একজন সাংসদ প্রস্তাব করিয়াছেন।নিউজ মিডিয়াও বিপুল উৎসাহের সহিত তাহা প্রচার করিতেছে। তার চাহিতেও অধিক উৎসাহের সহিত লোকে লাইক কমেন্ট করিতেছে। ভাব দেখিয়া মনে হইতেছে এই লাইনে ক্যান্ডিডেট কিছু কম নাই।অল্প কয়েকজন মাত্র প্রস্তাবকের মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলিয়াছেন।
তা প্রস্তাব ভাবিয়া দেখার মত বইকি।দেশে এত বেকারত্ব বাড়িয়াছে।বেকার পুরুষ এবং শিক্ষিত অবিবাহিত নারীদের সংখ্যাও বাড়িয়াছে।ইহাদের দুই হাত এক করিয়া দিলে কিছু সামাজিক সমস্যার সমাধান হয় বটে।তবে আমার কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ানটস টু নো তাহাতে বেকারত্বের সমস্যার সমাধান হয় কিভাবে? বিবাহ বুঝি একটি পেশা?বিবাহিত হইয়া গেলেই কি লোকের কাজ করার প্রয়োজন ফুরাইবে?
লোক বলতে এই স্থানে পুরুষলোক বুঝাইয়াছি।স্ত্রীলোকদিগের সিংহভাগ তো আবহমান কাল ধরিয়াই বেকার।তাহাতে অবশ্য কাহারো জাত ঊর্ধ্বশ্বাসে পলায়ন করে নাই।বরাবর দেখিয়াছি স্ত্রীগণ স্বামীর উচ্চ পেশা লইয়া গর্ববোধ করিয়া থাকেন।পুরুষলোকে কি তাহা করিবে?
বেকার ভগ্নিগণকে যখন এত কাল ধরিয়া সক্ষম ভ্রাতাগণ বিবাহ করিয়া আসিতেছে তখন সক্ষম ভগ্নিগণ কেন বেকার ভ্রাতাদের দায়িত্ব লইয়া তাহাদের পুত্রদায়গ্রস্ত পিতাকে মুক্ত করিবে না?করিতে যে চাহেনা তাহারও কারন আছে বইকি?
ভগিনীদের দোষই বা কি দিব?সমাজের দশজনের কথার ভয়ে ইচ্ছা থাকিলেও অনেকে বিরত হয়।তা দশজনের মুখে ছাই দিয়া যদি বিবাহ করেই ফেলা হয় তারপর কি সেই ভ্রাতা সংসারের যাবতীয় ঝামেলা গুলি সামলাইবে যেমন ভাবে বেকার স্ত্রীগণ সামলাইয়া থাকে ?তাহারা ভাত রাঁধিবে?কাপড় কাচিবে?সন্তান সামলাইবে?
বাঙ্গালী পুরুষ বলিয়া কথা!ঘরের কাজ করিলে তাহাদের যদি জাত যায় তখন সমাজে মুখ দেখাইবে কিভাবে?তাহারা কি স্ত্রীগণের বশ্যতা স্বীকার করিবে?স্ত্রী কামাই করে এই কারনে কি তাহাদের সো কলড মেল ইগো হার্ট হইবে না?তখন কি সে অশান্তি বাঁধাইয়া জীবন অতিষ্ঠ করিয়া তুলিবে না?স্ত্রীলোক যেমন করিয়া পুরুষকে বড় করিয়া দেখে,তার বশ্যতা মানিয়া লয় তাহারা কি তাহা পারিবে?শত শতাব্দীর সামাজিক শিক্ষা হইতে কি তাহারা মুক্ত হইতে পারিবে?
বোধকরি ব্যাপারটা বসাইয়া নন্দগোপালকে পালার মত হইবে। ভাত কাপড়ের জোগানও দিতে হইবে,ভাত রাঁধিতেও হইবে আবার যাবতীয় খোঁটাও শোনা লাগিবে।এই ভয়েই বোধকরি ভগিণীগণ এই প্রস্তাবে সম্মত হইতে চাহেন না।ভ্রাতাগণ অবশ্য এক্ষেত্রে উদার।৩৫ বৎসরের সক্ষম পুরুষ ষোড়শী বা অষ্টাদশী কন্যার পাণী গ্রহণ করিয়া চিরকাল এ সমাজকে কৃতার্থ করিয়া আসিতেছেন।তাহারা যে সে ধারা অব্যাহত রাখিবেন তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই।
জনাব সাংসদ সাহেবের পরামর্শ মতো আইন পাশ করা হইলে ভগিণীগণ রাজি না হইয়া যাইবে কই?সংসারে সমৃদ্ধি,মানবাধিকার আর লিঙ্গ সমতার কথাকে আপাতত গুলি করিয়া উড়াইয়া দেয়া হোক।আপাতত শাক দিয়া ব্যর্থতার তিমিমাছ ঢাকা হউক।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৪