somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বজ্র ড্রাগনের দেশে... (শেষ পর্ব)

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বজ্র ড্রাগনের দেশে... (প্রথম পর্ব)

থিম্পু পৌছে মোটামুটি সাধারণ একটা হোটেলেই উঠলাম। এখানে একটা জিনিস ভাল ছিল, রুমে গন্ধ ছিল না আর ভাড়া ৩০০ রুপীর মধ্যেই ছিল।:) আরেকটা জিনিস দেখে খুব ভাল লেগেছে, থিম্পুর হোটেলগুলোর সিড়ি ঘরে প্রতি তলায় একটি বাক্সে ফ্রি কনডম রাখা আছে। সরকারীভাবে দেয়া সম্ভবত। খুব অবাক হলাম, এমন আত্মকেন্দ্রিক একটি দেশ অথচ এইডস প্রতিরোধে কত সচেতন ! হ্যাটস অফ টু ভুটান সরকার, আরেকবার ! ;):)

সেদিন আর কোথাও যাই নি। টাইম স্কয়ার টাইপের একটা জায়গা আছে, একটা স্তম্ভের মাথায় চারিদিকে ঘড়ি, তার চারপাশে খোলা জায়গা এবং বসার বেঞ্চ।



সেদিন ছুটির দিন থাকায় অনেক পরিবারকে দেখা গেল বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছে। আমরাও একটি বেঞ্চে গা এলিয়ে অলস বসে রইলাম আর বাচ্চাদের খেলাধুলা দেখতে লাগলাম। তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রির নীচেই হবে, তাই খুবই আরামদায়ক আবহাওয়া।:)

পরদিন থিম্পু ভ্রমণে বের হলাম। প্রথমেই ড্রাইভার কাম গাইড আমাদের নিয়ে গেল চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানায় একটি মাত্র প্রাণি, নাম টাকিন, এটা ভুটানের জাতীয় প্রাণিও বটে !



প্রাণিটি আসলে গরু এবং ছাগলের একটি শংকর, মুখটা ছাগলের মত আর শরীর গরুর মত। কিন্তু এই প্রাণির ব্যাপারেও দেখলাম পৌরাণিক কাহিনী আছে, যেটা বিশাল বিলবোর্ডে লেখা আছে ! বলা বাহুল্য এটি বিপন্ন প্রজাতির একটি প্রাণি।


টাকিন উৎপত্তির পৌরাণিক কাহিনী...


টাকিন সম্পর্কে অন্যান্য তথ্য...

যাইহোক, টাকিন দেখে ঘুরতে ঘুরতে এমন এক জায়গায় গেলাম, যেখান থেকে পুরো থিম্পু উপত্যকা তথা শহর দেখা যায়, কিছু ছবি তুললাম।


পাখির চোখে থিম্পু...

দূর থেকে রাজার প্রাসাদ দেখাল ড্রাইভার, কিন্তু এতই গাছপালায় ঘেরা যে কিছুই দেখা গেল না ! পথে দূর থেকেই থিম্পু জং দেখা গেল, খুব সুন্দর এবং বড় একটি জং।



পাহাড় বেয়ে নেমে আমরা জং এর সামনেও গিয়েছিলাম, কিন্তু যেহেতু ওখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত তাই ভেতরে যাওয়া গেল না। এটা ওদের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কেন্দ্র।

ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম একটা যাদুঘরে। বেশ সমৃদ্ধই মনে হল। জং এর প্রোটোটাইপ তৈরী করা আছে। অনেক বই পুস্তক, কিছু বই পেলাম যেখানে ভুটানের সুন্দর সুন্দর জায়গার ছবিও দেয়া আছে। ভাবলাম যাওয়াতো হল না, ছবি তুলে নিয়ে যাই অন্তত। আপনাদের সাথেও বই থেকে তোলা কিছু ছবি শেয়ার করছি। :)







দিনের বাকীটা সময় থিম্পুর দোকান পাট আর এদিক সেদিক ঘুরেই কাটালাম। আড়ং জাতীয় দোকানে ঢুকে মাথাই নষ্ট ! কল্কি টাইপের কি এক জিনিসের দাম দেখি ২৫০০০ রুপী ! কাপড় চোপড়ের যা দাম, হাত দেয়াই মুশকিল ! এমনকি আপেলের কেজিও ৬০ রুপি/কেজি যেটা পারোর হাট থেকে মাত্র ২০ রুপী/কেজিতে কিনেছিলাম ! :-*


ঐতিহ্যবাহী পোষাকে ভুটানি মেয়ে...


ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশ্রণ...

সকালে ঘুরতে বেরোবার আগেই ইমিগ্রেশন অফিসে পুনাখা যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন এবং পাসপোর্ট জমা দিয়ে গিয়েছিলাম। সম্ভবত পাসপোর্টের ফটোকপি এবং ছবি লাগে। বিকেলে গিয়ে পাসপোর্ট আর অনুমতির কাগজ নিয়ে এলাম।

শেয়ারড জীপে করে পুনাখার দিকে রওনা হলাম। পুনাখা যাওয়ার পথে দোচুলা পাস পড়ে যেখান থেকে সম্ভবত একটা ৩৬০ ডিগ্রী ভিউ পাওয়া যায়। কিন্তু চারিদিক মেঘে ঢাকা থাকায় কিছুই দেখা গেল না। /:)


মেঘে ঢাকা দোচুলা পাস...

পুনাখা বাস স্ট্যান্ডে নেমে কিছুদূর হাটলেই পুনাখা জং ! পুনাখা নদীর কোল ঘেষে তৈরী করা হয়েছে।


নদীর মোহনায় পুনাখা জং



এই জং এ প্রবেশে কোন বাধা নেই। ঘুরে বেড়ালাম। এখানে জেলা প্রশাসন, কোর্ট কাচারী সাথে আবার মন্দির। কিন্তু মন্দির আমার কাছে বেশ অপরিচ্ছন্ন মনে হল। যাইহোক, জায়গাটা খুব সুন্দর। পুনাখাতে আর তেমন কিছু দেখার নেই, সন্ধ্যার আগেই থিম্পু ফিরে এলাম।

ভুটানে আরো বেশ কিছু জায়গায় ঘোরার অনুমতি পাওয়া যায় যদ্দূর জানি। কিন্তু আমাদের হাতে সময় কম থাকাতে আর কোথাও যাওয়া হয় নি। পাচ দিন ছিলাম, তবে যতটুকুই দেখেছি, ভাল লেগেছে, শান্তির দেশ মনে হয়েছে...:)
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×