somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ বরষার দিনে

০৫ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
---
বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।

আজ সকাল সকাল ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল। কাল রাতে ঘুমিয়ে পরেছিলাম খুব তারাতারি। শরিরটা খুব ক্লান্ত ছিলো তো তাই। সকালে উঠেই যখন আকাশের এই ভিষন কালো মুখটা দেখলাম খুব একটা ভালো লাগে নি।

প্রচন্ডো মাথা ব্যথা আর তার সাথে হাল্কা জর। শরিরের ভেতরের সারকিট গুলো দিন দিন হয়ত নরবরে হয়ে যাচ্ছে তাই বললাম। আমার ধারোনা অমুলক বটে। কারন খুব একটা জর আমার সচারাচর হয় না। কেনো যে বললাম তাই ভাবছি। মানুষ অসুস্থ হলে যা হয় আর কি। আবোল তাবোল বকে।

প্রকিতির একটা পরিবর্তন মনের উপরো দাগ ফেলে দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় আমিও বাদ গেলাম না। আজব করা একটা শুন্যতা অনুভব করেছি। সকালের নাস্তার জন্য নিচে নেমে দেখি বাসায় তেমন কেউ নেই। বন্ধের দিন সবাই অঘরে ঘুমাচ্ছে। কাজের মেয়েটাকে ঘুম থেকে টেনে তুললাম। মেয়েটার বয়স ১০ কি ১২ হবে। একটু চটপটে। পরোটা ভেজে দিলো। একটা ডিম ভেজে দিতে বললাম।

নাস্তা সেরে নিচে নেমে আসলাম একটু পরেই। মানিবেগটা উপরে রেখে এসেছিলাম মনে ছিল না। পকেটে যখন হাত দিলাম তখন দেখি মাত্র ১০ টাকার একটা নোট। আমার অধিকারটাকে একটা ফোন দিতে ইচ্ছে করল। মাত্র দুই মিনিট কথা বললাম। ভাল লাগল বেশ। ইদানিং কেন যেনো মনে হচ্ছে মেয়েটা শুধু আমার সাথে কথা বলে আমাকে খুশি করার জন্য। মিস্টি তবু কেমন যেনো গা ছারা ভাব। আমি বুঝতে পারি। কিন্তু অধিকার খাটানোর অধিকারটুকু তো পাই নি। তাই বারাবারি করেই বা কি লাভ।

দুইটা মিনিট কথা বলেই মনটা অনেক ভালো হয়ে গেলো। বাসায় ফিরে আসলাম ফুরফুরে মেজাজে। আমার রুমটা চিলেকোটায়। ছাদের উপর নিরজন একটা কক্ষ। আমি যে বাসাটায় থাকি এই বাসার একটা ইতিহাস আছে। ৭০ এর দসকের বাসা। তখন এই এলাকায় কোনো বারিঘর ছিল না। মানুষ নাকি তখন ঢাকা শহরে ফ্রী পেলেও জমি নিত না। আমার খালা ৩৩ শটাংশ জায়গা কিনেছিল শুধু গাছ লাগানোর জন্য। ৭৪ এর বন্যার পর রামপুরা এলাকায় পানি জমে গিয়েছিল। সেই একি সময়ে সমস্থ দেশবেপি দুরবিক্ষ হয়েছিল ভয়াবহ। আমার খালু তখন একটা ব্যাংক এ সবেমাত্র জয়েন করেছে। প্রাথমিক অবস্থায় তেমন ভাল কোণো পোস্ট ছিলো না। ৭৬ এর দিকে সে বাসার কাজে হাত দেয়। তখন অনেক মানুষ অনেক কথাই বলেছিল। কেউ কেউ বলত দেশে জায়গা জমির কি অভাব পরলো রে, ঢাকা শহরে বাড়ি বানাতে হবে। আশেপাশে তখন তেমন কোণো বসত বাড়ি নেই। সাকু দিয়ে পার হয়ে আসতে হতো বাসায়। প্রথম ফাউন্ডেশন করা হয় ৭৭ এর দিকে।
৯৩-৯৪ এর দিকে আমার যখন একটু বোধশক্তি হয়েছিল, তখনো আমি দেখেছি নৌকা বোঝাই করে মাটি নিয়ে ফেলা হতো রামপুরার খালটায়। তিনতালার উপর থেকেই স্পষ্টো দেখা যেত জাতীয় সংষদ, শিশু পার্ক, রম্না পার্ক, গুলশান, বাড্ডা সহ অনেক কিছু। তখন ঢাকা শহরে একটা গতি ছিল। এখনো সেই গতি আছে কিন্তু মাধুর্যতা আর নেই। এখন মানুষ গুলো অনেক বেশি যান্ত্রিক। আর এই যান্ত্রিকতা থেকেই জন্ম নিয়েছে যাতনা। তৈরি হচ্ছে যন্ত্রনার।

দুই
--
বাসায় এসে বইটা নিয়ে সবে মাত্র বসেছি আর অমনি শুরু হল বৃষ্টি। রুমের জানালাগুলো আটকাতে যেয়েও লাগালাম না। থাকনা কিছুক্ষন। বাতাস তো আর হচ্ছে না। বৃষ্টি ঢুকে পরার ভয় নেই।

একটা চেয়ার টেনে জানালার পাশে গিয়ে বসলাম। উন্মুক্ত আকাশ ফুসসে। গর্জন করছে মেঘ। ক্রিস্নবরন মেঘলা আকাশ। ঘোলাটে, রাসভারি, গম্ভির আর হিংস্র। কিন্তু কি সুন্দর তার মহিমা। কি সুন্দর তার বর্ষন। সব চেতনাকে কেরে নেয়া অপার এক মুহুর্ত। আমি অবাক হয়ে দেখলাম। মুগ্ধ হলাম। নিজেকে মানুষ মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলে হয়তো এভাবেই। প্রকিতির মাঝেই লুকিয়ে থাকে মানুষের মন, কথাটার বাস্তবতা বুঝতে পারলাম সহসাই।

বাসার সামনেই তিনটা আমের গাছ। এবারো আম ধরেছে বেশ। ঢাকা শহরে আমের গাছ থেকে আম পেরে খাওয়ার সাদ কয়জনি বা পায়। যদিও এলাকায় চুরের উতপাত বেশি, তবুও যতটুকু খাওয়া যায় তাতেই বা মন্দ কি। বৃষ্টিতে আমের গাছগুলো আন্দোলিত হচ্ছে। বাতাসে ছরিয়ে পরেছে একটা অন্যরকম আমেজ। সেই সাথে যূক্ত হয়েছে মাটির সোদা গন্ধ। মাঝে মাঝে খসখস শব্দ, কারও বা ক্ষনিক আওয়াজ, ক্রন্দন, ভেজা কাকের আর্তনাদ আর সবকিছুকে সাপিয়ে উঠা বৃষ্টির টুপটুপানি। কেমন একটা ঠান্ডা হাওয়া বয়ে আসছে খোলা জানালা দিয়ে। আমার মিশে যেতে ইচ্ছে করছে উন্মাদনায়, হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে এই উদাসী আকাশে, আপন করে নিতে ইচ্ছে করছে বৃষ্টিকে।

অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত করলাম। নাহ এখন আর বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না। শরিরটা এম্নিতেই ভাল না। এমন অবস্থায় বৃষ্টিতে ভেজা মানে খাল কেটে কুমির আনা।

বিসানাটায় গা এলিয়ে দিলাম। শরিরটা গরম হয়ে উঠেছে। এখন ভিষন রকম ক্লান্ত লাগছে। একটা প্যরাছিটামুল খাওয়া উচিত ছিল। টেবিল ফেনটা বন্ধ করে দিলাম। ঠাণ্ডা লাগছে। কাথাটা টেনে নিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম একা একা। ভয়াবহ একটা দিনের কথা।

তিন
---
তখন আমার বয়স আর কতই বা হবে। ১০ অথবা ১২। বর্ষার সময় ছিল তখন। নানাবাড়িতে গিয়েছিলাম ছুটিতে। হঠাট করে একদিন সিদ্ধান্ত হল খালার শশুর বাড়িতে বেরাতে যাবো। আমার সব মামাতো ভাই রেডি। নানা বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে নয় জায়গাটা। সবার মাঝে আমিই হলাম সবচেয়ে ছুটো। তাই আম্মু আমাকে কিছুতেই যেতে দিতে রাজি হলো না। আমি তো কেদে কেদে অস্থির। পরে আর কি করার, মা রাজি হয়ে গেলেন।

আমরা মুটে ১২ জন। এর মাঝে আবার একজন বুড়ো মানুষ আছে। এটাই হলো তালুকদার বাড়ির ট্রাডিশন, কোনো আত্তিওর বাড়ি যেতে হলেই, সাথে একজন বুড়ো মানুষ পাঠানো চাই। এই মানুষ টাকে আমি চিনি না। হয়ত হবে পরিচিত কেউ।
নানা বাড়িথেকেই ভ্যানের ব্যবস্থা করা হলো। দুটো ভ্যান মানুষ ১২। বসতে যে খুব একটা কষ্টো হয়েছিলো তা কিন্তু নয়। কারও সাস্থ্যই খুব একটা ভাল নয় তাই।

রাস্তা যারপরনাই খারাপ। এব্রথেব্রু আকাবাকা, কাদার পানিতে ভরে আছে চারিদিক। ভ্যান চালককে বারবারি নেমে নেমে টেনে টেনে ভ্যান চালাতে হলো। দু একটা যায়গায় আমাদের নেমেও যেতে হলো। তপু ভাই তো রিতিমতো ধাক্কা দিলো। এদিকে ভ্যান এর চাকা থেকে কাদা ছিটকে আমাদের শরিরে ছরিয়ে পরেছে। ভাগ্যকে দোসারপ করে আর কি লাভ, নিয়তির লিখন। পরন্ত বিকাল ছিল তখন।

গধুলির ছায়া তখনো আকাশে লাগে নি। এর আগে কখনো যাই নি আমি। যতটা কাছে সবার মুখে শুনলাম, আসলে ততটা কাছে নয়। সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে তো তাই বাতাসটা ছিলো ঠান্ডা। আশেপাশের খেতগুলো
লোক-মানবহীন। মাঝে মাঝে দু একটা উলঙ্গ শিশু পিছে পিছে দৌরে আসে, কিছুক্ষন পরেই মিলিয়ে যায়। একটা বড়ো ইস্কুল ঘর পার হলাম। বিশাল মাঠ ওই ইস্কুলের। ফুটবল খেলছে জনা বিসেক। ঘার ঘুরিয়ে যতক্ষন দেখা যায় দেখলাম। ইস একটুর জন্য গোল হলো না।

এদিকে আমার ভায়েরা মেতেছে গানে। আমিও ওদের সাথে যোগ দিলাম। শ্রাবনের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে, গানটা আমার তখন খুব প্রিয় ছিলো, ওটাই গেলাম। তুহিন ভাই একটা কওতুক বললো,

স্যার-আচ্ছা বল তো কেতর, মানুষের চোখ নষটো হলে প্রতিকার কি।
কেতর-কেন স্যার ঘাস খাওয়া
স্যার-কি????
কেতর-মানে, মানে স্যার কোনো গরু ছাগলকে তো স্যার চসমা পরতে দেখি নি তাই।
আমরা তো হাসতে হাসতে একেবারে শেষ। সে হাসি আর থামতেই চায় না।

সন্ধা হয়ে এলো হঠাট। রাস্তার দুই ধারে শুধু গাছ আর গাছ। অন্ধকারটা তাই জমকালো। দুই ভ্যানোয়ালা হ্যারিকেন বাতি ধরিয়ে নিল। আমি বসেসিলাম ঠিক মাঝে। আমার তেমন ভয় করছিলো না। তবু খুব শক্ত করে তন্ময় ভাইকে ধরে রেখেছীলাম, মিঠূ ভাই আমাকে খালি ভয় দেখাচ্ছিল। কানে কানে বলে, অই দেখ ওটা কি। আমি তাকাই না। যদি সত্ত্য কিছু হয়। দ্রুত ঘনিয়ে এল অন্ধকার। গ্রাস করল নিরবতা।

আমি চোখে তেমন কিছুই দেখছি না। তবু ভ্যানটা যে কিভাবে চলছে বুঝতে পারছি না। বুড়ো লোকটা সামনের ভ্যান এ। ভালই হয়েছে এই ভ্যান এ না থাকাতে। ও থাকলে এত মজা করতে পারতাম না। আকাশ অন্ধকার থাকাতে চাদের কোনো আলো নেই। রাস্তার দুই ধার থেকে শুধু ব্যাঙ্গের ডাকার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তাই বলে কিন্তু ঝি ঝি পোকার অভাব নাই। কোথা থেকে একটা আমার হাতে এসে পরল। ওটাকে ধরে পকেটে ভরে রাখলাম।

হঠাট করেই ভ্যান ওয়ালা ব্রেক করে বসল। কাদাতে পিসলে গেলো খানিকটা। কি হলো, কি হলো, চেচিয়ে উঠলাম সবাই। আবছা আলোতে উত্তর পেয়ে গেলাম। সামনের ভ্যানটাও থেমে গেছে ততক্ষনে। না থেমে উপায় নেই। যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।

চার
---
যতদুর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। এই রাস্তাটা ভেঙ্গে গিয়ে মিশেছে পঞ্চাসি খালটার সাথে। খালের পানি পার ভেঙ্গে ঢালু রাস্তাটাকে ভাসিয়ে দিয়েছে। এখন উপায়। এতদুর এসে ফিরে যাবো। আমার খুব খারাপ লাগতে শুরু করল। খালের পানি একেবারে কম নয়। দু চারজন ডুবে যাবে।

সবচেয়ে বড়ো সমস্যা আমি, মিঠূ ভাই, আর বুড়ো লোকটাকে নিয়ে। আমি তখনো সাতার শিখি নি। তখন ফোন এর যুগ নয়। ২০০০ এর কথা। তাই ওই পারে যোগাযোগ করার কথা কেউ চিন্তাই করল না। সবাই ফিরে যাওয়ার দিকেই জোর দিলো।

শেষমেশ বুড়ো লোকটাই উপায় বাতলে দিলো। তার নাকি একজন পরিচিত মাঝি আছে। কাছে কুলেই থাকে। একজন ভ্যানচালক কে নিয়ে বেরিয়ে পরলেন তিনি।

আকাশের অবস্থা তখন তেমন একটা ভাল নয়। ঘন ঘন বিজলী চমকাচ্ছে। আমরা সবাই মিলে একটা উচু ঢীবি খুজে নিলাম। বৃষ্টিতে সবকিছু এমন ভাবে ভিজেছে। বসার উপায় নেই। তার উপর ঘুতঘুতে আধার। চোখে কিছূই দেখা যায় না। হ্যারিকেনটা ছিলো বলে রক্ষা।

একটা বড়ো গাছের গুরির উপর বসলাম আমরা। আমি বসলাম সবার মাঝখানে। সবার ছুটো তো তাই । সবাই ভাবে যদি আমি ভয় পাই। আসোলেই আমার ভয় করছিল। কেমন যেন ভুতুরে লাগছিল পরিবেশ। এরা যদি আমার কাজিন না হয়ে ভুত হয় তাহলে।

আশেপাশে তাকিয়ে ঢোক গিললাম আমি। কোন জায়গা এটা। একটা বারিঘরও তো দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার ধারের যে জায়গাটায় বসেছি, চারিপাশে শুধু পানি। ম্রিদু হাওয়া বইছে। সামনের গাছটার পাতাগুলো নড়ছে। ঢেউ তুলছে কমোর পানিতে।

তাঞ্জিল ভাই চুপ ছিলো এতক্ষন। হঠাত করেই কি যে হলো শুরু করল পাগলামি। বলে আর থাকবে না। বাড়ী চলে যাবে। অনেক বুঝানো হলো তবু মানে না। এটাই ওর সভাব। একটু কিছু হলেই পাগলামি। সেদিন লুডু খেলা নিয়ে কি যে একটা মারামারি বাজীয়েছিল। বয়স্টাও তো খুব একটা বেশি নয়। আমার চেয়ে মাত্র ২ বছরের বড়ো। আজ আর রেহাই পেল না। গালে কসে একটা চড় বসিয়ে দিল সিহাব ভাই। গাছের গুরির এককোনায় বসে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্না শুরু করল সে।

একটু পরেই পুরনো আমেজটা ফিরে এল। তুহিন ভাই, মিল্টন ভাই, মিদুল ভাই, তপু ভাই আর আমি একপাশে। তন্ময় ভাই, সিহাব ভাই, মিঠু ভাই, খোকন ভাই, আর অস্রু ভাই আরেক পাশে। শুরু হলো গানের কলি। তাঞ্জিল খেলবে না। কান্না থেমেছে কিন্তু রাগ কমেনি ওর।
আমার থেকেই শুরু হলো। আমি বললাম আবার সেই একি গান...
“শ্রাবনের মেঘগুলো জরো হলো আকাশে.........”
শেষ হল ন দিয়ে. আমরা গুনলাম ১,২,৩.........। ১০ পর্যন্ত গেলেই আমরা জিতব।
“নাই টেলিফোন নাই রে পিওন......” বলে উঠলো তন্ময় ভাই।
শেষ হলো ম দিয়ে। গুনতে শুরু করল ওরা সবাই।
ইসস ম দিয়ে না কত গান। একটাও মনে পরছে না। আমার গ্রুপের সব গাধা নাকি, কেউ কিছুই বলছে নাহ।
ওদিকে জ়োরে জোরে সংখ্যা গুনছে ওরা। “৬,৭,৮..”
তপু ভাই এর উপর মেজাজ খারাপ হলো আমার। এত সুন্দর সুন্দর কথা বলে কিন্তু ম দিয়ে একটা গান জানে না। ছিছিছি। খালি পন্ডিত গিরি করে। তাঞ্জিল্টা আমাদের দলে থাকলে ঠিকি পেতো। চড় খেয়ে বেচারা বসে আছে এক কোনায়। হাসেও না কাদেও না।
আমার মনের কথা যেণো বুঝতে পারল তপু ভাই।
“মাগো, ভাবনা কেনো, আমরা তোমার .........”
প্রান ফিরে পেলাম যেনো আমি। এইতো না আমাদের তপু ভাই। আমাদের সবার পন্ডিত ভাই।

পাচ
---
আশরটা জমেছিল বেশ। কিন্তু বেশিদুর রান করা গেলো না। কারন বুড়োটা দেখি পুরোএকটা নৌকা নিয়ে সামনের ভাঙ্গা রাস্তার হাটু পানিতে উপস্থিত।
ভ্যানচালক দের বিদায় করে দেয়া হলো। হ্যারিকেনের আলো মিলিয়ে গেলো ধিরে ধিরে। নৌকাটা তেমন বড় নয়। তেরোজন একসাথে যাওয়া যাবে কি?
মাঝি বলল এটা মাছ ধরার নৌকা হলেও পাটাতন শক্ত। অসুবিধা নাই। আর এটা তো বিল, নদী না। ঢেউ থাকলে তো ভয় থাকত।

আমরা একে একে সবাই উঠলাম। বুড়োটা উঠলো সবার শেষে।

নৌকাটাতে কোনো বৈঠা নাই। লম্বা আক্রিতির একটা বাশ আছে। কম পানিতে ওটাই ভাল কাজে লাগে। মাঝি কম পানি থেকে মুতামুটী গভির পানিতে চলে এল। এতক্ষনে আমি বাতাসের প্রকপ অনুভব করলাম। এখানে প্রচুর বাতাস। উত্তর দক্ষিন সব দিক থেকেই বাতাস বইছে। বৃষ্টির পরে সাধারনতো এ ধরনেরি বাতাস বয়। আমি ডানসাইটের পাটাতনে বসেছিলাম। আমার হাত শক্ত করে ধরে ছিলো সিহাব ভাই। মাঝিটা বিরি ধরিয়েছে একটা। সহসাই নাকে আসছে উটকো গন্ধ।

আকাশটা কালো। শুধু মেঘ আর মেঘ। পানিও কালো। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। পানির ছলাত ছলাত শব্দ শুধু কানে ভেসে আচ্ছে। আম্মুর কথা মনে হল। আম্মু ছারা সারারাত ঘুমাবো কেমোনে। আমার খুব খারাপ লাগছে।

পাশে তাকিয়ে দেখি তাঞ্জিল ভাই কাদছে। একটা চড়ে এখনো কাদছে ছেলেটা। ভ্যাত-কাদুরে। হাত দিয়ে ধরতে গেলাম তাকে।

হঠাত করে বিদ্দুত চমকে উথলো আকাশে। ভিশণ আওয়াজ। মুহুরতে বিদ্দুতের ঝল্কানিতে কালো আকাশটা বিদির্নো হয়ে গেল। আমার চোখ ঝলসে গেল আকস্মিক। আমাদের পেছনে পানির ভেতর ডুবে থাকা গাছটায় আগুন জলছে। স্তব্ধ হয়ে গেল কান। দিতীয় বাজটা পরার আগেই নৌকাটা উলটে গেলো। চিতকার করেছি কতক্ষন আমি জানি না। কানটা স্তব্ধ। শুন্তে পেলাম না কিছুই। শুধূ আগুন, আলো, আর ঝপঝপ আওয়াজ। নিজের পায়ের আওয়াজ কান বন্ধ থাকলেও বুঝা যায়। হয়ত অনেক চেস্টা করেছিলাম। কিন্তু সাতার না জানা আমি তলিয়ে গেলাম দ্রুত। নাক, মুখ দিয়ে সুরসুরি লাগলো। হলূদ হলূদ ফুল দেখতে পেলাম। শেষ অক্সিজেনটুকুও বের করে দিল ফুস্ফুস।

ছয়
---
ঘুম থেকে জেগে উঠলাম আমি। ঘরিটা বলছে ২.১০। ইস নামাজটা মিস। বৃষ্টির প্রকপ তো দেখি আর নেই। আজিব কাজ কারবার হল। এত বৃষ্টি দেখলাম, কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখছি সব শেষ। ভালো, কালকের দিনটা ভাল যেয়ো। কাল আমার পরিক্ষা।

দেখতে দেখতে ২২ টা বছর পার করে দিয়েছি। সবাই বলে অনেক বড় হয়ে গেছো তুমি ছেলে। আমি বলি জিবনটা তো কেবল শুরু হলো। সবেমাত্র প্রেমে পরলাম।
আজ দিনটা কি খুব একটা বরিং কাটলো। নাহ তেমন তো নয়। নিজের ভাবনাগুলোর সাথে আড্ডা হলো জম্পেশ। সেই সাথে প্রেয়সিকে নিয়ে মিস্টি মধুর কল্পনা। নাহ একেবারে মন্দ নয়। যেনো মায়ের হাতের মাখানো ..............................
...সমাপ্ত...

মন্তব্য—লিখাটায় অসম্ভব গতি ছিল। তাই আপনাকে গতিশিল পাঠক হতে হবে। আরো অনেক সুন্দর করা যেতো। কিন্তু বরষার দিনের লিখাগুলো একটু ভুল হওয়াই বাঞ্চনিয়। এর পেছনে যথেস্টো কারন আছে।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×