somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডায় স্টুডেন্ট হিসেবে আসতে চান? পর্ব ১

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় গিয়ে পার্ট টাইম জব করে খরচ যোগান সম্ভব কী? অথবা স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় পড়াশোনা শেষে ওয়ার্ক পারমিট করে ফেলা বা পারমানেন্ট রেসিডেন্সির জন্যে অ্যাপ্লাই করা ইত্যাদি কীভাবে সম্ভব -এসব বিষয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।

কানাডায় নিজ খরচে স্টুডেন্ট ভিসায় আসা একজন 'স্টুডেন্ট' এবং একজন 'পারমানেন্ট স্টুডেন্ট' এর মধ্যে মূল কিছু পার্থক্য আছে। একটা রিয়েল টাইম উদাহরণ দেয়া যাক। বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসা কোন স্টুডেন্ট বিজনেস স্টাডিজ পড়তে টরন্টোর কোন একটি কলেজে চার বছরের অফার লেটার পেয়েছে। ধরা যাক, তাকে এক বছরের ভিসা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ থেকেই।

বিজনেস স্টাডিজ-এ পড়তে এলেও সেই স্টুডেন্ট এর IETLS করা না থাকলে অথবা IETLS -এর স্কোর ভিসার সময় প্রদান না করা হলে তাকে একটি ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স মূল বিজনেস স্টাডিজ কোর্সের সাথে সাধারণত বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়। অর্থাৎ, তাকে কানাডায় এসে কলেজের মূল কোর্স (বিজনেস স্টাডিজ) শুরুর আগে কয়েক সেমিস্টার ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করতে হবে। এই ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স শেষ করার পর উক্ত স্টুডেন্ট মূল কোর্সে ঢুকতে পারবে। তার আগে নয়।

আর মূল কোর্সে না যাওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে বিশ ঘন্টা কাজ করার অনুমতি বা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় আসা ছাত্র-ছাত্রীটি শুরুতে 'স্টুডেন্ট' হলেও কেবলমাত্র মূল কোর্সে ঢোকার পর থেকেই তাকে 'পারমানেন্ট স্টুডেন্ট' বলা যায়। উল্লেখ্য যে, কানাডায় এয়ারপোর্টে নেমেই তার প্রথম কাজ হবে ইমিগ্রেশনের সময় এটি উল্লেখ করা যে, তার চার বছরের অফার লেটার রয়েছে। সুতরাং তার ভিসার মেয়াদ যেন বাড়িয়ে দেয়া হয়।

কানাডা'র কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাবজেক্ট ভেদে প্রতি সেমিস্টার কোর্স ফি প্রায় ৭-৯ হাজার ডলার। ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করলেও সেক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টারে উক্ত অ্যামাউন্ট দিতে হবে। এখন যদি কোন স্টুডেন্ট ২ বছরের কোর্সে আসে, তাহলে তাকে সাধারণভাবে মোট চারটা সেমিস্টারের জন্যে ৩২ হাজার ডলার টিউশন ফি কলেজকে পরিশোধ করতে হবে। লিভিং কস্টের কথা আলাদা। টরন্টোতে এক বেডরুম, শেয়ারড কিচেন, শেয়ারড ওয়াশরুম, খাওয়া এবং যাতায়াত বাবদ একজন মানুষের কম করে হলেও ৯০০-১০০০ ডলার মাসিক খরচ আছে।

কানাডায় লিগ্যালি একজন স্টুডেন্ট সপ্তাহে ২০ ঘন্টা করে কাজ করতে পারবেন। টরান্টোতে এখন বেসিক পে ঘন্টায় ১৪ ডলার করে। সুতরাং সপ্তাহে ২০ ঘন্টা অর্থাৎ, ঘন্টায় ১৪ ডলার করে সপ্তাহে উক্ত স্টুডেন্টের ইনকাম ২৮০ ডলার। তাহলে মাসে কত দাঁড়ালো? ১১২০ ডলার। এক কথায় বলতে গেলে, এই কাজ করে আয় করা টাকাটাতে উক্ত স্টুডেন্ট তার লিভিং কস্টটা টরন্টোতে মিটাতে পারবে। কিন্তু টিউশন ফি?

টিউশন ফি-এর জন্যে প্রায় সবারই বাংলাদেশ থেকে ব্যাকআপ থাকে। থাকতে হয়। তা না হলে সেমিস্টার ড্রপ হয়ে যাবে। এবং একটা পর্যায় গিয়ে কলেজ থেকে ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে ইলিগ্যালি কানাডায় থেকে যাওয়া বা ডিপোর্টেশন-এর মতো ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। অনেকেই চিন্তা করে ক্যাশে কাজ করে টিউশন ফি ম্যানেজ করা যায় কিনা?

পুরোপুরি না হলেও কিছুটা সম্ভব। কিন্তু সেক্ষেত্রে উক্ত স্টুডেন্টকে অতিরিক্ত কাজ করতে হবে যা তার পড়াশুনার সিজিপিএ-কে এফেক্ট করবে। একই সাথে মন মতো সঠিক বেতনের কাজ পাওয়াটাও কঠিন বিষয়। এখানে টরন্টোর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। কারণ টরন্টোতে সারভাইভাল জবগুলো পাওয়াটা কঠিন কোন ব্যাপার নয়। স্টুডেন্টদের জন্যে এই লেখার কথাগুলো কানাডার কম-বেশি সব প্রভিন্সের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

কাজেই এই লেখার শেষ পর্যায়ে এসে স্টুডেন্টদের জন্যে পরামর্শ:

১. নূন্যতম দুই বছরের কোর্সে আসা উচিত।

২. দুই বছরের কোর্সে তিন বছরের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যাবে যদি উক্ত স্টুডেন্ট সঠিকভাবে তার কোর্স সম্পন্ন করে।

৩. ওয়ার্ক পারমিট থাকা অবস্থায় ইমিগ্রেশনের জন্যে অ্যাপ্লাই করতে পারবে (যদি ইমিগ্রেশন ক্রাইটেরিয়াগুলো ফুলফিল করে)।

৪. একজন স্টুডেন্টের পক্ষে টরন্টোতে/ কানাডাতে কাজ করে বেসিক লিভিং কস্ট ওঠানো সম্ভব।

৫. অনেক স্টুডেন্টের জন্যেই IELTS একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় (বিশেষ করে যারা বাংলাদেশ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেই IELTS না দিয়েই কানাডা চলে আসেন)।

৬. টিউশন ফি এর প্রায় পুরো টাকার ব্যাকআপ রেডি করে তবেই কানাডা আসার প্ল্যান করা উচিত।

৭. পারমানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে যাওয়া বা কানাডা'র বাইরে বের না হওয়াটাই ভালো।

'ইমিগ্রেশন এ্যাণ্ড সেটেলমেন্ট' ওয়েবসাইট থেকেও স্টুডেন্টদের জন্যে জরুরি তথ্যগুলো পাওয়া যাবে।
ফেসবুক গ্রুপ: Click This Link

সূত্র: view this link

পর্ব ২
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০২
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×