somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙালি কী ক্রমশঃ ভীতু হয়ে পড়ছে?

০১ লা মার্চ, ২০০৬ ভোর ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভেতো আর ভীতু বাঙালি বলে একসময় পাকিসত্দানীদের কাছে বাঙালির অবস্থান ছিল একেবারে নিম্নতম সত্দরে। তারা বাঙালিকে মুসলিম বলে মনে তো করতোই না, বরং তারা বলতো যে, অনেক বাঙালির নাকি মুসলমানীই হয় না। এসব বলে বলে বাঙালীকে কোন্ঠাসা করে শাসন ও শোষণ করে দীর্ঘ 25 বছর। এই পঁচিশ বছরে যে শ্রেণীটিকে পাকিসত্দানীরা তাদের কোলের কাছে পায় তারা আর কেউ নয় আজকের মইত্যা রাজাকার, গো আজম, মুজাহিদ্যা আর একটি ফড়ে দালাল শ্রেণী, যারা ব্যবসার নামে বাঙালিরই সম্পদ লুন্ঠন করতো।
ফলে একাত্তরে যখন বাঙালি অস্ত্র হাতে পাকিসত্দানী বাহিনীর মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ে, এমনকি জীবন দিতে পর্যনত্দ দ্বিধা করে না তখন পাকিসত্দানী বাহিনী পর্যনত্দ অবাক হয়ে গিয়েছিল, মাছলিখোর বাঙালি এতো সাহস পেলো কোত্থেকে? (পড়ুন 1971 সালে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিসত্দানী সামরিক গোয়েন্দা আইএসআই-এর চীফ সিদ্দিক সালিকের বই উইটনেস টু সারেন্ডার এবং জেনারেল আসগর এর জেনারেল এ্যান্ড পলিটিঙ্)।
শেষ পর্যনত্দ তারা যে সিদ্ধানত্দটিতে উপনীত হয় তা হলো, এই সাহসের উদ্গাতা হচ্ছে শেখ মুজিব, তাই তাকেই শায়েসত্দা করতে হবে। কিন্তু ততোদিনে শেখ মুজিব তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকি-খেদানোর সমসত্দ আয়োজন সম্পন্ন করেছেন, যে কারণে যুদ্ধ এগিয়ে নিতে বাঙালিকে কোনও বেগ পেতে হয়নি। 1965 সালে শেখ মুজিব গোপনে ভারত সফর করেছিলেন একাত্তরের পটভ্থমি তৈরির জন্য, যাতে বাঙালি ভারতে আশ্রয় নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনায় কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হয় (বিশদ জানতে পড়ুন মুজিবুল হক খোকা'র অসত্দরাগে স্মৃতি সমুজ্জ্বল, মাসুদা ভাট্টির বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ ঃ ব্রিটিশ দলিলপত্র এবং এম আর আখতার মুকুলের আমি বিজয় দেখেছি এবং এ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসের রেপ অব বাংলাদেশ)। আসলে আমার পিএইচডির বিষয় এটা বলেই আমি এখন এগুলো নিয়ে লেখাপড়া করছি এবং আপনাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাইছি। আশাকরি আপনারা কেউ আপত্তি করবেন না?
আসলে আমি বলতে চাইছি যে, একাত্তরে যদি মইত্যা, ময়লানা সাঈদীর বা গো-আজমদের মতো কতিপয় কুলাঙ্গার বাদে আপামর বাঙালি সাহসী না হতো তাহলে বিজয় অর্জন ছিল অসম্ভব। পাকিসত্দানীরা ভয়াবহ গণহত্যার মতো ধ্বংসলীলা সাধন করেও বাঙালিকে সাহস-চু্যত করতে পারেনি। কিন্তু দুঃখজনক সত্যি হচ্ছে একুশ শতকে এসে বাঙালি বোধ করি অনেক ঝিমিয়ে পড়েছে, সাহসহীন হয়ে পড়েছে, একটা ভয়ের সংস্কৃতি চালু করে সুক্ষ্মভাবে কাজটি করেছে জামায়াতিরা, কখনও রগ কেটে, কখনও খুন করে, কখনও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা হলো দেশের দু'দু'জন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করাও এই ভয়ের সংস্কৃতি চালুর অন্যতম নিদর্শন। এখানে এ বিষয়ে বিসত্দারিত লেখার অবকাশ নেই বলে বাদ দিচ্ছি। কিন্তু আমি একথা বলতে চেয়েছি যে, এই ভয়ের সংস্কৃতি বিকাশের কারণেই আজ আমাদের এই দুরবস্থা, আমাদের ঘাড়ের ওপর খড়গ উঁচিয়ে আছে তালেবানী হায়েনা আর আমরা খাচ্ছি-দাচ্ছি-বংশবৃদ্ধি করছি।
আপনারা কি খুব বিরক্ত হবেন যদি আমি এই মহান মার্চ মাসে প্রায় প্রতিদিন ধরেই বিভিন্ন ডকুমেন্ট আর বই থেকে একাত্তরে বাঙালির সাহসীকতা আর বীরগাঁথা তুলে ধরি? তুলে ধরি সেই সব ঘাতকদের অপকর্মের কথা? তুলে ধরি তথাকথিত তলাবিহীন ঝুড়ি বাংলাদেশকে ঘিরে বিশ্ব রাজনীতির হালচাল?
আপনাদের অনুমতির অপেৰায় রইলাম। সবার জন্য দিনটি সুন্দর হোক, আজ উত্তাল মার্চের প্রথম দিন, সবাইকে অগি্ন-শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×