somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুরে সুরে ডুবসাঁতার

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সন্ধ্যাবেলা তারামিউজিক এ ,"আজ সকালের আমন্ত্রন" এ সন্তরবাদক পন্ডিত তরুণ ভট্যাচায্যের বাজনা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল বুকের মধ্যে কেমন ওলট পালট হচ্ছে।
ঝড় নাকি বজ্রপাত, নাকি ঝুম বৃষ্টি হলে যেমন অনুভূতি হয়,তেমন কিছু!
সুর ছুঁয়ে যাচ্ছিল আমাকে। সুরের সাথে স্পর্শের এই খেলায় কি এক মুগ্ধ আবেশে ডুবে ছিলাম।
মাঝে মাঝে সঞ্চালিকা মৈত্রেয়ীর কথা। এত ভালোলাগা। এত ভালোলাগাকে কি বলে আমার জানা নেই। আসলেই, শুধু চুপ করে বসে থাকা।
কিছু সুরেলা সময় থাকে এমনি, আনন্দ-দুঃখ মাখানো। ভাবনাতেই এভাবে বেশ পাহাড়ে চলে যাওয়া যায়, ঘরে বসেই বৃষ্টিতে ভেজা যায় অথবা নাম না জানা কোন নদীর পারে কাঠের সাঁকোতে বসে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকা যায়।
এমন সময়ের কাছে চিরটাকাল নতজানু আমি! সৃষ্টিকর্তাকে বারবার স্মরণ করি কৃতজ্ঞ চিত্তে। ভাগ্যিস অনুভূতিশীল মানুষ হয়ে জন্মেছি।
ভালো কথা,গান,সুর,কবিতা শুনলে তাই কেমন যেনো হয়ে যাই। আমি যেনো আর আমি থাকি না।হয়ে যাই ইচ্ছামতী।
আমার একা থাকা সময়ে ,একা ভাসা সময়ে এত সুন্দর সুরের মূর্ছণায় ডুবে যেতে যেতে কেবলি মনে হয় জীবনটা কি সুন্দর। কি সুন্দর এই বেঁচে থাকা!

শুধু আমি একা না, আমার ঘরের সবুজ পাতার,লাল পাতার গাছগুলো ও মুগ্ধ হয় এই সুরের ধারায় আমি নিশ্চিত বলতে পারি! পাতার শিরায় জমা হতে থাকে শিশিরের মতন টুপ জল। আনন্দ না কি দুখের অশ্রুধারা? কে জানে! আমারও চোখ ভেসে যায়।

“বড় আশা করে এসেছিগো,কাছে ডেকে নাও” এই সুরের সাথে আমি পিছনে হাঁটতে হাঁটতে লালমনিরহাট এ চলে যাই। রেললাইনের ধারে আমাদের সাহেবপাড়ার সেই দোতলা বাসা। বাসার সামনে বিশাল বাগান আর বাগানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পথ। ভাইজান এই পথে হাঁটতে হাঁটতে এই গানটা গাইতো। আমি পিছন পিছন হাঁটতাম। অনেকদিন পর যেনো ছোট্ট আমি সুরের সাথে ,গানের সাথে সেই পথে হাঁটলাম। আমার ভাই এর পিছু পিছু।

স্বর্গীয় অনুভূতি কাকে বলে জানিনা। আমাদের কারোই তা জানা নেই। তবু অদ্ভুত তরঙ্গের এই খেলা, অপার্থিব এই অনুভূতিকে কি স্বর্গীয় অনুভূতি বলে? নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয়। ছোট্ট তারার হয়ে হারিয়ে যেতে থাকি এক আকাশ থেকে অন্য আকাশে।

মানুষের মন! কিযে অচীন স্রোতের টান এই মনের নদীতে।
কখনো উজানে,কখনো ভাটায়, বাতাসের সাথে মিলে মিশে ফিসফাস। এলোমেলো পথচলা। আলুথালু চুলে হেঁটে যাওয়া প্রেমিকার মতন। চোখ দুটো বন্ধ করে কি আবেশে ভেসে বেড়াই।মনে পড়ে রবী শংকর, আনন্দশংকরকে। তাঁরাই তো এভাবে বুঁদ হতে শিখিছেন।

জলতরঙ্গের খেলায় কখনো পাহাড়ে উঠি। কখনো কাশবনে হাঁটতে হাঁটতে হয়ে যাই মেঘবতী এক। সাদা শাড়ি ,সাদা ব্লাউজ,গলায় আকাশ নীল এর মালা।
সুরের ঝর্ণাধারায় মিশে একটা পেখমখোলা ময়ূর হয়ে যাই। আনন্দ সুর ঝংকারে ভাসতে ভাসতে হয়ে যাই আনন্দমতী। তখন পড়নে থাকে লাল রং শাড়ি।
আন্দামান দ্বীপে ঘুরতে চলে যাই। সমুদ্রের কিনারায় হাঁটতে হাঁটতে নিজেও গাইতে শুরু করি গান।
রবী ঠাকুরের গান।
তিনিই তো ভাসতে শিখিছেন ভেলার মতন,কখনোবা স্রোতে ভাসা পদ্মপাতার মতন।
উড়তে শিখিছেন পাখির মতন
আর শিখিয়েছেন মানুষ জন্মের অদ্ভুত বোধ গুলোকে কাগজের পাতা ভরে লিখতে।

“আঁধার থাকুক দিকে দিকে আকাশ অন্ধ করা তোমার পরশ থাকুক আমার হৃদয় ভরা”
.............................এই গানের ছোঁয়া পেলে আমি কেমন অন্যরকম আমি হয়ে যাই।ভালোবাসতে শিখি নতুনের পর নতুন করে।

“মাঝে মাঝে তব দেখা পাই ,চিরদিন কেনো পাইনা”
অদ্ভুত এই গানটা শুনলে আমার কেবলি ইচ্ছা করে বৃষ্টি হয়ে ঝরতে। ভালোবাসার নিটোল বোধে একাকার হয়ে যেতে থাকি আমি। সুরে,তালে,লয়ে ,গানে আমি মিশে যেতে থাকি,নিজেকে মনে হয়ে একটা বর্ণালী পাতা।
খুব ইচ্ছা করে পাতার পর পাতা জুড়ে নিজের ভিতরের আশ্চর্য্য অনুভুতি গুলোকে সাজিয়ে লিখি। লিখি প্রিয় মানুষের কথা, যে আমার লেখার ইচ্ছাতে সাজিয়ে রাখে বাহারী সব খাতা, নীল রং কালির কলম!
লিখতে ইচ্ছা করে তাদের কথা ,যাদের কাউকে কাউকে আমি কখনো দেখিনি, অথচ যারা আমাকে কবিতা লিখার জন্য নিরন্তর প্রেরণা যোগায়। সুরের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমার খুব ইচ্ছা করে অনেকদিন বাঁচি। একশো নাকি দুইশো বছর !

বেঁচে থাকার জন্য আজ একশো বছরও কম মনে হয় আমার!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৩
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×