বাগেরহাটে কথিত পীর নুর মোহাম্মদকে আটকের দাবীতে খুলনা- বাগেরহাট সড়কের পাশে মেগনিশতলা এলাকায় তার খানকার সামনে এলাকাবাসি ও এতিম শিশুরা মানব বন্ধন করেছে। সোমবার সকাল ১১ টার দিকে এ মানব বন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
মানব বন্ধনে এলকার সাধারন পুরুষ- মহিলা ও খানকার এতিম শিশুরা অংশ গ্রহন করে। এর আগে তারা ভন্ড পীর নুর মোহাম্মদের আটকের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
এসময় এলাকাবাসীর প থেকে বক্তৃতা করেন, মোঃ সাইফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান বাবুল, ইসলাম চাকলাদার, রনজিদা বেগম, হাজেরা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা ভন্ড পীর নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, গত ২৫ বছর ধরে খানকায় স্থাপিত মসজিদে এলাকাবাসীদের নামাজ পড়তে দেওয়া হয় না। মসজিদে সুধুমাত্র খানকায় অধ্যায়নরত এতিম ও পীরের কিছু বহিরাগত মুরিদ নামাজ আদায় করতে পারে। সেখানে কেউ গেলে তাকে জোর করে বের করে দেওয়া হতো।
তারা অভিযোগ করেন, শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য কিছু সময়ের জন্য মসজিদের প্রধান ফটক খোলা রাখা হলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভন্ড পীর নুর মোহাম্মদ তার খেয়াল খুশি মত নামাজ পাড়াতেন। যেখানে জুমার নামাজ দ্পুুর ২টার ভেতর অন্যান্য মসজিদে শেষ হয়, সেখানে নুর মোহাম্মদ সাড়ে ৩ টার দিকে নামাজ শুরু করতেন। মসজিদটির জমি ওয়াকফকৃত নয় বলে এলাকাবাসি দাবী করেন।
তারা আরও বলেন, খানকায় অবস্থিত মসজিদ ও এতিম খানার কোন পরিচালনা কমিটি নেই। এখানে বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ ও সাধারন মানুষের দান লুটে খেয়েছে নুর মোহাম্মদ। এতিম খানায় অবস্থিত এতিমদের ঠিকমত খেতে দেয়া হত না। তাদের উপর চালানো হতো অসহনীয় নির্যাতন। এলাকার মানুষ খানকা শরীফের ভেতর হতে পানি আনতে গেলে কলসের পানি ঢেলে ফেলা হতো।
স্থানীয় মোশারেফ সেখ জানান, তার ৬ বছরের ছেলে বায়েজিদকে খানকা শরিফের মাদ্রাসায় পড়তে দিয়ে ছিলেন। কিন্তু পীর সাহেব ছেলেটির বাড়ি এলাকায় বলে তার ছেলেকে ঘাড় ধরে বের করে দেয়।
মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, একদিন রাতে একটি এতিম শিশুকে পায়ে ছিকল দিয়ে বেধে নির্যাতন করা হচ্ছিল। শিশুটির আত্মচিৎকারে তিনিসহ স্থানীয়রা ছুটে এসে প্রতিবাদ করেন। পরের দিন তার নামে দুটি মামলা দেন ওই ভন্ড পীর সাহেব। মামলার ভয়ে এলাকাবাসি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেত না।
ইসলাম চাকলাদার জানান, একটি শিশুর অভিভাবকের সামনে শিশুটিকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হচ্ছিল। পরে ওই অভিভাবক তার কাছে গেলে তিনি পীর দাবিদার নুর মোহাম্মদকে শিশুটিকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এলাকাবাসী খানকা শরীফের মসজিদ ও নলকুপটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানান।
প্রসংগতঃ ১৭ জুলাই সকালে বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়াস্থ খানকা শরীফের কথিত পীর শেখ নুর মোহাম্মদের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে তার দুই স্ত্রী ও চার সন্তানকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পর্দার দোহাই দিয়ে প্রথম স্ত্রীকে ৪১ বছরসহ অন্যদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে ঘরে তালা বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ঘরে তালাবদ্ধ রাখায় ৩৫ বছরের অবিবাহিত মেয়েসহ ৫ সন্তানকে পর্যন্ত সুর্য্যের মুখ দেখতে দেয়নি পীর দাবীদার নুর মোহাম্মদ। এ সময়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় পীর নূর মোহাম্মদ।
পরর্বতীতে বাগেরহাটের সুশীীল সমাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নুর মোহাম্মদেও গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বানব বন্ধন করে আসছে ।