জনগণের সাড়া বিবেচনা করে আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে আত্দপ্রকাশ করবে নতুনধারার রাজনৈতিক দল
নতুন ধারার রাজনীতি শুরুর জন্য জনগণের মতামত চেয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন নোবেল শানতি- পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে তিনি দেশের প্রত্যেক নাগরিকের পরামর্শ চেয়েছেন। বলেছেন, ব্যাপক জনমর্থন পেলেই তিনি রাজনীতিতে নামবেন। হাল্কা সমর্থন পেলে অথবা সাধারণ মানুষ নিমরাজিভাবে রাজি হলে তিনি রাজনীতিতে আসতে চান না। প্রফেসর ইউনূস তার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাব্য সাংগঠনিক কাঠামো ও কর্মকাণ্ড কি হতে পারে সে বিষয়েও দেশের মানুষের পরামর্শ চেয়েছেন। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলে নাগরিকরা কি ভূমিকা পালন করতে পারেন, কিভাবে সক্রিয় অবদান রাখতে পারেন সে সম্পর্কেও মতামত চেয়েছেন। মানুষের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পরই তিনি দলের নাম ঠিক করবেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, রাজনীতিতে নামলে আগামী নির্বাচনেই তিনি অংশ নেবেন। প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, 'অতীতের হতাশা থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ উদ্যমে সবার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ সৃষ্টির উপযুক্ত রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার এখনই সময়।'
রোববার দেশের সব নাগরিকের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে তিনি এ কথা বলেছেন। ভারতীয় টিভি চ্যানেল ইটিভি বাংলা ঘোষিত শ্রেষ্ঠ বাঙালির পুরস্কার গ্রহণ করতে কলকাতা যাত্রার প্রাক্কালে জিয়া আনতর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রফেসর ইউনূস নাগরিকদের উদ্দেশে লেখা তার খোলা চিঠিটি হনতানতর করেন। জনসাধারণের কাছ থেকে চিঠি, ই-মেইল, ফ্যাক্স, ফোন, এসএমএস বা অন্য কোনভাবে প্রফেসর ইউনূস তার লেখা খোলা চিঠির জবাব কামনা করেছেন।
গত বছরের 13 অক্টোবর শানতিতে নোবেল পুরস্কার জয়ের ঘোষণা আসার পরপরই প্রফেসর ইউনূস নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর পর থেকেই দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রদত্ত বক্তব্যে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলেন প্রফেসর ইউনূস। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নভেম্বর-ডিসেম্বরে সারাদেশে সহিংস এক রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। 29 নভেম্বর তিনি সংঘাত এড়াতে দুটি প্রধান রাজনৈতিক জোটের মধ্যে সমঝোতামূলক 'শানতিচুক্তি' করার পরামর্শ দেন। 10 ডিসেম্বর নরওয়ের অসলো থেকে ড. ইউনূস শানতি পুরস্কার হাতে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে তার নতুন স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরও দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রথমদিকে রাজনীতিতে না নেমে যোগ্য প্রাথর্ী আন্দোলনের কথা বললেও পরে জনগণের স্বার্থে তিনি তার রাজনৈতিক দল গঠনের অভিপ্রায় জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। চলতি ফেব্র"য়ারি মাসের প্রথমদিকে ভারত সফরের সময় এবং সফর শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জনগণ চাইলে তিনি রাজনীতিতে নামতে রাজি আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি তার অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন। প্রফেসর ইউনূসের রাজনীতিতে নামার ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ওই ঘোষণার পর দেশের প্রত্যেক নাগরিকের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিই তার প্রথম রাজনীতি সংক্রানত পদক্ষেপ।
'আপনার উদ্দেশে আমার ব্যক্তিগত চিঠি' শিরোনামে লেখা খোলা চিঠিতে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি জানেন রাজনীতিতে জড়িত হওয়া মানে বিতর্কিত হওয়া। নাগরিকরা যদি মনে করেন তার রাজনীতিতে আসাটা দেশে নতুন রাজনৈতিক পরিমণ্ডল রচনায় সহায়ক হবে, তবে তিনি তার জন্য এ ঝুঁকি নিতে প্রসতুত আছেন।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. ইউনূস বলেন. 'রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য সাদামাটাভাবে সমর্থন দিলে হবে না। শুধু বললে হবে না_ 'আপনি এগিয়ে যান'। প্রচণ্ড উৎসাহ নিয়ে না এলে পরিবর্তন সম্ভব না। নিমরাজিভাবে রাজি হলে দল গঠনে সেভাবে অগ্রসর হওয়া যাবে না।
এভাবে চিঠির মাধ্যমে সমর্থন চাইছেন কেন জানতে চাইলে ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, তার পক্ষে সবার কাছে চিঠি দেয়া সম্ভব নয়। তাই মিডিয়ার মাধ্যমে চিঠি দিয়ে সবার মতামত চাইছেন। তিনি বলেন, জনগণ তাকে সমর্থন না করলে তার রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন নেই। তরুণ, তরুণী, যুবক, কৃষক, মুটে-মজুর, রিকশাওয়ালারা_ সবাই যদি সমর্থন করেন তাহলেই রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন আছে।
দল গঠনের বিষয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করেছেন কিনা বা কাদের নিয়ে এ দল গঠন হবে_ এ প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এখন পর্যনত কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি। কিছু রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে বৈঠকের উড়ো খবর চলছে। এটার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে তিনি সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সবার প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। ড. ইউনূস সবার মতামতের জন্য অপেক্ষা করবেন।
দল গঠন করলে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা প্রশ্ন করলে প্রফেসর ইউনূস বলেন, 'রাজনীতিতে নামলে আগামী নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন।'
বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো থেকে আপনার দলে যারা আসতে চাইবেন তাদের কিভাবে নেবেন_ এ প্রশ্নের উত্তরে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি সবসময়ই ঐক্যের কথা বলেন। এখনও বলবেন। কিনতু যাদের দ্বারা রাজনীতি কলুষিত হয়েছে তাদের সঙ্গে না নিয়ে দূরে রেখে পরিষ্কারভাবে কাজ করতে চান।
কত সময়ের মধ্যে আগামী নির্বাচন চান_ সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন করে অস্বাভাবিক পরিবেশে আবার ফিরে যাওয়ার কোন যুক্তি নেই। তবে যেটুকু সময় পাবেন ততদিনের মধ্যেই তিনি কাজ করতে চান বলে জানান।
তার পরবতর্ী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরবতর্ী পদক্ষেপের বিষয়ে এখনও কিছু স্থির করেননি। চিঠির মাধ্যমে মানুষের সমর্থন পেতে সময় নেবেন। তারপর দলের নাম স্থির করাসহ অন্যান্য কার্যক্রমে যাবেন। মানুষের কাছ থেকে সাড়া না পেলে তিনি রাজনীতিতে যাবেন না। তিনি বলেন, 'শুধু রাজনীতির জন্য রাজনীতি করব না।' প্রফেসর ইউনূস জানান, শনিবার তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে নতুন দল গঠন ও চিঠির বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন।
ড. ইউনূস বলেন, রাজনীতিতে কেউ গ্যারান্টি দিতে পারে না। তবে একটা সুযোগ আছে, তাই তিনি চেষ্টা করে দেখবেন। সবাই মিলে চেষ্টা করলে কিছু একটা দাঁড়াবে। তিনি অনেক সম্মান ও খ্যাতি পেয়েছেন। কিন' সম্মান ধুয়ে ধুয়ে খাবেন নাকি? সম্মানকে ধূলিসাৎ করা যাবে না। দল গঠনের পর গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত থাকবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক তার একার নয়। চিরদিন তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে থাকবেনও না।
নাগরিকদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে ড. ইউনূস বলেছেন, প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রেখে জাতিকে যথাযথ মর্যাদায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশকে কি পর্যায়ে নিয়ে এসেছে এবং দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করতে উদ্যোগী হয়েছে তা সবার মতো তিনিও অবলোকন করছেন।
খোলা চিঠির বিসতারিত
প্রতিটি ব্যক্তিনাগরিককে সম্বোধন করে ড. ইউনূস চিঠিতে বলেন, 'আপনার কাছে এই চিঠি লিখছি এর জবাবে আপনার কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি পাওয়ার আশায়।' এরপর প্রতিটি সাধারণ নাগরিকের উদ্দেশে তিনি বলেন, হয়তো আপনি লক্ষ্য করেছেন কি পরিস্থিতিতে দেশের বহু মানুষ তাকে রাজনীতিতে আসার অনুরোধ করে আসছেন এবং তাকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশকে কি পর্যায়ে নিয়ে এসেছে এবং দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে কিভাবে ধূলিসাৎ করতে উদ্যোগী হয়েছে তা প্রতিটি নাগরিকের মতো তিনিও অবলোকন করেছেন। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেভাবে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে এর পরিবর্তনের লক্ষ্যে একটি গ্রহণযোগ্য আবহ সৃষ্টির চেষ্টা করছে তা দেশের সব মানুষের সঙ্গে তাকেও আশাবাদী করে তুলেছে। এ অবস্থায় তিনি অনতর দিয়ে অনুভব করছেন যে, দেশের মানুষ তার কাছ থেকে যা আশা করছে তার প্রতি বিনীত সম্মান দেখিয়ে জাতিকে তার যথাযোগ্য মর্যাদায় নিয়ে যাওয়ার কর্মযজ্ঞে তার যথাসাধ্য অংশগ্রহণ করা উচিত। প্রফেসর ইউনূস বলেন, এটা এখন সবার কাছে স্পষ্ট যে, প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রেখে ওই কর্মযজ্ঞ কিছুতেই সম্ভব নয়। একমাত্র তার আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমেই সম্ভব।
ড. ইউনূস বলেন, তার কাজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এও তিনি মর্মে মর্মে অনুভব করেন যে, রাজনৈতিক সদি"ছা, যোগ্য নেতৃত্ব ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে আমাদের সাধারণ মানুষের সহজাত উদ্যম আর সৃষ্টিশীলতা অসাধ্য সাধন করতে পারে। মানুষের ই"ছায় সাড়া দিয়ে তাকে যদি রাজনৈতিক দল গঠন করতে হয় তা হবে এই উদ্দেশ্যেই নিবেদিত।
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, তিনি বাংলাদেশের দরিদ্রতম মানুষ থেকে শুর" করে অতি ক্ষমতাবান মানুষ পর্যনত সব বয়সের সব মানুষের যে অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা পেয়েছেন, এই সৌভাগ্য বাংলাদেশের কোন একক ব্যক্তির জীবনে আবার কখন আসবে তা তার জানা নেই। তিনি বলেন, আল্লাহর অসীম রহমতে তিনি অতিশয় ভাগ্যবান মানুষ। তার পাওয়ার আর কিছু অবশিষ্ট নেই। তিনি জানেন, রাজনীতিতে জড়িত হওয়া মানে বিতর্কিত হওয়া। আপনারা (নাগরিকরা) যদি মনে করেন তার রাজনীতিতে আসা দেশে নতুন রাজনৈতিক পরিমণ্ডল রচনায় সহায়ক হবে, তবে তিনি তার জন্য এ ঝুঁকি নিতে প্রসতুত আছেন।
গরিবের ব্যাংকার খ্যাত প্রফেসর ইউনূস বলেন, অতীতের হতাশা থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ উদ্যমে আমাদের সবার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ সৃষ্টির উপযুক্ত রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার এখনই উপযুক্ত সময়। এ কাজে যদি তাকে অগ্রসর হতে হয় তাহলে আপনার (নাগরিকের) এবং আপনার মতো আরও সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহায়তার বিশেষ প্রয়োজন। প্রত্যেক নাগরিকের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ কাজে তার কিভাবে অগ্রসর হওয়া উচিত সে সম্পর্কে আপনার পরামর্শ প্রয়োজন। এ কাজে নাগরিকরা তাদের অংশগ্রহণ ও সহায়তা কিভাবে দিতে চান সেটাও প্রফেসর ইউনূস জানতে চান। তিনি বলেন, 'একটি চিঠির আকারে আপনার কাছ থেকে এসব জানতে পারলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যে নতুন রাজনীতির জন্য সবার আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস-বায়নে আপনার প্রয়াস শক্তি পাবে।'
প্রফেসর ইউনূস নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ব্যাপারে প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে যে কোন বিষয়ে মতামত প্রত্যাশা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি 9টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন তার খোলা চিঠিতে। এগুলো হচেছ_ সব পাড়ার, সব গ্রামের সব মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে কিভাবে নতুন দল তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস-বায়নে কাজ করতে পারে, কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবন-সংগ্রামে এবং তাদের সংকট-সমস্যায় এ দল সহায়ক হতে পারে, সব বয়সের ও সব পেশার নারী-পুর"ষের স্বতঃস্ফূর্ত আত্মনিয়োগের ভিত্তিতে দলের সংগঠনকে কিভাবে গড়ে তোলা যায়, আগ্রহী ও উৎসাহী সব পর্যায়ের সৎ ও যোগ্য মানুষকে কিভাবে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে এতে সক্রিয় করা যাবে, তাদের মধ্য থেকে জনসমর্থিত সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে কিভাবে মনোনীত করা যাবে, দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মানুষের ব্যক্তিগত স্ব"ছতা ও সততা এবং দলের নিজের স্ব"ছতা ও সততা কিভাবে নিশ্চিত করা যাবে, দলের অভ্যনতরীণ গণতন্ত্র কিভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করা যাবে, তৃণমূল থেকে সবসময় যাতে সরাসরি মতামত পাওয়া যায় তা কিভাবে নিশ্চিত করা যাবে এবং দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিভাবে রাজনৈতিক দলের কমর্ীতে রূপানতরিত করা যায়। ড. ইউনূস বলেছেন, এরকম আরও বহু প্রশ্নে প্রতিটি নাগরিকের চিনতা ও পরামর্শ অত্যনত জর"রি।
একই সঙ্গে প্রফেসর ইউনূস প্রতিটি মানুষ এবং তাদের বন্ধুরা তার দলে কি কি ভূমিকা পালন করতে পারেন, কিভাবে সক্রিয় অবদান রাখতে পারেন বা সমর্থন যোগাতে পারেন তাও জানতে চেয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ প্রফেসর ইউনূস নাগরিকের 9টি ভূমিকার কথা বলেছেন। যেমন_ পাড়া বা গ্রাম পর্যায়ের সংগঠনের সদস্য হিসেবে, দলের জনকল্যাণমূলক উদ্যোগগুলোর অগ্রণী হিসেবে, স্থানীয় সংগঠন হিসেবে, গোষ্ঠীগত সংগঠনের সংগঠক হিসেবে, ব্যাপকভাবে মানুষের কাছে দলের আবেদন পেঁৗছানোর কমর্ী হিসেবে, পরামর্শদাতা-গবেষক-চিন-াবিদদের ভূমিকায়, ব্যক্তির বিশেষ সক্ষমতা বা বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান দলের কাজে নিয়োজিত করার মাধ্যমে, উদ্যমশীল সমর্থকদের ভূমিকায় দলের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য সৃজনশীল নেতৃত্ব দান এবং সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রকাশের মাধ্যমে বা এরকম অন্যান্য বিষয়ে।
নোবেল বিজয়ী এই প্রথম বাংলাদেশী সবার উদ্দেশ্যে আরও বলেছেন, আপনি রাজনৈতিক নেতা হোন, কমর্ী হোন, কোন সমিতি বা সংগঠনের নেতা হোন বা কমর্ী হোন, শিল্পপতি হোন, ব্যবসায়ী হোন, শিক্ষক হোন, দোকানদার হোন, শ্রমিক হোন, শিল্পী-সাহিত্যিক-চিনতাবিদ হোন, পেশাজীবী হোন, সাংবাদিক হোন, চাকরিজীবী হোন, গৃহিণী হোন, কিশোর-কিশোরী হোন, তরুণ-তরুণী হোন, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশী হোন_ তিনি সবার মতামত জানতে চান ও পরামর্শ পেতে চান।
প্রফেসর ইউনূস তার খোলা চিঠির সংক্ষিপ্ত কিংবা বিস-ারিত জবাব চেয়েছেন। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সব সদস্য, পাড়াপড়শী, সহপাঠী, সহকমর্ীদের নিয়ে সবাই মিলেও এক চিঠিতে জবাব দিতে পারবেন। ই-মেইল কিংবা এসএমএস-এর মাধ্যমেও যে কেউ জবাব দিতে পারেন এবং অন্যকেও উৎসাহিত করতে পারেন। যারা বিদেশে আছেন তাদের ড. ইউনূস তার চিঠির কপি পাঠিয়ে জবাব দিতে অনুরোধ করেছেন। ড. ইউনূস বলেন, তার এই চিঠি এবং নাগরিকদের চিঠির উত্তর হবে আনতরিক যোগাযোগের প্রারম্ভ মাত্র। এরপর থেকে তাদের যোগাযোগ একই লক্ষ্যে আরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে যেতে পারবে।
ড. ইউনূস তার খোলা চিঠির শেষের দিকে আরও বলেছেন, নতুন রাজনীতি সৃষ্টির প্রচণ্ড একটা উদ্যোগ সৃষ্টি করতে না পারলে পুরনো রাজনীতি থেকে পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না। হাল্কা সমর্থনে লক্ষ্যে পেঁৗছানো যাবে না। তাই প্রত্যেকটি মানুষের সাড়ার অপেক্ষায় থাকবেন ড. ইউনূস।
প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য খোলা চিঠিতে দেয়া ঠিকানা হচেছ_ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, হাল মারস, 6/ডি, 66 আউটার সাকর্ুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা-1217। ফ্যাক্স : 9334656, মোবাইল-017130802277, 01717760870, ই-মেইল: [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ রাত ৯:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



