যারা এখনো মুখ দিয়ে সমানে মেয়েদের বেপর্দা থাকাকে ধর্ষনের পরোক্ষ কারন বলে দাবি করতেছেন, তাদেরকে দূর্বা জাহানের একটা স্টেটাসের কিছু অংশ ডেডিকেট করলামঃ
"তোমার কয়েকইঞ্চি যন্ত্রের কোন দোষ নাই?সব দোষ আমার উচুনিচু শরীরের?
যেসব ছেলেরা দেখেনা তারা দেখেনা ভদ্রই থাকে, দৃষ্টিতে শ্রদ্ধা থাকে আর যারা দেখে তারা ঘরের মা বোইনের সাইজ চিন্তা কইরাও হাত মারে ।
আমি কালকে সন্ধ্যায় যখন আড্ডা দিয়া ফিরছি বাসে আমারে রেইপ কইরা ফালায় রাখলে সবাই মনেহয় এইটাই কইতো দূর্বা শরীর দেখায় বেড়াইসে বলে রেইপ হইছে । যে মেয়েটা আজকে মারা গেছে কেউ তার প্রিয়মানুষরে ঐখানে চিন্তা কইরা দেইখেন । ডঃ সাজিয়া কিন্তু পর্দা করতো, তবুও তাকে রেপ করে মেরে ফেলছিল ।
সুশীলদের কথা ছাড়ান দিলাম ।
সমস্যা আমার শরীরে না সমস্যা তোমার দৃষ্টিভঙ্গিতে!”
এই ধরনের ঘটনা গুলো ঘটে, কিছু দিনের জন্য সামান্য তোলপাড় হয় তারপর আবার আমরা সব ভুলে গিয়ে অবচেতন মনে আরেকটা ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। ধর্ষনের শক্ত শাস্তি, বিচার নিয়ে রাজপথে কখনোই কোন বড় ধরনের আন্দোলন হয় না, প্রতিবাদ হয় না, ধর্ষনের ঘটনা গুলো যেন একটা ট্যাবু' এটাকে যতটা চেপে যাওয়া যায় ততই ভালো।
বাংলাদেশে এত এত নারী সংগঠন, মহিলা পরিষদ ইত্যাদি ইত্যাদি সেই সব সংগঠনের জ্বালাময়ী নারী নেত্রীরাও শুধু 'নারীর প্রতি সংহিসতা রোধ' নামের গোলটেবিল বৈঠক করেই কাজ শেষ করে, ধর্ষন নামের এই জঘন্য অপরাধের যে পর্যাপ্ত শাস্তির বিধান নেই দেশে সেই বিষয়ে তাদের তেমন কোন আগ্রহ নেই।
এই ভাবে আর কতদিন চলবে? কতদিন আমাদের বাচ্চারা, বোনেরা স্কুলে পড়তে গিয়ে,রাত শেষে কাজ করে বাসায় ফিরতে গিয়ে এই ধর্ষনের শিকার হবে? কতদিন তাকেই প্রমান করতে হবে যে সে ধর্ষিতা? এটা কেমন বিধান, কেমন বিচার?
অতি সুশীল কেউ কেউ আবার বলে এইসব ঘটনা এভাবে স্টেটাস দিয়ে শেয়ার দিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে আরো অপদস্থ হতে হচ্ছে। একজন তো বলেই বসলেন, সে যদি আমার পরিবারের কেউ হত, অতি সমবেদনা মুলক স্টাটাস কমেন্ট দিয়ে সারা বাংলাদেশকে জানানোর পর আমার পরিবারের আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকতো কি?" অপরাধী আর তার পরিবার সমাজে বুক ফুলায়া ঘুরবো আর ভিকটিম তার পরিবার সহ সুইসাইড খাইবো? কি চমতকার নীতি! এই নীতির কারনেই তো শতকরা ৮০% রেপের খবর কেউ জানতে পারে না। পরিবার থেকে চেপে যায় মান সম্মানের ভয়ে, সমাজের জুজুর ভয় দেখায়া চাপায়া রাখা হয় ঘটনাটা। এইসব প্রাচীন ধ্যান ধারনা ছাড়েন ভাই। এমন একটা সমাজের স্বপ্ন দেখেন, যেখানে ধর্ষকের পরিবারকে সামাজিক বয়কট করা হবে, কেউ সেই ধর্ষকের সাপোর্ট দিবে না।
আমরা বাঁচতে চাই নামক ইভেন্টের ব্যানারে মানববন্ধন করেছিলাম আমরা সংসদ ভবনের সামনে, ধর্ষকের ফাঁসী চাই এই শ্লোগান নিয়ে। সব মিলিয়ে ২০০ লোকও হয়নি। তারপরেও দাঁড়িয়ে ছিলাম দিনভর। পুলিশ খেদিয়ে দিয়েছে, একটু সরে গিয়ে আবার দাঁড়িয়েছি। অনলাইনের পরিচিত মুখেরা অনেকেই ছিলেন, আবার অনেকেই ব্যাক্তিগত রেষারেষি থেকে বের হতে না পারায় আসেন নি। যাইহোক, যেটা বলতে চাচ্ছিলাম, ইভেন্ট খোলাটাই বড় কথা না, বড় হল সচেতনতা। মানুষ যখন ধর্ষক আর ধর্ষিতার মানবিক পরিচয় ভুলে গিয়ে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, তখন আসলে সঠিক বিচার আশা করা অনুচিত।
মাননীয় আদালত আপনাদের ধর্ষন সংক্রান্ত বিচারের এই প্রহসন আমি মানি না। জানি আমার কোন ক্ষমতা নেই, আমি শুধু বলতেই পারি, আমি তাই বলেই যাবো.......ধর্ষন এক ধরনের হত্যা, মানুষের মনকে হত্যা, তার শরীরকে হত্যা। আমদের দেশের হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি যেহেতু মৃত্যুদন্ড তাই আমি সেই সর্বোচ্চ শাস্তিটাই চাই ধর্ষকের।
ধর্ষনের স্বীকার হয়েছে এই প্রমান দেবে ধর্ষিতা; এই বর্বর নিয়মের অবসান চাই........ধর্ষকই প্রামাণ করবে সে ধর্ষন করে নাই.......
ধর্ষিতা বা ধর্ষণের চিত্র নয় ! ....এবার ধর্ষকের বর্ণনা চাই ...চাই চাক্ষুষ সর্বোচ্চ শাস্তি ...চাই ধর্ষকের সবধরনের তথ্যের পূর্ণ বিবরণ ....
আমাদের বোঝা উচিত ধর্ষকের ধর্ম নেই, কোন গোত্র নেই.....সে কোন মানুষ্য প্রজাতির মধ্যে পরে না। এই প্রজাতির ধ্বংস চাই আমি........
ওর জন্যে মানবতা শব্দটা প্রযোজ্য নয়, ও একটা নরাধম পশু। জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরকে যেভাবে মেরে ফেলা হয় দয়ামায়া উপেক্ষা করে, তেমনিভাবে ধর্ষকের ক্ষেত্রেও একই রকম ভাবে বিচার করা উচিত। আর এটা যে শুধু আদালতেই করতে হবে, তা নয়। সামাজিকভাবে ধর্ষকের উদ্দেশ্যে নিরঙ্কুশ ঘৃনা ছড়িয়ে দিতে হবে। কোন ধর্ষক যেন পরিবার, সমাজ, রাজনৈতিক দল বা যে সংগঠনই হোক না কেন, সেখানে আত্মগোপনের সুযোগ খুজে না পায়।....
শুধুমাত্র একটা ধর্ষককেই ঝুলাতে পারলেই হবে ,আমি পরখ করে বলতে পারি আমাদের দেশে ধর্ষণ ৮৫ % কমে যাবে....আর এই যে আমাদের সম্মলিত পদক্ষেপ সবার ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে এখন.. তাই এই সময়টায় মধ্যেই এই ধর্ষককে একটা শাস্তি দিয়ে একটা প্রচলন শুরু করার পারফেক্ট সময়...
.সবাইকে বলব যার যার জায়গা থকে ধর্ম বর্ণ বিবেধ ভূলে গর্জে উঠুন....কোনো মেয়ে যেন ভুলেও আর বুঝে না এ দেশে মেয়ে হয়ে জন্ম হওয়া পাপ!!!!!বার বার আর যেন আমাদের দেশের মা বোনদের প্রতি অবজ্ঞার অপমানের চোখে দেখার সাহস না পায় কোনো কাপুরুষ .....
জানি না এই ইভেন্টটা কতদূর সামনে যাবে। তবে আশা করি এই ইভেন্টের জন্য হলেও আমাদের মাঝে কিছুটা সচেতনতা বাড়বে।
শেয়ার করুন। ছড়িয়ে দিন। আওয়াজ তুলুন। এখানে কোন লীগ বিএনপি নাস্তিক আস্তিক নেই। আছে ধর্ষনের স্বীকার কিছু শিশু আর তাদের আর্তনাদ।
শেয়ার করুন-
ইভেন্ট লিংক: Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



