somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'কেমন আছো? তুমি কেমন আছো, প্রিয় সামহয়্যার ইন?' ….. এগার বছর আগের অনুভব !

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ….. সামহয়্যার-ইন-ব্লগ শুরু হওয়ার পর .... প্রথমদিকের বছরগুলোতে আমরা কতোটা ভালোবাসতাম সামহয়্যারইন ব্লগকে?

আমাদের দিন রাত্রির অজস্র সময়ের কতোটা দখল করে রেখেছিলো সেসময়ের সামহয়্যার ? সামহয়্যারে একটা দিন লিখতে না পারলে .... একটা দিন সামহয়্যারে এসে অন্যান্যদের লেখা পড়তে না পারলে কতোটা যন্ত্রনায় ভুগতাম আমরা সেসময় ?

সে সময়কালে ২ টি পর্বে পোস্ট করা এই লেখায় সংযুক্ত হয়ে আছে সেইসব স্মৃতিময় অনুভবেরই কিছু আবেগময় খন্ডচিত্র। ... পড়বেন তারাই, যারা সামহয়্যারকে এখনো এমন আবেগ দিয়েই ভালোবাসেন ...। বিশেষ করে, গত ২১ শে ডিসেম্বরে বাংলা ব্লগ দিবসের এক পুণর্মিলণী অনুষ্ঠানে সমবেত হয়ে নতুন প্রজন্মের কয়েকজন ব্লগার যেভাবে এই ব্লগের প্রতি তাদের ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন, তা আমাকে পুনরায় অণুপ্রাণিত করলো ...পরম ভালোবাসার এই ব্লগ-রাজ্য নিয়ে আমাদের সময়ের অনুভূতিগুলোও তাদেরকে জানাতে .... !


প্রথম পর্ব
-----------------------
পোস্ট করা হয়েছিলোঃ ২ রা মার্চ, ২০০৭

লিখতে না পারার যন্ত্রনা বলে কি পৃথিবীতে সত্যিই কিছু আছে? প্রশ্নটা আমি নিজেই নিজেকে বারবার করি। সত্যিই তো... লিখতে না পারার যন্ত্রনাটা আবার কেমন? কি তার রঙ ? কেমন তার ঘনত্ব ? কতটুকু তার বেদনার অন্তর্নিহিত 'স্পেসিফিক গ্রাভিটি'?

আকাশ আর অন্তরীক্ষের অচীন কোন গ্রহলোকে কখনো কি সে বেদনার গোপন ঝরনা নিঃশব্দে বয়ে চলে? কেউ কি খুব ভোরে অন্য কোন অনুভব দিয়ে শুষে সেই বেদনার প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পেরে - কেঁপে কেঁপে ওঠে?

কি জানি ! আমি ঠিক বলতে পারবোনা...। শুধু বুঝি- 'সামহয়্যার ইন ব্লগ'এ একটানা অনেকদিন লিখতে না পারার যন্ত্রনা আমাকে খুব ভয়ংকরভাবে আহত করে ফেলে... 'সামহয়্যার' থেকে অনেকদিন বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলে আমি ভেতরে ভেতরে কেমন নিঃস হয়ে যাই, আমার অনুভবের আনন্দযজ্ঞে নামে অন্তহীণ কষ্টের আঁধার... আমার সব আনন্দবৃক্ষ যেন সহসাই প্রেম ও পত্রশূন্য হয়ে পড়ে ... যেন ভেতরে ভেতরে আমি খুব একা হয়ে পড়ি ...খুব একা ! ভীষনভাবে একা ! ...


আমার কেবলই মনে হয়... সামহয়্যারে লিখতে পারছিনা বলেই আমার স্বতঃষ্ফূর্ত আনন্দের পৃথিবী থেকে আমি খুব দূরে সরে যাচ্ছি...আমার কেবলই মনে হয়.... সামহয়্যার-এর বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেতে বহুদিন একটিও ফসল বোনা হচ্ছে না বলেই আমার খুব প্রিয় আশ্রয়স্থলটি আমি ক্রমশঃই হারিয়ে ফেলছি ...আমার সব শুভ সত্তা যেন সমর্পিত হয়ে গেছে সম্ভাবনাহীণ এক ক্ষয়িষ্ণু 'পরিশেষ'-অভিমুখে। ...

লিখতে না পারার যন্ত্রণা আমার মতো এভাবে আর কেউ অনুভব করে কিনা আমার জানা নেই। তবে লিখতে না পারার 'আরেক ধরণের কারণ সম্বলিত' যন্ত্রণার বিদীর্ণ হাহাকার আমি ধ্বনিত হতে শুনেছি প্রিয় শিল্পী 'জেমস' এর কন্ঠে ... তাঁর অসামান্য অসাধারণ এক গানে...! আকাশ আর সমুদ্র কি একবারের জন্য হলেও কেঁপে ওঠেনি - যখন জেমস তার সেই অসাধারণ গানের শেষ লাইনে গিয়ে এক আশ্চর্য্য আকুল করা মর্মভেদী চীৎকারে গেয়ে ওঠেন- 'লিখতে পারিনা কোন গান আজ তুমি ছাড়া... ! গাইতে পারিনা কোন গান আজ তুমি ছাড়া....' !

আমার যন্ত্রণার স্বরূপটি হয়তো জেমস এর গানের মতো ততোটা তীক্ষ্ণ নয়। কিন্তু কেন জানি মনে হয়- নীরবে নিভৃতে একটু একটু করে পোড়ানোর বিচারে- সেই যন্ত্রণার ভীরু ভীরু সলতেটিও একেবারে উপেক্ষণীয় নয়।... কতোদিন বৃষ্টি নেমেছে শহরের বুকে...অথচ আমার সময় হয়নি...। কতোদিন ভোরের আকাশ সেজেছে অপরূপ অন্য এক সাজে... অথচ আমার সময় হয়নি...। কতোদিন সামহয়্যারে তর্কের ঝড় উঠেছে...কারও মিল হয়েছে...কারও দূরত্ব বেড়েছে... কেউ কেউ একুশের দীপ্ত কবিতা/গল্প/প্রকাশনা নিয়ে বিকেলে পা রেখেছেন 'আজিজে'...।

'বইমেলা'য়...কতোদিন তুষার কণার মতো রাসেল এর কবিতা সারারাত ঝরে পড়েছে 'মিথীলা'র মিষ্টিরিয়াস মৃত্যুর কল্পিত 'মৃতলোকে'.... অথচ আমার সময় হয়নি। একেবারেই সময় হয়নি ...। আমি কিছুই লিখতে পারিনি। হায় !... একটি সামান্য দুই লাইনের লেখাও না।... আমার জীবনের নির্মম বাস্তবতায় 'অপর বাস্তব'এর মোড়ক উন্মোচন দিবস .... গোপন কষ্টের মতো... কেবলই রয়ে গেছে দূরে।.... আমি পারিনি, যেতে পারিনি !

ওহ্, প্রিয় 'সামহয়্যার', তবে আর কিসের জন্য তুমি মনে রাখতে চাও আমাকে বারবার? তবে আর কিসের জন্য তুমি প্রতিবার ক্ষমা করবে এ ভয়ানক অনুযোগ- অন্তহীণ বিচ্ছিন্নতার..?

এতোটা সহ্যের পরেও কিসের এতো উদারতা তোমার, উন্মুক্ত প্রাঙ্গন জুড়ে, অসামান্য মমতার ? আমার এমন দীর্ঘ নীরবতার পরেও টেনে নেবে কাছে আবার? এতো বেশী হৃদয়স্পর্শী নান্দনিকতায় ?

নাকি প্রয়াত কবি শামসুর রাহমানের সেই এক কবিতার মতো প্রবল উৎকন্ঠা নিয়ে তুমিও হঠাৎ একদিন বলে উঠবে-

"তবে কি হঠাৎ কোন বাসি পদ্য হয়ে যাবে তুমি, স্মৃতিতে আমার .... ?"


দ্বিতীয় পর্ব
----------------------
পোস্ট করা হয়েছিলোঃ ২ রা মার্চ, ২০০৭


সামহয়্যার নিয়ে আমার অশেষ আনন্দের যেমন শেষ নেই, তেমনি একে ঘিরে রয়েছে আমার সীমাহীন অতৃপ্তি। লিখতে না পারার যন্ত্রনা তো আছেই, সেই সঙ্গে পড়তে না পারার কষ্টও আমাকে খুব বেদনার্ত করে তোলে। ...

প্রায়শঃই ভাবি হাসান মোরশেদ, শোহেইল মোতাহির চৌধুরী, কৌশিক, আস্তমেয়ে, ব্রাত্য রাইসু, রাসেল, হিমু , হযবরল, রাগ ইমন, সাদিক মোহাম্মদ আলম, এস এম মাহবুব মোর্শেদ, তীরন্দাজ, কালপুরুষ, শেখ জলিল, অঃরঃপিঃ, পথিক, শরৎ ইত্যাদি অনেক অনেক ব্লগারদের পুরনো ভাল লেখাগুলো খুঁজে খুঁজে পড়বো, কিন্তু শেষপর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠে না।.....

সামহয়্যার ব্লগ নিয়ে কতোবার কতো অনুভবের কথাই না লিখতে চেয়েছি। কিন্তু হয়নি।... শেষ পর্যন্ত কেন যেন আর হয়ে ওঠেনি।.... ইমনের মতো ব্লগব্লগানির স্মৃতি নিয়ে ৬ পর্ব লিখতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতাম, কিন্তু পারিনা ! একেবারেই পারিনা আমি ! আমার না পারা কাজগুলোর পরিসীমা বড়ো হতে হতে কতোটা দীর্ঘ হয়ে গেছে, ভাবলে খারাপই লাগে। সেই কবে সাদিক এর কাছে ই-মেইল করার কথা ছিল, হয়নি।... সেই কবে ইমন পরামর্শ চেয়েছিল মোবাইলে বাংলার ব্যবহার বিষয়ে, তাকেও শেষপর্যন্ত আর লেখা হয়নি। আমার এতোসব না পারার ব্যর্থতা আমাকে কেবলই দগ্ধ করে ভেতরে ভেতরে ....।

আসলে বাস্তব সত্য বোধহয় এটাই যে, 'লিখতে না পারা'র যন্ত্রনা সহ্যের পর কিছু একটা ‘করতে পারা'র সফলতার জন্য হৃদয় গোপনে গোপনে খুব অপেক্ষায় থাকে....। আমি নিজেই অবাক হয়ে ভাবি, কেন আমি পারবোনা প্রতিদিন সামহয়্যারের সাথে পুরোপুরি সম্পৃক্ত হতে? সামহয়্যারকে কি আমি অন্য কারো চাইতে কম ভালবাসি?

সামহয়্যার এর সাথে পরিচয়সূত্রে '২০০৬ সাল' হৃদয়ে চিহ্নিত হয়ে গেছে জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির বছর হিসেবে। সামহয়্যার আমার আর ভাল লাগছে না, এ কথা বলার আগে মৃত্যু নিশ্চয়ই আমার সকল লজ্জা ঢেকে দেবে বিবর্ণ বোধশূন্যতায়...। আমি বিশ্বাস করি- 'সামহয়্যার আমার আর ভাল লাগছে না'- এ কথাটি বলার দিন আসলে আমার জীবনে কোনদিনই আসবে না। ... সামহয়্যার আমার কাছে এক আশ্চর্য্য আনন্দ অনুভূতির স্মৃতিচারী গোলাপ, যার স্পর্শ পেলেই অনিঃশেষ এক শিহরণ আর অসামান্য এক স্নিগ্ধ অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে আমার অনুভবের রন্ধ্রে রন্ধ্রে...।

সামহয়্যার তো আমার খুব প্রিয় সেই মোহময়ী উন্মুক্ত এক জানালা, শত ব্যস্ততায়, শত কাজের ফাঁকেও যেখানে আমি বারবার মুখ রাখি। এই মুগ্ধ জানালায় তাকিয়ে আমি কতো বিচিত্র অনুভবেরই না মুখোমুখী হই ! কি আশ্চর্য্য গভীর মমতায় এখানে মুখ রেখে পল্লবিত কিছু মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত হৃদয়ের কাকলীতে চুপচাপ কান পাতি।

রোদ, বৃষ্টি আর তীক্ষ্ণ আলোক মেশানো সব অসামান্য লেখা পড়ে আমি আসলে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ হয়ে পড়ি। পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালীর প্রাণের বিচিত্র সব উচ্ছাস যখন সামহয়্যারের ছোট্ট জানালায় জমা হয়ে একত্রিত উচ্ছাসে ফুঁসে ওঠে, তখন সেই তর তর করে বেড়ে ওঠা স্রোতের তোড়ে ভেসে যাওয়ায় আমি যে কী প্রবল আনন্দ পাই , তা শুধু আমার একান্ত সত্তাই জানে...।

তাহলে সেই 'সামহয়্যার' কিভাবে পড়ে থাকবে আমার স্পর্শ থেকে দূরে? কিভাবে ফেরাবো মুখ- জীবনের এমন প্রাণবন্ত স্পর্শ থেকে অন্য কোন নিষ্প্রাণ অভিমুখে?

আসলে লেখার সুযোগ না হলেও পড়ার সুযোগ এসেছে প্রায়শঃই বিভিন্ন পরিমন্ডলে। পড়েছি অফিসের পিসিতে, হঠাৎ হঠাৎ শত ব্যস্ততার মাঝেও...। পড়েছি বিকেল থেকে রাত অবধি কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রশিক্ষণ কোর্সের ফাঁকে ফাঁকে...। এমনকি পড়েছি প্রতিদিনের এক-দেড় ঘন্টা বাস জার্নির সময়টুকুতে, নোকিয়া-6070 তে, খোদ ইউনিকোড বাংলাতেই...।

'সামহয়্যার' এর সেমিনারের খবরটি চোখে পড়ে তেমনি এক জার্নির সময়, মোবাইল ফোনের স্ক্রীণে ... । তখন প্রায় রাত নয়টা, পরদিন সেমিনার, কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে রাতের মধ্যেই, নন ইনভাইটেড-ব্লগারদের মধ্য থেকে আরো কেউ যদি যেতে আগ্রহী থাকে...!

আমি ইনভাইটেড নই, এ বিষয়টি আমাকে খুব একটা দুঃখিত করলোনা... সামহয়্যারের জন্য আমার ভালবাসা খুব প্রবল.. সেই অনুভবের প্রাবল্য সব সাধারণ দুঃখবোধ, লজ্জা বা সংকোচের সীমানা অতিক্রম করে আমাকে নিয়ে যায় অন্য এক আনন্দ অনুভূতির অসামান্য তৃষ্ণার এক জগতে, যেখানে দাওয়াত ছাড়াই জোর করে গিয়ে বলা যায়- আমি এসেছি... সব দ্বিধা সংকোচ উপেক্ষা করে আমি চলে এসেছি... আমি যে তোমাকে খুব ভালবাসি সামহয়্যার ইন... আমি জানি... আমার লেখা একটি শব্দও যদি তোমার 'পৃষ্ঠা' কে সামান্যতম অলঙ্কৃত করে থাকে, তবে তুমি নিশ্চয়ই - তোমার আসর থেকে আমাকে ফেরাতে পারোনা....।

ই-মেইল করলাম 'যোগাযোগ' বরাবরে। রাত্রিতে একবার , পরদিন সকালে আরেকবার। দুবার। নো রিপ্লাই। কি আশ্চর্য্য, তবে কি যাবোনা শেষ পর্যন্ত? নাহ, তা কি করে হয়? আমি যে তোমাকে খুব ভালোবেসেছি সামহয়্যার, তোমার পৃষ্ঠার বুকে অনেকদিন একটি শব্দও বসাতে পারিনি বলে তুমি কি এতোটা নিষ্ঠুর হবে? তুমি কি তোমার উজ্জল স্রোতধারার শীতল স্পর্শ থেকে দূরে সরিয়ে.. আমাকে পাঠাতে চাও-শুষ্ক, প্রাণহীণ ,মরুভূমির মতো কঠিন দন্ড দিয়ে, অচেনা অদ্ভূত মৃতলোকে?

না, আমি সত্যিই তোমাকে খুব ভালবেসেছি সামহয়্যারইন, তাই দ্বিধা আর দ্বন্দ্বের দ্বিখন্ডিত রুমাল ছুড়ে ফেলে আমি শুধু ভালবাসার ইনভাইটেশান বুকে নিয়ে পৌছে গেলাম ব্রাক ইনের রুফটপে।

কি ভীষণ এক সুন্দর দিন - জীবনে আমার ! রুমে ঢুকতেই যে মানুষটির সাথে প্রথম দেখা হলো- তিনিই হাসিন, সামহয়্যারইনের স্বপ্নলোকের চাবী যাঁর হাতে, যিনি তার অসাধারণ যত্নে আর মেধায় মনের মতো করে সাজান- সামহয়্যারের অত্যুজ্জ্বল রঙের মনলোভা ভুবন...। হাসিন 'সুনীল সমুদ্র' শুনে আমাকে টেনে নিয়ে গেলেন ভেতরে.... পরিচয় করিয়ে দিলেন অ্যরিল আর অন্যান্যের সাথে। ....

অ্যরিল সম্পর্কে তখনো আমি তেমন করে কিছু জানিনা। অ্যরিল যে এতো ভালো বাংলা বলতে পারে, তাও আমি জানিনা তখনো। ব্রেক এর সময় নাস্তা বাদ রেখে আমি মেতে উঠলাম অ্যরিল এর সাথে দীর্ঘ আলোচনায়....। আমার আলোচনায় সামহয়্যারইনের প্রতি পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বাঙালীর বর্ধিষ্ণু ভালোবাসার বিষয়টিই বারবার তুলে ধললাম। তুলে ধরলাম আমি যে ট্রেনিং ইনষ্টিটিউটে কর্মরত আছি, সেখানকার বেসিক কম্পিউটার কোর্সের 'ইন্টারনেট ও ই-মেইল' এর ওপর ক্লাস নিতে গিয়ে আমি কিভাবে আমার প্রশিক্ষণার্থীদের অন্যান্য ওয়েবসাইটের পাশাপাশি 'সামহয়্যার-ইন-ব্লগ' সাইটের বিষয়েও আকৃষ্ট করে তুলি, সেই বিষয়ে।...

তবে অ‍্যরিল বোধহয় সবচেয়ে অবাক হলেন তখনই- যখন তাকে আমার নোকিয়া-6070-তে ব্রাউজ করে বাংলায় 'সামহয়্যারইন ব্লগ' দেখালাম। অ্যরিল বারবার আমাকে বলতে লাগলেন-'তুমি কি হাসিনকে এটি দেখিয়েছ? হাসিন কি এটি দেখেছে?'... আমি 'না' বলতেই অ্যরিল টেনে নিয়ে গেলেন হাসিন এর দিকে....।

সামহয়্যারে লিখতে না পারার যন্ত্রনাটা সেমিনারের আলোচনা শুনতে শুনতে কিছুটা যেন ফিকে হয়ে আসলো। মনে হচ্ছিল আমি আর সামহয়্যারের দূরের কেউ নই। ...

হোক না অনেকদিন আমি তোমার পাতায় একটিও ভালবাসার আঁচড় কাটতে পারিনি। হোকনা অনেকদিন আমার একটিও কবিতা তোমার সাজানো বাগান দখল করে ডানা মেলতে পারেনি অন্তর্জালের অপরূপ অনিন্দ্য বিচ্ছুরণে...। তাতে কি? আমি যে তোমাকে খুব ভালোবেসেছি সামহয়্যারইন... আমার অস্থি মজ্জায় রক্তে মিশে গেছে তোমার জন্য বিকশিত প্রেম, আমার কল্পনায় জাগরণে সারাক্ষণ তোমার জন্যই জমে ওঠে হাজার হাজার না বলা বাণীর আড়ালের যতো কথা।.....

আমি তোমাকে একটুও ভুলতে পারিনি সামহয়্যার ইন । যখন আমার পৃথিবীতে কষ্টের আঁধার কালো মেঘে অঝর ধারায় বৃষ্টি নামে, যখন খুব অচেনা মেঘাচ্ছন্ন শীতার্ত এক দিন আমাকে নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত করে, তখন আমিতো পরিপূর্ণ ভর করেছি তোমাতেই....তোমার পৃষ্ঠার দিকে তাকিয়েই উৎফুল্ল জীবন খুঁজতে চেয়েছি বারবার নানা রূপে...! নানা সাজে..! ....

বিশ্বাস করো, আমি তোমার থেকে দূরে থেকেছি, কিন্তু তোমার সাফল্য আমাকে আনন্দিত করেছে ! আমি তোমার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছি, কিন্তু তোমার ভাবনা আমাকে আন্দোলিত করেছে ! .... যখন হঠাৎ কোন অনিবার্য কারণে একটানা দু'তিনদিন একেবারেই তোমার পৃষ্ঠায় আমি ঢুকতে পারিনি, তখন হঠাৎ রাত্রিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি লক্ষ্য করেছি, তোমার জন্য আসলে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে...আমি কিছুতেই তোমাকে ছাড়া কাটাতে পারছিনা নিশ্চিন্তে কোন বেলা....।

সামহয়্যার, তুমি হয়তো কোনদিনই জানবেনা ..... ডিসেম্বর-জানুয়ারীর শীতার্ত সব ভোরে, খুব কান্নাভেজা স্বরে বাইরের কুয়াশার দিকে তাকিয়ে- আমি কতো শত বার প্রশ্ন রেখেছি-

'কেমন আছো? তুমি কেমন আছো, প্রিয় সামহয়্যার ইন?' !!

...............................................................................
রচনাঃ ২ রা মার্চ, ২০০৭





সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৩২
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×