somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাফাখুম পর্ব: ৩ পাহাড়ি নদীর পাড় ধরে ঝর্ণার কাছে

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রেমাক্রিখুমে টিলার উপরে ছোট বাংলো, নীচে মারমাদের বসতি; নাফাখুম পর্বঃ ১

নাফাখুম পর্ব ২: ঢাকা থেকে থানচি

সকাল সাতটার দিকে ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। আগের দিন সবাই একবোতল করে নদীর পানি নিয়ে এসেছিলাম, সেটা দিকেই মুখ ধুলাম। বাথরুমের জন্যে অবশ্য একটা ছেলে পানি তুলে কটেজের নীচে ড্রামে তুলে রেখে গেছে। প্রত্যন্ত পাহাড়ি জায়গা হলেও এরা রিংস্লাব বসিয়ে বাথরুমটা ভালো বানিয়েছে।

শীতের সকাল। চারদিকে কুয়াশা জমে আছে। আশেপাশে গাছের পাতার উপর শিশির জমে রয়েছে।

আজ একুশে ফেব্রুয়ারী। আগে প্লান করেছিলাম যে সকালে উঠে কাছের একটা স্কুলে ফুল দিতে যাবো। নদীটা পার হয়ে পাশের টিলার উপর যেতে হবে সেজন্য। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে রেডি হতে হতে আটটা পার হয়ে গেল।

সকালের নাস্তার জন্যে নীচে নামলাম। নদীর পাড়ের বাজারে। সেখানে আলুভর্তা, ডিমভাজি আর ডাল দিয়ে ভাত খেলাম। আমাদের থানচি থেকে আনা গাইড, নৌকার মাঝি আর এখান থেকে নেয়া একজন গাইডও ভাত খেয়ে নিল। (নাফাখুম যেতে হলে রেমাক্রি থেকে আবার একজন গাইড নিতে হয়। তার একদিনের ভাড়া পাচশ টাকা। এরা সাধারণত উপজাতীয় হয়, কারণ এখানে বাঙ্গালীদের বসবাস নেই।)


কটেজের বারান্দা থেকে তোলা, নিচে সাঙ্গু আর ছোট বাজার

পরিকল্পনা ছিল আটটার আগেই আমরা রওনা হয়ে যাব, কিন্তু রওনা দিতে দিতে নটা পার হয়ে গেল। ঘাড়ে একটা ব্যাগ নিয়েছি, তার মধ্যে টোস্ট বিস্কুট, আমার বড়শি (নাফাখুমে মাছ ধরার ইচ্ছায়) আর নীচ থেকে কলা কেনা হলো।

নাফাখুমের পানি একটা নদী হয়ে সাঙ্গুতে এসে মিশেছে। সেটাও অনেকটা সাঙ্গুর মতোই প্রশস্ত আর বড়। সেটার পাড় ধরে জঙ্গল ডিঙ্গিয়ে হাটতে শুরু করলাম। রাস্তায় গাইড আমাদের কয়েকটা বাশের লাঠি বানিয়ে দিল।

পথটা অসাধারণ। অপূর্ব। নিরব, তবে কোথাও কোথাও পাহাড়ি লোকজন নদীতে মাছ ধরছে, শামুক ধরছে, গোছল করছে। মাঝে মাঝে জঙ্গল শুনশান হয়ে রয়েছে।

পথে ফিরতি কয়েকটি গ্রুপের সাথে দেখা হলো। ওরা সকালে গিয়ে ফিরে আসছে। একটা গ্রুপ আবার আমাদের অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে গেলো। এই দিন সব মিলিয়ে পাচটি গ্রুপের সাথে আমাদের দেখা হয়েছে।

ঘন্টা দুয়েক হেটে নাফাখুমের দেখা পেলাম। সেখানে তখন একটা গ্রুপের লোকজন গোছল করছে। ওরা নাফাখুমে ঝাপ দিয়ে নামায় আমাদেরও বেশ সাহস হলো। এই ফাঁকে আমরা কলা দিয়ে টোস্ট খেলাম।


এটি একটি পাহাড়ি ফুল

গ্রুপটা চলে যেতে না যেতে আরেকটা এলো। ওরাও চলে যাবার পরে আমরা নাফাখুমের ভেতরে নামলাম। মিরাজ সাতার কম জানে বলে আর নামল না। আমরা অনেকক্ষণ দাপাদাপি করলাম।

ঝণার পানিতে প্রচন্ড স্রোত। পিঠে পড়ে পিঠ ব্যথা হয়ে গেল। :(( :P

তবে ঝর্ণাটি যতটা আশা নিয়ে দেখতে এসেছিলাম, তত চমৎকার কিছু মনে হলো না। বরং পথটাই অনেক ভালো লেগেছে।

ঘন্টা খানেক পড়ে আমরা আবার রওনা হলাম। আবার সেই একই রাস্তা ধরে ফেরা। পথে তিনবার নদী পারাপার করতে হলো। কিন্তু হাটু পানি বলে কোন সমস্যা হলো না। আমরা অবশ্য ব্যাগে একটা দড়ি নিয়ে এসেছিলাম, সেটা কোন কাজে লাগল না।

ঘন্টা দেড়েক হেটে আমার রেমাক্রি এসে পৌছলাম। আমার আর লাকি শেষে পৌছলাম, বাকিরা আগেই পৌছে গেছে। মিরাজ ভাতও খেয়ে নিয়েছে। আমরা সবাই একসাথে খেতে বসলাম। চরম ক্ষুধা লেগেছে।

ভাত, ডাল আর মুরগির মাংস নিলাম। ডিমভাজি ছিল, সেটাও দিতে বললাম। আক্ষরিক অর্থেই গপগপ করে খেলাম। :D

মিরাজ যেহেতু নাফাখুমে গোছল করেনি, তাই সে সাঙ্গুতে গোছল করতে গেল। আমরা বসে রইলাম। ও আমার পরে কটেজে উঠে পড়লাম।

বিকালে আর বাইরে যাবার প্লান নেই। কটেজের বারান্দায় তোষক বের করে তার উপর বসলাম। পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে সূর্য অস্ত যাচ্ছে। দিনের আলো আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে। চানাচুর আর চিপস খেলাম বসে বসে।

একটু পরে নীচের দোকানে গেলাম চা খেতে। সেখানে বসে অনেকক্ষণ গল্পটল্প হলো। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক মেম্বার অনেক গল্প করলেন। যেমন উনি কয়েকদিন পরে বার্মায় চলে যাবেন। সাঙ্গু নদী ধরে আরো সামনে এগিয়ে ছোট মদক, বড় মদক হয়ে রিজার্ভ ফরেস্ট পার হয়ে গেলেই বার্মা। সেখানে গিয়ে তিনি হয়ে যাবেন রাখাইন। তার অনেক আত্মীয়স্বজন সেখানে আছে। সেখানেই থাকবেন, এইসব।


আমাদের দোকানদার দাদা, এই দোকানে ভাত, ডাল, চিপস, মদ সব পাওয়া যায়, আবার রাতে ঘুমানোও যায়


বললেন, কিছুদিন আগে বিজিবির চারজন লোককে বার্মার বিদ্রোহী বাহিনী ধরেছিল। এইসব।

দোকানে বসে বসে চা খেলাম। পাশের দোকান তখন বার হয়ে গেছে। তিনজন বসে বসে রুই মাছ দিয়ে মদ খাচ্ছে।

আমরা রাতে ভাবলাম ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করব। মেন্যু টোস্ট, কলা, চিপস আর কোক। তবে লিনা কিছু খেলো না। তার মনে হয় মেন্যু পছন্দ হয়নি ;): :)

সারাদিন ঘোরাঘুরি পরে সবাই ক্লান্ত। তারপরেও অনেক রাত জেগে বারান্দায় আড্ডা হলো। লিভি বেশ কয়েকটা গান গাইল। বাইরে চাদের আলো। সেই আলো পড়েছে সাঙ্গুর উপর। কানে আসছে রেমাক্রিমুখের ঝর্ণার শব্দ। অদ্ভুত। পৃথিবীতে বা বাংলাদেশে আছি বলে মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এ যেন অন্য কোথাও চলে এসেছি।

বেশ রাত করেই ঘুমাতে গেলাম। এ পাশে রুমের মধ্যে একটা ছোট তাবু (কারণ রুমের একদিকে দেয়াল নেই), সেই তাবুতে আমি আর মিরাজ, অন্য রুমে মেয়েরা। খাট নেই কোন, কাঠের ফ্লোরের উপর তোষকের বিছানা।


নাফাখুম ঝর্ণা। নাফা মানে মাছ, অর্থাৎ মাছের ঝর্ণা

কাল সকালে উঠে রওনা দিতে হবে।

মনে হলো শুতে না শুতেই সকাল হয়ে গেল। সাতটার আগেই উঠে গেলাম। তাড়াহুড়ে করে মুখ টুখ ধুয়ে নিলাম। রেমাক্রিতে আর নাস্তা করা হবে না। একেবারে থানচিতে গিয়ে খাবো।

আটটার আগেই নৌকায় উঠে পড়লাম। নদীর পানি মনে হলো আরো কমে গেছে। কয়েক জায়গায় নেমে হাটতে হলো। সেই দোকানে খোঁজ নিলাম, নদীর চরে জঙ্গলের মাঝের ছোট দোকান, যেখানে বনমোরগ রাখতে বলেছিলাম। দোকানদার বলল, মোরগ পায় নি।




পথে কমপক্ষে দশটা গ্রুপ গুনলাম, যারা রেমাক্রি যাচ্ছে। বেশ কয়েকটা গ্রুপে মেয়েরাও আছে।

এবার তার তিন্দুতে থামলাম না। সাড়ে দশটার দিকে থানচি এসে পৌছলাম। আগের দোকানে গিয়ে দেখি নাস্তা শেষ। পাশের এক দোকানে পরোটা পেলাম, কিন্তু ভাজি নেই। আরেক দোকান থেকে ভাজি আনা হলো। এই দোকানে ডিমভাজি। নাস্তা হলো।

এখান থেকে বাসে করে যাবার পরিকল্পনা। আটটায় একটা বাস ছেড়ে গেছে। পরের বাস বারোটায়। কিন্তু বাসে নাকি চার/পাচ ঘন্টা লাগে। কিন্তু আমাদের অবশ্যই ছয়টার আগে বান্দরবান পৌছতে হবে। না হলে চিটাগাং এর বাস পাব না।


ঝর্ণার পথে একজন অভিযাত্রী

একটা জিপ যাত্রী নিয়ে এলো। দরাদরি করে প্রথমে বনল না। পরে আমরা আড়াই হাজারে যখন রাজি হলাম, বাসওয়ালারা আমাদের জিপে যেতে দেবে না। কারণ রিজার্ভ করে না এলে এখান থেকে নাকি জিপে লোক নেয়া যাবে না। তাদের হুমকিতে জিপওলাও পিছিয়ে গেল। শেষে উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাজারে পেয়ে, তার সুপারিশে তারা ছাড়তে রাজি হলো।

পাচসিটের জিপ। একটানে, দুইঘন্টায় বান্দরবান পৌছে গেলাম। এবার দিনের বেলায় রাস্তার চড়াই উতরাই বেশ টের পাওয়া গেলে। দুরে যেটা দেখছি পাহাড়ের উপর রাস্তা, একটু পর সেখানেই আমরা চলে এলাম। রাস্তায় এক জায়গায় থেমে পেপে খেলাম। কিন্তু বেশি ভালো না। বেলা আড়াইটার দিকে বান্দরবান এসে পৌছলাম।


দুরে তিন্দু বাজার

মেয়েরা একটু কেনাকাটা করল। আমি পাকা বেল কিনলাম। মিরাজ একটা ফাটিয়ে খেল। চমৎকার মিষ্টি।

তাজিনডং রেস্তোরায় ভাত, সবজি, গরুর মাংস, আর মাছ দিয়ে ভাত খেলাম।

চট্টগ্রামের বাসের টিকেট কাটতে গিয়ে শুনি কোন টিকেট নাই। ছুটির দিন বলে অনেক লোক এসেছে চিটাগাং থেকে, তারাই সব বুক করে রেখেছে। কিন্তু আমাদের চট্টগ্রাম যেতেই হবে।

ভাগ্যবশত একলোক চারটা টিকেট ক্যানসেল করল। টিকেটের লোক আমাকে সামনে সুপারভাইজারের একটা সিট দিল। তো, হয়ে গেল আরকি।


নাফাখুমের নদীতে মাছ ধরছেন স্থানীয় লোকজন

চট্টগ্রামে ঢুকে বিশাল জ্যামে পড়লাম। অবশেষে রাত দশটার দিকে রেল স্টেশনে পৌছলাম। বগিতে ঢুকেই গা ঠান্ডা হয়ে গেল। বগি পুরো ঠান্ডা হয়ে আছে। আর বেশ পরিষ্কারও।

ব্যাগট্যাগ রেখে রাতের খাবার হিসাবে বিস্কুট আর চিপস কিনলাম। স্টেশনের কলে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম।

বেশ আরাম করে একটা ঘুম দিলাম। ঢাকা মনে হলো অনেক তাড়াতাড়ি চলে এলো।


রেমাক্রিখুমে টিলার উপরে ছোট বাংলো, নীচে মারমাদের বসতি; নাফাখুম পর্বঃ ১

নাফাখুম পর্ব ২: ঢাকা থেকে থানচি
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫২
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×