আমি একটি ফাসকেলাশ মোবাইল। চীনের একটি অখ্যাত মোবাইল ফ্যাক্টরীতে আমার জন্ম। জন্মের পরই আমার গায়ে সিল মারা হয় ভকিয়া কোম্পানীর। তাতেই আমার দাম বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কিছুদিন পর নানারকম প্যাকেটে জড়িয়ে আমাকে পাঠানো হয় একটি নতুন দেশে। প্যাকেটের ভেতরে থাকার দরুণ কোনভাবেই জানার সুযোগ ছিলো না কোন দেশে যাচ্ছি আমি। বেশ কয়েকমাস প্যাকেটের ভিতরে ঘুমানোর পর একদিন হঠাৎ বুঝতে পারি আমাকে উন্মুক্ত করা হচ্ছে। প্যাকেট থেকে বের হয়েই দেখি এক ফ্রেন্চ কাট দাড়িওয়ালা ভোম্বল আমাকে হাতে নিয়ে দেখছে। বুঝতে পারলাম আমাকে কিনতে চায় এই লোক। কেমন লোভী বিশ্রী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দেহের দিকে। মাঝে মাঝে জিভ বের করে ঠোট চাটছে। কিছুক্ষণ পর সেই ভোম্বল দাম জিজ্ঞস করতেই আমার বিক্রেতা বললো দুই হাজার পাচশ দিরহাম। শুনে আমি বিস্ময়ে হতবাক। আমার মূল্য খুব বেশী হলে দুইশো দিরহাম হতে পারে। দুই হাজার দিরদাম তো কখনোই না। আমি আরো অবাক হলাম যখন সেই ফ্রেন্চকাট ভোম্বল দোকানীকে দুইহাজার একশ ছত্রিশ দিরহাম অফার করলো। আমার চালাক দোকানী তো তাতেই খুশী। তাড়াতাড়ি আমাকে প্যাক করে তুলে দিলো ভোম্বলটার হাতে। বাসায় নিয়ে একটার পর একটা ফোন করতে লাগলো আমাকে দিয়ে। প্রত্যেকের সাথে কথা চলছিল হাস্যকর ইংরেজী অথবা আরবীতে। এতো বাজে উচ্চারণ কোথায় শিখলো লোকটি? তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম পেলাম। তখনো তো জানি না সামনে কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে আমার জন্য। রাত তখন সোয়া একটা। হঠাত আমাকে হাতে নিলো আমার ফ্রেন্চকাট মালিক। দ্রুত আমার ভিজিএ ক্যামেরাটা অন করলো। তারপর...........! তারপর ঘটলো আমার জীবনের সবচেয়ে লজ্জাস্কর ঘটনাটি। সেই অসভ্য অভদ্র লোকটি নিজের গোপনাঙ্গটি আমাকে দিয়ে ভিডিও করা শুরু করলো। ছি ছি। লজ্জায় আমি তখন কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। নিজে থেকে কিছু করার ক্ষমতা তো স্রষ্টা আমাকে দেননি। নিরুপায় হয়ে সেই নোংরা লোকটির অদ্ভূত ছোট জিনিসটা দেখতে হলো আমাকে। কেন এই বিকৃতি? আর কি অপরাধ আমার?
প্রতিদিন রাতে চলতে লাগলো এই অত্যাচার। সারাদিন চলে অদ্ভূত উচ্চারণে ইংরেজী আর আরবী, সারারাত চলে নোংরামী, অসভ্যতা আর বর্বরতা। স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা শুরু করলাম এই অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য। স্রষ্টা কি শুনবেন আমার কথা?
একদিন আমার মালিক একটা সাইবার ক্যাফেতে কি যেন করছিলেন আমাকে টেবিলে রেখে। হঠাত সাইবার ক্যাফের অপর পাশ দিয়ে ঢুকলো আমার মালিকের একজন পাওনাদার। তাকে দেখেই তো ভোম্বলটা দিশেহারা। কি করবে বুঝতে না পেরে আমাকে রেখেই দে ছুট। এদিকে তো আমি আনন্দে আত্মহারা। মুক্ত স্বাধীন বিহংগ যেন আমি এক। পাশের টেবিলের তরুণটি আমাকে দেখেই আস্তে করে পকেটে ঢুকিয়ে চুপচাপ বেড়িয়ে গেলো সাইবার কাফে থেকে। শুরু হলো আমার নতুন জীবন।