somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘপিয়নের দেশ মেঘালয়ে: পর্ব-৬: শিলং শহরের আশেপাশে

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসামের অরণ্যে: পর্ব-১: গৌহাটি
আসামের অরণ্যে: পর্ব-২: কামাক্ষ্যা মন্দির দর্শন
আসামের অরণ্যে: পর্ব-৩: কাজীরাঙ্গা সাফারী পার্ক
আসামের অরণ্যে: পর্ব-৪: কারবি অংলং জেলার ডিফু হেডকোয়ার্টার
মেঘপিয়নের দেশ মেঘালয়ে: পর্ব-৫: চেরাপুঞ্জী
ছবি ব্লগ: পর্ব-৭: গৌহাটীর কামাক্ষ্যা মন্দির
ছবি ব্লগ: পর্ব-৮: চেরাপুঞ্জি
আমার ভ্রমণ-কাহিনী ও ছবি ব্লগ গুলোর কালেকশন

২ সেপ্টেম্বর, ২০১১, শুক্রবার।

ট্যাক্সি ড্রাইভার সুজিতের সাথে সকাল ৮টায় বের হয়ে পড়লাম শিলং শহরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখার জন্যে। একে একে দেখলাম:

১. গলফ কোর্স:
ক.

খ.

গ.

ঘ.

ঙ.


২. ওয়ার্ডস লেক:
ক.

খ.

গ.

ঘ.

ঙ.


৩. লেডী হায়দারী পার্ক:
ক.

খ.


৪. চার্চ:
ক.

খ.


৫. উমিয়াম লেক (বরাপানি লেক): এনট্রি ফি+গাড়ি পার্কিং+স্টীল ক্যামেরার ফি বাবদ ৭০ রূপী নিয়েছে।
ক.

খ.

গ.

ঘ.

ঙ.


৬. শিলং পিক: এখানে এনট্রি ফি+গাড়ি পার্কিং+স্টীল ক্যামেরার ফি বাবদ ৬০ রূপী নিয়েছে। এই জায়গা থেকে পুরো শিলং শহরকে এক নজরে দেখা যায়।
ক.

খ.

গ.


৭. এলিফেন্ট ফলস: এখানে এনট্রি ফি+গাড়ি পার্কিং+স্টীল ক্যামেরার ফি বাবদ ৪০ রূপী নিয়েছে।
ক.

খ.

গ.

ঘ.


না বলা কথা:
১. ফেরার পথে তামাবিল সীমান্তে প্রায় সময়ই সিলেট ফেরার গাড়ি/বাস/সিএনজি পাওয়া যায়না। তাই যাবার সময় কোন গাড়ি বা সিএনজি ড্রাইভারের নম্বর নিয়ে রাখলে ফেরার পথে বর্ডার পার হয়ে তাকে ফোন করলেই তামাবিল সীমান্তে সে চলে আসবে।
২. সিলেট থেকে তামাবিল বর্ডার পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা (শুধু যাওয়া বা আসা)।


৩. যাবার সময় ডাউকি বাজারেই প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশী টাকার বদলে ভারতীয় রূপি কিনে নিতে পারেন। এখনকার রেট হলো, প্রতি ১০০ টাকায় ৫৭ ভারতীয় রূপি। মনে রাখতে হবে,এ ব্যাপারটা সম্পূর্ণ বেআইনি বা অবৈধ।
৪. ডলার ভাঙাতে হলে ডাউকি বর্ডার থেকে শিলং শহর পর্যন্ত যেতে হবে।


৫. ভারতের ভেতরে ছবি তোলার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্যাক্সি ড্রাইভারই আপনাকে বলে দেবে কোথায় ছবি তুলতে পারবেন আর কোথায় পারবেন না।
৬. শিলং-এর দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘোরার সময় অধিকাংশ স্থানেই এনট্রি ফি দিতে হয়। সাথে স্টিল বা ভিডিও ক্যামেরা থাকলে সেক্ষেত্রেও ফি প্রযোজ্য। শিলং-এর সবগুলো দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে গিয়ে এনট্রি এবং স্টিল ক্যামেরা ফি বাবদ আমার প্রায় ৫০০ রূপীর মতো বেরিয়ে গেল।


৭. যারা ঢাকা থেকে ট্রাভেল ট্যাক্সের কাগজ নিয়ে যেতে ভুলে যাবেন, তারা তামাবিল যাবার পথেই জৈন্তাপুর বাজারের ভেতরে সোনালী ব্যাংক থেকে অবশ্যই ৩০০ টাকা (৩০০ টাকা সরকারী, ২০ টাকা ঘুষ, মোট ৩২০ টাকা) দিয়ে ট্রাভেল ট্যাক্স -এর কাগজ নিয়ে নিজ নিজ পাসপোর্টসহ তামাবিল বর্ডারে যাবেন।
৮. বাংলাদেশ ভারতের অন্যান্য সীমান্তের মতোই তামাবিল-ডাউকি বর্ডার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
৯. তামাবিল-ডাউকি বর্ডার আমার কাছে ঝামেলামুক্ত সীমান্ত মনে হয়েছে। কেননা ইমিগ্রেশন/কাস্টমস-এর কাজ দু’পারেই খুব দ্রুত হয়ে গিয়েছে। আর অন্যান্য সীমান্তের মতো এখানে এপার কিংবা ওপারে আমার থেকে কোন ঘুষ চায়নি বা নেয়নি কেউ।
১০. গৌহাটিতে রাত ৯ টার পর অনেক দামী হোটেল ছাড়া কমদামী হোটেলে বাংলাদেশীদেরকে এরা থাকতে দেয়না। কারণ ভারতীয় পুলিশের অনুমতি নেওয়ার একটা ব্যাপার আছে, যেটার ঝামেলা রাত ৯ টার পর কোন কমদামী হোটেল কর্তৃপ নিতে চায়না।


১১. ন’গাঁও থেকে ডিফু পর্যন্ত বাসে জনপ্রতি ১১৫ রূপী নিয়েছিল।
১২. ডিফু থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি বগিতে জনপ্রতি ৩২০ রূপী নিয়েছিল।
১৩. গৌহাটী থেকে শিলং পর্যন্ত টাটা সুমো গাড়িতে শেয়ারে জনপ্রতি ১২০ রূপী নিয়েছিল।
১৪. গৌহাটীর খানাপাড়া থেকে ন’গাঁও বাস ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ রূপী করে নিয়েছিল।
১৫. ন’গাঁও থেকে কাজীরাঙ্গা আপ-ডাউন রিজার্ভ টাটা ইণ্ডিকা গাড়িতে ১৬০০ রূপী খরচ হলো। ন’গাঁও থেকে কাজীরাঙ্গা পর্যন্ত গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়াটাই ভালো। কারণ সরাসরি কাজিরাঙ্গা সাফারী পার্ক পর্যন্ত কোন বাস যায়না।
১৬. শিলং-এর চেরাপুঞ্জী (সোহরা) এবং শিলং শহরের আশপাশ ঘুরতে হলে বাসের থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করে নেওয়াটাই ভালো। এতে করে বেশ ভালো করে সময় নিয়ে জায়গাগুলো ঘুরে দেখা যাবে।
১৭. শিলং-এর চেরাপুঞ্জী (স্থানীয় ভাষায় ’সোহরা’) গিয়ে আপডাউন এবং সবগুলো স্পট ঘুরতে রিজার্ভ ট্যাক্সিতে সর্বোচ্চ ১৫০০ রূপী খরচ হবে। স্পটগুলো হলো: মকটক ভিউ পয়েন্ট, নকালীকাই ফলস, রামকৃষ্ণমিশন, ইকোপার্ক, মওসমী গুহা, সেভেন সিস্টারস ফলস, খরম্মা স্টোন। চেরাপুঞ্জী -এর সবগুলো জায়গাই আমার ভালো লেগেছে। তবে চেষ্টা করতে হবে অনেক সকালে রওনা হতে, তাহলে সবগুলো জায়গা সময় নিয়ে একদিনে দেখে আসা সম্ভব।
১৮. শিলং-শহরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে রিজার্ভ ট্যাক্সিতে ৮০০-১০০০ রূপী খরচ হবে। স্পটগুলো হলো: গলফ কোর্স, ওয়ার্ডস লেক, লেডী হায়দারী পার্ক, চার্চ, উমিয়াম লেক (বরাপানি লেক), শিলং পিক, এলিফেন্ট ফলস। এই স্পটগুলোর মধ্যে উমিয়াম লেক এবং এলিফেণ্ট ফলস আমার ভালো লেগেছে। তবে চেষ্টা করতে হবে অনেক সকালে রওনা হতে, তাহলে সবগুলো জায়গা সময় নিয়ে একদিনে দেখে আসা সম্ভব।
১৯. শিলং-শহরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে হলে ট্র্যাফিক জ্যামের কথা মাথায় রাখতে হবে।
২০. এবার আসাম গিয়ে ’TUBORG’ এর সাথে পরিচিত হলাম। যারা এখনও এর সাথে পরিচিত হননি, আমার স্ট্রং রেকমেনডেশন হলো, আসাম কিংবা মেঘালয় গেলে অবশ্যই ’TUBORG’ এর সাথে পরিচিত হয়ে নিবেন।
২১. আমার অভিজ্ঞতা বলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভালোভাবে থাকা এবং খাওয়া বাবদ দৈনিক ১০০০-১২০০ রূপী যথেষ্ট। আর ঘোরাঘুরির জন্যে রিজার্ভ ট্যাক্সি-এর থেকে শেয়ারে টাটা-সুমো কিংবা ট্রেনে ভ্রমণ করলে যথেষ্ট টাকা সেভ হবে। লাগেজ যথাসম্ভব কম রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২২. ভারতীয় পুলিশ থেকে সাবধান। ইতর প্রজাতির এই প্রাণীগুলোর থেকে নিজ দায়িত্বে দূরত্ব বজায় রাখুন।



নিচের প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরগুলো টুকে নিন:
১. টাই (ওরফে পিটার), ডাউকি বর্ডারের ট্যাক্সি ড্রাইভার: ৯৮৬৩৫৮৮২৬৩
২. সুজিত শীল (শিলং-এর ট্যাক্সি ড্রাইভার): ৯৮৬৩১২৭৭৪০
৩. আব্দুল কাইয়ুম (শিলং/গৌহাটির ট্যাক্সি ড্রাইভার): ৯৮৫৪৭৪৮১৪৭
৪. পিঙ্কু হাজারিকা (ন’গাঁও থেকে কাজিরাঙ্গা সাফারী পার্ক যাবার ট্যাক্সি ড্রাইভার): ৯৮৫৪৫২০৪৬১
৫. হোটেল পায়েল, পুলিশ বাজার, থানা রোড, শিলং, মেঘালয়: ০৩৬৪-২২২২০৮৭, ২২২৭১৬১
৬. হোটেল সিংহাসন, ধরমনালা রোড, ডিফু, কারবি অংলং, ফোন: ০৩৬৭১-২৭১৪৫৮
৭. হোটেল মহালক্ষ্মী, পল্টন বাজার, জি.এস রোড, গৌহাটি, আসাম। ফোন: ৯৮৫৪০৩১৭২৬, ৯৪৩৫১৪৩০৬৩

আসামের অরণ্যে: পর্ব-১: গৌহাটি
আসামের অরণ্যে: পর্ব-২: কামাক্ষ্যা মন্দির দর্শন
আসামের অরণ্যে: পর্ব-৩: কাজীরাঙ্গা সাফারী পার্ক
আসামের অরণ্যে: পর্ব-৪: কারবি অংলং জেলার ডিফু হেডকোয়ার্টার
মেঘপিয়নের দেশ মেঘালয়ে: পর্ব-৫: চেরাপুঞ্জী
ছবি ব্লগ: পর্ব-৭: গৌহাটীর কামাক্ষ্যা মন্দির
ছবি ব্লগ: পর্ব-৮: চেরাপুঞ্জি
আমার ভ্রমণ-কাহিনী ও ছবি ব্লগ গুলোর কালেকশন
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×