somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বালকবেলার স্মৃতিকথা

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার প্রথম ইস্কুল

‘কেউ যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করবে কোন ক্লাসে পড়, তখন উত্তর দিবে ক্লাস-টু। আর যখন জানতে চাইবে কোন শ্রেণিতে পড়, তখন বলবে দ্বিতীয় শ্রেণী।‌’ বাবার এই কথাটা আমার সব সময় মনে থাকত। কেউ পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করলেই ঠিক ঠিক বলে দিতাম, কোন ভুল হত না। বাবাকে এখানে বাবা-ই বল্লাম, যদিও চা বাগানে থাকাকালীন সময়ে আমরা যারা মুসলমান ছিলাম তারা বাবা বলাটা হিন্দুয়ানী মনে করতাম। তাই মাকে আম্মা ডাকতে হত। কিন্তু টিভি-সিনেমায় যখন দেখতাম সবাই মা-বাবা ডাকে তখন কেমন যেন লাগত। আমার প্রথম স্কুল ছিল হোসেনাবাদ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। কেউ স্কুলের নাম জানতে চাইলে দাড়ি-কমাসহ বলে দিতাম। হোসেনাবাদ ছিল আমাদের পাশের চা বাগানের নাম। আর স্কুলটা ছিল সেখানে। তার পরের শব্দটা অর্থাৎ বেসরকারীর কোন অর্থ তখন জানতাম না। স্কুলের সবচেয়ে মজার জিনিস ছিল ঘণ্টার শব্দ! স্কুলে যারা বড় কাসে পড়তো, দেখতাম, তারাই শুধু ঘণ্টা বাজাত। তখন বড় ক্লাসের প্রতি আমার একটা আকর্ষণ তৈরী হয়। কখন বড় ক্লাসে উঠব, কখন ঘণ্টা বাজাব!
তবে, ঘণ্টার মধ্যে ছুটির সময় যে ঘণ্টাটা পড়ত, সেটাই ছিল বেশী প্রিয়। তবে, বিরতির সময় (প্রাইমারীতে বলতাম টিফিন আর হাইস্কুলে বলতাম বিরতি) খেলতে ভাল লাগতো। যখন পানির পিপাসায় পেত, তখন হাফ কিলোমিটার দৌড়ে গিয়ে টিউবওয়েলের পানি খেয়ে আসতাম। সবচেয়ে মজা হত বৃহঃস্পতিবারে। সেদিন স্কুলে গান, কুইজ, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি হত। আমার মনে আছে, একবার গোলাপ নামের বড় কাসের একটা ছেলে ’মা আমি বন্দি কারাগারে’ গানটা গেয়েছিল। আমার খুব ভাল লেগেছিল। সেই থেকে গোলাপকে দেখলেই আমার গায়ক হতে ইচ্ছে হত। যদিও আমার কখন তা হয়ে ওঠা হয় নি।
‘বিশুদ বারে হাফ, শুক্রবারে মাফ’! যে বৃহঃস্পতিবারে অনুষ্ঠান থাকতো না, আমরা চলে যেতাম চা বাগানের ভেতর আয়েলা (আমলকি) খেতে। আয়েলা খাওয়ার অন্য উদ্দেশ্য ছিল! আয়েলা খেয়ে তার পর পানি খেলে ভীষণ মিষ্টি লাগত। আমরা সবাই তাই করতাম। মনে আছে, একবার আয়েলা গাছের নিচে হরিণ দেখেছিলাম। ওটাই ছিল সরাসরি আমার দেখা প্রথম হরিণ! এই সুযোগটা হয়েছিল স্কুলের তিন দিকে চা বাগান এবং চা বাগানের গভীরে বাঁশ বাগান থাকার কারণে। দল বেঁধে ৬/৭ জন যেতাম। খুব মজা হত।

সময়ের স্রোতে ছিটকে গেছি সবাই। দিনাজপুরের রায়হান, নোয়াখালির জুয়েল, বরিশালের সেলিম, নন্দরাণীর নিপেন, হোসেনাবাদের ছন্দা কে কোথায় আছে জানি না।

সবাই দলছুট হয়ে গেছে। আর আমিও হয়ে গেছি অন্য কোন দলের একজন।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×