somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"উসেইন ইউনূস: আমেরিকায় দৌড় প্রতিযোগিতার বিশ্বরেকর্ড"

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড. ইউনূসের "আমেরিকা জয়" সফর: পালানোর বিশ্বরেকর্ড!

আমেরিকার এয়ারপোর্টে যা ঘটলো, তা কোনো সাধারণ বিশৃঙ্খলা নয়—এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক নাটকের লাইভ ইন্টারন্যাশনাল প্রিমিয়ার শো।
বিদেশের মাটিতে, আন্তর্জাতিক দর্শকদের সামনে আমরা আবারও দেখালাম আমাদের আসল প্রতিভা—
অসহিষ্ণুতা, হিংসা এবং প্রতিহিংসার থ্রিডি সিনেমা, যার পরিচালক আমাদের রাজনীতি, আর নায়ক-নায়িকা হলেন ড. ইউনূস, ড. জারা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

নারীকে ঘিরে রাজনীতির নোংরা নাটক
সবচেয়ে দুঃখজনক (এবং কিছুটা কমেডি!) ছিল সফরসঙ্গী নারীকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলা।
কিছু মানুষ তখন চিৎকার করছিলেন—
"আপারে দিওনা, আক্তাররে দে!"
শোনার পর মনে হচ্ছিল, যেন রাজনীতি না, বরং কোনো গ্রামের হাটে বাঁশ-বিক্রির দরদাম চলছে।

নারীর সম্মান রক্ষার কথা যারা বলছিলেন, তাদের কণ্ঠস্বর হারিয়ে গেল রাজনৈতিক হট্টগোলে।
নারীকে সম্মান দেওয়ার পরিবর্তে তাকে রাজনৈতিক লাঠিয়ালদের টার্গেট বানানো হলো।
বাংলাদেশের রাজনীতি নারীর প্রতি এতটাই দায়িত্বশীল যে, নেতারা তাকে সঙ্গে নিলেও রক্ষা করতে পারেন না, আবার না নিলেও দোষারোপের শেষ নেই।

মির্জা ফখরুল: ভদ্রতার শাস্তি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর—বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধৈর্যের প্রতীক, ভদ্রতার প্রতিমূর্তি।
কিন্তু এই সফরে তিনি যেন ভুল জায়গায় ভুল সময়ে হাজির হয়ে গেলেন।
ফলাফল?
তার কাঁধে পড়লো রাজনৈতিক বুলেটের ভার্চুয়াল বৃষ্টি।

ফখরুল সাহেবের উচিত ছিল সফরসঙ্গী না হওয়া।
কারণ, আমাদের রাজনৈতিক খেলায় ভদ্রতা হলো সেই খেলোয়াড়, যাকে মাঠে নামলেই রেফারি কার্ড দেখাতে দেরি করেন না।
এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না।
যে মানুষকে দেখে আমরা সবসময় শান্তির প্রতীক ভাবতাম, তাকেই প্রকাশ্যে অপমানিত করা হলো—এবং সবাই হাততালি দিলো!

নোবেলজয়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা
ড. ইউনূসের আচরণ এই সফরের সবচেয়ে বড় চমক।
বাংলাদেশ থেকে বিমানে ওঠার সময় তিনি ছিলেন "গ্লোবাল সেলিব্রিটি"—
ফটোসেশন, হাসি-খুশি মুখ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা—সব ছিল জমজমাট।

কিন্তু আমেরিকায় নামার পর যখন বাস্তব ঝড় বইলো, তখন তিনি হয়ে গেলেন ১০০ মিটার স্প্রিন্টারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
নিজের নিরাপত্তার জন্য এমনভাবে পালালেন যে, উসেইন বোল্টও অবাক হয়ে যাবে।

সবচেয়ে করুণ ব্যাপার হলো, তিনি পালালেন কিন্তু তার নারী সহযাত্রী ড. জারাকে ফেলে গেলেন বিশৃঙ্খলার মাঝে অরক্ষিত অবস্থায়।
এটি কেবল দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নয়, নেতৃত্বের নতুন সংজ্ঞা:
"নেতৃত্ব মানে হল বিপদের সময় নিজের জান বাঁচানো, বাকিদের আল্লাহ ভরসা!"

ভণ্ডামির ফটোসেশন বনাম বাস্তবতা
বাংলাদেশ থেকে উড্ডয়নের সময়ের দৃশ্যটা মনে আছে?
ঝাঁকজমকপূর্ণ ফটোসেশন, চওড়া হাসি, সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লাস—
দেখে মনে হচ্ছিল, যেন দেশের সমস্যা সমাধানের নতুন যাত্রা শুরু হলো।

কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে না হতেই, সেই চওড়া হাসি গিলে ফেলে সবাই ছুটলেন নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে।
কর্মী এবং সহযাত্রীরা পড়ে রইলেন বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রে, আর নেতৃত্ব গেলেন নিরাপত্তার আড়ালে।
বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একেবারে পারফেক্ট স্লোগান হতে পারে:
"Show off in take-off, disappear in landing!"

এই নেতৃত্বকে কি আমরা মেনে নেবো?
আজকের ঘটনা আমাদের রাজনীতির আসল চেহারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিলো।
যে নেতৃত্ব নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, যে নেতৃত্ব নিজের সহযাত্রীকে বিপদে ফেলে পালিয়ে যায়—
তাদের হাতে দেশ নিরাপদ থাকবে, এ আশা করা কি বোকামি নয়?

এখন সময় এসেছে জাতিকে প্রশ্ন করার:
আমরা কি এই ভণ্ড, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং নারীবিরোধী নেতৃত্বকে চিরতরে প্রত্যাখ্যান করবো?
নাকি নীরব থেকে আগামী প্রজন্মকে আরও বড় অপমানের দিকে ঠেলে দেবো?

শেষ কথা: আমেরিকা জয় না "আমেরিকা লজ্জা"?
ড. ইউনূসের এই সফর ইতিহাসে "আমেরিকা জয়" নয়, বরং "আমেরিকা লজ্জা" হিসেবেই লেখা থাকবে।
একজন নোবেলজয়ী, একজন ভদ্র রাজনীতিবিদ এবং একজন নারী সহযাত্রী—
এই তিনটি চরিত্র আমাদের রাজনীতির তিনটি দিক তুলে ধরেছে:
১. পালিয়ে বাঁচা,
২. অপমানিত হওয়া,
৩. এবং অরক্ষিত থাকা।

আমেরিকার এয়ারপোর্টে যা ঘটেছে, তা কেবল একটি ঘটনা নয়—এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের আন্তর্জাতিক প্রমাণপত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৬
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×