somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেখিয়া ফেলিলাম কনজুরিং- দ্যা ডেভিল মেড মি ডু ইট

১৭ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভৌতিক চলচ্চিত্রের প্রতি আমার আগ্রহ আদি ও অকৃত্রিম। ভাল চলচ্চিত্রের খবর পাইলেই আমি তাহা সংগ্রহ করিয়া দেখিয়া ফেলি।যদিও তাহা কদাচিৎ পাওয়া যায়।বহুকাল আগে ভাল লাগিয়া ছিল কনজুরিং নামক চলচ্চিত্রটি।তার পরেরটি ভাল লাগে নাই।তবে এই ধারার কিছু মুক্তি পাইলে আমি সচারাচর তাহা দেখিয়া থাকি।কারন এলোমেলো ভাবে বাছিয়া নেয়া কিছু চলচ্চিত্রে ভুত পিশাচ দেখার আশায় কতিপয় শিশু মস্তিষ্কের কল্পনা প্রসূত ভাঁড়ামি দেখিয়া দক্ষিণহস্ত দিয়া কান মলিয়াছি-- যে এরূপ অবার্চিন সিদ্ধান্ত লইয়া নিজের চক্ষু কর্নের উপর অত্যাচার আর করিব না।

সেসব দিক থেকে কনজুরিং পরিবারের ছবিগুলো ভাল।কারন এগুলো তে কাহিনী একটা থাকে বটে। তা দর্শকবৃন্দের হজম হোক বা না হোক।তাই যখনি শুনিলাম চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে আসিয়াছে তখনি বিখ্যাত চৌর্যবৃত্তির কারখানা টরেন্ট থেকে তাহা নিজের মুঠোফোন যন্ত্রটিতে নামাইয়া নিলাম।

তো এবার মূল কাহিনীতে আসা যাক।এই অংশে লোকে যাহাকে স্পয়লার বলে সেই বস্ত থাকিতে পারে।তবে ইহাতে আমাকে এককভাবে দোষ দেয়াটা অনুচিত হইবে।কারন নির্মাতা 'দ্যা দেভিল মেড মি ডু ইট' নামটি দিয়াই সকল রহস্য ফাশ করিয়া দিয়াছে।ইহাই সবচেয়ে বড় স্পয়লার না কি বলে সেই বস্ত।

তো কাহিনী ১৯৮১ সালের।লরেন এবং এড নামক বিখ্যাত ভুতের ওঝা একটি বাড়িতে গিয়া ওঠেন।সেই বাড়িতে এক পিতা,কন্যা,কন্যার ছোটভাই আর কন্যার বাকদত্তা থাকে।তো সেই কন্যা ছোট ভাইকে পিশাচে ধরিয়াছে বলিয়া সন্দেহ করায় ওঝা দম্পতিকে ডাকা হয়।ওঝা দম্পতিকে কনজুরিং নামধারী সব চলচ্চিত্রে দেখা যায় কেন এটি একটি রহস্য বটে।বোধকরি তাহারা এই কাহিনীগুলি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করিয়া নিয়াছে।তো তারা যাইয়া পিশাচ তাড়াইবার চেষ্টা করতে থাকে কিন্ত প্রতীয়মান হয় পিশাচটি বড়ই দুষ্ট। সে নানাভাবে সকল ভয়ভীতি দেখাইতে থাকে এবং আঘাত করিতে থাকে।এ পর্যায়ে পিশাচগ্রস্ত ছেলেটিকে চার হাত পায়ে চাপিয়া ধরিয়া তার মন্ত্র পড়িতে থাকিলে ছেলেটি সমস্ত দন্তপাটি বিকশিত করিয়া চিৎকার করিতে থাকে।এইবার তার গায়ে মন্ত্রপূত পানি ছিটালে ছ্যাক ছোক গরম তাওয়ার মত শব্দ করিয়া ধোঁয়া উঠতে থাকে।এই অত্যাচারে আপত্তি জানাইয়া বালকটি তখন শরীর মোচড়াইতে থাকে তার কলাকৌশল দেখিয়া দর্শক তাজ্জব বনিয়া যাবে।এতটুকু শরীর আটার দলার মত মোচড়াইয়া সে যা এক্রোবেটিক দেখাইয়াছে তাতে তাহাকে একটি স্বর্ণপদক দেয়া যাইতেই পারে।যাই হোক এক্রোবেটিক দেখাইয়া নিজেকে ছাড়াই বালকটি সকলকে জখম করিয়া আপন ভগিনীর বাকদত্তার কোলে চড়িয়া আবার সেইমতো দন্তপাটি বিকশিত করিয়া চিল চিৎকারে চারিদিক ঝালাপালা করিতে থাকিল- তরুণটি উপায়ন্তর না দেখিয়া সেই পিশাচকে বালকের দেহ ছাড়িয়া নিজের দেহে আহবান করিল।অতঃপর কি ভাবিয়া যে পিশাচ বালকের দেহ ছাড়িয়া যুবকের দেহে প্রবেশ করিল তাহা আমি বলিতে পারিনা।এই ঘটনার সাক্ষী রহিল শুধু গুরুতর জখম এড।

এর পরের ঘটনা এরূপ যে ভুতের সাথে সংযোগ করিবার ক্ষমতা সম্পন্ন ওঝা লরেন বালককে পরীক্ষা করিয়া দেখিল পিশাচ তাহাকে ছাড়িয়ে গিয়াছে।তবে সুস্থ হইয়া এড জানাইল তাহা আসলে তরুণটিকে ধরিয়াছে।এর মধ্য তরুন কন্যার পিতাকে খুনও করিয়া ফেলিয়াছে এবং তাহাকে কয়েদ করা হইয়াছে।সে দাবি করিতেছে ছুরি সে চালায়নাই।কেউ একজন তাহাকে দিয়ে উহা করাইয়াছে।তরুনীও সেই সাক্ষী দিয়াছে।কে করাইল তবে এ জঘন্য কাজ?এ কি সেই পিশাচ?যদিও তরুন গড়গড় করিয়া হাদিস মুখস্থ বলিতে পারায় ধারনা করা হইল সেই দুষ্ট পিশাচ এখন আর নাই।তাহলে সে গেল কোথায়? এই চিন্তায় সকলে যখন চিন্তিত তখন আমি ভাবিয়া পাইতেছিলাম না যাহা গিয়াছে তাহাকে এত খোঁজাখুঁজি করার প্রয়োজন কি?পরে বুঝিলাম না খুঁজিলে দর্শককে দেড় ঘন্টা যাবৎ দেখাইবে কি?

যাইহোক খুঁজিতে খুঁজিতে সেই নুতন বাসায় যেখানে বালক প্রথম ভয় পাইয়াছিল সেই ঘরের মেঝেতে বিচিত্র দাগ দেখিয়া লরেন ভাবিল তল কুঠুরিতে ঢুকিবে।আমি এই একটা জিনিস বুঝিয়া পাইনাই যে কেন সব কাহিনীতেই তাহাদেরকে এই তলকুঠুরিতে ঢুকতে হয়। ভূতগ্রস্ত বাসার তলকুঠুরিতে মানুষ কোন সাহসে ঢোকে?ঝুল, ছূঁচো, মাকড়সা এমন কি ভুত,জীন,পিশাচের ভয় যদি না থাকে তবুও তো গোখরো সাপ বলে একটা বস্ত আছে।মানুষ কি তাহাকেও একটু ভয় করিবে না?বাপু এদেরও তো কিছু সমীহ পাওনা রয়েছে।

যাহাইহোক তলকুঠুরিতে ছাগশিশুর মাথার খুলিতে আটকানো এক বিচিত্র বস্ত খুঁজে পাওয়া গেল।সেটা ছাগশিশুই তাহা অবশ্য নিশ্চিত করিয়া বলা যায় না।সেটা সারমেয় শিশুও হতে পারে এমনকি শৃগাল,মার্জার বা ব্যাঘ্র ও হতে পারে।যাহা হউক সেই আবিষ্কার থেকে প্রমানিত হইল যে ইহা কোনো সাধারণ খামখেয়ালি ভ্রাম্যমাণ পিশাচ নয়।সেই দুষ্ট পিশাচকে কেহ একজন কালোজাদুর চালনা করিয়া লেলাইয়া দিয়াছে।এরপর কি হইল তাহা জানিতে হইলে আপনাকে চলচ্চিত্রটি দেখিতে হইবে।সেখানেই জানিতে পারিবেন এই কুকর্মটি কে করিল।কিন্ত কেন করিল,আর এই পরিবারটিকেই কেন পছন্দ করিল তাহা আমি পরিস্কারভাবে বুঝিতে পারিনাই।আপনারা বুঝিতে পারিলে দয়া করিয়া অধমকে জানাইবেন।

চলচ্চিত্রে ভুতের কাহিনীর সকল উপাদান আছে তাই দর্শক হতাশ হবেন না তবে একটা জিনিস দেখিয়া আমি অবাক হইয়াছি।আপনারা কি ভাবছেন ভুতের এক্রোবেটিক? না তাহা নয়।আমি অবাক হইয়াছি এই পরিবারটির রসায়ন দেখিয়া।প্রথমে ভাবিলাম কমবয়েসী তিনজন ভাইবোন আর বয়স্কজন ভুত তাড়ানো টিমের সদস্য। পরে তরুন তরুণীর রসায়ন দেখিয়া মনে হইল তারা নিশ্চয় স্বামী স্ত্রী আর বয়স্ক লোকটি মালামাল বহনের কামলা খাটিতেছে।পরের বার মনে হইল বয়স্ক লোকটি হয়ত কামলার সাথে সাথে কাঠমিস্ত্রীও বটে। তাহার পর লোকটি খুন হওয়ায় তাকে নিয়ে আর ভাবি নাই তবে ঝামেলায় পড়লাম বাকি তিনজনকে নিয়ে।তরুণ -তরুনীর যে বয়স তাতে এতবড় বালক তাদের থাকার কথা নয়।পরে বুঝিলাম তারা বিবাহিত নয়।জানি যে সে দেশে এসব অহরহ হয় তবে বিয়ে ছাড়াও ওরূপ বালকের মাতা হইতে গেলে যে ফ্রকপড়া বয়সেই মাতা হইতে হইবে।ইহাতো চাইল্ড এবিউজ!রীতিমতো ক্রাইম।এরপর সম্পর্কের রসায়ন উদঘাটনের চেষ্টা বাদ দিয়ে ছবিটা দেখিতে লাগিলাম।

যাহা হোক দেখা শেষ করিয়া গুগল নামক সবজান্তার কাছে জানিতে চাহিহা সফল হইলাম।সে জানাইল তরুন-তরুনী প্রনয়ী,বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড যাহাকে বলে।বালকটি মেয়েটির ভাই।যাহাকে কাঠমিস্ত্রী ভাবিয়াছি সে মেয়ে এবং বালকটির বাবা।আমি কেন এত বিভ্রান্তিতে পড়েছি তাহা বলি।তরুণটি যখন পিশাচটিকে নিজের ভেতর ডাকিয়া নিল তখন তাহাকে আপন ভাই বা বাবা ভাবা ছাড়া আমার আর কি করার ছিল।এমন কান্ড আপন রক্তের কেউ ছাড়া কে আর করতে পারে?

আপনাদের কথা জানিনা তবে আমরা কোনো কন্যা জন্মিলে এরকম পাত্রই আমি তাহার জন্য খুঁজিয়া বাহির করিব।বান্ধবীর ভাইয়ের ঘাড়ের পিশাচ নিজের ঘাড়ে টানিয়া লওয়া এ কি কম কথা!

বলা বাহুল্য ছবিটি আমি তুলিনাই অন্তর্জাল হইতে নামাইয়াছি।যাহা আলোচনা করিয়াছি তাহা অন্যের হইতে ধার করিনাই নিজেই লিখিয়াছি।চলচ্চিত্রটি দেখিতে চাহিলে দেখিতে পারেন,খারাপ নহে।


সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:১২
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×