বাংলাদেশে এখন থেকে বছরের মোট কার্যদিবস হবে ১৪৪ দিন।প্রত্যেক মাসে চারটা শুক্রবার হিসেবে বার মাসে এই সংখ্যাটা চলে আসে।কম-বেশী ক্ষেত্র বিশেষে প্রযোজ্য।ঈদ, পূজা,পূর্ণিমা ও বড় দিনেও হয়তো হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী আসবে।গত রোজায় যখন হরতাল ছিল…ঈদের দিন দিলে আর কি হবে??? সপ্তাহের ছয়দিন এই জাতির কোন কাজ নেই।বাচ্চারা ছয়দিন ছুটি কাটিয়ে শুক্রবার দিন সকালে বলবে…ধুর আর ভাল্লাগে না স্কুল যাইতে।সপ্তাহে একদিন কেমনে ইস্কুল থাকে??? ফালতু।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলবে…সপ্তাহের একদিনে পরীক্ষা ফালায় রাখসে।একটা দিন…বাকি ছয় দিনের মত দিলে কি হয়???
সবচে খুশি হবে প্রেমিক-প্রেমিকারা।সপ্তাহের ছয়দিন হরতাল-অবরোধ শেষে একজন-আরেকজনের জন্য দেখা করতে উন্মুখ হয়ে রবে।তারা সবাই ছয়দিনই প্রহর গুনবে ঐ একটি শুক্রবারের।
দূরপাল্লার বাস-ট্রেন-লঞ্চ চালকরা ঐ একদিন কামিয়ে ছয়দিন খাবে।ঐদিন সমগ্র বাংলাদেশ নেমে আসবে রাজপথে।বড় বড় রাস্তায় দেখা মিলবে সুদীর্ঘ যানজটের।ইটের ভাটায় দেখা যাবে কালো ধোঁয়া।পরিবেশ দূষন হবে মাত্র একদিন।মেয়েদের রোদে বেরুতে হবে না বলে ঔজ্জল্য বাড়বে।পাত্র পেতে সমস্যা হবে না।বিদেশী কসমেটিকস ব্যবসা লাটে উঠে বসবে।বেকার ছেলের দল অফিস-আদালত ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ে ভিড় জমাবে জীবিকার সন্ধানে।পাত্রীর বাবার কাছে ককটেল আর পেট্রোল বোমা ছোড়া ছেলেটিই হবে উপযুক্ত পাত্র।মেয়েদের কাছে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরীরত, ব্যবসায়ী, রিসার্চ অর্গানাইজেশনের ছোকড়া,বিসিএস ক্যাডারদের আর কোন দামই থাকবে না।পাড়ায়-পাড়ায় গজিয়ে উঠবে কোচিং সেন্টার।সাইনবোর্ডে লেখা থাকবে “ এখানে যত্নসহকারে ককটেল ফাটানো শেখানো হয়”।
ঐ একটা দিনে রেস্ট পাবে অবরোধকারীরা।তারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোন এক পরিবহনে পেট্রোল বোমা মেরে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়বে খেয়েদেয়ে।রাতে রতিক্রিয়ায় মেতে থাকবে সুন্দরী স্ত্রীর সাথে।শুক্রবার সকালে বারটায় ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করতে করতে নিউজ চ্যানেলে দেখবে গতরাতে তার ছোঁড়া বাসটাতে কয়জন পুড়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি হলো।কিংবা পরশু ছোড়া তার কোন কলিগের পেট্রোল বোমায় কেউ মরল কিনা।
তবে ডিজিটাল বাংলাদেশে হয়তো ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনেক কাজ শুরু হবে।অন-লাইনে ক্লাস -পরীক্ষা ব্যাপকতা ছড়াবে।ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করবে।থ্রী-জি সেবার ফলে প্রেমিকরা প্রেমিকার রূপে মুগ্ধ হবে।
বাংলাদেশে কমে যাবে পরিবেশ দূষন।জাতিসংঘ পরিবেশ সংস্হা এক নম্বরে রেখে দেবে এই দেশকে।দুর্নীতিতে বাংলাদেশ সবার শেষে বসে থাকবে।যে দেশে কাজই হয় না সে দেশে দুর্নীতি আর কতটুকু হবে?? ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল এওয়ার্ড দিবে এই দেশের সরকারকে।অসাধারন হবে এই দেশ!!!!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


