somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রিপ টু টোবারমোরী - পর্ব ১

১১ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কানাডা আসার পর থেকেই মনের গভীরে এক অদম্য ইচ্ছা ছিল টোবারমোরী যাব। সবার মুখে টোবারমোরী'র নাম শুনতে শুনতে এই জায়গার প্রায় প্রেমেই পড়ে গিয়েছিলাম। গেল সামারেও যাব যাব করেও যাওয়া হলোনা। মনটাই খারাপ ছিল। তাই কিছুদিন আগে যখন রোহান ভাই বললেন, 'কি রে, যাবি নাকি টোবারমোরী? আমি সাত-পাঁচ এতকিছু না ভেবেই বলে বসলাম, 'এবার আর কোথাও যাই বা না যাই, টোবারমোরী যাবই যাব।'

যেই কথা সেই কাজ। কাজ থেকে ছুটি নিলাম। দিনক্ষণও ঠিক হয়ে গেল। পঁচিশ মে, ২০১৫ তারিখ আমাদের যাত্রা শুরু হবে। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো হোটেল বুকিং এবং ট্যুর প্ল্যান করার জন্যে। যথারীতি টোবারমোরী সংক্রান্ত সবধরণের পড়ালেখা শেষ করে রোহান ভাইকে জানালাম যে, আমরা যদি ওন্টারিও প্রভিন্সের উত্তরে টোবারমোরীর সাথে 'মাসকুকা' -ও ঘুরে আসতে চাই তাহলে 'কলিংউড' শহরে থাকাটাই যুক্তিযুক্ত। দেরী না করে কলিংউড -এ হোটেল 'লাক্সারী ইন' -এ একটা বুকিং-ও দিয়ে ফেললাম প্রাইসলাইন ডট কমের মাধ্যমে। কারণ যত দেরী করবো, হোটেলের ভাড়া বাড়তেই থাকবে। কিন্তু তখনও বুঝতে পারিনি যে স্বল্প সময়ের মাঝে শুধু টোবারমোরী ঘুরেই শেষ করা যাবেনা। কাজেই আবারও ট্যুর প্ল্যান রি-শিডিউল করলাম। কলিংউডে থাকার চিন্তা বাদ। কারণ কলিংউড থেকে টোবারমোরী ড্রাইভ করে যেতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লেগে যাবে। অতএব এবার আমাদের প্ল্যান টোবারমোরী থেকে দেড় ঘন্টা দূরের গ্রে কাউন্টির একটি ছোট মফস্বল শহর 'ওয়েন সাউণ্ড' -এ থাকা এবং ওয়েন সাউণ্ড থেকেই টোবারমোরী'র দর্শনীয় স্থানগুলোতে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। 'লাক্সারী ইন' -এর বুকিং বাতিল করে দিয়ে ওয়েন সাউণ্ডে আমাদের ঠিকানা হলো 'হোটেল কমফোর্ট ইন'-এ।


হাইওয়ে ৬ ধরে আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে


ওই দূরে ব্লু-মাউন্টেন পাহাড়ের সারি


হাইওয়ে ৬ এ ৮০ কিলোমিটার/ ঘন্টার বেশি স্পিড তোলা নিষেধ

পঁচিশ তারিখ কাক ডাকা ভোরে আমাদের যাত্রা শুরু হলো। ব্যস্ত শহর টরন্টোর জ্যাম আর যান্ত্রিক জীবনকে পেছনে ফেলে আমাদের গাড়ি ছুটে চললো টোবারমোরী'র ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশ্যে। আজ আমাদের টার্গেট হলো দুপুরের আগেই টোবারমোরী'র ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কে পৌঁছে যাওয়া। প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার ড্রাইভে আমরা পৌঁছে যাব টরন্টো থেকে ৩০০ কি.মি দূরের উত্তর পশ্চিমের ছোট শহর টোবারমোরীতে যেটি ওন্টারিও প্রভিন্সের উত্তর ব্রুস পেনিনসুলা মিউনিসিপালিটির অন্তর্গত ছোট্ট একটি শহর।


আর অল্প গেলেই ওয়েন সাউণ্ডে পৌঁছে যাব আমরা


ওয়েন সাউণ্ড শহরে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। এই ওয়েন সাউণ্ড শহরের ওপর দিয়েই আরও উত্তরে গেলে টোবারমোরী।

মে থেকে অক্টোবর মাসের থ্যাংকস গিভিং লং উইকেণ্ড পর্যন্ত টোবারমোরী'র জীবনযাত্রায় পর্যটকদের আনাগোণা থাকে। বছরের বাকীটা সময় এই ছোট্ট মফস্বল শহরটি বরফের চাদরে ঢাকা থাকে। টোবারমোরীতে দেখার কি আছে? কেউ যদি এই প্রশ্নটি করেন, তাহলে বলতে হয়, টরন্টোর উত্তরের শহর টোবারমোরী হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের আধার যেখানে রয়েছে অসংখ্য ট্যুরিস্ট স্পট।

দুপুর বারোটা নাগাদ টরন্টো থেকে সরাসরি ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কে পৌঁছালাম আমরা। পার্কিং লটে বসে খাওয়াদাওয়া পর্ব শেষ হবার পর পায়ে হেঁটে বনের ভেতরে প্রবেশ করলাম। উদ্দেশ্য, প্রথমে সাইপ্রাস লেক দেখা। ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কের ভেতর ছোট-বড় অনেকগুলো লেক থাকলেও সাইপ্রাস লেকের সৌন্দর্য্য আসলেই অন্যরকম। সাইপ্রাস লেক দেখার পর আমরা প্ল্যান করলাম Grotto view this link এর কাছাকাছি চলে যাব। পাহাড়ের গায়ে এক বিশাল গুহা Grotto যেটি সহস্র বছরে জর্জিয়ান বে -এর পানির ধাক্কায় সৃষ্টি হয়েছে।


পার্কের ভেতর পার্কিং লট


সাইপ্রাস লেক


সাইপ্রাস লেক


সাইপ্রাস লেক


দূর থেকে দেখা গ্রত্তো


গ্রত্তো

গ্রত্তো এর কাছাকাছি যাবার পর জর্জিয়ান বে-এর স্বচ্ছ ঠাণ্ডা পানিতে আমরা পা ভিজালাম। ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কের ভেতরে পায়ে হাঁটা পথে অনেক ট্রেইল রয়েছে। এখানে রয়েছে ক্যাম্পিং করার সুবিধাও।

ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্কের আরও কিছু ছবি এই ফাঁকে দেখে নেই:

















পার্কের ভেতর গহীন বন

ব্রুস পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্ক থেকে দেড় ঘন্টা ড্রাইভে ফিরে এলাম ওয়েন সাউণ্ড শহরের কমফোর্ট ইন হোটেলে। ক্লান্ত শরীরে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। পরের দিনের রিভার ক্রুজে বিখ্যাত 'ফ্লাওয়ারপট আইল্যাণ্ড' দেখার উত্তেজনাটা টের পেলাম যখন ঘুম ভাঙলো খুব ভোরে রোহান ভাইয়ের আওয়াজে।

পর্ব ২ view this link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ২:০৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×