somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যখন মানুষ হাড়েহাড়ে টের পায়

০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“যখন মানুষ হাড়েহাড়ে টের পায়”
(একটি রাজনৈতিক বাস্তবতার পুনর্মূল্যায়ন)

আওয়ামী লীগ যদি আগামীকাল ক্ষমতায় আসে — আমি খুশি হবো না।
কিন্তু আমি জানি, তারা ফিরে আসবে।
কারণ, মানুষ এখন টের পাচ্ছে — সত্যিকারের টের পাচ্ছে — তারা কী হারিয়েছে।

১. যদি ২০২৪ সালের মার্চে একটি ১০০% ফেয়ার নির্বাচন হতো
আওয়ামী লীগ তখন হারতো।
হয়তো বাজেভাবেই হারতো।

কারণ,
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে তারা এমন এক প্রজন্ম তৈরি করেছে — যারা অন্য কোনো শাসনামল দেখেনি।
তাদের শেখানো হয়েছিল, “আওয়ামী লীগ মানেই ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি, নিপীড়ন।”
যে অভিযোগগুলো পুরোপুরি মিথ্যা নয়, কিন্তু একপাক্ষিকভাবে প্রচারিত।

তাছাড়া, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের কথা “বেশি বেশি” বলেছে।
কিন্তু এই “বেশি বেশি”র মানে কেবল তখন বোঝা যায়, যখন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস “কম কম” নয় — বরং “মুছে ফেলতে” চায়।
নতুন প্রজন্ম বুঝতেই পারেনি সেই তুলনা কত ভয়াবহ।
তাদের কাছে আওয়ামী লীগের ভাষণ একঘেয়ে মনে হয়েছে, কিন্তু তারা কখনো জানেনি অন্য দিকের অন্ধকার কতটা গভীর।

২. বাঙালির ভুলো মনের রাজনীতি
আমরা জাতি হিসেবে ভুলে যাই।
ভুলে গিয়েছিলাম — মাত্র ১৫ বছর আগেও এই দেশে দুই বেলা ভাত জোটানো ছিলো লড়াই।
ভুলে গিয়েছিলাম, কীভাবে দারিদ্র্য, কর্মহীনতা, নিরাশা ছড়িয়ে ছিলো চারপাশে।
যারা একটু পড়াশোনা করে, তারাও ভুলে গিয়েছিল সেই পরিসংখ্যানগুলো — মাথাপিছু আয়, জিডিপি, রিজার্ভ, দারিদ্র্যের হার।
আর নতুন প্রজন্ম তো জন্মই নিয়েছে উন্নতির সময়ে — তাদের কাছে “অভাব” শুধু গল্পের মতো।

নারীরাও ভুলে গিয়েছিলো তাদের অগ্রগতির পথটা কত কঠিন ছিলো।
ভুলে গিয়েছিলো, কীভাবে শিক্ষার হার, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা—সব কিছুই ধীরে ধীরে বদলেছিলো এক দশকের ব্যবধানে।

৩. যদি আজ, এই দেড় বছর পর, একটি ফেয়ার নির্বাচন হয়
আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ এককভাবে ২০০ আসনের বেশি পাবে।
কারণ, মানুষ এবার শুধু “বুঝে” নয় — হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে মনে করতে পারছে, তারা কোথায় ছিলো, কোথায় পৌঁছেছিলো, আর এখন কোথায় নেমে গেছে।

তারা মনে করতো—
>>- পনেরো বছর আগে শুধু লুটপাট নয়, চলতো পুকুর চুরি।
>>- তখন ছিলো বেকারত্বের গলা পর্যন্ত পানি, বিদেশি বিনিয়োগের ঘাটতি, অস্থিরতা।
>>- তখন নারীর অগ্রগতি, শিক্ষার সুযোগ, নিরাপত্তা—সবই ছিলো অনিশ্চিত।
>>- তখন শিল্প ছিলো অচল, অবকাঠামো ছিলো অন্ধকারে।

এই দেড় বছরেই, সেই সব হারিয়ে গিয়ে মানুষ হঠাৎ মনে করেছে — হায় আল্লাহ খালেদ-
আমরা কোথায় ছিলাম, আর কীভাবে নীচে নামলাম।


৪. ভুলে যাওয়া উন্নয়ন ও শিক্ষার স্বপ্ন
গুগল করলেই জানা যায় — শিক্ষার হার, রিজার্ভ, আয়, নারীর অংশগ্রহণের সূচক কতটা বদলেছিলো।
কিন্তু শেখ হাসিনার শিক্ষাখাতে যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিলো — সেটাই আসলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশের ভিত তৈরি করছিলো।
আজ সেটা ভেঙে গেছে।
এটা শুধুই পরিসংখ্যানের ক্ষতি নয় — এটা একটা প্রজন্মের বিকাশের ক্ষতি।

৫. তাইও আমি চাই না, আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আসুক
কারণ, বাঙালি সহজে জাতি শেখে না, শুনে বিশ্বাস করে, তারপর শেখে মারে খেয়ে।
আমরা টের না পেলে বুঝি না; হাড়ে না লাগলে, ব্যথা না পেলে বিশ্বাস করি না।

তাদের এখনো আরও টের পাওয়া দরকার —
আরও কিছুটা সময়, আরও কিছুটা কষ্ট, আরও কিছুটা হতাশা।

যেন একদিন তারা নিজের পকেট থেকে চাঁদা তুলে, নিজের হাতে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ভাস্কর্য গড়ে তোলে —
একটা ভাস্কর্য, যেটা আর কোনোদিন ভাঙা যাবে না।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×