এক্ষণে আসিয়া চিত্ত খানিক বিক্ষিপ্ত হয়। আমি যতই বলিতেছি ব্লগে বিদ্যমান টেক্সটকে ভিত্তি ধরিয়া ফিকশন লিখিতেছি ক্রিটিকের মন লৈয়া, ততই লোকে তাহাকে "সত্য" ঠাউরায়া চিৎকার, শীৎকার, ম্যাৎকার এবং ধিক্কার দিতেছে! ঔপন্যাসিককে ইতিহাসবেত্তা ঠাউরাইলে ঔপন্যাসিক বিপন্ন হয়, ইতিহাসবেত্তা মুচকি মুচকি হাসে। আমি কর্ণ হৈতে চাহিয়াছি, আর জাতি আমাকে যুধিষ্ঠির বানায়া চাঙে উঠায়া দিল!
সত্যকথনের (?) এই দুর্বহ বোঝা ঘাড় হৈতে নামানোর তরিকা কি?
আরো কিছু নৈতিক প্রপঞ্চ আসিয়া ভিড় জমাইতেছে মনে। আমি কি সুপ্ত হুতাশনকে চেতায়া দিতেছি? মর্গের মাটিতে নরমুন্ডু দিয়া বৌলিং খেলিতেছি? মডারেটরমহাশয়ের দিবানিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাইতেছি? আমি কি ভ্রুণহন্তারক, আরো কিছু নিকের আত্মাহুতির জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করিতেছি? আমাকে ধিক্কার দিতেছে যাহারা তাহারা কি জীবিত? নাকি প্রাগৈতিহাসিক অভিশাপ সামহোয়্যার-পিরামিডের গায়ে প্রতিধ্বনি তুলিতেছে? আর আমাকে বাহবা দিতেছে যাহারা তাহারা কি চুপিসারে আমার জন্য কুশপুত্তুলিকার অর্ডার দিয়া আসিয়াছে?
একবার ভাবিলাম, থাক কাজ নাই আর, পলায়া যাই বদরগঞ্জের হাটে। মজমার আড়ালে দাঁড়ায়া রথীমহারথীদের এইসব হাতসাফাই দেখি আর বাচ্চালোগ তালিয়া বাজাই! তাহারা তাহাদের আবহমান মাহাত্ম্য সম্বল করিয়া একে অপরে হোলি খেলিতে থাকুক! তাহাদিগের আত্মা বড় নাজুক, ফুলের টোকা সহে না। তাহারা দর্শক চাহে, দর্শকের তালিয়া চাহে, কিন্তু দর্শকের বাকস্ফূর্তি চাহে না। সেইরকম কিছু ঘটিলেই পামর-অর্থে "পোমো" গালিসহযোগে চাপ দিয়া বসায়া দেয়। নচেৎ সেই নটাভিলাষী দর্শককে ভরতনাট্যম নাচিবার আজ্ঞা দিয়া রামদা হাতে তাল গুণিতে আরম্ভ করে!
কিন্তু যে আগুন আমি জ্বালাইয়া ফেলিয়াছি, কিরূপে নামিব এই ইনফার্নোময় অট্টালিকা হৈতে? কোথা সে জলপাইরঙ হেলিকপ্টার যে আমাকে সারি সারি বেটাক্যাম আড়াল করিয়া এই অগ্নিকুণ্ড হৈতে নিরাপদে উড়ায়া লৈয়া যাইবে?
হায়! কেন যে দান্তে হৈতে আসিলাম এই মুখব্যাদান দন্তবিকাশকেন্দ্রে? মনে পড়িতেছে পুরনো দিনের একখানা সঙ্গীতের কথা:
"চারিদিকে স্টেনগান ব্রেনগান মেশিনগান
আমি কি গাইবো গান!!"
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:২১