somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালো লাগার মানুষকে নিয়ে ৩য় এবং শেষ গল্প।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রূপকুমারী
লেখক: Srabon Ahmed Nirob
.
বিষন্নতায় যখন জর্জরিত হয় মন। তখন মনটা নিরিবিলি কোলাহল মুক্ত একটি স্থান খোঁজে। যে স্থানে জনমানবের কোনো চিহ্ন নেই, যে স্থানে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। যে স্থানে রয়েছে শুধু পাখিদের কলরব, যে স্থানে রয়েছে বাধ ভাঙা নদীর খরস্রোতা স্রোতের আওয়াজ, যে স্থানে রয়েছে সূর্য অস্ত যাওয়ার একটু মাধূর্যপূর্ণ দশ্য।
ঠিক এমনই একটি জায়গাতে প্রত্যহ এসে দাঁড়িয়ে থাকে নিরব। দাঁড়িয়ে থাকার একটি কারণও অবশ্য রয়েছে। যখন তার মন খারাপ থাকে ঠিক তখনই সে নদীর পাড়ে এসে দাঁড়ায়। এমন করে মাঝে মাঝে এই নদীর পাড়ে আসতে আসতে তার এক ধরণের ভালো লাগাা তৈরি হয় নদীর প্রতি। তাই সে প্রত্যহই আসে এই নদীর পাড়ে। দূর থেকে তাকে দেখে মনে হয় যেন, একটা কাকতাড়ুয়া দাঁড়িয়ে আছে মাঠের অন্তে, নদীর পাড়ে। সে কখনও সন্ধ্যা, কখনও রাত্রি হলে সেখান থেকে বাড়ির পথে পা বাড়ায়।

আজও নিরবের মন খারাপ। প্রতিদিনের মতো সে আজও নদীর পাড়ে যায় কিছু মুহূর্ত একাকী সময় কাটাতে। কিন্তু সে আজ নদীর পাড়ে যাওয়ার অভিমুখে দূর থেকে দেখতে পায়, তার দাঁড়ানো স্থানে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। মনে মনে ভাবে, নাহ, আইজ আর যাইবো না নদীর পাড়ে। আবার পরক্ষণেই ভাবে, হয়তো দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটিরও তার মতো মন খারাপ। যাই একটু কথা বইলা আসি।
একে অপরের দুঃখ কষ্ট বিনিময় করলে হয়তো মন খারাপের পরিমাণটা কমবে।

নিরব ধীরে ধীরে এগোতে থাকে সেদিকে। সে যত এগোয় ততই দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হতে থাকে। নিরব যখন ব্যক্তিটির একদম কাছে চলে যায়, ঠিক তখন সে দেখতে পায় দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি একজন মেয়ে। কিন্তু সে দূর থেকে মনে করেছিলো হয়তো ব্যক্তিটি ছেলে হবে। কিন্তু না!
এই রৌদ্রুর বিকেল বেলায় জনমানব শূন্য ধূধূ ধূলি উড়া মাঠে একজন মেয়েকে একাকী দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিরব অবাক হয় কিছুটা। কেননা সে আজ বছর খানেক হলো সেখানে কোনো মানুষকেই দেখতে পায়নি। কিন্তু আজ হঠাৎ একটি মেয়েকে দেখতে পাওয়ায় অবাক হওয়ার অন্ত থাকে না তার। মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে সে কাঁশি দেয়। তবুও মেয়েটি কোনো ভ্রুক্ষেপ করে না। বেশ কয়েকবার কাঁশি দেওয়ার পরেও যখন মেয়েটিকে আগের মতোই চুপচাপ অদূর পানে তাকিয়ে থাকতে দেখে, তখন নিরব নিজেও আর কোনো শব্দ না করে চুপচাপ মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। দূর থেকে তাদেরকে দেখে মনে হয় যেন, কোনো সদ্য বিবাহিত দু'জন মানুষ প্রকৃতির রূপ রস উপভোগ করতে এসেছে।
.
সূর্যটা পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে, মেয়েটি তখনও অদূর পানে তাকিয়ে আছে। ঘন্টা খানেক চুপচাপ একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে নিরবের মনে এক ধরনের বিরক্তিকর ভাব চলে আসে।
তাই সে বিরক্তিকর ভাব কাটাতে নিরবতা ভেঙে বলে, আপনারে সেই কহন থেইকা দেখতাছি একা একা চুপচাপ দাঁড়াইয়া আছেন। কোনো কথা কইতাছেন না।
এবার মেয়েটি নিরবের দিকে ঘুরে তাকায়। মেয়েটির মুখটা ফ্যাকাশে। অাষাঢ়ের ঘনকালো মেঘ বিরাজ করেছে যেন সেখানে। ফর্সা মুখে অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবটা অতি গভীরভাবে বসে আছে।
নিরব বলে, "সাঁঝ হইয়া আসতাছে, বাড়ি যাইবেন না?"
মেয়েটি নিরবের কথার কোনো প্রকার উত্তর না দিয়ে বলে, এই জায়গাটা অনেক সুন্দর তাইনা?
নিরব "হু" বলে মাথা নাড়ে। মেয়েটি আবার বলে, ঐ যে দেখুন এক ঝাঁক পাখি নীড়ে ফিরছে। নদীর ঢেউগুলোও কমে আসছে।
নিরব তাকিয়ে দেখে সত্যই এক ঝাঁক পাখি উড়ে যাচ্ছে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে।

মেয়েটি অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে, ডুবন্ত সূর্যের পানে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে চুড়ির শব্দ করছে। নিরব বিস্ময় চোখে মেয়েটির পানে তাকিয়ে আছে। এই মেয়েটিই কী সেই মেয়েটি? যে কিনা একটু আগে চুপচাপ ছিলো!

- ওভাবে তাকিয়ে কী দেখছেন হু? (মেয়েটা)
মেয়েটির কথায় নিরব দ্রুত তার চোখটা সরিয়ে নিয়ে বলে,
- ক.. ক.. কই? কিছু না তো!
- আপনি কী এখানে প্রতিদিন আসেন?
- যহন মন খারাপ থাহে, তহন আসি।
- আপনার মন খারাপ?
- ছিলো, এহন নাই।
- আচ্ছা এখানে আসলে কী সত্য সত্যই বিষন্ন মন আনন্দে ভরে যায়?
- তা তো কইতে পারি না, তয় আমার মনডা ভীষণ ভালা হইয়া যায়।
- আমি এখন থেকে প্রতিদিন আসবো এখানে।

কিছুক্ষণ নিরবতা চলে দু'জনের মাঝে। নিরবতা ভেঙে মেয়েটিই বলে,
- আপনার নামটা জানতে পারি?
- নিরব।
- আমি জেবুন নেছা। আপনি চাইলে জেবা কিংবা জেবু বলে ডাকতে পারেন।
- হু।
- আপনি কী কম কথা বলেন?
- আমার কথায় সবাই বিরক্ত হয়। তাই সবসুমায় চুপচাপ থাকি।
- আমার না চুপচাপ ছেলে পছন্দ না।
- হু।
- আপনি থাকেন কোথায়?
- বাড়ির ঠিকানা জাইনা কী করবেন? বাড়িতে দাওয়াত দিবার পারবো না।
মেয়েটি একগাল হেসে বলে..
- দাওয়াতের জন্য জিজ্ঞেস করিনি।
- ও, তাইলে?
- যখন এখানে আসবো, তখন আপনাকে সাথে নিয়ে আসবো। তাই বাড়ির ঠিকানা জানতে চেয়েছি।
- ও, ঐ যে অদূরে একটা বড় তালগাছ দেহা যায়, ওই খানেই আমার বাড়ি। আপনের?
- আমি ঢাকায় থাকি। এখানে বেড়াতে এসেছি কিছুদিনের জন্য।
- ও।
- বাড়ি ফিরবেন না?
- হ্যাঁ, চলেন।
যেতে যেতে তারা আরো কিছুক্ষণ কথা বলে। তাদের দু'জনের একসাথে হেঁটে চলার ভঙ্গিমাটা এমন "যেন তারা যুগ যুগ ধরে একে অপরের পরিচিত।"
.
আকাশে আজ চাঁদ উঠেছে। চাঁদের ঠিক একটু দূরেই একটি ছোট্ট নক্ষত্র ঝিকমিক ঝিকমিক করছে। নিরব অপলক তাকিয়ে আছে আকাশপানে সেই চাঁদ ও নক্ষত্রের দিকে। দূর হতে বাঁশির সুর ভেসে আসছে। নিশ্চয়ই করিম চাচা সারাদিনের ক্লান্তির অবসান ঘটাতে এই মাঝ রাত্রিরে বাঁশিতে সুর তুলেছেন। নিরব সেই বাঁশির সুরের সাথে তাল মিলিয়ে গুনগুন করে গেয়ে ওঠে...

"নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে কন্যা,
তাকায়... জলপানে।
তাঁহার জন্যে মনটা ব্যাকুল,
সে কি.... গো তা জানে!
রূপকূমারী কন্যা সে তো,
রূপের নাইরে শেষ।
পাগল হইলাম তারে দেইখা,
কাটলো মনের ক্লেশ রে বন্ধু.....
হইলাম আমি শেষ।"

- বাহ্, আপনি তো অনেক সুন্দর গান গাইতে পারেন!
নিরব হকচকিয়ে উঠে পাশে তাকিয়ে দেখে জেবুন নেছা দাঁড়িয়ে আছে।
- আপনে? আপনে এতো রাইতে এই খানে ক্যান?
- ঘুম আসছিলো না, তাই একটু বাইরে বের হয়েছিলাম। হঠাৎই কানে ভেসে এলো আপনার এই গান। তাই চলে আসলাম গান শুনতে।
- বাড়ি ফিইরা যান , গাঁয়ের মানুষ এতো রাইতে আপনেরে এইখানে দেখলে সর্বনাশ হইয়া যাইবো।
জেবা অবাক চোখে নিরবের পানে চেয়ে বলে...
- সর্বনাশ! কিসের সর্বনাশ?
- ও আপনে বুঝবেন না, আপনের পায়ে ধরি আপনে বাড়ি ফিইরা যান।

নিরব বাড়ির উঠান থেকে পাটিটা গুছিয়ে নিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ায়। ঘরে উঠতে গিয়ে সে পেছনে তাকিয়ে দেখে, জেবা তখনও তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সে ঘরে উঠার আগে আরেকবার জেবাকে বলে, "মেম সাহেব বাড়ি যান, রাইত অনেক হইছে। গায়ের পথঘাট ভালো না।"

নিরব নিজের ঘরে চলে যায়। জেবুন নেছা তবুও কিছু সময় নিরবদের বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকে। আর মনে মনে ভাবে, আহ! গ্রামের মানুষ কতো সহজ সরল। নিজ মান সম্মানের ভয় কাজ করে তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত।
.
শুয়ে শুয়ে জেবা নিরবের কথা ভাবতে থাকে। ছেলেটা কত সরল সোজা আর বোকা। তাকে আবার মেম সাহেবও ডাকে। এটা ভাবতেই সে আনমনেই হেসে ওঠে। পাশের ঘর থেকে তার নানি বলে ওঠে, কিরে তোর আবার কী হইলো? এই রাইত দুপুরে হাসস ক্যান? ভূতে টূতে ধইরলো নাকি? ঘুমায়ে পড় তাড়াতাড়ি।
জেবু তার নানির কথার উত্তরে বলে, "না নানি, ভূত না। ভূতের চেয়েও বড় কিছু ধরেছে।"
বলেই সে আবার হেসে ওঠে।

পরদিন সকালে নানির ডাকে তার ঘুম ভাঙে। সে ঘুম ঘুম চোখে বলে, কী হয়েছে নানি? এতো সকাল সকাল ডাকছো কেন?
- দ্যাখ কে আইসাছে?
- কে?
- বাহিরে আইসা দ্যাখ।
জেবা বাইরে গিয়ে দেখে নিরব তার নানির সাথে বসে গল্প করছে। নিরবের দিকে একপলক তাকিয়ে সে তার নানিকে জিজ্ঞেস করে, কোথায়? কে এসেছে নানি?
- এই যে, এই দামড়াটাকে কী তোর চোক্ষে পড়ে না? সারাদিন আইসা সে জ্বালাইয়া মারে আমারে। আইজ আবার সকাল সকালই আইসা পড়ছে।
- ও আচ্ছা! এই ব্যাপার। নানি তুমি তোমার কাজে যাও। তোমার এই দামড়াটাকে আমি দেখছি।
নানি উঠে গেলে জেবা নিরবকে জিজ্ঞেস করে, কী ব্যাপার মিস্টার? এতো সকাল সকাল এখানে যে?
- প্রভাতে উইঠা ঘুরতে বাহির হইয়াছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে ভাবলুম, একটু নানির খোঁজ খবর নিয়া আসি। তাই চইলা আইলাম।
- শুধু কী নানির খোঁজ, নাকি অন্যকারো খোঁজেও এসেছেন?
নিরব কিছু বলে না। শুধু অপলক চেয়ে থাকে জেবার দিকে। মেয়েটা কত সুন্দর করে কথা বলে। এই এক দিনেই মেয়েটাকে তার মনে ধরেছে। রাতে যখন মেয়েটা তার গান শুনতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলো। তখন সে ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও তাকে গান শোনাতে পারেনি, তার সাথে একটু কথা বলতে পারেনি। সারাটা রাত তার বিরহে কেটেছে। সারারাত বিছানায় শুয়ে সে এপাশ ওপাশ করেছে। কখন সকাল হবে। আর কখন সে জেবার সাথে দেখা করবে, একটু খানি কথা বলবে, সেই চিন্তাতেই রাত্রি কেটে প্রভাত হয়ে যায়। আর ঠিক সেসময়ই সে বেড়িয়ে পড়ে বাইরে।
দিনের আলো ফুটতেই সে হাজির হয়ে যায় তার নানির বাড়িতে। আপন নানি না, তবে আপন নানি হতেও কম না। সেই ছোট্টকাল থেকে নানির কাছে থেকে থেকে সে বড় হয়েছে। কত না রূপকথার গল্প শুনিয়েছে নানি তাকে, তার হিসাব নেই। কখনও কখনও সে নানির কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে। নানিও যেন তাকে ছাড়া থাকতে পারে না। কলিজার একটি স্থান যেন সে নানির।

নানির কাছে এসেই সে তার শহরের নাতনির কথা বলতেই নানি জেবাকে ডেকে দেয়। আবার মুপ টিপে মুচকি হাসিও দেয় নানি। কথার ছলেই বলে, নানার কী আমার নাতনিকে দেইখা পছন্দ হইলো নাকি? নিরব মাথা নিচু করে "হু" বলে। ঠিক তার খানিক পরেই জেবা ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসে।
.
- মেম সাহেব একখান কথা কই? (নিরব)
- চুপ একদম চুপ। কোনো কথা বলবেন না।
নিরব অবাক হয়ে যায় জেবার এমন আচরণে। সে ভয়ে ভয়ে বলে,
- ক্যা.. ক্যা. ক্যান?
- আপনাকে না বলেছি আমাকে জেবু বলে ডাকবেন। তো এতো "মেম সাহেব মেম সাহেব" ডাকেন কেন?
- হাহাহা, হাহাহা, হাহাহা।
- হাসছেন যে?
- আপনের কথা শুইনা। হাহহা..
- কেন, আমি আবার কী বললাম?
- আপনেরে মেম সাহেব ডাকলেই খুব ভালো শোনা যায়।
- না, ডাকবেন না। এখন থেকে জেবু বলে ডাকবেন।
- আচ্ছা, ডাক........
নিরবকে পুরোপুরি কথা শেষ করতে না দিয়ে জেবা তাকে আবার বলে,
- আর শুনুন, এখন থেকে তুমি করে বলবেন। আমিও তুমি করে বলবো। ঠিক আছে?
নিরব কিছু সময় জেবার পানে চেয়ে থেকে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ে। "তুমি" ডাকটা যে অতি মধুর ডাক। "তুমি" সম্বোধনে ডাকলে যে একদম কাছের কেউ মনে হবে তাকে। ভাবতেই তার মনে প্রেমের হাওয়া দোল খেলে যায়।
- কী হলো, ওভাবে তাকিয়ে কী দেখছো হু? (জেবা)
- তোমারে।
জেবা লজ্জা পায়। সে চোখ দুটি নামিয়ে নেয় নিরবের চোখ থেকে।
.
বিকেলে আবারও তারা নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ায়। আজ সূর্যটা তার অস্তস্থান থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। এর মানে সূর্য অস্ত যেতে অনেক দেরি এখনো। কাঁশফুলে ছেঁয়ে আছে সমস্ত মাঠ। পায়ের নিচে বালি মাটি। উষ্ণ বালিকণায় পা রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হবে জেবার। তাই নিরব তাকে বলে, জেবু চলো ঐ খানে যাইয়া বসি।
দু'জনে উক্ত স্থান থেকে একটু নদীর দিকে এগিয়ে গিয়ে একটা গাছের নিচে বসে। গাছটা যেন সেই জায়গাটাকে তার ছায়া প্রলেপ দ্বারা সমৃদ্ধ করে রেখেছে। এক অনন্য, অনবদ্য স্থান যেন সেটা।

নদীতে ঢেউ হচ্ছে। কলকল আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। গাছের উপরে হরেক রকমের পাখিদের আনাগোণা। তাদের কিচিরমিচির শব্দ আর নদীর ঢেউয়ের কলকল ধ্বনি যেন চারপাশটাকে মুখরিত করে তুলছে।
জেবা এক মনে সেটাই শ্রবণ করছে। কোনো কথা বলছে না সে। তাকে চুপ থাকতে দেখে নিরব তাকে ডাক দেয়।
- জেবু...
অন্যদিকেই তাকিয়েই সে বলে,
- হু।
- একটু এইদিকে ঘুরো।
- হু।
- তোমার জন্যে এ্যাকটা উপহার আনছি।
- হু।
নিরব বিরক্ত হয় জেবার অমন "হু হু" কথায়। সে জেবার শরীরে ঝাঁকি দিয়ে বলে,
- কী ভাবতাছো অমন কইরা?
- ক.. কই? কিছু না তো?
- তাইলে এতক্ষণ ধইরা ডাকতাছি, শুনতাছো না ক্যান?
- হ্যাঁ বলো।
- এই দ্যাখো তোমার জন্যে কী আনছি।
- কী?
নিরব এবার তার শার্টের পকেট থেকে এক জোড়া রুপার নূপুর বের করে জেবার দিকে ধরে বলে,
- এইটা তোমার জন্যে।
জেবা অতি উৎফুল্লতার সাথে নূপুর দুটি নিয়ে বলে, সত্যি?
- হ, সত্যি।
- কোথায় পেলে এটা?
- অনেকদিন আগে কিনছিলাম।
- তা আমাকে দিলে যে!
- এইডা আমি আমার পছন্দের মানুষের লাগি কিনছিলাম।
- তাহলে আমাকে কেন দিলে?
- তোমারে পছন্দ হইছে আমার। তাই দিলেম।
জেবা লজ্জা পায় কিছুটা। লজ্জা মাখা মুখে সে নিরবকে কিছু বলতে গিয়েও বলে না। কেননা, তাকে কী বলবে সেটাই সে ভেবে পায় না।

দুজনেই চুপচাপ বসে আছে গাছের নিচে। হঠাৎই জেবার চোখ পড়ে নদীর উপরে চলমান একটা নৌকার দিকে। মুহূর্তেই তার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে ওঠে। সে বাচ্চাদের মতো বায়না করে বলে, সে নৌকায় উঠবে। নিরবও বাধ্য ছেলের মতো তাকে সাথে নিয়ে নদীর সমীপে গিয়ে দাঁড়ায়।
- ও মাঝি ভাই... নাও খানা এদিক ভিড়াও।
নিরবের ডাক শুনে মাঝি নৌকা নিয়ে তাদের কাছে আসলে তারা নৌকায় উঠে পড়ে। মাঝি আপন মনে নৌকা চালাতে থাকে। আর এদিকে নিরব ও জেবা দু'জনে দু'জনার দিকে পানি ছিটাতে থাকে। দেখে মনে হয় যেন, দু'টো পাখির বাচ্চা খেলা করছে নদীর বুকে।

রক্তিম সূর্যটা ততক্ষণে পশ্চিমে মোর নিয়েছে। চারিদিকের পরিবেশটা তখন অনন্য, অনবদ্য, অনুপম। জেবা আনমনেই বলে ওঠে, বাহ বেশ সুন্দর তো!
ওদিকে মাঝিও গান ধরেছে.....

নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন,
ও বন্ধুরে...
নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন।
ও তারা মিটি মিটি, ও তারা মিটি হাসি দেয়,
জুড়ায়ে যায় প্রাণ।
নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন।
ও বন্ধুরে....
নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন।

নদীর এই পানিতে, ছোয়ায় যখন হাত.....
নদীর পানি ঢেউ খেলিয়া
হইয়া যায়রে কাঁত।
তাদের রুপের কথা, ও তাদের রুপের কথা
কী বলিবো অপূর্ব তার দান।
নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন,
ও বন্ধুরে....
নাওয়ে উইঠাছে দুইখান চাঁন।
.
নদীর ওপারে সূর্য অস্ত যাচ্ছে। জেবা সেদিকেই তাকিয়ে আছে। আর নিরব তাকিয়ে আছে জেবার দিকে। চারিদিকে হালকা বাতাস বইছে। জেবার অবাধ্য চুলগুলো বারবার তার মুখের সামনে চলে আসছে। আর জেবা সেগুলো সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে। হঠাৎই নিরবের চোখে তার চোখ পড়লে সে বলে ওঠে, এই যে... এই যে মিস্টার ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন হু?
নিরব চোখ নামিয়ে নেয়। নিরবকে চোখ নামাতে দেখে জেবা হেসে ওঠে।
আহা! এ হাসি যেন পূর্ণিমার রাতের উজ্জ্বল জ্যোৎস্নার ন্যায় আলো ছড়াচ্ছে। নিরব আবারও তার সেই হাসি মাখা মুখটির দিকে তাকায়।

- বাবা সন্ধ্যা হইয়া আইলো তো! এহন তুমরা নাইমা যাও। আমি নাও লইয়া বাড়ি ফিইরা যাই।
মাঝির ডাকে নিরবের চৈতন্য ফেরে। সে অপ্রস্তুতভাবেই বলে, হ্যাঁ.. হ্যাঁ।

নৌকা থেকে নেমে তারা দু'জন বাড়ির পথে হাঁটা ধরে। বিস্তীর্ণ মাঠে তখন কোনো জনমানবের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। চারিদিকে স্তব্ধতা, নিরবতা বিরাজ করছে। মাঝে মাঝে দূর দূরান্তের পাখিদের চিৎকার চেঁচামেচি কানে ভেসে আসছে। ঠিক এরই মাঝে একটা চমৎকার কিছুর আওয়াজ শুনতে পায় নিরব। আওয়াজটা অতি পরিচিত। তাদের হাঁটার সাথে সাথে আওয়াজটাও যেন হাঁটছে।
কিছুক্ষণ পর তার মনে হলো, এটা তো নূপুরের আওয়াজ। তাহলে কী জেবা নূপুরটা পড়েছে?
চলার মাঝখানে হুট করে সে জেবার সামনে গিয়ে বসে পড়ে এবং পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে জেবার পায়ে তার দেওয়া সেই নূপুর জোড়া।

- কী হলো? হঠাৎ সামনে এসে বসে পড়লে যে? (জেবা)
নিরব কিছু বলে না। সে বসা থেকে উঠে পড়ে। জেবা আবারও জিজ্ঞেস করে, হঠাৎ করে বসে পড়লে কেন?
- নূপুরের শব্দ শুইনা। এই সাঁঝবেলায় তোমার নূপুরের শব্দখানা আমার পরাণে দোলা দিয়া গেলো।
- হু হয়েছে হয়েছে, চলো এবার।
.
গত রাতের মতো আজও বাড়ির উঠানে পাটি পেতে গান গাইছে নিরব। দূর থেকে করিম চাচার বাঁশির সুর ভেসে আসছে।
- তুমি কী প্রতি রাতেই এভাবে গান গাও?
- কে... কে?
অকস্মাৎ জেবার আগমনে এবং তার ওমন প্রশ্নে নিরব ভয় পেয়ে যায়।
- আমি।
- ও, তা এতো রাইতে?
- তোমার গান শুনতে আসলাম।
- গেরামের মানুষ দেখলে বদনাম রটাইবো। বাড়ি যাও।
- না, যাবো না। আর কিসের জন্য বদনাম রটাবে হ্যাঁ?
একটু জোর গলাতেই কথাটা বলে জেবা। নিরব বলে,
- রাইত বিরাইতে একটা মাইয়া মানুষকে একটা ছাওয়ালের লগে দেখলে মানুষে বদনাম রটাইবো না তো কী করবো?
- রটালে রটাক, তবুও আজ আমি সারারাত ধরে তোমার গান শুনবো।

নিরব জেবাকে অনেক্ষণ ধরে বোঝানোর পরেও সে বোঝে না। তার একটাই কথা, সে গান শুনবে। আসলে গান শোনাটা একটা অযুহাত মাত্র। গান শোনার নামে নিরবের সাথে একটু সময় কাটানোটাই তার প্রধান লক্ষ্য।
তার চাপে পড়ে কোনো উপায়ান্তর না দেখে নিরব তাকে গান শোনাতে থাকে। আর সে অপলক নিরবের দিকে তাকিয়ে থাকে।
একসময় করিম চাচার বাঁশির সুরও থেমে যায়। এদিকে নিরবের চোখেও ঘুম চলে আসে। ঘুম ঘুম চোখে সে জেবাকে বলে, জেবু তুমি এহন বাড়ি ফিইরা যাও। অনেক রাইত হইয়া গেচে। এহন তুমার আর এইহানে থাহাটা উচিত হইবো না।
জেবা নিরবের অাকুল আবেদনে বাড়ি ফিরে যায়। ফিরে যাওয়ার আগে সে নিরবকে বলে যায়, "আমি যতদিন থাকবো, ততদিন তুমি আমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াবে এবং রাত হলে এভাবে গান শোনাবে।"
নিরব তার কথায় শুধু এদিক ওদিক মাথা নাড়ায়।
.
অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের দুজনের মাঝে যে সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। তা যেন অধিক বছরের সম্পর্ককেও হার মানায়। একজনকে ছাড়া অপরজন অর্থহীন।
জেবা মেয়েটা মনে মনে নিরবকে ভালোবেসে ফেলেছে। নিরবও জেবার মোহে নিজেকে মোহিত করে তুলেছে। জেবা হীনা নিরব যেন অস্তিত্বহীন। প্রতিদিন নদীর পাড়ে গিয়ে প্রকৃতির রূপ রস উপভোগ করা, নৌকায় চড়ে দূর বহুদূর ঘুরে বেড়ানো,
বৃক্ষের ছায়ায় বসে গল্প করা, সূর্যাস্ত দেখা, এ যেন নিত্য রুটিন হয়ে গিয়েছে।

প্রতিদিনের মতো আজও নিরব জেবাকে ডাকতে তার নানির বাড়ি যায়।
- নানি তুমার নাতনী কই?
- কী নানুভাই, তুই বুঝি আমার নাতনীটার পিরিতে পইড়াছস!
নিরব শুধু হাসে মাত্র।
- দ্যাখ এহনো শুইয়ায় আছে মনে হয়।
নিরব জেবাকে ডাকতে ডাকতে ঘরের মধ্যে যায়। গিয়ে দেখে সত্যিই জেবা এখনও শুয়ে আছে। সে কাছে গিয়ে তাকে ডাক দেয়। কিন্তু জেবা কোনো উত্তর দেয় না। কয়েকবার ডাক দেওয়ার পরেও যখন জেবা কোনো উত্তর দেয় না, তখন নিরব বিছানার কাছে গিয়ে তার মাথায় হাত দিতেই চমকে ওঠে।

- নানি, নানি, এইদিকে আইসো একটু।
- ক্যানরে কী হইয়াছে আবার?
- জেবুর শরীরডা জ্বরে পুইড়া যাইতাছে।
- কই দেহি দেহি। তাইতো! এতো বড় জ্বর আইলো কী কইরা?
নিরব কোনো উত্তর দেয় না। কারণ সে জানে জ্বর কেন এসেছে।
- তুই তাড়াতাড়ি গিয়া গফুর ডাক্তাররে ডাইকা নিয়া আয়।
- হ নানি, যাইতাছি। তুমি ততক্ষণ জেবুরে দেইখো।
- দেখুমনে, তুই তাড়াতাড়ি যা আগে।

গতকাল বৃষ্টিতে ভেজার কারণে জেবার জ্বর চলে আসে। নিরব অবশ্য নিষেধ করেছিলো ভিজতে। কে শোনে কার কথা? সে তো নিজেও ভিজলো, সাথে নিরবকে নিয়ে ভিজলো।

নিরব দৌড়াতে দৌড়াতে ডাক্তারের বাড়ি যায়। গিয়ে দেখে ডাক্তার মাত্রই বের হয়েছে কোথাও যাওয়ার জন্য। সে এক প্রকার জোর করেই ডাক্তারকে ধরে নিয়ে আসে।

ডাক্তার জেবাকে দেখার পর কিছু ঔষুধ দিয়ে যায়। আর বলে যায় নিয়মিত ঔষুধগুলো খাওয়াতে এবং মাথায় পানি দিতে।
.
টানা দুই দিন জ্বর থাকে জেবার। যখন সে একটু সুস্থ হয়, তখন বিছানা ছেড়ে উঠতে গিয়ে দেখে নিরব তার খাটের সমীপে একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। নিরবকে ওভাবে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে সে মনে মনে ভাবে, তার অসুস্থতার পুরোটা সময় জুড়েই কী এই বোকা ছেলেটা তার পাশে ছিলো?
নিরবকে জাগাবে না বলে সে এক পাশ দিয়ে নামতে গিয়েও নিরব জেগে যায়। তাকে বিছানা ছেড়ে নামতে দেখে নিরবের চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে ওঠে। অতি খুশিতে তার চোখে জল চলে আসে। বিষয়টা জেবা লক্ষ্য করে।
সে বলে,
- তুমি এখানে কেন?
- তোমার জ্বর আইছিলো, তাই তোমার পাশে বইসা ছিলাম।
- কী?
- হ, এই পাগলটা সারাক্ষণ তোর পাশে বইসা ছিলো। রাইত নাই দিন নাই সবসুমায় ও তোর পাশে এইভাবেই বইসা ছিলো।
হঠাৎই ঘরের মধ্যে ঢুকে তার নানি কথাগুলো বলে।

নিরবের প্রতি জেবার ভালোলাগা, ভালোবাসাটা আগের থেকে অনেক বেড়ে যায়। সে অপলক নিরবের পানে তাকিয়ে থাকে। বোকা ছেলেটার চাহনিটা অতি নিষ্পাপ, সরল।
.
.
সবকিছু ভালোই চলছিলো তাদের দু'জনার। ঠিক এরই মাঝে হঠাৎ করেই জেবার মা তাকে কল করে অতি দ্রুত ঢাকায় ফিরতে বলে। মায়ের কথা শুনে তার উৎফুল্ল মনটা মুহূর্তেই কালো বর্ণ ধারণ করে। গ্রামে থাকতে থাকতে গ্রাম, গ্রামের মানুষ এবং নিরবের প্রতি তার এক ধরনের গভীর ভালোবাসার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। হয়তো এর নাম "প্রেম।"
জেবা কখনও মুখ ফুটে নিরবকে তার ভালোলাগা, ভালোবাসার কথা জানাতে পারেনি। অন্যদিকে নিরবও কখনো তাকে "ভালোবাসি" কথাটা বলেনি।

চলে যাওয়ার দিন নিরব অশ্রুশিক্ত নয়নে জেবাকে জড়িয়ে ধরে বলে, জেবু তোমারে ছাড়া আমার এ হৃদয়টা শূন্য হইয়া যাইবো। তুমি যাইওনা সখি, যাইওনা।
জেবার চক্ষুযুগল অশ্রুতে ভরে ওঠে নিরবের কথা শুনে। সেও যে নিরবকে ছাড়া থাকতে পারবে না। তবুও যে তাকে যেতে হবে।
জেবা যাওয়ার সময় নিরবকে শুধু এটুকু বলে যায়, "নিরব আমি আবার ফিরে আসবো, শুধু তোমার টানে। তোমাকে অনেক ভালোবাসি নিরব।"
প্রত্যুত্তরে নিরব কিছু বলে না। সে শুধু জেবার চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। একসময় তার চোখ দুটো জলের কারণে ঝাপসা হয়ে আসে। চোখ মুছে তাকাতেই জেবা তার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায়।
দূর থেকে ভেসে আসে একটি গান,

রূপ কূমারী যাইরে চলে,
হৃদয় ভেজে চোখের জলে।
আসবে কবে সেই অপেক্ষায়,
পরাণ ফেঁটে যায়......
ও সখিরে, ভালোবাসি।
ভালোবাসি আমি যে তোমায়।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×