somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হারকুলেনিয়ামের প্রেতাত্মা [ছোটগল্প]

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হারকুলেনিয়ামের প্রেতাত্মা

পুরো আকাশে মেঘ। যেন একটা মেগা ব্ল্যাকবোর্ড। চকের রেখা হয়ে বিদ্যুত-চমকগুলো জেগে ওঠছে ক্রুর হেসে। বজ্রপাতের নিনাদগুলো সমাপ্তিনাদে ডুকরে ওঠছে। মহাপ্রলয়ের একটা রিহার্সাল অনুভব করছে পলাশ। 'মহাপ্রলয়' শব্দটাতে কেমন একটা ধাক্কা খায় সে। নিজেকে ক'বছর ধরে যুক্তি তাড়িত সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাণান্ত প্রচেষ্টায় সফলতার শেষ প্রান্তে পলাশ। এমন সময় বিশ্বাস তাড়িত একটা শব্দ কীভাবে তাকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করলো! "ভীরুদের বোধিসত্ত্বাহীন নিঃশর্ত আশ্রয় শব্দগুলোকে অনর্থক মনে করেই তো চ্যালেঞ্জিং জীবনের পথে আমি। কোন মোহ বা ভয়ে নয়; মানবিক বোধসত্তায় পজেটিভ লাইফ নির্মাণই উন্নত প্রাণী হিসেবে আমার লক্ষ্য। আমি কেন ভীরুতাপূর্ণ শব্দে খেই হরালাম?" নিজেকে প্রশ্ন করে পলাশ। দৃশ্যপট বদলাচ্ছে ক্রমশঃ। পলাশের মানসিক শক্তি আর দৈহিক সক্ষমতা সমান্তরাল চলছে না। মানসিক সাহস যতই বাড়ছে; দেহজ অক্ষমতাও সেই সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। হঠাৎ এমন কেন হচ্ছে তার কাছে কোন ব্যাখ্যা নাই। তবে অনুভব বলছে তার দৈহিক অক্ষমতা নামছে সমগ্র শরীর জুড়ে। বোধের শুরুতে একটু ভয় ভয় লাগলেও নিমিশেই আবার সে নির্বিকার হয়ে গেল!

পলাশ নিউইয়র্ক ছেড়ে এসেছে আজ দশ দিন। চলে যাবে সে। হাতে সময় আছে বিশ দিন। তার ভয় বাড়ছে। বাকি দিনগুলোতে তার মুক্তিপ্রচেষ্টায় নির্মিত বোধের প্রতিরোধ কি পুরোটাই ভেঙ্গে যাবে? "আমি কি আবার ফিরে আসবো পরিশ্রমহীন আত্মসমর্পণের ম্যাজিক জগতে! তবে কি স্থান-কালে মানুষের বোধজগতের উত্থান পতন হয়?" নতুন প্রশ্নে নতুন সমীকরণ! নতুন জটিলতা। পলাশের এখন সময় ধারণা লোপ পেতে শুরু করছে! কালবোধহীনতা পেয়ে বসছে তাকে। বৃষ্টি না হয়েই আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে সেই কখন; অথচ সে এখনো মেঘলাকৃষ্ণ আকাশের কল্পনাতেই বসে আছে। ঝলমলে রোদে মায়াময় মোহ ছড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর ছাদ। সে ওঠতে গিয়ে দেখে পুরো শরীরটা বিদ্রোহ করে আছে। এবার তার চেতনা ক্রিয়াশীল হয়, দেখে বেলা কমে আসছে দ্রুত। পশ্চিমাকাশ ঘোরলাগা লোহিত রঙে সেজে আছে। কিন্তু সে ঘোরটা তার অস্তিত্বে ধারণ করতে পারছে পলাশ। কোনভাবেই একা দাঁড়াতে পারছে না। এমন সময় মানুষের উচিৎ চিৎকার করে লোক জড়ো করা। সেটা করছে না সে। একটা কিছু চমক আশা করছে পলাশ নিজের থেকেই। কেমন যেন নিস্তেজ নিস্তেজ লাগছে নিজেকে। “কী আশ্চর্য! স্টিফেন হকিংয়ের কথা মনে পড়লো কেন আমার?” কোমর থেকে পুরোটা নিম্নাঙ্গ অবশ হয়ে আছে। এ পর্যায়ে নিজেকে পরাধীন লাগছে তার। কিন্তু হকিংয়ের কথা মনে হওয়ায় চিন্তাসূত্রটা বদলে গেছে...

"আচ্ছা! আমি কি বস হকিংয়ের মত চলৎক্ষমতারহিত হতে যাচ্ছি? আমার কি কেবল চেতনাটাই সুস্থ থাকবে? এমনটা হলে তো আমি নির্ঘাত মলমূত্রে একাকার হয়ে পঁচে যাবো! বসের মত উন্নত শেল্টার পাওয়ার মত আমার কোন অবদান কি আছে?" নিজের সঙ্গে মনোলগে হাপিয়ে ওঠছে সে। ঘরে ফেরার তীব্র আগ্রহ অনুভ হতে থাকে তার। আবার নিজেকে প্রশ্ন করে, "কীরে মন এত অস্থির হচ্ছিস কেনো? ঘরে ফেরার কোন পিছুটান কি তোর আছে? সব পিছুটান আর স্বজন-বাঁধন ছিন্ন করেই না তবে মনমুক্তির পথে নেমেছিলে? এখন কেন নিজেকে টেনে নেওয়ার ক্রমভয়!" তীব্র অসহায়ত্ব নেমে আসছে পলাশের অস্তিত্বে। এই মাত্র তার বোধে উদয় হলো, সে এখন নিউইয়র্কে নয়। আছে বাংলাদেশের এক পাড়া গাঁয়ের বাজারে। এখানে আর কিছুক্ষণের মধ্যে রাতের নির্জনতা নেমে আসবে। এভাবে বসে থাকলে রাত গভীর হবে। নানাজন নানা প্রশ্ন করবে। কেউ ঘরে পৌঁছে দিতে চাইবে। কেউ মৃদু রাগ করবে, কেন তাদেরকে আরো আগেই নিজের সমস্যার কথা বলেনি। একটু শিক্ষিত কেউ হলে বলবে," আরে পলাশ এটা আ¤্রকিা নারে! যে এখানে বসে থাকবে আর এম্বুলেন্স এসে তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে!" চিন্তাগুলো তালকাটা তালকাটা লাগছে তার!

"মানুষের কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগেই পুকুরের ঘাটলাটা ছাড়তে হবে। কিন্তু কীভাবে? আমার যে দেহের অর্ধেকটা অবশ লাগছে!" এই পুকুরের ঘাটলাটা পলাশের খুবই প্রিয়। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত সে প্রায় প্রতিদিনই এই ঘাটে একবার বসতো। ঘাটলার অপর দিকেই ছিল রুদাবাদের বাসা। রুদাবার কথা মনে হতেই তার জীবনের আরেক ঘোরলাগা অতীতের কথা মনে পড়ে গেল। আহ! এই রুদাবাকে একবার দেখার জন্য, ওর একটু সহাস্য প্রশ্রয়ের জন্য কত কসরতই না করতো পলাশ। রুদাবা অবশ্য পুরো নাম ‘সাদিক তাকবীর পলাশ’ বলে ডাকতো। এবং সবটা নাম বলে ওকে একটু রাগাতে চাইতো।
হঠাৎ করেই পলাশ রুদাবায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল। “অদ্ভূত ব্যাপার! এই রুদাবা তো প্রায় প্রতিদিনই কথা বলে আমার সঙ্গে। বিরক্তি লাগে। ওকে সহ্যই করতে পারি না। এখন সে কেন এমন কাম্য হয়ে ওঠছে? নাহ আমার দেহের সঙ্গে মনেরও গোলমাল শুরু হয়ে গেছে!” এই মূহুর্তে সে তার বাবা-মা ও রুদাবার বাবা-মাকে একটা অদৃশ্য ধন্যবাদ পাঠায়। কারণটা স্পষ্ট পলাশের কাছে-

রুদাবার বাবা একজন পোস্ট মাস্টার হলেও পলাশের প্রিন্সিপাল বাবা রুদাবাকে বউ করতে রাজি হয়ে একটা ফরমালিটিও সেরে রেখেছিলেন। আবার মা পলাশের পছন্দকে প্রশংসা করতেন। অন্যদিকে পলাশ ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হলেও মেডিকেলে চান্স পাওয়া রুদাবাকে তার পোস্টমাস্টার বাবা পলাশের কাছে বিয়ে দিতে অনড় ছিলেন। সো তিনিও একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন।

"নিজের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ হয় সে। যে পাট চুকিয়ে দিয়েছি জীবনের তরে, সেটা নিয়ে কেন স্মৃতিকাতরতা! নস্টালজিক হওয়াও এক ধরণের ভীরুতা।" রুদাবাকে ভুলতে জন রুসানকে ফোন দেয় পলাশ। জন হলো একজন পর্তুগীজ। নিউইয়র্কে পলাশের পার্টনার। পাঁচটা কল নো আনসার শো করার পর ষষ্ঠ কলে রিসিভ করে জন। পলাশ তার কণ্ঠ চিনতে পারে না। কেমন যেন এক অদ্ভূত মাদকতায় ভরা জনের কণ্ঠ। প্রায় দশ মিনিট পর পলাশের কথা সে বিশ্বাস করে। সঙ্গে সঙ্গে কল কেটে দেয়। পাঁচ মিনিট স্তব্ধ সমাধি পলাশের বুক। ঠিক পাঁচ মিনিটের মাথায় একটা টেক্সট মেসেজ আসে।

পৌলাশ,
"লাইফ জাস্ট ফর ইনজয়। ইউ কেন গো টু রুডাবা। আই ওলসো গো টু এলসা। বিকজ, আই গট মাই ওয়ে ফর লাইফ। আই ওয়াজ অন আ রং ওয়ে। প্লীজ ডিয়ার, গো টু রুডাবা ফর নেকস্ট ওয়ার্ল্ড এন্ড ফর নার্সিং টু ইউ।"
জন রুসান।

পলাশ মেসেজটি ঠিকঠাক বুঝতে পারেনি। যতটুকো বুঝেছে তাতেই তার মেজাজ বিগড়ে যায় যায়। কিন্তু বিনা নোটিশের দেহজ অসহায়ত্ব আর সহস্র সহস্র মাইল দূরত্ব তাকে কিছুটা নিরব করে দেয়। পাল্টা টেক্সট লেখে সে।

জন,
প্লীজ, টেল মি ডিটেইলস। আই ডিডন্ট আন্ডারস্টেন্ড ইয়োর টেক্সট ক্লিয়ারলি। ওয়াট হেজ বিন হেপেনড?
পৌলাশ।

সন্ধা শেষ হয়ে রাতের নির্জনতা নেমে আসছে বৈলর বাজারে। বেশ কজন পলাশকে দেখে গেছে। কিন্তু কোন কথা বলেনি। তারা জানে পলাশ দেশে এলে এই ঘাটলায় একা একা রাত বারোটা একটা পর্যন্ত বসে থাকে। এরপরে হালকা ড্রিঙ্কস করে ঘরের দিকে যেতে থাকে। আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। পলাশ কাউকে বলতে চাচ্ছে না সমস্যার কথা। আবার একা দাঁড়াতেও পারছে না। বাড়িতে একটা ফোন দিতে পারতো। ততক্ষণে বহু মানুষ ছুটে আসতো। তবে তার মানসিক যন্ত্রণা বেড়ে যেতো। বাড়ির সবাই কট্টর মোল্লা। (তার ভাষায়।) তারা নির্ঘাত বলবে এসব হলো তোর অবাধ্যতার প্রতিদান। এসব এবস্ট্রাক্ট ট্যাবু-মানা শুনতে তার একদম ভালো লাগে না।

পলাশের বাবা অবশ্য অনেকটা উদার। ছেলের সঙ্গে বিতর্কে যান তিনি। তবে পিতাগত মর্যাদা প্রদানের কারণে পলাশ সুবিধা করে ওঠতে পারেনি কোন দিনই। তবে সে কখনোই তার বাবার সামনে 'সমলৈঙ্গিক একত্রবাস' নিয়ে কথা বলেনি। তার ধারণা এটা শুনলে প্রিন্সিপাল সাহেব তাকে বাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য করবেন। সে চায় পিতার বিশাল সম্পদের ভাগটা পেয়েই বাড়ি এবং দেশ ছাড়তে পাকাপাকিভাবে।
"শালা জন, তুই আমাকে কী শুনাইলি? আমি আসি! তোরে শপথ ভঙ্গের শাস্তি না দিয়ে ছাড়ছি না।" নিজেকেই আবার জিজ্ঞেস করে, "এসব কী বলছি। দ্বিতীয় উত্তর না পেয়ে কিছু বলা যাবে না। একটু অপেক্ষা করতে হবে।" একটা বিষণœ হাসি নেমে আসে পলাশের মুখে। অদৃশ্যে জানতে চায়, আমি কি নিউইয়র্কে আবার ফিরতে পারবো? কোন উত্তর আসে না। গ্রামের ছোট্ট বাজারে রাত দশটার নিরবতা। পলাশ কিছুটা ভয় পেয়ে গেল।

হঠাৎ পূর্ব দিক থেকে রবি দাসকে আসতে দেখে পলাশ। রবি তাকে বাংলা মদ সাপ্লাই দেয়। পলাশ অবাক হয়, রবির হাতে বোতল না দেখে।
জানতে চায় ঘটনা কী? রবি জানায় সে ধর্মান্তরিত। এখন মদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। "বাবু আমি ইসলাম কবুল করেছি আমেরিকান এক তবলিগী জমাতের ডাকে।" বলে রবি। পলাশ দ্বন্দ্বে পরে গেল। "যে আমেরিকা গিয়ে আমি আমার কুসংস্কারকে ছাড়তে পেরেছি। সেই আমেরিকা থেকে এদেশে আবার ফিরে আসছে বিশ্বাস নামক অশ্ব ডিম্ব! নিজেকে আর ইনসিকিউর রাখা যায় না। রবিকেই বলতে হবে সমস্যার কথা।" ভাবতে ভাবতেই রবিকে বলে পলাশ- "রবি দা, আমার কোমর থেকে নিচটা একটু অবশ হয়ে আছে। আমি দাঁড়াতে পারছি না। একটা সিএনজি পাওয়া যাবে? চুরখাই হাসপাতালে যামু।"
রবি কি না কি বুঝলো! ফিসফিস করে বললো, "বাবু গজব নেমে আইছে। আমারেও ধরতে পারে।" বলেই দিলো ভোঁ দৌড়। পলাশ একেবারে অসহায় হয়ে গেল। গত ছয় বছর ধরে এই রবিই তাকে এই বাজারে শেল্টার দিতো। পানীয় সাপ্লাইসহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া; সবই করতো এই রবি।

এখন কী হবে? রাত বাজে এগারোটা। বাড়িতে ফোন দিবে কি না ভাবছে সে। এমন সময় অপ্রত্যাশিতভাবে ডায়াল স্ক্রীনে ভেসে ওঠে রুদাবার নাম। কেঁপে ওঠে পলাশ। ভয়ে ভয়ে কল রিসিভ করে। ওপ্রান্ত থেকে সালাম আসে। পলাশ উত্তর দেয়।
-কী ব্যাপার পলাশ! আমি তো জানি তুমি গত দশ বছর ধরে কারো সালামের উত্তর দাও না। আজ কেন ব্যতিক্রম হলো? নাকি আমার অপ্রত্যাশিত কলে খেই হারিয়ে ফেলেছো?
- কিছুটা রুদাবা। মানুষের কিছু কিছু সময় আসে যখন সে কেবলই বিস্মিত হতে থাকে। ইতবাচক ঘটনায় অথবা নেতিবাচক ঘটনায় এই যা! আচ্ছা তুমি এখন কোথায়?
- আমি বাসায়। এখন তুমি কোন ঘটনায় বিস্মিত হলে? ইতিবাচক না নেতিবাচক? পলাশ, আজকে সেই দুপুর থেকে তুমি এখানে একা। এমনটি তো কখনই ঘটেনি। এনিথিং রং?
- আজ আমি দু’দিক থেকেই বিস্মিত। না কোন সমস্যা না ঠিক! আজ আমি একা থাকতে চেয়েছিলাম। তাই কাউকে খবর দেইনি। কেবল রবিকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু...
কথা শেষ হয় না। রুদাবা কথা টেনে বলে, "আর কখনই রবি তোমার কথা শুনবে না।"
- আমি জানি রুদাবা। তুমি কি আমাকে একটু হেল্প করবে? আমাকে এখনই হাসপাতালে যেতে হবে। আমার কোমর থেকে নিচটা অবশ অবশ লাগছে।

একটা আর্ত চিৎকারের সঙ্গ মোবাইল পতনের শব্দ হয়। কল কেটে দেয় পলাশ। ভাবতে থাকে, সে কেন সালামের উত্তর দিলো? রুদাবা কেন আর্তনাদ করে ওঠল? জন কেন তাকে পাত্তা দিলো না? এবার তার সবল চেতনসত্তাও খানিকটা এলোমেলো হয়ে ওঠছে। ক্রমশঃ শক্তিরহিত হচ্ছে সে। চোখের দৃষ্টি ঝাঁপসা হয়ে আসছে। বাজারে স্ট্রিট লাইটের আলোয় সে দেখতে পায় রুদাবা ও তার ছোট ভাই একটা প্রাইভেট কার থেকে নামছে।

পলাশ জ্ঞান হারায়নি। চারপাশের সব সে দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু কথা বলতে পারছে না। রুদাবার বাসার বারান্দায় পলাশকে রেখেই। ফোন করা হয় পলাশের বাবাকে। ইতোমধ্যে রুদাবার ছোট ভাই শাহীন কাজে লেগে যায়। সে একজন ফিজিও। ছুটিতে ছিলো। রুদাবাও চেক করে দেখলো। সমস্যা জটিল না। হাসপাতালে যেতে হবে না। বাসায়ই সেরে ওঠবে।

রাত দুইটায় পলাশের বাবা তার বড় ছেলেকে নিয়ে রুদাবাদের বাসায় আসেন। ততক্ষণে সে অনেকটাই সেরে ওঠছে। বাসায় নিতে চাইলে পলাশ বলে রাতটা এখানেই থাকতে চায়। সমস্যা জটিল না দেখে তার বাবা চলে যান।

সকাল ন'টা। নাস্তার টেবিলে পলাশ। শুক্রবার বলে রুদাবাও ফ্রী। দশবছর পর দু'জন মুখোমুখি। পলাশকে কিছুটা উদভ্রান্ত ও উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। রুদাবেকেও মনে হচ্ছে দীর্ঘ অনশন শেষে ওঠে দাঁড়ানো কোন বিপ্লবীর মত। পরস্পর পরস্পরের দিকে চেয়ে আছে। সময় যাচ্ছে। কোন কথা হচ্ছে না। রুদাবা কেঁদে ওঠে। পলাশ অপ্রস্তুত হয়ে যায়। রুদাবা বলে, ‘পলাশ কিছু একটা বলো!’
রুদাবা নিজেকে ধ্বংস করার কোন মানে হয় না। সংসারি হও। বলে, পলাশ।
- পুরনো কথা আবার। তুমি যাই হয়ে থাকো। আমি মুসলমান। তুমি মুক্তি না দিলে আমি অসহায়। জানি তুমি বলবে যে প্রথা বিশ্বাস করি না সে প্রথায় তোমাকে আমি মুক্তি দেই কীভাবে? কিন্তু জেনে রাখো! আমি আমার সত্তার আর্ধেককে ত্যাগ করতে পারবো না। তুমি হেরে যাবে আমি জিতবোই।
কারণ, তুমি যা করছো তাতে পৃথিবী ধ্বংস হবে। আর যিনি এটা গড়েছেন, তিনি কোন সৃষ্টির ইচ্ছায় নয়; নিজের ইচ্ছায় এর এন্ডিং টানবেন।
- তুমি মহাপ্রলয়ের কথা বলছো। আমি জানি। তোমার সঙ্গে বিতর্ক করতে নয়; একটা সমাধানে যেতে রাতে থেকে গেছি। শোন, আমাদের অনানুষ্ঠানিক একটা বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সেটা বাস্তব হয়নি কখনই। আই থিঙ্ক ইউ আর ইনটেকড একোর্ডিং টু ইয়োর ফেইথ। আমি তোমার চাহিদামত সেটা শেষ করে দেবো। তবুও তুমি জীবনটাকে সাজাও। তোমার বাবাকে ডাকো। কী করতে হবে বলো। আমি আর দেশে ফিরবো না। আমাকে ক্ষমা করে দিও।

পলাশের হাত চেঁপে ধরে রুদাবা। কান্নার মৃদু আওয়াজ আসে। পলাশ আঁৎকে ওঠে। রুদাবার স্পর্শ তার ভেতর একটা কম্পন তোলে। একটা অনুভূতির উত্থান ঘটায়। পলাশের মনে হয় এমন একটা কিছুর প্রাপ্তির হাহাকারের জন্যই সে এদেশ থেকে সুদূর মার্কিন মুল্লুকে পাড়ি দিয়েছিলো। রুদাবাকে উপেক্ষা করে সমলৈঙ্গিক রতিক্রিয়ায় মত্ত হয়েছিল। কিন্তু তার পারফেক্ট অনুভূতির দেখা সে পায়নি। তখনই মাদকে সেটা খোঁজতে গেলো। আর এতসব কর্মকা-কে একটা সোস্যাল এক্সেপ্টনেস দিতে নানা তথ্য-সূত্রের মোহে আটকে নিজেই স্বাধীন ফিলোসোফারের মত ভেবেছে নিজেকে।

পলাশ বাস্তবে ফিরে আসে। এক ঝটকায় রুদাবার হাত ছাড়াতে চায়। অবাক হয়ে সে অনুভব করে তার দেহে এক পদক্ষেপের শক্তিও অবশিষ্ট নেই। পলাশ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করে। শাহীন শুইয়ে দেয় তাকে। অতি চিন্তা ও অবসাদের কারণে পলাশের এমন হচ্ছে মনে করে শাহীন। শুয়ে পড়তেই জনের টেক্সট মেসেজ আসে। পড়তে শুরু করে পলাশ। সে যা লেখে তার বাংলা করলে দাঁড়ায়:

পৌলাশ,
মানুষের মন আকাশের রং; কখনো সুনীল কখনো বা সঙ।
পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী মানুষ! যে কিনা তার যেকোন সিদ্ধান্তে নিতে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে পারে। আবার সেইটা পলকেই ভাঙ্গতে পারে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এলসাকে বিয়ে করবো। এতদিন যে বিশ্বাসে বা আদর্শে হোমোসেক্সে আগ্রহী হয়েছিলাম। দেখলাম এটা ভুয়া। আমরা মুক্তির অর্থ করেছি ভুল সংজ্ঞায়। মুক্তি মানে ক্রমশঃ বোধের উন্নতি। কিন্তু আমরা তা বুঝতে ভুল করেছি। আমাদেরকে পম্পেই, হারকুলেনিয়াম ও আদ জাতির প্রেতাত্মা দখল করে নিয়েছিল।

পৌলাশ,
দেখো, দুটি বিপরীত লিঙ্গের সৃষ্টিতে প্রকৃতির একটা মহৎ ও বিরাট উদ্দেশ্য আছে। আমরা প্রকৃতির সন্তান হয়ে তার প্রতি বিদ্রোহ করতে পারি না। পৃথিবীর পরম্পরা ঠিক রাখার জন্যই এই দুটি লিঙ্গের সৃষ্টি। সকল সৃষ্টিতেই আছে এই দুই লিঙ্গ। আমরা যারা এই সমকামে আগ্রহী মূলত এটা আমাদের অসুখ। এলসা আমার কৈশোরের বন্ধু। সে ডাক্তার। একটা বড় ডিগ্রী নিতে সে যুক্তরাষ্ট্রে আসে। দৈবাত পেয়ে যায় আমাকে। সে আমার চিকিৎসা শুরু করে। তিনদিনেই আমি বদলাতে শুরু করি। তোমার সঙ্গে কাটানো সময়গুলো এখন একটা রাবিশ পিরিয়ড মনে হচ্ছে। চূড়ান্ত নোংরামো করেছি। ক্ষমা করে দিও। আর কখনো দেখা হবে না। এমন পাপার্তলজ্জিত দুটি মুখ যেন আর মুখোমুখি হতে না পারে সেজন্য আমি পর্তুগালে ফিরে যাচ্ছি। ভালো থেকো। রুদাবাকে আপন করে নিও।
ইতি
জন রুসান।

পলাশ মেসেজ পড়েই রুদাবাকে মোবাইলটা দিয়ে বলে, "দেখো আমার নষ্ট সময়ের খতিয়ান। এরপর ডিসাইড ওয়াট উইলিউ ডু?"
পুরো টেক্সট মেসেজটি পড়ে রুদাবা কিছুক্ষণ মূক হয়ে বসে থাকে। সে জানতো পলাশ এটাকে সমর্থন করে। ধর্মকে জীবনের জন্য অপ্রয়োজনীয় মনে করে। কিন্তু সে নিজে একজন হোমোসেক্সিয়ান সেটা কখনোই জানতো না। রুদাবা বলে' "তোমারও চিকিৎসা করবো। আমি নিজেই করবো। অস্ট্রেলিয়াতে একজন মুসলিম ম্যাডাম আমাকে এই রোগের জন্য স্পেশার ট্রেইন্ডাপ করিয়েছেন।"
ততক্ষণে পলাশ ঘুমিয়ে গেছে। রুদাবা কিছুটা আশাবাদী হয়ে জনকে আরেকটা টেক্সট করলো। সে লিখলো,

হেল্লো জন,
আই এম রুদাবা। থেঙ্কু এন্ড বেস্ট উইশেজ ফর ইয়োর চেঞ্জিং এন্ড রিটার্ন টু রাইট ওয়েই। নাও আই ওয়ান্ট এনাদার মেসেজ। প্লীজ, সেন্ড টু পলাশ। এন্ড শো হিম সাম হোমোস লাস্ট লাইফ স্টোরি।
রুদাবা।

বিশ মিনিটের মধ্যে পলাশের ট্যাবে একটি টেক্সট মেসেজ আসে। দুটি ওডিও ফাইল আসে তার ই-মেইলে। মেসেজে কয়েকটি লিঙ্ক দেয়। যেখানে বেশ কয়েকজন সমকামীর জীবনের শেষ সময়ের ঘটনা উল্লেখ আছে। ওডিওগুলোতে আছে, দু'জন সত্তোরোর্ধ বয়সের সমকামীর সাক্ষাৎকার ও বিভিন্ন ধর্মে সমকামীতা সম্পর্কিত বিধান। মেসেজের আগমনী টোনে ঘুম ভাঙে পলাশের। জনের এসব মেসেজ দেখে তার মেজাজ বিগড়ে যায়। ঘুমের পর শরীরটা এখন ঠিকমত কাজ করছে তার। বেড়িয়ে যেতে চায় সে। শাহীন বলে, "যেতে চাইলে ফেরাবো না। তবে কথা হলো, আপনি এখন কেবল সুস্থ থাকতে পারবেন গতানুগতিক পজেটিভ জীবন-যাপন করলেই। নেকস্টে যদি আবার নেশা করেন তাহলে টোটাললি প্যারালাইজড হয়ে যাবেন। বাকিটা আপনার ইচ্ছা।"

শাহীনের কোন কথার জবাব না দিয়েই বেড়িয়ে গেল পলাশ। রুদাবা তখন মধ্যাহ্ন বিশ্রামে। পলাশ কোথাও না থেমে সোজা ঢাকার পথ ধরে। বাবাকে একটা মেসেজে শুধু বলে, "ক্ষমা করে দিও।"

বাসের সিটে বসে সে তাকিয়ে দেখে বাইরের জগত। কৈশোরের একটা খেলার কথা মনে পড়ে তার। ট্রেনে ওঠলেই সে দেখতো গাছ-পালা, বাড়ি-ঘর কেমন করে যেন দূরে সরে যেতো। তখন এটা ছিল তার কাছে অপার বিস্ময়। এখন সে জানে এই রহস্যের সমাধান। তবুও সেই খেলায় মেতে ওঠছে। দেখছে কেমন করে সরে যাচ্ছে সড়কের পাশের বাড়ি-ঘরগুলো। ভাবছে আহ! যদি জীবন থেকেও সব ধরণের সংশয়, জরা, পিছুটান আর স্মৃতির সময়গুলো এভাবে সরে যেতো! আগামীটাই মূখ্য থাকতো মানব জীবনের জন্য!

বেশ কিছুক্ষণ ভাবানার অতলে থেকেও লাভ হলো না। আবার ফিরে এলো পলাশের জীবন। “আচ্ছা! আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি! আমি পরাজিত? আমি কী সত্যিই সাহসী? আমি কতটা স্বাধীন?” পলায়ন, সাহস, পরাজয় ও স্বাধীনতা শব্দগুলো পলাশের মাথায় ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছে। নিজেকে এখন নিজেই শাসন করছে, “দেখো! পলাশ, দেবত্ব একটা জটিল জিনিস। নিজের ভেতর নিজেই দেবতা। একেবারে নিজের জগৎ! অবাধ স্বাধীনতা! নিজেই উত্তর দিতে চায়! কতটুকো স্বাধীন তুমি? কই এখনো তো রাষ্ট্র আর আইনের দেয়ালই টপকে যেতে পারোনি। সাহসের কথা বলো, সাহসী তো সেই যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগায়। আগুনে হাত দিলে হাত পুরবে, এটা জেনেও আগুনে হাত দেওয়া সাহস নয় বোকামী।” নিজের প্রশ্নে নিজের উত্তরেই হেরে যায় পলাশ। কিন্তু! সে হারতে নয়; জিততে চায়। আবার মনের ভেতর থেকে উত্তর আসে; ‘জেতার জন্যই সংগ্রাম করতে হয়। ঠিক রাখাতে হয় পৃথিবীর পরম্পরা।’

পলাশকে কিছুটা বিপর্যস্ত দেখা যায়। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে পুরোটাই ভেঙ্গে গেছে। এখন কেবল জেদের হাওয়াই বাহনে চড়ে দ্রুত দেশ ছাড়তে চাচ্ছে। রুদাবাকে অসহ্য লাগছে। পারলে সে এই মেয়েটাকে নাই করে দিতো। এমনটাই ভাবছে। এই ভাবনায়ও চমকে ওঠে! ভয় নেমে আসতে থাকে তার শিরদাড়া বেয়ে।

বিমানের টিকিট কনফার্ম করতে অতিরিক্ত কিছু উৎকোচ দেয় পলাশ। টিকিট পায় ভোর ছ'টার ফ্লাইটে। ভাল ঘুমের আশায় হোটেলে ওঠে। গভীর ঘুমে তখন। একটা ফোনে ঘুম ভাঙ্গে তার। ওপ্রান্তের কণ্ঠ শুনেই ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে, "এই নম্বর কোথায় পেলে!
- জনের মেসেজ পড়তে দেওয়ার সময় নিয়ে রেখেছি। শোন, তোমার জন্য ঔষধ এনে রেখেছি। ভোরে এসে খেয়ে যেও। আশা করি দু'দিনে সুস্থ হয়ে যাবে। তোমার শারিরিক অসুখের চেয়ে মানসিক অসুখের জন্য আমাকে খাটতে হবে বেশি।

পলাশের পুরো শরীর কেমন যেন মৌন সুখে ভরে যায়। হৃদয় উজারকরা ও অনুরাগভরা এমন কথা মনে হয় সে কখনই শুনেনি! ঘুম আর আসেনি। জীবনের পথে এখন মনে হয় সে পুরনো পথেরই পথিক। মাঝপথে নৌকাডুবির শিকার হয়ে বিপথে সাঁতার কেটেছে ক’দিন! হোটেলের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দেখে আকাশে পুরো যৌবনঋদ্ধ চাঁদ। চাঁদকে জিজ্ঞেস করলো, “কীরে চাঁদ এর আগে তো তুই কখনো এত সুন্দর ছিলি না!”

পলাশ দেখে চাঁদটা কেমন যেন বোকার মতো হেসে ওঠেছে। ভোরের আগেই বিমানের টিকিটটাকে তার কাছে পৃথিবীর সবচে অপ্রিয় ও অপ্রয়োজনীয় মনে হতে লাগলো।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৫
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×