somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঘাইছড়ির সূর্যোদয়

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লোহার গেটের কাছে দাঁড়াতেই ভেতর থেকে ভেসে এলো এক বয়ষ্ক মানুষের ভৎর্সনা। কি যেন বলে ধমকালেন! শিকগুলোর ফাকা দিয়ে যতদূর চোখ গেলো, বিস্তর ফাকা মাঠ। শেষ প্রান্তে একটি দ্বিতল ভবন। এল প্যাটানের। উঁচু ও ভারি দেয়ালে বেষ্টিত চারপাশ। যেন একটি দূর্গ দাঁড়িয়ে আছে। ডান পাশে প্যাগোডা । মেইন গেট থেকে লম্বা কংক্রিটের রাস্তা চলে গেছে শেষ মাথায়। রাতের নীরবতায় আধো আলো, আধো আধার সৃষ্টি করেছে গা ছম ছম করা ভয় লাগা পরিবেশ । ছেঁড়া মেঘ সরে সরে যেতেই চাঁদের আলোয় কখনও কখনও পরিস্কার হয়ে উঠছে ভেতরটা। কাউকে দেখা গেলো না । কিন্তু কয়েক সেকেন্ড আগেও একজন বয়স্ক মানুষের কন্ঠস্বর বেজেছে কানে।

জেলখানার ফটকের মত উঁচু গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন মিষ্টার টমাস। আস্তে করে ধাক্কাও দিলেন লোহার গেটে। কোন কাজ হলো না। জোর লাগিয়ে ফের ধাক্কা দিতেই কিছুটা খুল্লো বটে, তবে এমন এক গোঙানির শব্দ করে উঠলো, যা শেষ রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আচমকা খুলে যাবে ঘুমন্ত মানুষের চোখ। বাতাসে সেই শব্দের তরঙ্গিত রুপ শিশুর গোঙানি হয়ে ফিরে এলো পরক্ষণে। কেমন জানি করে উঠলো টমাসের বুকের ভেতর। নিজেকে প্রশ্ন করেন, এখানে কেনো এলাম ?
হাটতে হাটতে রাস্তার ঢালের কাছে আসতেই এক অদৃশ্য মায়া যেন পিচঢালা পথ থেকে ইট বিছানো একফালি সলিং রাস্তার দিকে টেনে ধরলো। তারপর, কুর্নিশ করা ভঙ্গিমায় নুয়ে থাকা দুপাশের মাঝারি আকৃতির গাছগুলো দেখতে দেখতে নিজের অজান্তেই তিনি পৌছে গেলেন উঁচু গেটের সামনে, এখন যেখানে দাঁড়িয়ে।

পূব আকাশে ছড়িয়ে পড়া কিরণ চোখে লাগতেই ঘোর কাটলো টমাসের। খেয়াল করলেন, দূরে ভবনটির গায়ে লেখা : অনাথ আশ্রম , বাঘাইছড়ি , রাঙামাটি । তারমানে দূর্গোটি হচ্ছে একটি আশ্রম । ভেতরের চারপাশে চোখ ঘুরিয়ে নিরেট লোহার গেটের অল্প একটু ফাকা জায়গা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লেন তিনি । ঠিক তখনই আবার খেকিয়ে উঠলেন সেই বুড়ো। ছোট্ট খুপড়ি ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মারলেন এক নজর । মুহূর্তের মধ্যে চলেও এলেন বাইরে । হাতে লম্বা লাঠি । আশ্রমের ভেতরের কংক্রিটের রাস্তায় সেটি দিয়ে আঘাত করে চলেছেন থেকে থেকে । কি বলছেন, না বলছেন, এতদূর থেকে বুঝতে পারছেন না টমাস । রাস্তা ধরে তিনি কি এগিয়ে যাবেন সামনে, নাকি ফিরে যাবেন । বুড়োর মতিগতি সুবিধাজনক ঠেকছে না। মাথাভরা উস্কোখুস্কো চুল ও লম্বা দাড়িতে ঢাকা পড়া চেহারা দেখে অনুমান করা যায়, মানুষটির মাথায় সমস্যা আছে।

কিন্তু কি কারণে এই সাত সকালে চেতেছেন বয়স্ক মানুষটি? সেটি কি আগুন্তক টমাসের কারণে, না অন্যকিছু,বোধগম্য নয়। তবে বডি ল্যাংগুয়েজ বলছে, বৃদ্ধ লোকটির আক্রমনাত্নক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বেশ। এই অপরচিত জায়গায় হুট করে কোনদিকে বা দৌড় দেয়া যায়, ভাবলেন টমাস । ভয়ও পাচ্ছেন । আবার পুলোকিত হচ্ছেন এই ভেবে যে, পাগলা টাইপের বৃদ্ধ লোকটি হতে পারেন তার কোন গল্পের রসদ। অথবা হটকেক হয়ে যাওয়া চরিত্র।

টমাস হালদার একজন জনপ্রিয় জার্মান লেখক। গল্পের নেশাই চড়ে বেড়ান গোটা দুনিয়া। বিশ্বের অসংখ্য দেশে অনুদিত হয়েছে তাঁর সাহিত্যকর্ম। পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। মূলত বাস্তব চরিত্রগুলো তুলে ধরতে নিজেই মিশে যান সেইসব চরিত্রর সাথে। মানুষের ভেতরের মানুষটির সাথে।সেই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ আসা। একটি ভাল গল্পের রসদ যোগাড় করা। ইতিমধ্যে কাটিয়ে ফেলেছেন পাঁচ মাস। সামনের মাসে ফিরতে হবে দেশে । এখনও মেলেনি গল্প লেখার মত চরিত্রের খোঁজ। অথচ এখানকার মানুষের জীবনে গল্পের শেষ নেই। জীবন জীবিকায় রয়েছে হরেক রকমের গল্প। কোথাও হাসি-আনন্দে ভরপুর, কোথাও আবার সীমাহীন বেদনামাখা। কোথাও আবার সবকিছু থাকার পরও একফালি অপূর্ণতা গ্রাস করেছে সংসার জীবনের সব সুখ। কোথাও আবার হাজারও অভাব-অনটনের মধ্যে জীবন হয়েছে প্রশান্তিময়। সুখের স্বর্গ।

টমাস খেয়াল করলেন, বয়স্ক লোকটি এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন। যতটুকু গতি নিয়ে বের হয়েছিলেন খুপড়ি ঘর থেকে, সেই তুলনায় এখন হাটছেন ধীর পায়ে। এতেই কিছুটা স্বস্তি পেলেন টমাস। বুড়োটির পায়ের ধাপগুলো বহন করছে মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের ইঙ্গিত। তিনিও এগোতে থাকলেন। মনে মনে হিসাব কষতে লাগলেন, মূল ভবন থেকে মেইন গেটের দূরত্ব প্রায় দুশো গজ। বৃদ্ধ লোকটির হাটার গতি একই ধারায় অব্যাহত থাকলে বাকি পথটুকু আসতে কম করে হলেও সময় লাগবে তিন মিনিট। মাঝামাঝি স্থানে পৌছাতে যাবে আরও দেড় মিনিট। এতে কিছুটা ক্লান্ত হবেন। তারপরও যদি আক্রমণ করেই বসেন, এক দৌড়ে আশ্রমের ভেতরে চলে যেতে, তেমন কোন অসুবিধা যে হবে না, তা ভেবেই নিলেন টমাস। আর যাই হোক, দৌড় প্রতিযোগিতায় বয়স্ক মানুষটি হেরে যাবেন, তা নিশ্চিত ! নিজের বয়স এখন চল্লিশ ছুঁতে দুই বাকি। তারপরও বাড়তি সতর্কতা হিসাবে রাস্তার দুপাশের সবুজ ঘাসে চোখ বোলাতে থাকলেন টমাস। না, কোথাও কোন ইটের টুকরো, ঢেলা বা ভারি বস্তু পড়ে নেই, যা হাতে নিয়ে আকস্মিক তার দিকে ছুড়তে পারেন বুড়ো মানুষটি।

হাটতে হাটতে দৃষ্টি আরও প্রশস্ত করলেন টমাস। সবেমাত্র সকাল হতে শুরু করেছে আশ্রমে। ঘুম থেকে সদ্য জেগে ওঠা কয়েকজন কিশোর আড়ামোড়া ভাঙছে দাঁড়িয়ে বারান্দায়। সোনালি আভায় চিকচিক করছে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির। সেখানে পা বুলিয়ে চলেছে কেউ কেউ। একটু আগেও গেটের কাছে দাঁড়িয়ে মনের ভেতর যে ‘ভয় ভয়’ ব্যাপারটা কাজ করছিল, তা কাটতে শুরু করেছে। খেয়াল করলেন, বেড়েও গেছে হাটার গতি। দৃষ্টিশক্তি থেকে পাওয়া সংকেত অনুযায়ী মস্তিস্কের সেরেব্রাল কর্টেক্স কাজের সূত্রপাত ঘটালে পায়ের পেশীতে আদেশমূলক সাড়া পৌছে দিয়েছে মোটর নিউরন। পজেটিভ সিগন্যালে দুই পা দ্রুত চলতে শুরু করেছে। ‘অ্যাডরেনালিন’ নামক যে হরমোন কিছু সময় আগে গায়ের লোম খাড়া করে দিয়েছিল,তা এখন নিসৃত হচ্ছে না। হিউম্যান মেশিনের সিস্টেমেটিক নানা বিষয়ে যৎ সামান্য লেখাপড়া টমাসের করতে হয়েছে কেবলই গল্প লেখার স্বার্থে। লেখালেখির পূর্বশর্ত যে ‘পড়াশোন, তা লেখালেখি চর্চার অনেক আগে থেকেই অনুশীলন করে আসছেন।

কিছুটা বিরতি দিয়ে আবার হাটতে লাগলেন টমাস। তার চোখ একটি ‘মনোঘরে’র দিকে আটকে গেলো। আশ্রমের নিরাপত্তার প্রয়োজনে প্রাচীন ভবনের পেছনে নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে কাউকে দেখা গেলো না। হয়তো বা রাতে কেউ ছিল।
রাঙামাটি আসার পথে পাহাড়ের ভাজে ভাজে ছোট ছোট ঘর চোখে পড়লে টমাস জানতে পারেন, জুম চাষের জমিতে আবাদ পাহারা দেয়ার জন্য সাধারণত অস্থায়ী ভাবে এধরণের ঘর তৈরি করা হয়, যা মাচা বা বাশের তৈরি কুড়ে ঘর হিসাবে পরিচিত। সেদিক থেকে চোখে ফেরাতেই টমাস খেয়াল করলেন, হাটা থামিয়ে দাড়িয়ে গেছেন বৃদ্ধ লোকটি। তবে দাড়িয়েছেন পথ আগলে। অনুমান করা যাই তার বয়স সত্তুরের কাছাকাছি। অল্পতেই হাপিয়ে গেছেন। কিছুটা অযত্নের ছাপ রয়েছে তার শরীরে। টমাস তার সামনে পৌছানোর পর শুনতে পেলেন বয়স্ক লোকটি বলছেন, ‘বাচ্চা লইতে আইছিস, বাচ্চা।
বাচ্চা লইতে আইছিস, বাচ্চা।’

এমন কথা কেনো বলছেন উনি ? অবিরাম জিজ্ঞাসা, ‘বাচ্চা লইতে আইছিস।’

তার বকবকানিতে কিছুটা বিরক্ত হয়ে টমাস জানতে চায়লেন, বাচ্চা নিতে মানে? আপনার কথা বুঝতে পারছি না।

বৃদ্ধটি আবারও বললেন ‘বাচ্চা লইতে আইছিস, বাচ্চা!’

একটু বিরক্ত ভাব করে তাকালেন টমাস। তখনই ব্যাঙ্গাত্নক হাসি দিলেন বৃদ্ধ। তারপর নিজের চেহারা আরও বিভৎস্য করে যা বললেন, তা পুরোপুরি বোঝা গেলো না। পুরো বাক্যের ভেতরে একটি শব্দ সম্পূর্ণ অপরিচিত লেগেছে, যেটির অর্থ জানা নেই বা কাছাকাছি কোন শব্দ মেলাতে পারলেন না তিনি । যদিও টমাসের বাংলা বলার চর্চা নেই। তবে বাংলা ভাষার সাথে পরিচয় অবশ্য শৈশবে। পারিবারিক গন্ডিতে চর্চার সুযোগ থাকলেও খুব বেশি হয়ে ওঠেনি।

বুড়ো লোকটির পুরো বাক্যটি আবারও স্মরণ করার চেষ্টা করলেন টমাস। মনেও আছে। তিনি বলেছিলেন, বাচ্চা নেয়ার শখ ঢুকিয়ে দেবেন, এমন একটা কিছু। কিন্তু যে জিনিসের ভেতরে ‘শখ’ ঢুকাবেন বললেন, সেই "শব্দ" টি তা বুঝতে না পেরে চুপ থাকলেন। তবে খেয়াল করলেন, ইতিমধ্যে কয়েকজন কিশোর তার পাশে দাড়িয়ে খিল খিল করে হাসছে।

টমাস জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা হাসছো কেনো ?
ওরা কোন উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো, আপনি কি অফিস রুম খুঁজছেন ?
না, আমি কোন কিছু খুঁজছি না।
তাহলে কোথায় যাবেন ?
এমনি ঘুরতে এসেছি। দেখতে। তোমাদের এখানে কেউ ঘুরতে আসে না ?
না। খুব গম্ভির ভাবে উত্তর দিলো একটি ছেলে। পাশ থেকে আরও একজন বললো, এখানে বিদেশী লোকজন আসে....এটুকু বলে থেমে গেলো । তখন টমাস প্রশ্ন করেন, থামলে কেনো ?

কেউ উত্তর দেয় না। পরে একটি ছেলে নিজে থেকে টমাসের কাছে জানতে চায়লো, আপনি কি কাউকে নিতে এসেছেন ?

টমাস চুপ থাকে। হঠাৎ এক কিশোর বলে উঠলো, নিতে চায়লে, নিতে পারেন। আমি যাবো।

তখন অপর এক কিশোর ভিড় ঠেলে সামনে এসে বললো, এই তুই না। আমি যাবো। আপনি আমাকে নেন। আমার অনেক বুদ্ধি। শরীরে শক্তিও আছে অনেক। আমি আপনার ছেলে হবো, চাকর হবো, যা বলবেন তাই। সেখানে আরও কয়েকটা বাচ্চা ছুটে এসে বড় করলো জটলা। সবাই উৎসুক।

ওদের শোরগোলে দিনের শুরুতেই জেগে উঠেছে আশ্রম । বৃদ্ধ লোকটি আগের জায়গায় দাড়িয়ে আছেন । চাপা কৌতুহল তার চাহনিতে । টমাস পেছনে ফিরে এক নজর দেখলেন । আবার এগিয়ে চললেন । তাকে ঘিরে এগিয়ে চলেছে বাচ্চারা । কংক্রিটের রাস্তা যেখানে গিয়ে শেষ হয়েছে, সেই প্রাচীন ভবনটির সামনে পৌছানোর পর ওরা প্রবেশ করলো ভেতরের একটি রুমে । গম গম করছে হলরুমটি । সবাই কথা বলে চলেছে । কেউ শুনছে না। টমাস শান্ত হতে বললেন। কেউ কেউ চুপ করলেও আওয়াজ কমেনি খুব একটা। কিন্তু হঠাৎ থেমে গেলো। পিনপতন নীরবতা। কোন নড়াচড়া নেই। কোন শব্দ নেই। সবার দৃষ্টি দরজায়। কিছুটা নত করা ওদের মাথা। সেখানে দন্ডায়মান একজন মানুষ। পরনে তার কমলা রঙের ফতুয়া ও কালো প্যান্ট। মাথা ভর্তি সাদা চুল।

কোন কথা বললেন না লোকটি। তবে স্পষ্ট তার চাহনির ভাষা। তাকে দেখে টমাসের মনে হলো রাগ দমিয়ে রাখতে গিয়ে স্ফিত হয়ে গেছে তার চিবুকের দুপাশ। চোখে মুখে ফুটে উঠেছে এক ধরণের কঠিন ভাব। ছেলেগুলো চুপচাপ বেরিয়ে যেতে লাগলো। এক সময় শব্দহীন হয়ে পড়লো গোটা রুম। এগিয়ে এলেন তিনি। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বললেন,
‘আই এ্যাম উসিরি ভান্তে। সুপারেন্টেন অব দ্যা অরফানেজ। এ্যান্ড ইউ ?’
টমাস হালদার। ফ্রম জার্মানি।
বাট, ওয়াচিং ইওর ফেইস, ইট সিম টু মি ইউ আর বেঙ্গলি ম্যান।
ইয়েস, আমি বাঙালি। বাংলা জানি। আমার বাবা ভারতীয় বাঙালি, আর মা হচ্ছেন জার্মান ক্যাথলিক।
‘কি করা হয় জার্মানিতে ?’ সুপারেন্টেন সাহেব প্রশ্ন করলেন।
লেখালেখি।
ও, বুঝেছি। জার্নালিষ্ট ?
না। লেখক। গল্প লেখার চর্চা করি।
কিন্তু এই অনাথ আশ্রমে কি মনে করে !
ঘুরতে।
তাই বলে সক্কাল বেলা!

টমাস জবাব দিলো, ভোরে সূর্য ওঠা দেখবো বলেই বের হয়েছিলাম। তারপর চলে এলাম। আচ্ছা, একটি বিষয় জানতে খুব কৌতুহল হচ্ছে। ঢোকার সময় বয়স্ক একজন মানুষের সাথে আমার দেখা হয়েছে। একটি লাঠিও ছিল তার হাতে। কে উনি?

ও, বুঝেছি। বুড়োটার সাথে আপনার দেখা হয়ে গেছে। উনি আপনাকে আক্রমন করেননি তো ?
না। কিছু বলেননি।

উনি আমাদের আশ্রমের গল্পের শিক্ষক । নাম অনিমেষ ব্যানার্জি। বাচ্চাদের দ্রতপাঠ পড়ান। বাংলা রেপিড বই। নিজেও গল্প লেখেন খুব ভাল। মাথায় একটু গন্ডগোল আছে । তবে এমন কিছু না। চলুন, সামনের দিকে যাই। সাত সকালে যখন চলেই এসেছেন আশ্রমে, রুটিন মাফিক সারাদিনের কাজগুলো দেখে নিতে পারেন। আপনার গল্প লেখার কাজে লাগলেও লাগতে পারে।

টমাস প্রশ্ন করলেন, আপনাদের এই আশ্রমে কি সবাই বুদ্ধিষ্ট ?

না। তবে বলতে পারেন শতকরা ৯৬, ৯৭ ভাগ। শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন হিন্দু ও খৃষ্টান।

আর এখানে আশ্রিত অনাথরা ? জানতে চায়লেন টমাস।

একগাল হেসে তিনি বললেন, অনাথদের আবার ধর্ম কী! আশ্রমে এসেই না ওরা ধর্ম পায়।

এরপর সুপারেন্টেন উসিরি ভান্তে মন্ত্রপাঠ করতে করতে এগোতে থাকলেন। বুদ্ধাং শরণং গচ্ছামি, ধন্মং শরণং গচ্ছামি, সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি। টমাসও তার তালে তালে শরণং গচ্ছামি, শরণং গচ্ছামি বলতে বলতে গোটা আশ্রম ঘুরে দেখতে লাগলেন । এ সময় আশ্রমের শিক্ষক, কর্মচারিসহ বেশ কয়েকজন মানুষের সাথে তার পরিচয় হলো । অবহেলা অনাদারে লালিত বাচ্চাদের কাছে ডেকে এনে গল্প করলেন। কিন্তু একটি জিনিস তিনি কিছুতেই মেলাতে পারছেন না । ঘুরে ফিরে কেবলই একটি প্রশ্ন মনের ভেতরে কুন্ডুলি পাকাচ্ছে; এখানে আগে কখনও কি এসেছি আমি ? বাংলাদেশে তো প্রথমবারের মত এলাম ! তাহলে কেনো আশ্রমের এই অফিস রুম, দরজার পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছ, ভবনের পেছনের দোলনা পরিচিত মনে হচ্ছে ! শিক্ষক অনিমেষ ব্যানার্জির মুখটাও !

টমাসের গোটা দিন আশ্রমে কেটে গেলেও অনিমেষের সাথে পরে আর দেখা হলো না । পরের দিনও না । প্রথম দিন আশ্রমে ঢোকার সময় তাকে দেখে ভয়ে কুকড়ে গিয়েছিলেন তিনি । এদিকে সুপারেন্টেন সাহেবর কাছ থেকে তার সম্পর্কে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেলো । বিশেষ করে তার লেখালেখি নিয়ে উসিরি ভান্তে বললেন, আপনি চায়লে অনিমেষের লেখাগুলো দিতে পারি । উনি লেখা শেষ করে পান্ডুলিপি আমার কাছে দিয়ে যান । আমি তা রেখেও দেই যত্ন করে। বললেন উসিরি ভান্তে। তবে আপনি লেখক মানুষ, ইচ্ছে করলে একটা বই ছাপিয়ে দিতে পারেন । বুড়োটার মনে অনেক দুঃখ । অনেক যন্ত্রণা । নিজের দোষে, নিজের ভুলে নিজ অন্তরে তিনি এমন এক গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছেন, যা কোন কালেই হয়তো প্রশমিত হবে না । ভুলগুলো থেকে সৃষ্ট মানসিক চাপই তার মাথায় গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিয়েছে । পাপ মোচন করতেই নাকি তিনি এই আশ্রমে এসে ঠিকানা গেড়েছেন । আমৃত্যু তিনি এখানেই থাকতে চান বলে একদিন হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে ছিলেন । আমরা তার অনুরোধ মেনেও নিয়েছি । তিনিই একমাত্র অবৈতনিক শিক্ষক । পেটে ভাতে এখানকার বাচ্চাদের পড়ান।

সুপারেন্টেন উসিরি ভান্তে টমাসকে নিয়ে নিজের রুমে গেলেন । আলমারির ড্রয়র খুলে একটি ডায়রি বের করে বললেন, এটা অনিমেষের লেখা ডায়রি । বেশ কয়েক পাতা পড়েছি । গল্পের মত লিখে গেছেন জীবনের সব কথা । আপনি রেখে দেন ।

রাতে কটেজে ফিরে লেখক টমাস হালদার পড়তে শুরু করলেন অনিমেষ ব্যানার্জির ডায়রি :

শান্তি-অশান্তির মাঝে দোদুল্যমান মানুষগুলো অসুখের যন্ত্রণা প্রশমিত করতে কখনও কখনও মন থেকে, কখনও বা অনিচ্ছা স্বত্বেও হয়ে যায় নিষ্ঠুর । আমিও তেমন একজন নিষ্ঠুর মানুষ হলাম । একজন নিষ্ঠুর পিতা । অথচ এই আমি আমার একমাত্র সন্তানের জন্মের পর বলেছিলাম, "সব অপূর্ণতায় বোধ হয় পূর্ণতা এনে দেয় সন্তানের মুখ।"

নির্ভেজাল এই সত্য উপলব্ধির পরও আমি বদলে গেলাম । অকৃতজ্ঞের মত বদলে গেলাম । স্ত্রী অবনিতার সহজ-সরল মুখ কিংবা সেই সাড়ে তিন বছর বয়সে অনিরুদ্ধের প্রথম স্কুলে যাওয়ার আনন্দ আমাকে আবেগী করে তুলতো না আর । কোন কিছু পাওয়ার বিনিময়ে নয় । পরিবর্তনের ছোয়াঁই নয় । শ্রেণী উত্থানও নয় । বরং শ্রেণী পতনের এক অজানা আশঙ্কায় ভয়ার্তো মনোবৃত্তি বাসাবাঁধতে থাকলো মনের গহিনে ।

কেনো!

দায়-দেনা ও অভাব-অনটনের কারণেই কি ঘটে যাওয়া ছন্দপতন আত্নবিশ্বাসে ধরিয়ে ছিল চিড় ! হতে পারে, এটাই অন্যতম কারণ। কেননা কেরানির চাকরিতে যুৎসুই হয়ে উঠছিলনা জীবন-যাপন । বিশেষ করে বিয়ের পর সংসারের প্রয়োজনে প্রশস্ত হতে থাকে খরচের হাত । কিন্তু আয়-ব্যায়ের সাথে সঙ্গতিহীন জীবনে ধার-কর্য করে বিলাসিতা অবশ্যই বাড়াবাড়ি । এই সব বাড়াবাড়ি আমার নির্ভরতার জায়গাগুলোর সাথে তৈরি করেছিল এক ধরণের দূরত্ব । ভালবাসার মানুষগুলো অচেনা হতে থাকলো । নিজের অজান্তেই একজন ভিতু মানুষে রুপান্তরিত হলাম । আর এসবের পেছনে অবনিতাকে দায়ি করে রাগ ক্ষোভ ফেটে পড়তাম । মনে হতো ওর সাথে নিজের কপাল জুড়ানোটাই ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল । কিন্তু আমার এই ভাবনা কতটুকু সঠিক বা কতটুকু ভুল ছিল, সেই উপলব্দি যখন হলো, তখন আর কেউ নেই পাশে ।

একটানে ডায়রির কয়েক পাতা পড়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন টমাস । এটা কি তার কোন গল্প, না জীবনের কথা! যদি গল্প হয়ে থাকে, তবে বলবো বুড়ো লোকটার লেখার হাত খুব ভাল । টমাস আবার পড়তে শুরু করলেন ; ১১ মে অনিরুদ্বোর জন্মদিন । ১৯৮০ সালের এই দিনে অনিরুদ্ধোর বয়স যখন চার বছর, তাকে নিয়ে যাই আশ্রমে । রাতে চট্রগ্রামে আমাদের বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ওকে বলেছিলাম, তোমাকে সুন্দর একটি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবো । সেখানে তুমি থাকবে, ভাল ভাল খাবার খাবে । খেলার জন্য বড় মাঠ পাবে । খেলার অনেক সঙ্গিও পাবে । অনিরুদ্ধো কিছু বলেনি । বোঝেওনি কিছু । আমি যে ওর বাবা, সে পরিচয় গোপন রেখে অনাথ শিশু হিসাবে অনিরুদ্ধোকে আশ্রমে রেখে চলে যায় । সে হয়তো আমার অপেক্ষা করে গেছে । ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেছে কত দিন কে জানে !

ডায়রি পড়তে পড়তে টমাস হালদার থেমে গেলেন । তার আর পড়তে ইচ্ছে করছে না । এ কেমন নিষ্ঠুর মানুষ অনিমেষ বুড়ো । নিজের ছেলেকে কেউ অনাথ আশ্রমে দিয়ে যেতে পারে? যত অভাব অনটন আসুক না কেনো, একজন সৎ বাবাও এমন করতে পারে বলে মনে হয় না, ভাবলেন টমাস । ডায়রির পাতা আবার উল্টাতে শুরু করলেন । একটি জায়গায় অনিমেষ লিখেছেন, সেই শৈশব থেকে স্বভাবগত ভাবে আমি খুব আবেগী মানুষ । রোমান্টিকতা এত বেশি পছন্দ করি যে অবনিতার ভেতরে রোমান্টিকতার লেশমাত্র না পেয়ে রস-রঙহীন সংসার জীবনের প্রতি চরম বিরক্ত ধরে গেলো । এরমধ্যে কাকলি নামে এক সুন্দরী মেয়ের সাথে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং জীবনের সব অঘটন ঘটে গেলো তার সাথে নিজের জীবনটাকে জড়িয়ে । মানুষ যখন ভালকে মন্দ ভাবে, ভাল কিছুর মর্যাদা বুঝতে অক্ষম হয়, ভগবান তখন হাতে কলমে শিক্ষা দিয়ে ভাল মন্দর পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেন । অবনিতা যে সত্যি আমার বাধ্য স্ত্রী ছিল এবং তার মত মেয়ে পাওয়া যে ভাগ্যের ব্যাপার, সে উপলব্দি হলো যখন কাকলিকে নিয়ে শুরু করলাম সংসার জীবন ।


আমার ঘোর কাটতে সময়ও লাগেনি । এক বছরের মধ্যে বুঝে গেলাম কাকলি হলো ছেলে নাচানো মেয়ে । সে কখনও সংসার করতো না । বরং সাজানো সংসার ভাঙতে পারদর্শী । আমার যা কিছু সঞ্চয় ছিল, তা লুটে নিয়ে সে চলে গেলো অন্য এক পুরুষের সাথে । এমন কি অনিরুদ্ধোর মায়ের যত গয়না ছিল, যা সে সাথে করে নিয়ে যেতেও পারেনি, তা চুরি করে নিয়ে যায় কাকলি ।

টমাস হালদার এবার মুচকে হাসলেন। অনিমেষ বুড়োর কাহিনীটা পরিস্কার হলো । তিনি একটি খারাপ মেয়ের পাল্লায় পড়ে নিজের স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি কেবল অবহেলা করেননি, ক্ষমার অযোগ্য নিষ্ঠুরতা করেছেন । অবশ্য পরে তিনি অনুতপ্তও হয়েছেন । তাতে কি হবে! কাজ তো ভাল করেননি । পরের দিন আশ্রমে গিয়ে টমাস জানতে পারলেন গতকাল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গল্পের শিক্ষক অনিমেষকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা বেশ খারাপ । মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন। টমাস একবার ভাবলেন হাসপাতালে গিয়ে লোকটাকে দেখে আসবেন । আবার মনে হলো নিষ্ঠুর মানুষের মুখ যত কম দেখা যায়, ততই ভাল । দুপুরে কটেজে ফিরে ফের ডায়রি পড়তে শুরু করলেন তিনি ।

২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২, মানুষের নিয়তি বড় অদ্ভুত! যে আশ্রমে নিজের সন্তানকে অনাথ বানিয়ে রেখে গেলাম, ভাগ্য আমাকে সেই আশ্রমে ফিরিয়ে আনলো পরের বছর । সেই বাঘাইছড়ি আশ্রম হয়ে গেলো আমার আজীবনের ঠিকানা । তবুও যদি অনিরুদ্ধোকে ফিরে পেতাম । যদি জীবনের বাকি দিনগুলোতে ফিরে পেতাম অবনিতাকে । বাপ মরা মেয়েটিকে যেদিন জোর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেই, সে আমার পা দুটো ধরে মিনতি করে বলেছিল, আমাকে তোমার দাসী করে রেখে দাও, কপালের সিদুর মুছে দিও না । আমি তার কোন আকুতি সেদিন শুনিনি । সেও আমার বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি । নেবেও বা কি করে! আপন বলতে মা ছাড়া কেউ ছিল না তার দুনিয়ায় । যতদূর জেনে ছিলাম, কিছুদিন পর অবনিতা ও তার মা ভারতে চলে যায় ।

১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২, আমার অনুরোধে বাঘাইছড়ি আশ্রমের অফিস সহকারি রেজিষ্ট্রার খাতা খুলে দেখালেন অনিরুদ্ধোকে দু'বছর আগে অর্থাৎ ১৯৮০ সালের ১১ মে'র দিন পনেরো পরেই একজন জার্মান ভদ্রলোক তাকে দত্তক হিসাবে নিয়ে যান । আমি সেই জার্মান ভদ্র লোকের নাম ঠিকানায় চিঠি লিখলাম। একাধিকবার চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলাম, আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দেন । একটা দুইটা করে দশটা চিঠি দেওয়ার পরও কোন উত্তর মেলেনি । দিতেই থাকলাম। শেষে ভাবলাম জার্মান চলে যাবো । টাকার অভাবে সেটি হলো না ।




টমাস একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ডায়রীর পাতা উল্টালেন । পরের পাতায় বড় বড় অক্ষরে লেখা :

SAIMON HALDAR
PLATZ DER REPUBLIK
11001, BERLIN,
GERMANY

মুহূর্তের মধ্যে মাথটা ঘুরে উঠলো টমাসের । শিক্ষক অনিমেষের ডায়রিতে তার বাড়র ঠিকানা লেখা কেনো! চরম উত্তেজনায় গা হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে । তার মানে আশ্রমের এই বৃদ্ধ লোকটি আমার বাবা ! অবনিতা আমার মা ! টমাস আর ভাবতে পারলেন না । একটুও দেরি না করেই ফোন করলেন জার্মানে বাবা সাইমন হালদারের কাছে । ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করতেই টমাস সরাসরি জানতে চায়লেন, ডেড, আমি কি তোমার পোষ্য সন্তান?

ওপাশ থেকে কোন জবাব এলো না ।

টমাস আবারও জিজ্ঞাসা করলেন, ডেড বলো, আমি কি তোমার পালিত ছেলে?

ইয়া মাই বয়!

আমাকে কোথা থেকে তুমি নিয়ে গিয়েছিলে?

বাংলাদেশ।

ওকে ডেড। টক ইউ লেটার ।

কথা শেষ করে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের পথে ছুটলেন টমাস ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:৪৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×