somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: রু দ্র কি র ণ

৩১ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :








এক


রুদ্রর সাথে ওটাই ছিলো আমার শেষ দেখা।
এরপর পুনরায় দেখা হবার উপায় হয়তো একটা থাকতো, কিন্তু সেই পথটা ও নিজেই বন্ধ করে দিয়েছিলো। সেই একবার আবছা-আবছা দেখা হয়েছিল, এরপর আর কোনদিন ও আমার সামনেই পড়েনি।
আমারও যে তখনকার দিনগুলিতে ওকে খুব একটা বেশি দেখতে ইচ্ছে করতো তা নয়, তবে অনেকদিন কেটে গেলে হঠাৎ-হঠাৎ ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে করতো, কিন্তু ? এই চোখ সে আশা ধরে রেখে রেখে এখন ক্লান্ত হয়ে গেছে।
আনন্দের পানি দিয়ে সব ধুয়ে মুছে দিলেই কি, দুঃখের পথ পরিষ্কার হয়ে যায় ? হয়তো কিছুটা হয় পুরোটা কখনোই হয়না, কিছু অতৃপ্ততায় খুব করে তৃষ্ণা জাগায় জ্বীবের ডগায়, আর আফসোসের সুর তোলায়।
এমনি আফসোস আজকাল খুব জাগে- আহা! এই বর্ষায় রুদ্রকে যদি একটিবার দেখতে পেতাম?

বর্ষা গুলো হ্যাংলাটে ছেলের মতো আসে আবার চলেও যায় কিন্তু রুদ্র আর আসেনা !
আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম, খুব কাছের যে বন্ধু তাও নয়, আবার খুব দুরের যে বন্ধু তাও নয়- ঠিক দু’য়ের মাঝামাঝি। আমাদের মাঝে কোন সূচীপত্র ছিলোনা যে, বেছে বেছে অধ্যায়ন করবো। আমাদের মাঝে মিলের চেয়ে অমিল ছিলো বেশি অনেকটা আকাশের নক্ষত্রের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে
আমি ওকে ভালোবাসতাম! এটা লোক দেখানো কিংবা তাজমহল নির্মান করবার মতো ভালোবাসা নয়, এটা সিনেমার কোন রোমাঞ্চকর দৃশ্য কিংবা অতি বিরহ কোন ভবঘুরের প্রেমের মতো নয়, এই ভালোবাসা অনেকটা অদৃশ্য ভালোবাসার মতো।
মেডিটেশন অবস্থায় ওকে কখনো ভাবিনি, হিমালয় পেয়ে গেছি, কিংবা ওকে ছাড়া এই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে! আমার এমনটা কখনো মনে হয়নি। রোদ্দুর দেখে কি মেঘের হিংসে হয়? তার কি অভিমান জাগে? আমি জানতাম জমে থাকা কষ্টটা ভুলতে পারবো ও পাশে থাকলে; যখন ওর কথার তরীতে নিয়ে আমাকে ভাসাবে তখন আমি ভুলে যাবে ফেলে আসা কষ্ট গুলোকে। ওকে ভালোলাগা থেকে মুছে ফেলা হয়ে উঠেনি হয়তো উঠবেও না তবুও বলা যায়না এটা গতানুগতিক ভালোবাসা। অদৃশ্য কিংবা -বাস্ লে বাস, না বাসলে গলায় দে গিয়ে ফাঁস! এমন ভালোবাসাও নয়, এটা ছিল “আমি অন্তর রেখেছি ধরে সেখানে স্বপ্ন দিবি ভরে” এই স্বপ্ন বেঁচে থাকার স্বপ্ন, সিঁড়ি বেড়ে উঠার স্বপ্ন এই স্বপ্ন কাঁদবার জন্য নয়, এই স্বপ্ন ওকে যেন কখনো দেবদাশ করে না তোলে আমি শুধু তাই চাইতাম।
ওর কোন কিছুতে আসক্তি নেই; না পেলে কখনো হতাশা পাখায় বাতাস করতো না, তবে কষ্ট দেয়ালের সবকিছুতেই একটা অভিমান ওর থাকতো, কিন্তু সেটা খুব যতনে লুকিয়ে রাখতো; পাছে কেউ ওকে ভুল বুঝে সেটাতেই ছিলো ওর ভয়, আর সেই ভয় থেকেই হয়তো শেষের দিকে সিঁটিয়ে গিয়েছিলো।

আমার আরও একটা প্রাণপ্রিয় বন্ধু ছিলো সে হলো কিরন;
প্রাণ প্রিয় বলার একটা কারণ দাড় করানো যেতে পারে, আমি যখন প্রথম মন খারাপের দিন গুলোর উপস্থিতি টের পেতে শুরু করি সেদিন থেকেই আমি ওকে সাথে পেয়েছিলাম, কলেজে ওই ছিলো আমার সহপাঠি প্লাস বন্ধু আমি ওর উপর নির্ভরতার খাতা খুলে দিতে পেরেছিলাম, শেয়ার করবো যে কথা সেটা পেটে রাখা আমার জন্য দায় হয়ে দাড়াতে আমি তাই ওর কাছে শেয়ার করতাম তাই হয়তো আমার এই নির্ভরতায় কেউ কেউ বলে ফেলতো আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধু কিরণ।
কানাইখালি মার্কেটে আমি কখনোই যেতাম না ওখানে আমার যাওয়া পড়তো না কিন্তু তার ঠিক পাশেই নিচা বাজার সেই পথ ধরেই আমার ছিলো পথচলা আমার ঘুম চোখা সেই অবস্থায় যেতাম প্রতিটি সকালেই জিয়া স্যারের পড়া খতম করতে। আমার ঘুম চোখ কিরণের কখনোই এড়াতো না
-কালরাতে ঘুমাসনি, জেগে তারা গুনেছিলি বুঝি?
- হতচ্ছাড়ার সাথে কাল আবার এক পশলা ঝগড়া করেছে; সেই ঝগড়া দিয়েই তো রাত কাবার
-কেন রে? তুই না বলেছিলি ও,তোর অ্যানপারালেল্ড ফ্রেন্ড
ও সত্যিই আমার অন্যরকম একটা বন্ধু ছিলো। পথচলতি সময়ে পথ ফেরিতে লোকের তো অভাব নেই আমাদেও পথ আলোচনা দেখে লোকের চোখ তো হেডলাইট হয়ে যেতো তখন, জ্বলছে তো জ্বলছেই আমরা তখন ইংরেজির কেচ্ছা খতম করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু করেছে মাত্র।


দুই

আমি খুব বন্ধু পাগল ছিলাম। এক সকালে হতচ্ছাড়া আমায় প্রণিপাত করে বললো কথা বলতে পারি মনস্বিনী? হতবাক হবার রেশ লাগলো মনে বলে কি? আমি নাকি স্থিরচিত্তা কখনো থেকেছি বলে তো মনে হয়না। আমার অভিমানের ঝুলি তো অনেক বড় ‘ছোট ঢেউ গুলো হয়তো আলতো শিহরন দেয় কিন্তু বড় ঢেউগুলো সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়’ অভিমানের ঢেউ কখনো কখনো কষ্টের কারন হয়ে দাড়ায়?
এ জীবনে কত হাজার বার যে অভিমান হয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না, কিন্তু এক্ষেত্রে ও ছিলো ঠিক উল্টোটি- শীতল পাটি, মনে হয় এক ঘড়া পানি ঢেলে দিলেও এক ছটাক রাগ ওর মাথায় উঠবে না।
তবে একটা বিষয় ভাবায় ওর বন্ধুরা বলতো ওর রাগ পারভেসিভ রাগ, ওর কোন্ বন্ধুর পেটে নাকি একবার ছুড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছিলো।
ও প্রায়ই বলতো আমার স্বপ্নগুলো জারমিন্টে হওয়ার আগেই তুই পরিনীতা হয়ে যাবি আমাকে তখন তোর পোষ্টার মনে হবে; ভিজে যাওয়া কিংবা রং উঠা একটা পোষ্টার শ্যাওলাপড়া দেয়ালে যেমন ঝুলে থাকে। আমার জীবনে ওর প্রবেশ হবার পর থেকেই হয়তো আমি একটু বদলে ছিলাম কিন্তু কতভাগ ভালোর প্রভাব পড়েছিলো আমার উপর কিংবা কতখানি সমস্যাগ্রস্থ হয়েছিলাম আমি সে কথার আলোকপাত নাইবা করলাম, ও তো আমার বন্ধু ছিলো যদিও ও দেখাতো ওর বারদরিয়া শূন্য কিন্তু আমি তো জানতাম ভেতর বাহিরের পুরোস্থান জুড়েই আছে অসামান্য ধারণ ক্ষমতা।

আমি সবসময়ই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলতাম আর ও ছিলো নিয়ম ভাঙ্গাদের দলে। রিলাই না থাকলে আকড়ে ধরে থাকা যায় না।
অনিয়ম ভাবে কি কাউকে ভালোবাসা বা আঘাত করা যায়? অন্তত আমার অভিধানে এটা ছিলোনা। আমি বেছে বেছে স্বপ্ন দেখতে পারতাম না ষ্টাডি করে টুইন-টাওয়ারের মতো দাড়িয়ে যাবো সেই ছিলো আশা, আর ওর এ জাতীয় চিন্তা ভাবনার খাতায় শুন্য আকাঁ থাকতো।
ক্যালকুলেশন করে জীবন চালানো যায় না, কিন্তু সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে এদিক-সেদিক হবেই।
স্ত্রৈণ হবে এমন কোন পুরুষ আমার জীবনে কখনো আসুক তা কখনোই চাইনি, আর যাই হোক, যার যার আকাশে যার যার নিজস্ব গতিপথ থাকবে, আমার উপর রুদ্র-কিরণের রোদ বৃষ্টির মতো দুরন্ত অভিমান হোক সেটা কখনোই চাইতাম না। ফেলে আসা সে দিনগুলো স্বপ্নের মতো কাট ছিলো না, অনেকটা উৎকণ্ঠায় কাটছিল !! কিরণ এক বিকেলে ভনিতা নিয়ে বললো আমার সাথে প্রেম করবি? আমি বললাম প্রেম কি বলে- কয়ে হয় নাকি ওটা এসে যায়,- বাসা বেধেঁ যায়, চিত্রনাট্যের প্রেমে মিলন হয় আশি পার্সেন্ট আর বাস্তবে ষাট পার্সেন্ট।
আমি কিরণের কথায় সায় দিলাম না। অতিরিক্ত প্রসাধনীতে যেমন র‌্যশ হবার সম্ভবনা থাকে তেমনি অতিরিক্ত মাখামাখি সম্পর্ক গুলো বন্ধ হয়ে যায় লজ্জাবতী পাতার মতো।
রুদ্রর এক কথা, ‘ভালো বন্ধু জীবন সঙ্গী হলে সেখানে সেক্রিফাইস থাকে বেশি’ তবে মানুষের মন তো পরিবর্তন আমি ভয়টা পাই সেখানে রেডিমেট ভালবাসার র‌্যাপচারটা বেশিদিন থাকেনা।

নিজের কথাই যদি বলি- যদি দিনপঞ্জি খুলি, দেখবো সতৃষ্ণ পুরুষ আছে চর্তুদিকময়। ভালবাসার উপসংহার করতে যাবো সেখানে আমার দিনপঞ্জির পাতায় আছে বেশক’টা আহবান; আর আমার প্রত্যাখ্যানও আছে বেশকটি।
রুদ্র কথার বেড়াজালে আমাকে মাঝে মাঝে খুব কষ্ট দিতো আমি খুব কষ্ট পেতাম যখন ও নিজেকে ইনইফিশেন্ট ভাবতো; ও আমার বন্ধু কেন নিজেকে এমন ভাববে? রুদ্র মাঝে-সাঝে বলতো আহা! আমার যদি একটা আকাশ থাকতো সেখানে কত,না ছবি আঁকতাম, “তুই আমার আকাশ হবি”
- আমি আকাশ হলে তোর খুব লস্ হবে?
- কেন?
- তুই আঁকবি। আমার মন চটে গেলে বর্ষন দিয়ে সব মুছে ফেলবো।
দিন গেছে। সেইসব দিন আর ফিরবে না। আমাদের কোন সোনা-কিংবা রুপোর খাঁচা নেই যে দিনগুলোকে তুলে রাখবো। আমি নিউ জেনারেশন নিয়ে ভাবতাম আর হতচ্ছাড়ার ভাবনায় তখনও সত্তুর দশক। যখন একুশ শতক নিয়ে মাতোয়ারা হবো তখন ও পড়ে আছে মান্ধাতা আমল নিয়ে।
কোন উৎসব কিংবা কোন আয়োজনে আমরা যখন আনন্দ শেয়ার করতাম সবাই মিলে, সেখানে পরিবারের সদস্য, বন্ধুরা, পাড়াপড়শিরাও সবাই থাকতো কিন্তু রুদ্র থাকতো না গভীর গোপনে অজানা অভিমানে আড়ালেই থেকে যেত বিষাদের ছায়া পড়তো আমাদের গায় মাঝে মাঝে তাই এড়িয়ে যেতে চাইতাম কিন্তু যখন দেখতাম হঠাৎ অভিমান শূন্য হয়ে দাড়াতো সামনে তখন ফেরাতে পারতাম না। কিরন আমার সাথে কথার রেশ ধরেই অভিমান করতো আবার মিশতে গিয়ে আপত্তি তুলতো আমি রাগের মাথায় ঝাড়তাম কিন্তু পরক্ষণেই আমি ডাকতাম।

তিন

পুটিয়া কিংবা মহারাজার রাজপ্রাসাদ গুলোতে আমি অনেক বেড়িয়েছি; শহুরে হয়েও গ্রামের পথ কম মাড়াইনি সবুজ বনভূমি নিয়ে চোখের মাঝে কিংবা ফুরফুরে হাওয়া গায়ে মেখে গ্রামের বাড়ি যাবার সময়টাকে খুব এনজয় করতাম কেননা সে পথটা যেতে হতো রেলগাড়িতে, আমি তখন একাই চলে যেতাম রুদ্র বলতো এক দুপুরে তুই আমার সাথে রেলগাড়িতে চাপবি দু-জন মিলে সারা পথ কথা বলতে বলতে পথ পাড়ি দেব। ওর সেই ইচ্ছে গুলো ইচ্ছেই থেকে গেছে পূর্নতা পায়নি।
কিরণ আমায় নিয়ে কখনোবা আশপাশটায় সব সৌন্দর্যের পুকুর গুলোতে মাঝে-সাঝেই ডুব দিতো কিন্তু রুদ্র তার কানাকড়িও পায়নি হয়তো পেতো কিন্তু আমিই তখন অগোছালো ছিলাম তাই…………….

একবার ও আমার খুব কাছে চলে এলো রানী ভবানীর সদর দরজায়। আমি ভাবলাম চোখের তৃষ্ণা একটু মিটুক কখনোই তো প্রাণপূর্ণ ভাবে দেখিনি, এ চোখ শুধু ওকে নিরস পটেই দেখেছে। আমি সেদিন সামান্য প্রসাধনী নিলাম মুখে, হয়তোবা এক-আধটু কাজল, একটা একরঙা জামা। রুদ্র কালো আর আকাশি কালার লাইক করতো। সব প্রস্তুতি শেষ করে বেরুতে যাবো অমনি মা, এসে বাগড়া দিলো
দেখা হয়নি; দূর্বা গুলো ওকে নিয়ে দাড়িয়ে ছিলো দুপুর থেকে সন্ধ্যে অবদি আমার পা ওই দূর্বাতে পড়েনি। আমি খুব অস্থিরতা নিয়েছিলাম বুকে, আমার বাঁধভাঙ্গা কান্না সেদিন শাওয়ারের পানিতে মিশে গিয়েছিলো।
ওর প্রথম বেলাকার কথা -আমি আপনার বন্ধু হতে চাই, জানিনা ভালো বন্ধু হতে পারবো কি-না তবে আপনার ফেলে দেয়া কথাগুলোকে ঘুড়ি করে আকাশে উড়াতে পারবো।

কিরণের সাথে প্রথম যেদিন কথা হয়ে ছিলো তখন ভাবতেই পারিনি ও একদিন আমার এতো ভালো বন্ধু হয়ে যাবে। আসলে ভাবতে না পারা বিষয়গুলো মাঝে মাঝে কারো কারো প্রিয় হয়ে উঠে আর সেটাই হয়তো আমার হয়ে ছিলো।
রুদ্র’র কথায় হয়তো আমার সেদিন মিশ্র অনুভূতি হয়েছিলো, আমি কেন-যেন সেদিন কিছু না ভেবেই মেনে নিলাম আর যাই হোক একসময় ওকে আমি আমার অনুভূতিতে যে মিশিয়ে ফেলবো সেটা বুঝতে পারিনি। রুদ্র বলতো আমরা হবো রাতভর তারাদের সঙ্গি, ঝি ঝি কিংবা জোনাকির সাথে আমরা অনুভূতি ভাগ করবো ভাবনাগুলো ফোরসফুল ছিলো কিন্তু সেটার বিবর্তনটা ছিলো ভয়াবহ।
ও আমাকে কষ্ট দিয়েছে। আমি কখনোই ধৃতমতী ছিলাম না। তাই ওর সামান্য কাব্যময় কথা গুলোকে নিজের উপর এপ্লাই করতাম আর কষ্ট পেতাম।
রুদ্র’র এক কথা আমরা বন্ধু-আমরা হলাম একটি মুদ্রার এপিট-ওপিট যাই ঘটুক না কেন আমরা দুজনেই সমান ভাবে তা অনুভব করবো। হয়তো তাই হয়েছে আমি এখন অনুভব করি। রুদ্র’র মাঝে অদ্ভুত কিছূ একটা ছিলো, যেমন আমি ওকে মনে করতে গেছি ঠিক তখনই ওর ফোন! আমি কেন সমস্যায় পড়ে গেছি সমাধানে কাছের বন্ধুরা কিংবা ফ্যামিলির লোকেরাই এনাফ কিন্তু আমার টেনশন বাড়বে সেই জন্য ওকে বলতেই আমাকে ভরসা দিতো রাশি রাশি। আমি ভাবতাম কাজ হবেনা কিন্তু কাকতালীয় ভাবে সেটাই হয়ে যেত… সবার ভীড়ে সরল স্বীকারোক্তি দিয়েই সবার মাঝখান থেকে ও যেমন উঠে এসেছিলো তেমনি আঁধারের মতো রাত ফুরাবার আগেই ও হারিয়ে গেলো।

আমরা সবকটা ঠিক দাড়িয়ে গেছি পাহাড় চূড়ার মতো একেকজন হোমরা-চোমরা ব্যাক্তি হয়ে গেছি-সংসারের ভরা আঙ্গিনায় আমাদের সাফল্য আজকাল অনেককেই ঈর্ষান্বিত করে, কিন্তু রুদ্র? এই প্রশ্নটা তাড়িয়ে নিয়ে গেছে আমাকে দিনের পর দিন; ও কি দাড়াতে পেরেছে? আমার সাথে ওর কি কখনো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো? পুড়ে যাওয়া কাঠ কয়লাকে কতবার পোড়ানো যায়? তার শেষ চিহ্ন পর্যন্ত হয়তো!! হয়তো বুকের মাঝে গভীর সমুদ্র নিয়ে নদীর ধারে বাসা বেধেঁ ছিলো; হয়তো ভেবে ছিলো ঝরনা হয়ে পাহাড় থেকে একবার যখন নেমে পড়েছে তখনতো আর পাহাড়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবেনা তাই থেকে গিয়েছিলো আমাদের মাঝে। এমনও হতে পারে আমাদের মাঝে খুজে পেয়ে ছিলো ওর সমস্ত চাওয়া; হতে পারে আমরাই ছিলাম ওর অনুভূতি শেয়ার করার একমাত্র জানালা।
জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় মাঝে মাঝে সবকিছু ফেলে দিয়ে ভাবতে বসে যাই ওর শেষ কথা গুলো। খুব মনে পড়ে। সেই দিনগুলো আজকাল ডায়েরির পাতায় বন্দি হয়ে আছে আর সেই সাথে ওর স্মৃতি কলমের কালিতে মিশে আছে। বন্ধুরা প্রায় সবাই এখনও চারপাশেই আছে কিন্তু সেই উদাস বন্ধু রুদ্র নেই!!
কোথায় আছে রুদ্র? কেমন আছে রুদ্র?


২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×