somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধূসর পান্ডুলিপি

২০ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধূসর পান্ডুলিপি

আজকের দিনটা আমার
ইচ্ছের দাসত্ব করার দিন।
আমার চিন্তা-চেতনা-হৃদয়ের অনুভব,
আনন্দ বিলাসী মন,
ফুলের সাথে সখ্যতা করার ক্ষণ,
সবাইকে নিয়ে ভাল থাকার আয়োজন
সবকিছু চলে গেছে ইচ্ছের দখলে।
তাই আজ আমার ইচ্ছের কাছে নতি স্বীকার করার দিন।

মন আজ আামর দস্যি মেয়ে
ইচ্ছেমতো নেচে নেচে চলছে ধেয়ে
শহর-রাজপথ-অবিন্যস্ত ভবন,
ইটের পর ইট গাঁথা প্রাণহীন
নগর জীবনের কাঠিন্যতাকে পেছনে ফেলে।
আজ আমি ওর নিকট সম্পূর্ণরূপে সমর্পিত।
চলেছি ওর পিছু পিছু
যেমন চলেছে সে।

ওর গতি আজ আকাশের মতো বাঁধাহীন।
ওর চলার ছন্দে বিধূর আনন্দে
খলখলিয়ে উঠছে আমার স্মৃতিময় দিন।
অবশেষে এখানে, কাজি পাড়ার স্কুলে
থামলো যখন সে এসে,
আমি চমকিত হলাম
হারিয়ে গেলাম সেই দিনগুলোতে।
ভুলে গেলাম কে আমি এখানে ?

মনে আমার সুখ সুখ ভাল লাগা
বুকের ভিতর স্মৃতির পাপিয়ার ডানা ঝাপটানোর খেলা।
আমি খুঁজে পেলাম নিজকে
কাজি পাড়ার এই স্কুলমাঠে।
ছাপা কাপড়ের ফ্রক পরা,
রঙিন ফিতায় চুল বাঁধা,
বই-খাতা-কলম হাতে
আমি সেই মেয়েটি এই স্কুল মাঠে।

তখনও ঘন্টা পড়েনি
মাঠজুড়ে হৈ চৈ
খেলার সাথীরা গেল কৈ।
গেল্লাছুট, দাড়িয়াবান্দা আর কুতকুত এর জমাট আড্ডা
হঠাৎ ভেঙে যায়।
খান খান বেজে উঠে ক্লাসের ঘন্টা
পড়িমড়ি ছুটি মাঠ ছেড়ে
শূন্য বেঞ্চগুলো মুহূর্তেই ভরে উঠে কেলাহলে।

স্যার আসেন ক্লাসে
রোল কলের খাতা হাতে।
এই চুপ, সব চুপ, যেন শ্বাসটি না পড়ে।
স্যার মন দেন খাতায়
রোল নম্বর এক, --দুই, --তিন, --চার
হাজির স্যার।
আহা ! কি মধুর সেই ধ্বনি ! কানে বাজে আজও।
এই বুঝি স্যার ডাকলেন আবারও ।

তারপর ছন্দ-সুরের সেই কবিতা
“আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা।”
এরপর তারেক স্যার, অংকের ক্লাস।
দুই একে দুই, দুই দু’গুণে চার
স্যারের সাথে কোরাস মিলিয়ে
পড়তাম আমরা বার বার।
হৃদয়ের গভীর তলে
সেই পড়ার সুর আজও বাজে।

কিন্তু মন যে উন্মন
কখন আসবে ছুটির ক্ষণ
কখন বাজবে শেষ ঘন্টা।
হুড়মুড় ক্লাস ছেড়ে
বাড়ির পাণে ছুটি পথে
মা দিতেন আঁচলে মুখ মুছে।
সেই সুখের পরশ আজও লেগে আছে।
মন চায় আবার ফিরে পেতে।

লোলুপ মনে সেই সুখের পরশ নিতে
ধরতে চাইলাম মায়ের আঁচলখানি।
হাত বাড়িয়ে পেলাম না তা
পেলাম শুধু মুখর শূন্যতা।
ফিরে এলাম ইচ্ছের কাছে
দেখি, ব্যস্ত সে পান্ডুলিপির আয়োজনে।

বলে, এই তোমার আজকের উপহার।
অবাক আমি ! বললাম, কেন ? তা হবে কেন ?
এই তো একটু আগে
জীবনের সোনালী সূর্যোদয়ের কাছে
ঘুরে এলাম মধুময় সময়ের হাত ধরে।
ইচ্ছে বলে, সে শুধুই স্মৃতি।
এর পরের সময়টুকু এই নাও
সে এক ধূসর পান্ডুলিপি।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:১২
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×