somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-৭

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হৃৎপিণ্ড একটি অত্যন্ত জটিল ও পেশীবহুল অঙ্গ যেটি পৌনপৌনিক ছান্দিক সংকোচনের মাধ্যমে রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত সারা দেহে প্রবাহিত করে। গড়পড়তায় একটি মানব হৃৎপিণ্ড প্রতি মিনিটে ৭২ বার স্পন্দিত হয়। হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন থেমে যাওয়া মানে অক্কা পাওয়া। মানব হৃৎপিণ্ড ৪টি মূল প্রকোষ্ঠে বিভক্ত, ডান অলিন্দ ও ডান নিলয় এবং বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়। হৃৎপিণ্ডের ডান অংশের কাজ হলো পুরো দেহ হতে ডান অলিন্দে অক্সিজেন-শূন্য রক্ত সংগ্রহ করা এবং ডান নিলয়ের মাধ্যমে তা পাম্প করে ফুসফুসে প্রেরণ করা যাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্ত হতে নিষ্কাশিত এবং অক্সিজেন যুক্ত হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের বাম অংশ অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস হতে বাম অলিন্দে গ্রহণ করে। বাম অলিন্দ হতে রক্ত বাম নিলয়ে স্থানান্তরিত হয় এবং সারা দেহে সঞ্চারিত হয়। ডান অলিন্দ হতে রক্ত ট্রাইকাস্পিড কপাটিকার ভেতর দিয়ে ডান নিলয়ে প্রবেশ করে। এখান থেকে রক্ত ফুসফুসীয় সেমিলুনার কপাটিকার ভেতর দিয়ে বেরিয়ে ফুসফুসীয় ধমনী দিয়ে ফুসফুসে পৌছে। ফুসফুস হতে রক্ত ফুসফুসীয় শিরা দিয়ে বাম অলিন্দে যায়। সেখান থেকে রক্ত বাইকাস্পিড কপাটিকার ভেতর দিয়ে বাম নিলয়ে প্রবেশ করে। বাম নিলয় এই রক্তকে এ্যাওটিক সেমিলুনার ভাল্বের ভেতর দিয়ে এ্যাওর্টায় পাম্প করে পাঠায়। এ্যাওর্টা কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয় এবং এইসব প্রধান শাখা ধমনী দিয়ে রক্ত সারা দেহে সঞ্চালিত হয়। রক্ত ধমনী হতে তার চেয়ে সরু ছোট ধমনীতে প্রবেশ করে এবং শেষ পর্যায়ে আরও ক্ষুদ্র কৈশিকনালীর মাধ্যমে কোষে পৌছায়। এরপরে অক্সিজেন-শূণ্য রক্ত ছোট শিরার ভেতর দিয়ে গিয়ে শিরায় পৌছায়। এইসব শিরা পরে সুপিরিয়র ও ইনফেরিয়র ভেনাকেভা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ডান অলিন্দে পৌছায় এবং আবার উপরোক্ত পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে। হৃৎপিণ্ড কার্যত হৃৎপেশীর একটি বুনানি যারা পরস্পর সাইটোপ্লাজমিয় সংযুক্তি দিয়ে সংযুক্ত। ফলে বৈদ্যুতিক সংকেত একটি কোষে পৌছালে তা দ্রুতগতিতে সকল কোষে পৌছে যায় এবং পুরো হৃৎপিণ্ড তখন একসাথে সংকুচিত হয়। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)

এই হচ্ছে খুব সংক্ষেপে হৃৎপিণ্ডের কার্যপ্রণালী। ছবি এবং ভিডিওতে হৃৎপিণ্ডের গঠনপ্রণালী ও কার্যপ্রণালী দেখা যেতে পারে। এবার আপনারাই বলুন, এরকম একটি জটিল ও সূক্ষ্ম মেশিন কি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এই ধরণের মেশিন এর ক্ষেত্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তনের সুযোগ-ই বা কোথায়, যেখানে অত্যন্ত সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরা এবং একাধিক প্রকোষ্ঠ এক সাথে থেকেই তবে সঠিকভাবে কাজ করে। হৃৎপিণ্ডের মতো কোন মেশিন ‘ধাপে ধাপে’ বিবর্তিত হতে থাকলে প্রাণীরা তো বেঁচে থাকতেই পারবে না! এই অবস্থায় বংশ বৃদ্ধি হবে কেমন করে! এক শতাংশ কিংবা এক দশমাংশ হৃৎপিণ্ড কিন্তু বাস্তবে সম্ভব নয়।



মজার ব্যাপার হচ্ছে ডারউইনবাদীদের “সাধারণ পূর্ব-পুরুষ” তথা এককোষী জীবের কিন্তু কোন হৃৎপিণ্ড ছিল না। ফলে হৃৎপিণ্ডের বিবর্তন শুরুই বা হবে কোথা থেকে? অথচ সেই হৃৎপিণ্ড-বিহীন এককোষী জীব নাকি মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তিত হতে হতে একদিন মানুষ ও পশু-পাখিদের মতো হৃৎপিণ্ড-ওয়ালা প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়েছে! আরো কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, যেগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া বাস্তবে সম্ভব নয়। ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্রের কথাই ধরা যাক। ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ না করলে জীব-জন্তু মারা যাবে। তাহলে আবার বিবর্তন বা বংশ বৃদ্ধি হবে কী করে? এমনকি অতি সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরা’র কথাই ধরুন। শিরা-উপশিরাগুলো কোথা থেকে ও কীভাবে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হবে, যদি শুরুতেই এগুলো না থাকে! পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গের প্রজননতন্ত্রের বিবর্তনের কাহিনী কিন্তু রয়েই গেল!

উপসংহার: হৃৎপিণ্ডের মতো একটি জীবন রক্ষাকারী মেশিন যেহেতু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে পারে না এবং এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে যেহেতু কোনো প্রমাণ নাই সেহেতু প্রথম থেকেই প্রাণীদের দেহে পূর্ণাঙ্গ হৃৎপিণ্ড থাকতে হবে। আর প্রাণীদের দেহে পূর্ণাঙ্গ হৃৎপিণ্ড থাকতে হলে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই প্রাণীগুলোকেও পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×