রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ
রোহিঙ্গা সমস্যা একটি অতি পুরনো সমস্যা যার সমাধান কোনো ভাবেই হচ্ছে না । রোহিঙ্গাদের স্বাধীন দেশ আরাকান বর্মিজ বাহিনী দখল করে নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের ওপর শুরু হয় অমানবিক অত্যচার । বর্মা চায় রোহিঙ্গা মুসলিমরা বর্মা ত্যাগ করে বাংলাদেশে চলে আসুক । রোহিঙ্গা মুসলিমদের বৌদ্ধ প্রধান বর্মা তার নাগরিক মানতে রাজি নয় । বার্মার দাবি, ঐতিহাসিক ভাবে মুসলিমরা কখনোই বর্মার নাগরিক ছিল না । তা সত্যি, যেহেতু ঐতিহাসিক ভাবে আরাকান বর্মার অঞ্চল ছিল না তাই এই অঞ্চলের মানুষও বর্মার ছিল না ।
বর্মা জোরপূর্বক আরাকান রাজ্য দখল করে এই অঞ্চল নিজের দখলে রেখে এখানকার মানুষদেরকে তাড়িয়ে দেবে- এই হলো বৌদ্ধ বর্মিজদের আকাঙ্খা । এই জন্য বর্মা বলে থাকে রোহিঙ্গারা নাকি বাঙালি । রোহিঙ্গারা যেই হোক তাঁরা তো তাদের অঞ্চলে থাকে, বর্মাই তো জোর করে তাদের অঞ্চল দখল করেছে । এতে রোহিঙ্গাদের কি দোষ ? এখন বর্মার উচিৎ- হয় রোহিঙ্গাদেরকে নিজের নাগরিক হিসেবে সসম্মানে রাখুক নয় তাঁদের অঞ্চল আরাকানকে মুক্ত করে দিক । যেই ভাবে রোহিঙ্গা জাতিকে বর্মা শেষ করে দিতে চাইছে তা কোনো ভাবেই গ্রহন যোগ্য নয় ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন অত্যাচারিত-নিপীড়িত মানুষের জন্য লড়েছেন । এখন তাঁর কন্যা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কি করবেন ? শুধু বাংলাদেশিদের স্বার্থের কথা ভাববেন নাকি অত্যাচারের শিকার বিশ্বের অন্যান্য জাতির কথাও ভাববেন ? সেদিন তো তিনি নিজেই সংসদে বল্লেন যে, ১৯৭১-এ এরকম পরিস্থিতির শিকার আমরাও হয়েছিলাম তাই এর কষ্ট আমরা বুঝি । মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন কিন্তু এটা কোনো স্থায়ি সমাধান নয় । রোহিঙ্গারা যাতে তাদের ঘর-বাড়িতে গিয়ে নিরাপদে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থার কথাও প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে ।
বর্মার ভেতর রোহিঙ্গারা কখনোই নিরাপদে থাকতে পারবে না । তাই এবার রোহিঙ্গাদের জন্য অন্য রকম করে ভাবতে হবে । এই সমস্যার সমাধানের কিছু প্রস্তাব নিম্নে দিলাম-
১- বাংলাদেশ বর্মাকে বলতে পারে যদি তুমি রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে চাও তাহলে রোহিঙ্গাদের অঞ্চলও আমাদের কাছে হস্তান্তর করো ।
২- জাতিসংঘের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য (আরাকানকে) স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা, যেই ভাবে ইহুদীদেরর জন্য ইস্রায়েল রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছিল ঠিক সেই ভাবে । ও
৩- মুসলিম দেশ গুলোকে নিয়ে ন্যাটোর মতো একটি শক্তিশালী সামরিক জোট গড়ে তুলে বল প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে ।
তথাকথিত সেকুলার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী বর্মা সরকারের পক্ষ নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে বর্তমানে সব কিছু ধর্মের ভিত্তিতেই হচ্ছে । যেখানে বাংলাদেশ নির্যাতিত রোহিঙ্গা জানগণের পক্ষে সেখানে আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারত অত্যাচারি বর্মা সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে । তুর্কি ও ইন্দোনেশিয়া এত দূরে থেকেও শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে আমাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে । এমনকি আমাদের শত্রু পাকিস্তানের জনগণও বাংলাদেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে ।
আগে বিশ্বসমাজ অন্য রকম ছিল । ৯/১১ নিউ ইয়োর্ক আক্রমণেরে পর সব কিছু পাল্টে গেছে । জেহাদী সন্ত্রাসীরা সকল মুসলমানদেরকে অমুসলিমদের শত্রুতে পরিনত করে দিয়েছে । এখন কে ভালো কে মন্দ তা কেউ দেখে না, সাবাই মুসলমানদের শত্রু ভাবে। মুসলিম দেশ গুলোকে দুর্বল ভেবেই যত ষড়যন্ত্র হচ্ছে । তাই এর মোকাবেলা করার জন্য অবিলম্বে মুসলিম সামরিক জোট গড়ে তুলতে হবে । মুসলমানদের সুরক্ষার প্রশ্নে এর কোনো বিকল্প নেই ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫৫