somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নীল অভ্র
কোনো কিছুর সাথেই খাপ খাওয়াতে না পারা একজন। খানিকটা বোহেমিয়ান তবে ঐতিহ্যর প্রতি ভীষণ অনুরাগী। নিজেকে প্রায়শই মনে হয় ভুল জায়গায় ভুল মানুষ। এলোমেলো আর প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক চিন্তা ভাবনা নিয়েই যাপিত জীবন।

ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে কিছু অপ্রিয় কথাঃ

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ দেশজুড়ে মহা উৎসাহে পালিত হয়েছে বসন্ত দিবস।
পহেলা ফাল্গুনে সবাই বেশ সাজুগুজু করে বার হয়েছে উৎসবে মিশে যেতে।
এই পর্বের এখানেই ইতি। চলুন এবার অন্য গল্পে যাই।
জ্বী, কানে তুলো গুজুন, চোখে টিনের চশমা পরে নিন। কারণ? জ্বী বলছি।
আগামিকাল (ফেব্রু ১৪) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস!!
এই দিবসে প্রেমিক/প্রেমিকার (!?) জন্যে দামি গিফট উপহার দেয়া, সারাবেলা হাওয়ায় হাওয়ায় ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি সামাজিক এবং অসামাজিক কর্মকান্ডগুলো হাল ফ্যাশনের সূচক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমা বিশ্বের কারো উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত এই অতি বাণিজ্যিক চিন্তার সাথে আমাদের দেশের অসংখ্য তরুণের আলুর মত মিশে যাওয়া ইদানিং বেশ চমকপ্রদ।
এদেশে এসব আমদানি হবার আগে কেউ কাউকে ভালোবাসেনি, কিংবা, প্রকৃত ভালোবাসার মর্ম উপলব্ধি করতে পারেনি তেমন কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না।
বরং, সে কালের প্রেমগুলোর বাঁধন আজকের হাজার খানা প্রেমের মিলিত বাঁধনের চাইতে অধিক মজবুত ছিলো। কমিটমেন্ট ছিলো মনে রাখার মত।
কিন্তু, আজকের আমার মত অজস্র তরুনের বেহায়াপনায় দূষিত ছিলো না ওসব হৃদয়।
শিষ্টাচার ছিলো, ছিলো নিখাদ আবেগ। প্রত্যেকটা কথা, চিঠি কিংবা একটি লাল গোলাপে মিশে ছিলো গভীর ভালোবাসা। একে অন্যের প্রতি ছিলো তুলনাহীন সমর্পিত।
এবং, যখন, সব শেষে বিয়ের পর্ব আসতো, দেখা যেতো, খুব কৌশল করে সব ম্যানেজ করে বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। অনেক সময় দুই পরিবারের কেউ জানতেই পারতো না যে, এটা রোমান্টিক বিয়ে।
আর, আজ, ছেলে মেয়ে তিন দিন পরেই রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে, সপ্তাহ না ঘুরতেই বাসায় নিয়ে এসে পরিবারের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়, আর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই কক্টেইল পার্টি ছোঁড়ে ‘পটিয়ে’ বিছানায় নিয়ে যেতে পেরেছে সেই সাফল্য উদযাপনের।
এতকিছুর পরেও ঐ দুজনের বিয়ে হবে বা রিলেশন স্থায়ী হবে তার গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি কোনোটাই নেই। বাসা বদল হলে, ইশকুল/কলেজ/ভার্সিটি বদল হলে, এমনকি স্যারের বাসার প্রাইভেট বদলালেও রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসে থাকা প্রোফাইলের বদল ঘটে, এমনো আছে।
কলেজ, ভার্সিটি বা বিভিন্ন পর্যটন এলাকা হাত ধরে নির্লজ্জের মত ঘোরাঘুরি থেকে শুরু করে আরো অনেক রকম নোংরা এবং অশ্লীল কাজে পরিবেশ দূষিত করতে আজকাল জোড়ার কমতি পড়ে না।
ভ্যা. ডে-তে ফার্মেসি এবং আবাসিক বোর্ডিঙ্গের ব্যবসা তুঙ্গে থাকে। এসব নিয়ে কেউ কিছু বলতে গেলেই ক্ষ্যাত, ব্যাকডেটেড, অনাধুনিক, সংকীর্ণমনা ইত্যাদি নানা রকম কথা শুনতে হয়।
হালের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে এসব কর্মকান্ডের পরিণতি যে কোন আস্তাকুঁড়েতে হবে, সেটা এসবে ডুবে মাতাল হয়ে যাওয়ারা নিজেও জানে না। এরা জীবনে সুখের দেখাও সহজে পায় না। কারণ, এদের বেশিরভাগই তো নিজের গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড কে বিয়ে করার সুযোগ পায় না বা করতে চায় না। অনেকে আবার প্রতিযোগীতা করে সম্পর্ক গড়ে তোলে বন্ধু মহলে সবচেয়ে ‘বেশি পটানো’ সফল প্রেমিক/প্রেমিকা হতে।
এসব জীবনে সুখ আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ, সে আর না বললেও চলছে। বলার কথা যেসব অভিভাবকদের, তারা নিজেদের সন্তানের সীমাহীন স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে এসব কার্যকলাপ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। সন্তান যখন আজীবন গুমরে কাঁদে, আর প্রায়শ্চিত্ত করার পথ খুঁজে খুঁজে দিশেহারা হয়ে আশ্রয় নেয় আরো ভয়ঙ্কর কোনো কিছুর, তখন আর আফসোসের মূল্য থাকে না। থাকে না ফিরে আসার কোনো পথ।
তখন, অপেক্ষা মৃত্যুর মাধ্যমে সব থেকে মুক্তি পাওয়ার।
এখন, পছন্দ আপনার, হাল ফ্যাশনে গা ভাসাবেন নাকি বাঁচবেন মানুষ হয়ে।
নিরাপদ ভালোবাসার শুভ কামনা।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×