somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোমাঞ্চকর ভ্রমন...স্বপ্নের দেশ অস্ট্রেলিয়াতে

২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিসের একটা প্রজেক্টের ট্রেনিং ওয়ার্কশপে ব্রিসবেন যাবার একটা সম্ভাবনা অনেক আগে প্রায় সেই গেল বছরের নভেম্বরেই জানান দিয়েছিল ডন, আমাদের প্রজেক্টের অষ্ট্রেলিয়ান বন্ধু্। সম্ভাবনাটা জানান দেয়ার দিন থেকেই মনে মনে বিশাল আনন্দের বুদবুদ নিয়ে চুপচাপ আছি.....শুধু বড়পাকে জানিয়েছিলাম......তাতে আনন্দটা আরো ফুলে ফেপে বড় হয়েছিল, শুরু হয়েছিল আমাদের নানা জল্পনা কল্পনা.......


এর মাঝে ব্লগার আরিয়ানা সিঙ্গাপুর থেকে ব্রিসবেন এ চলে গেল তল্পিতল্পা সহ.....কি কাকতালীয় ব্যপার! গেল বছর জাফনা আর আমি যখন ফিলিপাইন গেছিলাম আমাদের অনেক প্লান ছিল আমরা সিঙ্গাপুর এ আরিয়ানার ওখানে ধুমসে বেড়াবো.......শেষমেসসেটা করতেই পারলাম না........সেই আফসুস থেকে মুতক্ত পাওয়ার উজ্জল সম্ভাবনা দেখে আমি হড়বড় করে আরিয়ানাকেও খবরটা জানিয়ে দিলাম......শুরু হোল আমাদের গাছে কাঠাল গোফেঁ তেল দেয়া..........

এক সময় ডনের কাছ থেকে মেইল আসা শুরু হোল.....সে কি উত্তেজনা মনে মনে! অষ্ট্রেলিয়াতে আমার একগাদা ভাইবোন থাকে ;) তাদের কাছ থেকে এত গল্প শুনেছি, এখন কাছ থেকে দেখবো, এটা যেন জাফনা এবং আমার কাছে বিরাট ব্যপার...বলে বোঝানো যাবে না....

সবকিছুর একটা প্রক্রিয়া থাকে সরকারী চাকরদের প্রক্রিয়াটা আরো জটিল ভিতরে এবং বাহিরে দুদিকেই.........প্রতিটা ঘাট পেরুতে যেন প্রতিবার জ্বর এসেছে আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে....আর আমার যা স্বভাব, কিছু হলে আমি আমার চারদিকে সব্বাইকে শুদ্ধু অস্থির করে ছাড়ি........এই লিস্টটা নেহায়েত কম বড় না ;) সবচেয়ে বেশী ছিল আরিয়ানা আর পারভীন আপু........আরো অনেকে ছিল সবার নাম বলা যাবে না.......;);) .......আর ঝামেলাদের ও যেন হাত পা গজিয়েছিল.....কোন একটা কাজ নির্বিঘ্নে যদি হোত, এমন ছিল অবস্থা!

এইরকম বারবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়তে ছাড়তে এক্কেবারে "স্টেশনে পৌছাইবার পর ট্রেন ছাড়িল" টাইপের অবস্থায়........আমাদের ভিসা হোল.........মাথায় গুচ্ছের চিন্তা....২১ দিন ট্রেনিং এর সাথে ২৬ দিন ছুটি নিয়েছি....ভাইবোনদের বাড়ী বেড়াবো বলে........তো বাড়ীটা সেরকম গুছিয়ে যেতে হবে........পিএইচডির থিসিসটা অবশ্যই জমা দিয়ে যেতে হবে.........যেন দেবী দশভূজা হয়ে এক একটা কাজ পই পই করে গুছিয়ে অবশেষে আমরা ব্যগ গোছানো শুরু করলাম.........আমরা মানে জাফনা আর আমি...........জাফনা শুধূ বলে "মা, আমি খুব এক্সাইটেড"..........আমি জিজ্ঞেস করি "কেন মা?" বলে "অষ্ট্রেলিয়া যাব তো তাই!" আহা বাড়ী ময় সবাই এক্সাইটেড! এত শত কাজের চাপে কারো জন্য কিচ্ছু কিনতে পারলাম না...........(বেশ একটা ভাল অজুহাতই হোল)....

এর মধ্যে আরিয়ানার প্রতিদিন ফোন, কোথায় কেমন করে তার বাড়ীতে যেতে হবে...সব আমাকে বোঝানো...ওর উষ্ণতায় মন ভাল হয়ে যেত, আমাদের ট্রেনিং হবে ব্রিসবেনে..........খানিকটা সময় যদিও বিসবেন থেকে একটু দূরে টুউম্বাতে....তবু আমাদের প্ল্যান আরিয়ানার বাড়ী থেকে আমি অফিস করবো......কত কি যে প্ল্যান! আর বড়পার সাথে তো কথা হচ্ছেই.



অবশেষে আমরা ঢাকা থেকে প্রথমে মেলবোর্ন গেলাম....একরাত কাটিয়ে জাফনাকে বড়পার কাছে রেখে আমি ব্রেসবেনের প্লেনে চড়ে বসলাম রাতদুপুরে.........এখানেও হ্যপা.........মেলবোর্নে সেইদিনই ডে লাইট সেভিং এর জন্য ঘড়ির কাটা একঘন্টা আগিয়ে দিতে হবে........কেন রে বাবা এটা দুদিন আগে পড়ে হতে পারতো না, আমিও এলাম আর উনারা সেদিনই ঘড়ির কাটা আগাবেন! আমরা সব সন্ধ্যায় খেয়েদেয়ে ঘড়ির কাটা একঘন্টা আগিয়ে এলার্ম দিয়ে ঘুমাতে গেলাম.........রাত তিনটায় উঠে...খেয়ে দেয়ে ছুট.........ইশ কি ঠান্ডারে বাবা মেলবোর্নে, গল্পে শোনা শীতের হালকা দেখা পেলাম....

আমাদের মা মেয়েতে ২১ দিনের জন্য ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল............ব্রিসবেনে পৌছেই ডন এর হাসি হাসি মুখের উষ্ণ অভ্যর্থনা........সাথে ওর মেয়ে এমারেল্ডও এসেছে........মিষ্টি মেয়ে এমারেল্ড.......বারবিদের মতন সোনালী রঙের চুল তার.............ডন আমাকে খানিক ঘুরাতে নিয়ে গেল......মরটন বে তে, আমরা কফি খেয়ে গাড়ীতে উঠে বসতেই আরিয়ানার ফোন...........মরটন বে শুনেই সে হৈচৈ...........আমরা নাকি তার বাড়ীর খুব কাছেই........তবে ডন আমাকে নিএল এর কাছে হস্তান্তর করবে..........কারন নিএল আমাদের আরও কজনাকে এক সাথে করে টুউম্বা নিয়ে যাবে.........তাই আরিয়ানার সাথে দেখা হওল না..........ওরা দুজনে আবার পরদিনই সিঙ্গাপুর চলে যাবে..........নিএল এর গাড়ী আমাদের নিয়ে চলল ব্রিসবেন শহরটা একচক্কর ঘুরিয়ে পাহাড়ী শহর টুউম্বা রেন্জ এর দিকে.......



নীএল ডন এমারেল্ড এবং আমি ব্রিসবেন এয়ারনপোর্টে

(লেখাটা কয়েক পর্ব চলবে............এটা পর্ব ১)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:৩৯
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×