অব্দা
অব্দা ছােট্ট একটি খাল। ভারতের অব্দা কােম্পানি অনেক দিন আগে তাকে আবিষ্কার করেছিল। এর নাম নেই, সৌন্দর্য নেই, স্রোত নেই, বিলাস নেই, কােন অহংকারও নেই। আপন মনে নীরবে চলছে উত্তর হতে দক্ষিণে। আল মাহমুদের তিতাস অথবা মাইকেলের কপোতাক্ষের মত সুপরিচিত অথবা সুশ্রী নয়। মানিক বন্দোপাধ্যয়ের পদ্মার মত বিশাল নয়। তবু, অব্দা আমার সুখ সৌন্দর্য, স্মৃতি আর স্বপ্ন। অব্দার কাদা আমার হাসির কােমনীয়তা। ওর জল আমার সুখ-দুঃখ-বেদনার অশ্রু অথবা মায়ের স্তন, প্রিয়ার বুকের মধু। ওর তীর আমার স্বপ্ন চােখের ছবি, অনন্তকালের প্রেরণা, দুষ্টু মেয়ের চপল চলার পথ।
অব্দা আমার নববধূর প্রথম হাসি, গােপন প্রিয়ার নিভৃত চুম্বন, মহামিলনের সুখানুভূতি, জীবনের সাথী মরণের সঙ্গীত। অব্দাকে আমি স্পর্শ করি বাসর বধূর মধু শিক্ত শীতল অঙ্গের মত, স্তন পানের শিশুর মত অথবা বােনের রাখি বাঁধা আখির উচ্ছলতার মত। অব্দার অশ্লীলতা নেই কিন্তু আমি ওর জল ঘুলিয়ে কেড়েছি প্রিয়ার পাগল করা সুখানুভূতি। অব্দার অসীম প্রবাহ নেই তবু, আমি কেড়েছি স্নেহের শীতলতম অনুভূতি। অব্দা আমার অনাদীকালের সঙ্গী, চিরকালের প্রিয়সী, পরকালের প্রার্থণা।
আমি কবি নই। কিন্তু অব্দার চকিত চাইনি আমায় কাছে ডাকে কবি হতে বলে। তার চলার পথ আমাকে দেয় শ্রেষ্ঠতম ছন্দের নিপুন গাঁথনী।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৩