somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডায়েরির এক পৃষ্ঠা এবং দুটো ছবির বয়ান

২২ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম ছবিটি রাজীব মীরের। সমুদ্রহৃদয়ের অধিকারী একজন মানুষ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সময় এ-মানুষটির সাহচর্য আমিও পেয়েছি। স্পষ্টভাষী। আমাকে খুব ভালোবাসতেন। ভালোবাসার মাত্রা এমন ছিলো যে, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পাশ দিয়ে করিডোর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখতে পেলে আমাকে চলন্ত ক্লাসেও ঢুকতে বাধ্য করতেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে আমার কবিসত্তার পরিচয় দিতে পারলে তৃপ্ত হতেন। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পেলে মহাখুশি, চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একসাথে উপস্থিত থাকতে পেরেছি। একজন চমৎকার মানুষ। লেখালেখির বেলায়, কোনোকিছু লেখার পর আমাকে দেখাতে পারলে খুব আনন্দিত হতেন। চট্টগ্রাম থাকাকালে তিনি মূলত গদ্য ও কলামই লিখতেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিযুক্ত হওয়ার পর অর্থাৎ ঢাকায় ফিরে তিনি কবিতাকর্মী হয়ে ওঠেন। পাঙক্তেয় কবি।
২১ জুলাই, ২০১৮ মধ্যরাতে ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবি রাজীব মীর জড়ান্তরিত হয়েছেন। এ-প্রিয় মানুষটিকে বেশ মনে পড়ছে; তার স্মৃতিতে আমার ডায়েরি থেকে একটা পৃষ্ঠা ও আমার একটা ছবির বয়ান তুলে ধরলাম:~
১.
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬; চট্টগ্রাম: 'খড়িমাটি'র সম্পাদক মনিরুল মনিরের বাসায় সকাল ১১টার সময় উপস্থিত থাকার কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন গোসল করতে গেলাম, মনিরুল মনির ও রাজীব মীর কল দিয়েছেন। রাজীব মীর তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। মনিরের কলের মানে বুঝলাম। রাজীব মীর কেন কল দিলেন, বুঝলাম না। রাজীব মীরকে দুটো মিসকল দিয়ে ভাত খেতে বসলাম। তিনি কল ব্যাক করলেন। জানতে পারলাম, তিনি মনিরের বাসায় অাছেন এবং আমার সাথে আড্ডা দিতে চাচ্ছেন।
মনিরের বাসায় গেলাম। রাজীব মীরের সাথে দেখা হল। বললেন, 'সবুজ, মনিরুল মনিরকে প্রশ্ন করলাম- তরুণদের মধ্যে কে কবিতা ভালো বোঝে। সে তোমার নাম বললো। একটা গদ্য লিখলাম, চোখ বুলিয়ে দেখ।' গদ্যটা (তা খড়িমাটির পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশিত) ভাসাভাসা পড়লাম। ভালই লিখলেন। তার সাথে লেখালেখির বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হল।
রাজীব মীর বললেন, "তোমাকে বই বের করার জন্যে সহযোগিতা করব বললাম, তুমি দেরি করছো কেনো?"
সাথে সাথে মনির বলল, "তাকে আমিও বলেছি, 'খড়িমাটি'র পেছনে তার একটি পাণ্ডুলিপি ছাপবো, সে রাজি হচ্ছে না।"
বললাম, সকলের হৃদ্যতাকে পুঁজি করেই একদিন কবিতার বই করব। আমি সময় নিচ্ছি স্যার। আমি চাচ্ছি, প্রথম বইটা ঋদ্ধ হোক।
মনিরের বাসায় দুপুরের আহার সেরে তিনজনই চলে আসলাম বাতিঘরে। দেখলাম, আসমা বীথি সম্পাদিত 'ঘুড়ি' বের হল। রাজীব মীর ম্যাগাজিনটা হাতে নিয়ে আমার কবিতাগুলো পড়লেন। তিনি আমার ভূয়সী প্রশংসা করলেন, আমার পরম শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন।
সন্ধ্যায় রুবেল দাশ প্রিন্সের কাছে জানতে পারলাম, স্বরূপ ভট্টাচার্য্য 'ঘুড়ি'তে তার কবিতা জুনিয়রদের কবিতার শেষে ছাপানোর কারণে আসমা বীথিকে বেশ বকলেন। এটা সত্য যে, বীথি যাদের কবিতার শেষে স্বরূপ ভট্টাচার্য্যের কবিতা ছেপেছে, তারা তার জুনিয়র। যারা 'সিনিয়র-জুনিয়র' প্রত্যয়ে আস্থাবান, এটা তাদের কাছে কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগবে।
২.
দ্বিতীয় ছবিটা আমার, তবে এতে আমার বলতে কিছু নেই! ছবিটি তুলেছেন কবি সাগর শর্মা। মাথার টুপিটা সাগর শর্মা অথবা কবি প্রান্ত পলাশ- কেউ একজন কিনে দিয়েছেন। চোখের চশমাটা সাগর শর্মার চোখ থেকে নিয়ে পরেছি। গায়ের সুয়েটারটা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তখনকার অন্যতম শিক্ষক রাজীব মীর গিফ্ট করেছেন। শার্টটা আমার ছোটভাই বিল্লাল কিনে দিয়েছেন। শরীরটা পিতা-মাতার কাছ থেকে পাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×