সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু লয়্যা আলাপ কপচানির আগের 'জরুলী' লেখাপড়া..
নিজেকে জিজ্ঞেস করুন তো! আপনি কে। আপনার পরিচয়টা কি..
থাক, কানাগলিতে আর হাতরাইতে হবেনা। আমি বলে দেই।
আপনি একজন 'মানুষ'। প্রথমত, এই দাবীর কারণ- আপনার বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য অথবা দৈহিক গঠন।
দ্বিতীয়ত, আপনি 'মানুষে'রই বাচ্চা। সন অর ডটার অফ হিউমেন বিয়িং। অর্থাৎ আপনি মানব সন্তান। বিশ্বজগতের সর্বোত্তম-সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী।
তৃতীয়ত, আপনার ভিতরে 'মন' নামক অদৃশ্য বস্তুটি অবশ্যই বিদ্যমান। যদিও সেটা 'সুন্দর' না 'কুৎসিত' সেটা প্রকাশ পাবে আপনার কাজে কর্মে, আচরণে। অবশ্যই সেটা আপনার অনুসারিত ধর্মে নয়। অতএব, 'মন' আছে তাই অবশ্যই আপনি 'মানুষ', আপনি মুসলিম না হিন্দু মানুষ পরিচয়ের জন্যে সেটা অবশ্যই মূখ্য নয়।
এখন আপনি চিন্তা করুন, শুধুমাত্র আপনার ধর্ম ইসলাম,সনাতন কিংবা খৃষ্ট বলেই আপনার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হলো, আপনাকেও পুড়িয়ে মারা হলো জ্যান্ত। এক্ষেত্রে কারণ বলে বিবেচ্য হলো শুধুমাত্র আপনার ধর্ম। আপনার প্রথম দুটি পরিচয় সেক্ষেত্রে কোনো কাজেই লাগলো না!
কিছু কুৎসিত মনের 'মানুষ' অন্য কিছু মানুষের ক্ষতিসাধন করল,প্রাণ নিলো।
তাহলে কেন আপনারা সংখ্যালঘু-গুরু নিয়ে এতো ভাইব্রেট করছেন?
কেন সব 'মানুষ' গুলো এক হতে পারছেনা?
কেন সেই কুৎসিত মনের 'মানুষ'গুলোকে আরো সুযোগ করে দিচ্ছেন দুইভাগে ভাগ হয়ে?
জাতের পরিচয়টাই কি মুখ্য? মানুষ পরিচয়টার কোনো মূল্য নেই?
নির্দিষ্ট একটি ধর্মকে দোষ দেবেন?
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) স্পষ্টই বলে গিয়েছেন এমনটি-
"যদি কোন মুসলিম কোনো অমুসলিমকে হত্যা বা তার ক্ষতিসাধন করে, হোক সে মুসলিম কিংবা অমুসলিম রাষ্ট্রে; সেই ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধটুকুও পাবেনা,যদিও জান্নাতের সুগন্ধ ৪০ বছর দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত" - সহীহ বুখারী: ৬/২৫৩৩
অতএব বলা যায়, ইহকালে যারা মানুষ আর মানুষের সম্পদ পুড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের জন্যে পরকালে অনন্তকাল আগুনে পোড়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
তাই আগে নিজের 'মানুষ' পরিচয়টা নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচুন। লঘু-গুরু নিয়ে কামড়াকামড়ি করলে ভেতরের অদৃশ্য সেই মন-টা সুন্দর থেকে কেবল কুৎসিতই হতে থাকবে।