somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ই*সরাইল-ফি*লিস্তিন সংঘাত কেন?

০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত অক্টোবর 2023 থেকে ইস*রাইল-ফি*লিস্তিন (হামাস) যুদ্ধের আপডেট খবরাখবর ছেলেদের সাথেও কমবেশি শেয়ার করছি। কে অত্যাচারী আর কে মজলুম এই বোধটা মনে গেথে দেওয়ার দায়িত্ব পিতা হিসেবে এড়িয়ে যেতে পারি না।

✍️ আচ্ছা আব্বু ই*সরাইল-ফি*লিস্তিনের মধ্যে এত যুদ্ধ কেন? ছেলের এই প্রশ্নের জবাবে সংক্ষেপে একটা গল্প বললাম। গল্পটা এখানে শেয়ার করছি।

আমিঃ তোমার একটা আঙ্কেল তার ফ্যামিলিসহ আমাদের বাসায় এসে বলল যে, তারা খুব বিপদগ্রস্থ, তাদের থাকার কোন জায়গা নাই। তখন আমাদের কি করা উচিত?

তাহমিদঃ আমাদের তো তাদের থাকতে দেওয়া উচিত।

আমিঃ এক্সাটলি! মানবিক দিক বিবেচনায় আমাদের উচিত আমাদের বাসার একটা রুম তাদের জন্য ছেড়ে দেওয়া।

তাহমিদঃ তো এই গল্পের সাথে ই*সরাইল-ফি*লিস্তিনের যুদ্ধের কি সম্পর্ক?

আমিঃ সম্পর্ক তো অবশ্যই আছে। গল্পটা আগে শোনো। এখন আমাদের বাসায় আগত বিপদগ্রস্থ ফ্যামিলি একটা রুম দখল করে থাকা শুরু করল। কিছুদিন যেতেই আমরা লক্ষ্য করলাম, সে যেরকম বিপদগ্রস্থতার বিবরণ দিয়েছিলো তার পুরোটাই মিথ্যে। কিছুদিন পরে সে আরও এক ফ্যামিলিকে ডেকে নিয়ে এসে আমাদের বাসার আর একটি রুম দখল করলো। তখন আমাদের কি করা উচিত?

তাহমিদঃ আমাদের বাসার অর্ধেকই তো তারা দখল করে ফেলবে। তাদেরকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়া উচিত।

আমিঃ ঠিক বলেছ। তারা তখন আমাদের বাসার অর্ধেক দখল করে নিবে।

আমাদের থাকার রুম কিন্তু ভিতরে। তারা দখল করেছে গেস্ট রুম এবং ড্রয়িং রুম। এখন আমাদের বাইরে বেরুতে গেলেও তাদের রুম অতিক্রম করে বেড়োতে হবে। এটা একটা মুশকিল হয়ে দাড়াবে। কি বলো?

তাহমিদঃ আসলেই, ঠিক বলেছ আব্বু।

আমিঃ এর কিছুদিন পরে তারা জোট করে আরো একটা ফ্যামিলিকে ডাইনিং রুমে থাকতে দিলো, এমনকি আমাদের অনুমতি ছাড়া। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে তারা তিনজন জোটবদ্ধ হয়ে আমাদেরকেই বাসা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো। নিজের বাসায় আমরা নিজেরাই উদ্বাস্তু হয়ে গেলাম। বিষয়টা কেমন হলো?

তাহমিদঃ উপকারীকে বাঘে খেলো আব্বু।

আমিঃ ফি*লিস্তিনের আরবরা এই মানবিকতা দেখাতে গিয়েই নিজ ভুমিতে ভুমিহীন হয়ে পড়েছে। নিজেদের সর্বনাশ ডেকে নিয়ে আসছে।

তাহমিদঃ কি বলছো আব্বু? এটা কিভাবে হলো?

আমিঃ আচ্ছা, বলছি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে 1917 সালে ফি*লিস্তিন এলাকা ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। তখন সারা পৃথিবী থেকে ইয়া*হুদীরা দলে দলে ফি*লিস্তিনে আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে আসতে থাকে। তারা বিপদগ্রস্থ ও অসহায় বলে ফি*লিস্তিনি আরবরা তাদেরকে আশ্রয় দেয় এবং তারা বসতি স্থাপন করা শুরু করে। তবে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আরবদের ফি*লিস্তিন থেকে উৎখাত করে পুরো ফি*লিস্তিন দখল করা। সে লক্ষ্যে তারা স্থানীয় আরবদের নিকট থেকে উচ্চ মূল্যে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করা শুরু করে এবং সারা পৃথিবীর সকল ই*হুদীকে তারা ফি*লিস্তিনে আসার জন্য আহবান জানায়।

তাহমিদঃ গল্পের সাথে মিল আছে। তারপর কি হলো?

আমিঃ এভাবে ই*হুদীরা ফি*লিস্তিনে আসতে আসতে 1947 সালে তারা প্রায় 30% নাগরিক হয়ে যায় এবং ফিলিস্তিনের প্রায় 70% এলাকা দখল করে বসবাস করা শুরু করে। আরবরা বিষয়টা কিছুতেই মানতে পারে না।

তাহমিদঃ না মানারই কথা। যাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে তারাই এখন মালিককে বের করে দিতে চায়?

আমিঃ ফি*লিস্তিনের ঘটনাও তাই। ই*হুদীরা 1948 সালে ই*সরাইল নামে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। মধ্যপ্রাচ্যের আরব রাষ্ট্রগুলো ইস*রাইলকে মেনে নিতে নিতে অস্বীকার করে। তারা একযোগে ইস*রাইলকে আক্রমন করে কিন্তু আরব রাষ্ট্রগুলো ইস*রাইলের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়। এই যুদ্ধে জয়ের পর ই*সরাইল আরো শক্তিশালী হয় এবং ফি*লিস্তিন ভূখন্ডে তাদের দখলদারিত্ব আরো পাকাপোক্ত করে।

তাহমিদঃ ই*সরাইল কিভাবে এতো শক্তিশালী হলো?

আমিঃ ই*হুদিরা জাতিগতভাবে অসম্ভব মেধাবী ও পরিশ্রমী। তারা বিজ্ঞান, সাহিত্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যে অত্যন্ত পারদর্শী। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে তারা বিশ্ব মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে পশ্চিমা অনেক রাষ্ট্রই ই*হুদিদেরকে সমীহ করে চলে এবং ই*সরাইলের সব অন্যায়কে নীরবে সমর্থন দিয়ে যায়।।

✍️ এবার কি বুঝতে পেরেছ চলমান ই*সরাইল -ফি*লিস্তিন দ্বন্দ্বের কারন কি?

তাহমিদঃ জ্বি আব্বু, বুঝতে পেরেছি‌।

বিঃদ্রঃ সত্য কাহিনী অবলম্বনে এই রূপক গল্পটি আমার ক্লাস টু তে পড়ুয়া ছেলেকে বলেছিলাম। জানিনা কতটা বোঝাতে পেরেছি। ইতিহাস আশ্রিত ঘটনা ও সংখ্যাগত তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। তবে লেখার আইডিয়া ও লেখার ভাষা আমার নিজস্ব ও মৌলিক।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:৩৭
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×