somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিংকনকে নিয়ে ২০১২ সালের অন্যতম সেরা একটি মুভির রিভিঊ

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
গতকালকে Lincoln ২০১২ দেখলাম।



মুভিটা একটু বেশী রকমের ভালো লাগলো। আসলে ২০১২ সালে অনেকগুলো ভালো মুভি দেখলাম।
তাই ২০১২ কে মুভির বছরও বলা যায়। কারন এই বছরেই মুক্তি পেয়েছে লাইফ অব পি, জ্যাঙ্গো আঞ্চেইন্ডের মত মুভি। যাই হোক আব্রাহাম লিঙ্কনের নাম শোনেনি এমন লোক খুব কমই আছে।
ছেলেবেলা থেকেই এর নাম শুনেছি। পাঠ্যবইয়ে এর সম্পর্কে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাধ্য হয়েই পড়া লাগছে।  এই মুভিটা আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রতি একটা বড় ট্রিবিউট বলেই মনে হয় আমার কাছে। স্টিভেন স্পিলবারগের নাম আগে শুনেছি। তার ডিরেকশনে কয়টা মুভি দেখছি তা স্মরন নেই।
তবে এই মুভিতে একজন মার্কিন রাষ্ট্রপতির জীবনী ক্যামেরার নিখুত কাজ, মন ভোলানো মিউজিক, সিনেমাটোগ্রাফী, আর দক্ষ অভিনেতা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। অভিনয়ের কথা যখন উঠল তখন মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্রে ড্যানিয়েল ডি লুইস এর কথা যদি না বলি তবে তাকে অসম্মান করা হবে।
এবারের অস্কারের সেরা অভিনেতার পুরস্কার তার। এই নিয়ে তিনবার সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতলেন।
তাই তাকে এখন অনেকে সর্বকালের সেরা অভিনেতার তালিকায় স্থান দিচ্ছে। মনভোলানো অভিনয় দেখে আপনার মনে হবে এ বোধ হয় সত্যিকারেরই লিঙ্কনকে আপনি দেখতে পাচ্ছেন স্ক্রিনে। যদি তার জীবনী পড়ে থাকেন।

এবারে মুভির কাহিনী দিকে নজর দেই।

১৮৬৫ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধ যখন সমাপ্তির পথে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন১৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে আমেরিকার প্রচলিত তৎকালীন দাসপ্রথা বিলোপের জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হন ১৩তম সংশোধনীর উদ্দেশ্য একটাই তাহল আমেরিকা থেকে দাসপ্রথাকে তথা জাতিবিদ্বেশকে বিদায় জানানো।

মুভিটার একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তৎকালীন অ্যামেরিকানদের জাতিবিদ্বেষের একটা চিত্র নিখুতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তৎকালীন কালোদের সাথে যে সাদাদের কি দ্বন্দ ছিল এবং একের প্রতি অন্যের মন-মানসিকতা কেমন ছিল তা স্পষ্ট বোঝা যায়।
গৃহযুদ্ধের কারণে লক্ষ মার্কিনীর প্রানহানী, ধ্বংসলীলা লিঙ্কনকে খুব ভাবাত। তাই তার এই সাহসী উদ্যোগ। কিন্তু তার উদ্যোগটা ছিল
একরকমের স্রোতের বিপরীতে। কারন তাকে সংবিধানের এই সংশোধনী আনতে হলে কংগ্রেসের বেশীরভাগ ভোট সংশোধনীর পক্ষে আনতে হবে।
প্রেসিডেন্টের দৃঢ় বিশ্বাস আমেরিকাতে শান্তি একদিন আসবেই কিন্তু কে জানে সেদিন কত দূরে কিন্তু শুধুমাত্র এই সংশোধনীই পারে স্থায়ী শান্তির পথকে প্রসারিত করতে। প্রেসিডেন্ট নিজের বিবেককে কোনক্রমেই স্বান্তনা দিতে পারছে না। হয় যুদ্ধের সমাপ্তি
নয় দাসপ্রথার সমাপ্তি।
১৮৬৫ সালে লিঙ্কন দ্বিতীয়বারের মত ব্যাপক ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু আমেরিকায় চলা গৃহযুদ্ধ তাকে একবিন্দুও শান্তি দিতে পারেনি। তিনি যখন দ্বিতীয়বারের মত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তখন আমেরিকার গৃহযুদ্ধের চার বছর চলে।
চার বছর ধরে চলা যুদ্ধে যে ব্যাপক প্রানহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি তাকে এই সংশোধনী আনার ক্ষেত্রে উদ্দীপকের ভুমিকা পালন করে।
তাই কংগ্রেসম্যানদের হাজারো বাধা স্বত্তেও একপর্যায়ে সংশোধনীটি পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয় এবং যেটা হল আমেরিকার
ইতিহাসে এক অন্যতম স্মরনীয় ঘটনা। এই কারনেই আমেরিকার সকল প্রেসিডেন্ট থেকে লিংকনকে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়।
লিংকন যে শুধু রাষ্ট্রীয় ব্যাপারেই গণতান্ত্রিক ছিলেন তাই নয়। তার ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি গণতন্ত্রের চর্চা করতেন। তার প্রমান মিলে
মুভির একটা ডায়লগে যেখানে তিনি তার স্ত্রীকে বলেন তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত তুমি নেবে আমারটা আমি নেব আর আমাদের সন্তানেরটা সে নিবে।

লিংকনের যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি এটা অনেকেই জানেন। মুভির শেষ দৃশ্যে সেটাই দেখানো হয়েছে। মিঃ প্রেসিডেন্ট হ্যাজ বিন শট!!!!!!
আততায়ীর গুলিতে এই মহান নেতার জীবনাবসান হয়। পৃথিবীতে কত লোকই তো জন্ম নেয়, মৃত্যুবরণ করে। সবাইকে নিয়ে কি আর এমন মুভি হয়??
জয় লিংকন। জয় গণতন্ত্র।

“Democracy is the government of the people, by the people, for the people”.
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×