somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাল বৈশাখি

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাত সকালেই মনির ঘুম থেকে উঠে কার মাকে বললো মা প্যাডে ক্ষুদা নাগচে একটু কাঁচা মরিচ আর খাঁটি শরিষার তেল দিয়ে একটু পান্তা দে...

হুম, তোকে তো খাওন দিতে হবে বাজান, খ্যাতের অবস্থা তেমন ভালা না, ধানগুলি পাঁকন ধরা শুরু হইছে।আবার ঐ দিকে আকাশের যে অবস্থা! মনে হয় ধানগুলি ঘরে তুলতে পারবো না, ওদিকে আবার আম গাছগুলিতে সুন্দর মুউলি দেওয়ান শুরু হছে এবার অনেক আম ধরবো।


হাহাহা--মা আমার হাতের বিচা দিয়ে আমগাছটি , নতুন আম গ্রামের মানুষ সহ খাবো...আচ্ছা মা খাওন দে তো, জমীতে যেতে হবে, ধান বিক্রি করেই এবার জামিলার বিয়ে দিমুনি।

--কোদাল কাধে নিয়ে জমীর দিকে হাটতে লাগলো মনির, তার পর জমীর চর্চা শুরু করতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো যে___এবারের ফসল মনে হয় ভালা হবে, আল্লাহর কুদরত পরেচে এবার, এই ধান বিক্রি কইরা জামিলার বিয়ে দিতে হবো,

হাল্কা টিপ টিপ বৃষ্টি পড়তে শুরু করে দিয়েছে, আকাশের অবস্থাও বেশি ভালো না, আকাশজুরে মেঘাচ্ছন্ন শুরু হতে লাগছে , মনির আকাশের দিকে চেয়ে দেখে কেমন জানি স্থির হতে পারলো না। বুকটা মোচর দিয়ে উঠলো মনিরের... তবুও ঐ দিকে খেয়াল না করে কামে মনোযোগ দিলো।

একটু পর বিশাল আকারে দমকা হাওয়া শুরু করলো, আর চড় চড় করে শব্দ শুরু করে দিলো আকাশটাতে, মনির মনে মনে বল্লো এইরে___হলো তো এবার বাড়ীতে যাওয়ান লাগবো, না হলে বরফ গায়ে পরে ওপারে যেতে হবে।


ঐ দিকে মনিরের মা ও বোন মনিরের জন্য চিন্তা করতে লাগলো, আর বলতে লাগলো---জমিলা...ছাওয়ালডা হেই সকালেই দু মুঠো পান্তা খেয়ে কামে গেছে,আকাশে কালবৈশাখি ঝড় আসছে,,আশার কোন নামেই পাচ্ছি না।

মনির শেষ দেখা ধানগুলি দেখে বলবে শুরু করলো... যে হারে শিলা বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে,,,মনে হয় আর ধান ঘরে উঠবে না।

...চোখের সামনেই ঝরে পড়তে শুরু করলো গাছ থেকে সোনালী ধানগুলি...মনির শুধু দু চোখ দিয়ে দেখতেছে আর হাউ মাউ করে কাদতেছে।


ঐ দিকে মনিরের মা মনিরের জন্য কাঁদতেছে....

হঠাৎ করে আকাশে বিকট করে শব্দ হলো....আকাশের বরফজমা ভেংগে পরে গেলো সোজা মনিরের গায়......!!!! মনির সেখানেই পরপারের দিকে চলে গেল।


গ্রামে সবাই আতংকিত হয়ে পড়ে গেল মনিরের এই খবর শুনে....সবাই মনিরকে একনজর দেখতেছে আর বলতেছে... আমি বিশ্বাস করতেই পারি না.. আমার বিশ্বাসেই হয় না... মনিরের এমন অবস্থা হবে...!!


কেউ কেউ বলতে শুরু করলো...একটু আগেই তো মনিরকে কোদাল ঘাড়ে করে নিয়ে যেতে দেখলাম...আর সেই মনির এখন এই হয়ে গেল।


মনিরের মা ও জামিলা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেই না....বার বার দুজনে বেহুশ হয়ে যাচ্ছে আর বলতেছে...আল্লাগো...আর কে আছে আমাদের সংসারের চাবিটি ধরে রাখার, এটা তুমি কেমন খেলা করলা....

ঐ দিকে আবার কান্নার আওয়াজ....মজিবর চাচার ছোটকুড়ে ঘরটা আর নেই...,বাতাসে কোথায় যেস নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে, আর থাকার কোন ঘর রইল না তাদের পরিবারের।

ফসলের দিকে নজর সব কৃষক চোখের জলগুলি ফেলতে লাগলো...আর জমির কাছেই মাথায় হাত দিয়ে কাদতে কাদতে বলতে লাগলো....আমি সর্বশান্ত... আমি সর্বশান্ত।

....হায়রে কাল বৈশাখি.....!!!!

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×