসল, খ এর সাথে তার সম্পর্ক নাকি ভীষণ অন্তরঙ্গ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। খ মানল না। ক মরিয়া হয়ে মেয়েটির শরীর সম্বন্ধীয় কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে বসল। সেটা সত্য নাকি মিথ্যা তা জানাটা বেশ কঠিন। অতএব, খ আদালতের দারস্থ হল।
আর ঠিক তখনি ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন বাংলাদেশী গণমাধ্যম। তারা ভাবলেন, মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো তাদের আশু কর্তব্য। তাই, তারা মেয়েটির অজান্তেই তার নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দিলেন তাদের চ্যানেলে। তাদের উদ্দেশ্য অতি মহৎ এবং নিষ্কলুষ। তাদের উদ্দেশ্য হল সত্য উদঘাটন, অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো এবং জনগণের Access to Information নিশ্চিত করা ।
অতএব,মেয়েটির সেই নগ্ন শরীরটি মিডিয়ার কল্যাণে সারা বাংলাদেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে, জুম ইন করে, রোটেট করে নানাভাবে দেখল। ষোল কোটি মানুষের চোখ মেয়েটির প্রাইভেসিতে অ্যাকসেস পাওয়ার পরে, ছেলেটির দেয়া বর্ণনার সাথে মেয়েটির শরীরের কোন মিল না পেয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, মেয়েটি সত্যিই বলছে। ছেলেটি তার শরীরে কোন অ্যাকসেস পায় নি। গণমাধ্যমও মেয়েটির সম্মান রক্ষা করতে পেরে যারপরনাই আহ্লাদিত হলেন।
যে কোন তথ্যের সত্যতা অসত্যতা যাচাইয়ের তাহলে এটিই একমাত্র উপায়, তাই তো?
শুনতে হাস্যকর লাগছে? কিন্তু এই কাহিনী যে ঘটেছে, পাঠক। রুবেল আর হ্যাপির ব্যক্তিগত তথ্য যদি গণমাধ্যম পেয়েও থাকে, তবু সেটা জনগণের জানার কোন দরকার নাই। যদি সত্য প্রকাশই তাদের মূল লক্ষ্য হয়ে থাকত, তাহলে ওটা তারা আদালতে পাঠাতেন। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যগুলো এত অরুচিকরভাবে পাবলিক করে দিতেন না।
গণমাধ্যম, প্লীজ, সস্তা পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য এতটা নীচে নামবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮