somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাছায় লাত্থি দিয়া ক্ষমা চাইলে লাভ কি? হরতাল দিয়া বিএনপি প্রমান করলো যে আওয়ামীলীগের চেয়ে ভালো হওয়ার যোগ্যতা তাগো নাই। (হরতাল’রে না বলি)

১৯ শে মে, ২০১০ রাত ৮:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে সেই মহান দিনগুলা ফিরা আসতাছে। এক বছর সবাইরে অবাক কইরা দিয়া শেখ হাসিনার মুখ বন্ধ আছিল, আমরা ভাবছিলাম যে তার বয়স হইছে, প্রজ্ঞা বাড়ছে, বেফাস কথাবার্তা আর বলেন না। কিন্তু বছর পার হইতে না হইতেই যেই লাউ সেই কদু। আমাগো ভোটে নির্বাচিত হইয়া সংসদে খারাইয়া খারাইয়া আমাগো কথা বাদ দিয়া যখন জিয়ার মাজার লইয়া আজাইরা পেচাল পারা শুরু করলেন, তার মুখ যে বন্ধ হওয়ার না, সেইটা তখন আমরা বুঝলাম।

পেশাগত কারণে বিএনপির বেশ কয়েকটা সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে যাইতে হইছিলো। সাংবাদিকরা জানে খোন্দকার দেলোয়ার কি বলবেন, না শুইনাই লেইখা দেয়া যায়। টাল হওয়া অবস্থায় ভ্যা ভ্যা করতে করতে সরকার’রে আবার নির্বাচন দিতে বলবেন, এইটা নিত্য দিনের ঘটনা। কিন্তু, তারপরেও বিএনপি যে হরতাল ডাকে নাই, এই কারণে আমরা তাগো উপরে কৃতজ্ঞ ছিলাম। তারা ক্ষমতাবানা মানুষ, চাইলেই হরতাল ডাকতে পারে। সুতরাং ডাকতাছেনা যখন, তাগো চরিত্র মনে হয় সংশোধিত হইতাছে। দেশের রাজনীতির ভ্যাপসা গরমেও সামান্য দক্ষিনা সুবাতাশে একটু হইলেও ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছি।

কিন্তু যেই লাউ সেই কদুই। বিএনপি হরতাল ডাকছে। ক্যান ডাকছে। কারন দর্শানো হইছে, “দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, জনজীবনে অস্থিরতা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, প্রশাসনে দলীয়করণ, বিচারব্যবস্থায় সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন সমস্যা”। এখন, আমি আম বাঙাল, আমার মতো অনেক আম বাঙালই এই প্রশ্নটা করতেই পারেন, “এই হরতালের মাধ্যমে এইসব সমস্যার একটাও কি এক ফোটা নিরসন হবে”। যদি কেউ আমারে বুঝাইতে পারেন যে হবে, তাইলে ২৭ জুন আমি নিজে রাস্তায় নাইমা পিকেটিং করুম, কসম। বাস্তবতা হইলো বিএনপিও জানে যে হবে না।

তাইলে ক্যান এই হরতাল? ব্রিটিশ আমলে মহাত্মা গান্ধি প্রথমে সাউথ আফ্রিকায় হরতালের প্রচলন করছেন। তারপর ভারতিয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে হরতালের ভূমিকা ছিলো জোরদার। এই কারণে হরতালের একসময় একটা বিপ্লবী মাহাত্ম ছিল। এই বিপ্লবী মাহাত্ম বজায় ছিল পাকিস্তানী স্বৈরশাসক বিরোধী আন্দোলনে এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। বিপ্লবী হরতালের এই মাহাত্ম নষ্ট করছে শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ, গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে সিরিজ হরতাল দিয়া। আর বিএনপি দলটার রাজনৈতিক বোধবুদ্ধি নাই, সে আওয়ামীলীগ যা করে তারই অনুকরণ করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই বছরের লাইগা মসনদে বসার আগে ১৫ বছর এই হরতালে বাংলাদেশের জনগণের যেই কয় হাজার কোটি টাকা নষ্ট হইছে সেই টাকার হিসাব দিতে কি আওয়ামীলীগ আর বিএনপি কবর থাইকা শেখ মুজিব আর জিয়াউর রহমানরে তুইলা আইনা দেওয়াইতে পারবো, সবকিছুতে তো এগোরে কবর থেইকা তুইলা আইনাই জনগণের লগে প্রতারণা করে এই দুইটা দল।
আসেন, আজকে বিএনপির ডাকা হরতালের মাযেজা বোঝার চেষ্টা করি। যেহেতু যেইসব সমস্যার অযুহাতে হরতাল ডাকা হয় সেইগুলা সমাধানের হরতাল কোন কাজেই আসেনা তাইলে এরশাদ পতনের পর থাইকা হরতাল কি কামে লাগছে তা চিন্তা কইরা দেখি। হরতালে দুইটা মূল কাম হয়,

১। বাহুবল প্রদর্শনঃ ব্যাপক জমায়েত আর ভাঙচুরের মাধ্যমে এবং সরকারের বিরুদ্ধে গিয়া প্রতিনিয়ত কর্মকান্ড বন্ধ কইরা সরকারের চেয়ে বেশি শক্তি প্রদর্শন করা হয়।
২। আন্দোলনের ফিল্ড তৈরি করাঃ হরতালে ক্যাডার-পুলিশ মারামারি হয়। পুলিশি গ্রেফতার হয়। কিছু লোক আহত হয়, আন্দোলনের ইস্যু বাড়ে। আর যদি আল্লা আল্লা কইরা একটা লাস পরে, তাইলে তো কথাই নাই। খুনী সরকারের পতনের জোরদার আন্দোলনের সুযোগ।
৩। মরাল বুস্টঃ নিজের কর্মীগো মধ্যে সাংগঠনিক ঐক্যের অভাব এবং হতাশা দেখা দিলে হরতাল দিয়া চাঙ্গা করা যায়।


বিএনপির এইবারের হরতালে নিঃসন্দেহে ৩ নম্বর কারনটা মূখ্য, ১ এবং ২ গৌন। বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা এই মুহুর্তে খুব ভালো না এইটা সবাই জানে। কর্মিগো মনোবল আগের মতো নাই, একটা জোরালো ঝাকুনি দিয়া মরাল ঠিক করা দরকার। হরতাল এই ক্ষেত্রে ভালো ঔষধ। এক মাসেরও বেশি সময় তারা এমনি এমনি নেয় নাই, কর্মী বাহিনী গুছাইতে হইবো। সেই সাথে ১ নম্বরটা ঠিকঠাক মতো করতে পারলে, জনগণ আমাগো ডাকে সারা দিছে এইধরণের ডায়লগও দেয়া যায় আবার বাহুবল দেখানোও হয়। আর ৩ নম্বর ভাগ্য ভালো হইলে যদি ঠিকঠাক মত হইয়া যায় তাইলে তো কথাই নাই।

২৭ জুনের হরতাল যেই সব কারন দেখাইয়া ডাকা হইছে ঐসব ইস্যু গুলার যদি সমাধান হইতো তাইলে আমাগো জনগণেরই লাভ হইতো। কিন্ত সেইতা হবে না। লাভ যদি কিছু হয় তো বিএনপি নামক পার্টির হবে। আমাগো লস হইবো ৫০০ কোটি টাকা। শালার ৫০০ টাকা পকেটে থাকলে এই দেশের কত মানুষ নিজের ঘরের মাইনসেরে ভালো মতো বাজার কইরা খাওয়াইতে পারে। সেইখানে ৫০০ কোটি টাকা নষ্ট করবো, আবার চায় আগাম ক্ষমা। বাঙালির পাছা লাত্থি খাইতে খাইতে শক্ত হইয়া গেছে, লাত্থি দিয়া মাপ চাইছে, হেতেই সবাই খুসি।

বিএনপি হরতাল ডাইকা প্রমান করলো তারা আগে যা ছিলো তাই আছে, আওয়ামীলীগের চেয়ে ভালো হওয়ার যোগ্যতা তাগো নাই। যারা এইক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের হরতালের উদাহরণ দিবো, তাগোরে কমু যান, ছাত্রলীগের মতো কোপাকুপি কইরা আসেন। হ্যারা গু খাইলে আপনেও গু খান।

হরতালে লাভ নাই। হরতালরে তাই না বলি। ব্লগে বেশিরভাগই আমরা নতুন প্রজন্ম। আসেন আওয়ামীলীগ, বিএনপি, বাম (জাশি বাদে, জাশি আইলে উষ্টা) নির্বিশেষে সবাই হরতালরে না বলি। সরকার এবং বিরোধী দলরে দেখাই আমরা নতুন প্রজন্ম হরতালের পক্ষে নাই।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১০ রাত ৮:৩৫
৫৭টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×