somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। যে পত্রকথা হাওয়ায় উড়ে-১।

০৯ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :








নিরু ,
আছো কেমন? আজ আাকাশ দেখেছো? দেখনি বোধহয়! আজকের আকাশে যে তারাটি কম আলো নিয়ে জ্বলছে, একটি বার কল্পনা করে দেখলাম সে তারাটিই হলে তুমি, আর দুরের একলা উজ্জল আলো নিয়ে থাকা যে তারাটি সেটা হলো আমি। তোমার চারপাশে দ্যুতি আছে কিন্তু তাতে উজ্জ্বলতা নেই, আমার চারপাশে জুড়ে আলো আছে কিন্তু তাতে প্রাণ নেই। আজ খুব ইচ্ছে হলো আমার সব উজ্জল আলো তোমাকে দিয়ে দেই। যদি কোনদিন দিয়ে দেই, নেবে তো? না,কি আবার বলবে কারো আলোয় আলোকিত হতে চাইনা।

জানিনা কি বলবে? তবে আজ না হোক, কাল-পরশু বাদ দিয়ে হলেও একদিন ঠিক দিয়ে দেব। হয়তো তুমি তা ভাবতেও পারবেনা। তুমি জানোনা আমার চেয়ে তোমার বেঁচে থাকার দিন দীর্ঘ । আমার প্রস্থান হবার অনেক আগেই তোমাকে রাঙিয়ে দেব আলোতে।

তোমার তো দেখা পাওয়া গেলনা গতকাল। হয়েছে কি জানো? কাল রাত ভর ইচ্ছেরা স্লাইড শো দেখিয়ে গেছে আমার চোখে। একটার পর একটা কথা দিয়ে গল্প গাঁথছিলাম আমি, আর সেখানে সব বন্ধুদের ভীড়ে তোমার হাসি মেশানো শুকনো মুখটা মনে পড়ে যাচ্ছিল বারবার। সবার হাসি মুখ আমাকে ভালো থাকতে সাহায্য করে। তুমি তো জানো আমার অনেক ইচ্ছে। সেই সব ইচ্ছের মাঝেই নতুন আর একটা ইচ্ছে মাথা চাড়া দিয়ে জেগেছে । বাড়ির পেছন পথে, না জানা গাছের পিঠে বেশ কদিন যাবত হলো ফুটে আছে নীল-হলুদ রঙা বেশ ক’টি ফুল। দেখতে খুব সুন্দর না কিন্তু তাতে বেশ প্রাণোচ্ছল ভাব সুস্পষ্ট।

আমি কখনো শুনিনি তুমি কোন ফুল পছন্দ করো তাই জানা ফুলের জগৎ থেকে তোমাকে কি আর দেবো? ভেবে দেখলাম না জানা সেই ফুলটিই দেব । প্রশ্ন করতে পারো যদি ঝড়ে যায় সে ফুল তাহলে কি হবে? যদি এই নগরে পা ফেলবার আগে তোমার দেখা না পায় জীবন্ত সে ফুল তাহলে কি হবে? সে নিয়ে তুমি ভাবতে যেয়ো না। আমি রেখে দেব, যেমন করে রেখে দিয়েছি ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার বয়সের সেই ময়ূরপাখাটিকে। গতকাল পুরোনো সে ডায়েরির পাতা খুলে আরেকটিবার দেখে নিলাম ছোটবেলায় রাখা সে ময়ুরপাখাকে। তুমি কি দেখেছ নিরু, ভেসে যাওয়া ফুল ঘুরে কত ঘাট-বেঘাট। তবুও সে ফুল। যতক্ষণ না সে চুপসে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সে জীবন্ত ফুল। চুপসে যাওয়া ফুলও কেউ কেউ জমিয়ে রাখে সেখানে স্বপ্ন বেচবে বলে।
নিরু কাজের ভীড়ে আজকাল খুব করে উদাস হচ্ছি, ভাবে সেটা মনে হলেও আমি কিন্তু বলতে পারছিনা যে, এ জীবনটা বদল করতে ইচ্ছ হয়। আজকাল পাখি হতে ইচ্ছে করে খুব। তাতে রোজ ঘুড়ে দেখা যেত তোমাদের ক্ষত নদীটাকে। কিন্তু সেটি হচ্ছেনা। আমরা কষ্টের মতো ক্ষতকে ও লুকাই।

নিরু একটা কথা বলবো, জানি একটু আঘাত তোমার বুকটাকে চিরে দিয়ে যাবে তবুও বলি ,কষ্ট তো কতই থাকে জমা। বুকের অগ্নি চুলোয়। তবুও অনেকেই সেটা শত চেষ্টা করে নেভাতে পারিনা। যদিও জলের ভার বয়ে আসছি আমরা বছরের পর বছর। জমা রেখেছি দৃষ্টিকূপে। তবুও কিন্তু সে জলে নেভাতে পারিনা-সে আগুনকে যে, আগুনটা পোষাপাখির মতো বেড়ে উঠে আমাদের লক্ষ্যে-অলক্ষ্যে। যে স্মৃতি তোমাকে প্রিয় আরশিটির মতো ভেঙ্গে দেয় রোজ একটিবার তাকে তুমি বদলে ফেলতে পারো। সে জন্য শুধু তোমার ইচ্ছেই যথেষ্ট। তুমি দেখোনি একলা প্রজাপ্রতি অনেক উড়ে, অনেক ঘুড়ে তার সৌন্দর্য্য লেগে থাকে তার গায়, যখন সে দলবেঁধে উড়ে তার সৌন্দর্য্য প্রকৃতিকে ধাঁধায়। তুমি ভাঙা খোসা থেকে বের হয়ে এসো নিরু, হাত মেলাও প্রকৃতির সাথে দেখবে তুমি তাদের প্রিয় বন্ধু হয়ে গেছো। তাতে তোমার মন থেকে জমে আছে যা তা হালকা ঘুড়ি হয়ে উড়তে থাকবে দূর আকাশে।

নিরু জীবনটা মাত্র কয়েকদিনের। সেখানে হাসতে হয় সুবাস ছড়িয়ে, কাঁদতে হয় লুকিয়ে, বাসতে হয় সব কিছু দিয়ে, কুড়াতে হয় আঁচল পেতে। তুমি এর সব কিছুই পারো তাহলে কেন বাষ্প হয়ে উড়বে? তুমি কি উচ্ছল ঝরণা হতে পারো না? তুমি কি স্বচ্ছ সরোবর হতে পারো না? নিরু তুমি পারবে অন্ধের মতো বিশ্বাস গলায় বাধো তুমি ঠিক পারবে?

===========================================

৭ ই আগষ্ট-২০১২
সুসং নগর
রিভার ষ্ট্রীট,

২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×